প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠলেই আমজনতা দেখে
তাদের সর্বনাশ হয়ে যাচ্ছে,
এক সর্বনাশের মাতম শেষ হতেই
আরেক সর্বনাশ ঝাঁপিয়ে পড়ছে বুক বরাবর-
সর্বনাশে সর্বনাশে কারো কারো জীবনই খরচ হয়ে যাচ্ছে বেহিসাবীর মতো।
আমজনতার সর্বনাশ সেদিন থেকে শুরু হয়েছে
যেদিন থেকে কিছু কিছু মানুষ
তাদের ঘরের বাপ দাদার দেওয়া আয়নাটা ভেঙে ফেলেছে।
আজকাল নাকি সেই আয়নায় তাকালে
নিজেকে আর মানুষের মতো মনে হয় না তাদের-
অচেনা একটা জানোয়ারের মতো লাগে,
প্রচণ্ড ভয় পায় আয়নায় নিজেকে দেখলে।
তাই বাজার থেকে প্রতিদিন নতুন নতুন আয়নায় কিনে
আর নিজেকে দেখে মনে মনে বলে,
“ বাহ্,আমি দিনদিন সুন্দর মানুষ হয়ে যাচ্ছি,
আমি দিনদিন খোদার প্রিয় বান্দা হয়ে যাচ্ছি।''
এই মানুষগুলো সারাদিন সব বেচাকেনা করে,
তারা নিজেদের সুখের ব্যাপারী,
আবার কেউ ভাগ্যের ব্যাপারী বলে পরিচয় দেয়।
এই ব্যাপারীদের কেউ ক্ষমতা বিক্রি করে,
অথবা ক্ষমতা কেনে।
কিছু ব্যাপারী বন, নদী, জমি, বিপদ
কোনোজন কলম, বই, বু্দ্ধি, শিক্ষা, ভয়
গরু, ছাগল, বাতাস, পিএইচডি, মানুষ,
বিসিএস, বিশ্বাস, ভালোবাসা, ধর্ম,
এমনকি বাবা- মা, দেশের মানচিত্র
সব বেচাকেনা করে।
আর নতুন নতুন আয়নায় নিজেকে দেখে
এই ব্যাপারীগণ খুশিতে শিস বাজিয়ে বলে,
“ বাহ্,
আমি দিনদিন সুন্দর মানুষ হয়ে যাচ্ছি,
আমি দিনদিন ধার্মিক হয়ে যাচ্ছি।"
এখন চারিদিকে শুধু কানাঘুষা
সর্বশেষ খবরনুযায়ী,
আমজনতাগণের বাপ দাদার আয়নাও দিনদিন চুরি হয়ে যাচ্ছে ,
অথবা নিজেরাই ভেঙে ফেলছে গোপনে।
আমজনতাগণ,
আপনারাই বলুন
সর্বনাশে সর্বনাশে আপনাদের জীবনের আর কতটুকু খরচ করবেন,
একদিন হয়তো সর্বনাশ হওয়ার জন্য
আপনাদের সর্বনাশেরও আর কিছুই বাকি থাকবে না।
————-
রশিদ হারুন
১৩/০৭/২০২৪
মন্ট্রিয়াল
কানাডা