এই লেখার অবতারণা আমার বন্ধু রিপেনডিলের একটি পোস্টের সূত্র ধরে। আপনারা অনেকেই হয়তো একটি খেলা, পাকিস্তান সমর্থন এবং কিছু অর্থহীন প্রলাপ শিরোনামের পোস্টটি পড়েছেন।যারা পড়েননি তারা পড়ে নিতে পারেন এখান থেকে।
আসুন এবার একটু অতীতের দিকে দেখি। একটা প্রশ্ন সবার কাছে।দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূত্রপাত হয় কীভাবে?বেশীরভাগই হয়তো বলবেন জার্মানির পোল্যান্ড আক্রমণের মাধ্যমে।নেপোলিয়ন বলেছিলেন ইতিহাস বিজয়ীদের দ্বারা লেখা হয়ে থাকে। হয়তো তাই আমরা অনেকেই জানিনা জার্মানি পোল্যান্ড আক্রমণের ১৬ দিন পরেই অন্যদিক থেকে পোল্যান্ড আক্রমণ করে রাশিয়া।দুই দিক থেকে দুই শক্তিশালী প্রতিপক্ষের আক্রমণে আত্মসমর্পণ করা বাদে উপায় ছিল না পোলিশ বাহিনীর।কিছু পোলিশ বাহিনী আত্মসমর্পণ করে জার্মান বাহিনীর কাছে আর কিছু রাশিয়ানদের হাতে।যুদ্ধবন্দিদের মধ্যে বেশিরভাগকে ছেড়ে দিলেও ৪০ হাজারের মত বন্দিকে সোভিয়েতরা ১৯৪০ সাল পর্যন্ত আটকে রাখে।
কিন্তু পরবর্তীতে তাদের মধ্যে সিংহভাগকে কে ঠাণ্ডা মাথায় হত্যা করা হয় স্ট্যালিনের নির্দেশে। সব মিলিয়ে ১৪ জন মিলিটারি জেনারেল সহ পোলিশ মিলিটারির বেশীরভাগ অফিসার,তিন শতাধিক ডাক্তার ,কয়েকশ ল্যইয়ার,ইঞ্জিনিয়ার,শিক্ষক,দু শতাধিক লেখক সাংবাদিক,দুইশ পাইলট,২০ জন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং অর্ধেকেরোও বেশি পোলিশ পুলিশ অফিসার সহ মিলিয়ে ২৫,৭০০ জনকে হত্যার নির্দেশ দেন স্ট্যালিন । এবং তাদের বেশীরভাগকেই হত্যা করা হয় ১৯৪০ সালে ক্যাটিয়েন নামক একটি বনে।যেহেতু পোল্যান্ডে বাধ্যতামূলক সামরিক শিক্ষা চালু ছিল তাই বেশীরভাগ শিক্ষিত মানুষই যুদ্ধকালীন সময়ে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন এবং যুদ্ধবন্দী হিসেবে সোভিয়েতদের কাছে বন্দী হন।তাই স্ট্যালিনের পরিকল্পনা ছিল পোলিশ শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর একটি বৃহৎ অংশকে যদি শেষ করে দেওয়া যায় তবে জাতি হিসেবে তারা কখনোই মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে না এবং সবসময় সোভিয়েতদের উপর নির্ভর হয়ে থাকতে হবে।কি মিল পাচ্ছেন না আমাদের সাথে?হ্যাঁ,দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের স্ট্যালিনের এই স্ট্রাটেজিই ফলো করেন ইয়াহিয়া খান।
১৯৪৩ সালে জার্মানী যখন রাশিয়া আক্রমণ করে তখন কিছু পোলিশ রেলওয়ে শ্রমিক ক্যাটিয়েন বনে গণকবর আবিষ্কার করে এবং জার্মানি একটি আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিশন গঠন করে রাশিয়াকে অভিযুক্ত করে।কিন্তু রাশিয়া নিজের সব দায়দায়িত্ব অস্বীকার করে।আমেরিকা,ব্রিটেনের সাথে রাশিয়ার দৃঢ় কূটনৈতিক সম্পর্কের কারণে সব সুপার পাওয়ারও তখন এই গণহত্যা নিয়ে নিশ্চুপ থাকে।
পরবর্তীতে রাশিয়া থেকে জার্মানি যখন রিট্রীট করে তখন রাশিয়ান বাহিনী ক্যাটীয়ান বন পুনর্দখল করে এবং বিশাল একটি কাভার আপ চালায়।এবং সব দোষ জার্মান বাহিনীর উপর চাপায়।একটি ঘৃণ্য গণহত্যা ঘটিয়েও পার পেয়ে যায় রুশরা।পরবর্তীতে পোলিশ সরকারের প্রো-রুশ নীতিমালার কারণে ক্যাটিয়েন নিয়ে কথা বলাটা ট্যাবুর মত হয়ে যায়।ক্যাটিয়েন বনে নিহতদের স্বজনরা বিচারের দাবী তুললেই রাষ্ট্র কর্তৃক তারা নানা নির্যাতনের স্বীকার হতেন।তারপরও থেমে থাকেন নি তারা। পোলিশ সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন এবং সেই সাথে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পোলিশ স্কলাররাও এই ব্যাপারে জনমত গড়ে তুলতে থাকেন। অবশেষে ১৯৯০ সালে রাশিয়া ক্যাটিয়েন বনে সংঘটিত গণহত্যার দায়-দায়িত্ব স্বীকার করে নেন এবং এর জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন।১৯৯১ সালে এই নিয়ে একটি তদন্ত কমিশন গঠিত হলেও দোষী ব্যক্তিরা ইতিমধ্যে মারা যাওয়াতে ব্যাপারটি বেশিদূর এগোয় নি। পরবর্তীতে ২০১০ সালে রাশিয়া সরকারের নিম্ন কক্ষ ক্যাটিয়েন গণহত্যার জন্য স্ট্যালিনকে দায়ী করে একটু বিবৃতি প্রকাশ করে। অবশেষে ইতিহাসের পাতায় ক্যাটিয়েন গণহত্যার সঠিক তথ্য পুনর্লিখিত হয়।
এখন আসি ৭১ সালের গণহত্যার ব্যাপারে পাকিস্তানের ক্ষমা চাওয়া প্রসঙ্গে।
প্রথমেই আলোচনায় আসা যাক কেন ক্ষমা চাওয়া ব্যাপারটি এত গুরুত্বপূর্ণ।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সংঘটিত এই গণহত্যার মত ১৯৭১ সালে পাকিস্তান বাহিনীও আমাদের দেশে চালায় সিস্টেমেটিক কিলিং।এই ব্যাপারে আমরা বাংলাদেশীরা ছোটবেলা থেকেই ত্রিশ লাখ শহীদের কথা পড়ে আসলেও বিশ্ববাসী আসলে এই ব্যাপারে কতটুকু জানে?এই ত্রিশলাখ মানুষের হত্যার দায় নেবে কে?এই ত্রিশ লাখ শহীদের যথযোগ্য মর্যাদা কি আমরা দিতে পেরেছি?
আসুন দেখি ৭১ সালে আমাদের মুক্তির সংগ্রামের ব্যাপারটিকে পাকিস্তানের জনগণ কীভাবে দেখে।পাকিস্তানের বিখ্যাত দৈনিক দা ডন এর ভাষ্য অনুযায়ী পাকিস্তানের ম্যাট্রিক এবং ইন্টার লেভেলের পাঠ্যবইয়ে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের জন্মকে দেখানো হয় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে।সবচেয়ে গুরত্বপূর্ন ব্যাপার হল ৭১ এর গণহত্যার ব্যাপারে কোন ধরণেই তথ্যই সেখান নেই।বলা হয়ে থাকে একটি জাতিকে মানসিকতা কেমন হবে তা নির্ভর করে সেই জাতির শিশুদের পাঠ্যবই এর উপর।তাই দেখা যাচ্ছে যতদিন পর্যন্ত রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষমা না চাচ্ছে এবং সঠিক ইতিহাস পাকিস্তানীদের না জানাচ্ছে ততদিন পর্যন্ত ৭১ সালের গণহত্যার বিষয়টি একপক্ষিকই থেকে যাচ্ছে।সোজা কথায় বলতে গেলে পাকিস্তান যতদিন তার দায়িত্ব স্বীকার না করছে ততদিন পর্যন্ত একাত্তরের গণহত্যাকে আন্তর্জাতিকভাবে Alleged Massacre বলা হবে।জামায়াত ইসলামির মত পাকিস্তানী বাস্টার্ড দলগুলো হয়ত আবারো সামনে বলবে এদেশে কোন গণহত্যা হয়নি।কোন যুদ্ধাপরাধী নেই।
কী বিচিত্র সেলুকাস।দেশের তরে যারা হাসি মুখে প্রাণ বিলিয়ে দিল তাদের সেই প্রাণের স্বীকৃতটুকু পর্যন্ত আমরা আনতে পারলাম না।যখনই ব্যাপারটা ভাবি তখনই নিজেকে নপুংসক বলে মনে হয়। আমাদের পূর্ববর্তী প্রজন্ম যেখানে পাকিস্তান সরকারের দমননীতি উপেক্ষা করে নিজের জীবন বাজী করে যুদ্ধ করেছিল এবং যাদের রক্তের উপর দাঁড়িয়ে আমরা নিজেদের স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে গর্ববোধ করি তাদের উত্তরসূরি হিসেবে আসলেই আমরা অযোগ্য।
পোল্যান্ডের মত ছোট রাষ্ট্র যদি সুপার পাওয়ার রাশিয়াকে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করতে পারে তবে আমরা কেন পারব না?
ইন্ডিভিজুয়াল পাকিস্তানীর ক্ষমা চাওয়া বনাম রাষ্ট্রীয়ভাবে পাকিস্তানের ক্ষমা চাওয়া।
অনেক পাকি প্রেমিক আছেন পাকিস্তানের প্রতি তাদের ভালবাসা জাস্টিফাই করতে চান এই বলে যে,ইমরান খান এবং হামীদ মীর এর মত অনেকেই যেহেতু এই ব্যাপারে ইতিমধ্যেই দুঃখ প্রকাশ করেছেন তাই এই ব্যাপারটি নিয়ে মাতামাতি করার আর মানে হয় না।কী আজব যুক্তি।ঈমরান খান কে?হামীদ মীরই বা কে?তারা কি পাকিস্তান সরকারের কোন অংশ?তাদের ক্ষমা চাওয়াতে কি পাকিস্তান সরকার তাদের রাষ্ট্রীয় অবস্থান পাল্টে ফেলবে ৭১ এর ব্যাপারে?নিঃসন্দেহে এটি একটি ভাল উদ্যোগ।তারপরও এটিই যথেষ্ট নয়।
কয়েকদিন আগে আমার বন্ধু একটু পোস্টে দাবী করেন ঘৃণায় ঘৃণা বাড়ায়।আমাদের পাকিস্তানীদের প্রতি ভালবাসার হাত বাড়িয়ে দেওয়া উচিত।কারণ উনার সাথে নাকি কিছু পাকিস্তানীর পরিচয় আছে তারা নাকি নিজের দেশের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত।তাকে আমি বলতে চায় দুইজন জামাতের নেতা যদি দাবী করেন ৭১সালে কোন গণহত্যা হয়নি তাতে যেমন তাদের কথা সত্য হয়ে যায় না ঠিক তেমনি দুইজন ইন্ডিভিজুয়াল পাকিস্তানীর অনুতপ্ত হওয়াতেই ব্যাপারটা শেষ হয়ে যায় না।জনাব রিপেনডিলকে বলছি আপনার বন্ধুরা হয়তো বাংলাদেশে আছে বিধায় প্রকৃত সত্য জানতে পারছে।কিন্তু যেসব পাকিস্তানী ছোট থেকেই ভুল ইতিহাস জেনে আসছে তাদের ক্ষেত্রে কী হবে? একটি রাষ্ট্রের জনগনের মতামতের প্রতিফলন ঘটে সে দেশের সরকারের কর্মকান্ডের মাধ্যমে।তাই নিঃসন্দেহে বলা যায় পাকিস্তানের বেশিরভাগ মানুষই এখনো জাতি হিসেবে আমাদের অস্তিত্ব অস্বীকার করে। আমরা যদি পাকিস্তানের ক্ষমা চাওয়ার ব্যাপারটা এখানেই ছেড়ে দিই তবে তারা নিজ থেকে কখনোই নিজ থেকে তাদের ভুল স্বীকার করবেনা।কেউই করেনা।যারা আমাদের ত্রিশ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ স্বীকার করেনা তাদের সাথে বন্ধুত্ব করতে আমার রুচিতে বাধে।
এখন আসি এই প্রশ্নে পাকিস্তান ক্রিকেট দলকে সমর্থন বাঙ্গালী হিসেবে কতটুকু যৌক্তিক ঃ
আজ একটি পোস্টে একটি মন্তব্য পড়লাম।মন্তব্যটি আমি তুলে দিচ্ছি ঃ
রাস্তা দিয়ে হেটে যাচ্ছি এক বন্ধুর সাথে … কথা হচ্ছে …
আমি ঃ আচ্ছা ক্রিকেটে এখন World Champion কে রে ?
বন্ধু ঃ কেন অস্ট্রেলিয়া
আমি ঃ অস্ট্রেলিয়া নাকি অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট টিম ???
বন্ধু ঃ একই তো কথা …
আমি ঃ কেন এক হবে কেন ? খেললো তো ওরা ১১ জন … বড়োজোর দলের ১৫ সদস্য আর কোচ ( যদিও অধিকাংশ কোচ অন্য দেশের হয়ে থাকে ) কে World Champion বলা যাতে পারে … তাই বলে পুরো অস্ট্রেলিয়াকে !!!!!!
বন্ধু ঃ আরে গাধা … এই যে বাংলাদেশের খেলা হচ্ছে তো ওরা কি শুধু ১১ জন খেলছে … আমরা … !!! ওরা খারাপ করলে আমরা ১৬ কোটি মানুষ হতাশায় ডুবি … ওরা ভালো করলে ১৬ কোটি মানুষ সারা দিন রাত উল্লাস করি … এই যে ওদের সমর্থন এর জন্য কত কিছু … কেন করি … কারণ ওদের সাথেই জরিয়ে আছে আমাদের সবকিছু … ওদের হাতেই আজ বাংলাদেশের পতাকা … ওরা বাংলাদেশ কে তুলে ধরছে সারা বিশ্ব এর কাছে …
আমি ঃ তাই নাকি !!! আচ্ছা বন্ধু তাহলে অন্য দেশ গুলোও নিশ্চয় ওদের দেশ কে তুলে ধরার জন্য খেলে ???
বন্ধু ঃ তুই যে এতো গাধা আগে জানতাম না … শোন যে কোন খেলায় দেশ ভিত্তিতে কেন এসেছে জানিস ??? ঐ দেশকে সারা পৃথিবীর সামনে তুলে ধরার জন্য … তাহলে তো শুধু একা একা খেললেই পারতো তাই না … আর আজকের যত নামি দামি খেলা যেমন ঃ ফুটবল , ক্রিকেট এসব খেলা যে কিভাবে একটা দেশকে সারা বিশ্বের কাছে নিজের দেশ কে রিপ্রেজেন্ট করে চিন্তাও করা যাই না … এই যেমন ধর পৃথিবীর মানুষ কি বাংলাদেশ কে চিনতো … এই ক্রিকেট দিয়েই তো চিনল …
আমি ঃ হুম তাহলে ক্রিকেট শুধু ঐ ১৫ কে না পুরো জাতি বা দেশকেই তুলে ধরে … ??? আজ যদি বাংলাদেশ বিশ্বকাপ জেতে তাহলে ওরা শুধু ১৫ জন ই বিশ্বকাপ জিতবে না … জিতবে পুরো জাতি … পুরো বাংলাদেশ …!!!
বন্ধু ঃ অবশ্যই …
আমি ঃ আচ্ছা বন্ধু তোমার কি মনে হই না ৭১ এর জন্য পাকিস্তানের ক্ষমা চাওয়া উচিত ???
বন্ধু ঃ হঠাৎ এ প্রসঙ্গ ??? উচিত তো … ওরা যা করেছে তা তো যুদ্ধ নয় গণহত্যা … নির্মম পাষণ্ড গন হত্যা … ওদের এই গণহত্যা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল নিকৃষ্ট ঘৃন্যতম অপরাধ …
আমি ঃ তাহলে যে তুমি ক্রিকেটে পাকিস্তান কে সমর্থন কর !!! আজ না পাকিস্তান নিয়ে কত লাফালাফি করলে !!!
বন্ধু ঃ আরে ওটা তো ক্রিকেট … ক্রিকেটে সমর্থন করলেই কি পাকিস্তানকে সমর্থন করা হই নাকি ???
আমি ঃ কেন তুমি যে বললে ক্রিকেট শুধু ১১ জন এর খেলা না … পুরো জাতির খেলা … ক্রিকেট রিপ্রেজেন্ট করে পুরো জাতি কেই ??? বাংলাদেশ ক্রিকেট দল বিশ্বকাপ জিতলে তা হবে বাংলাদেশের জয় ??? ??? ??? ???
এই মন্তব্যটি এখান থেকে নেওয়া
Click This Link
এখন বলুন পাকিস্তান রাষ্ট্রকে প্রতিনিধিত্ব করে এমন কোন দলকে আমি কীভাবে সমর্থন করি?যেই রাষ্ট্র আমাদের নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিল পৃথিবীর বুক থেকে এবং তার জন্য তারা বিন্দু মাত্রও অনুতপ্ত নয়?
তারমানে এই নয় যে আমি বলছি সব পাকিস্তানীকে ঘৃণা করতে।একজন ব্যক্তি পাকিস্তানীর সাথে আমার কোন বিরোধ নেয় যতক্ষণ পর্যন্ত সে আমাদের দেশের স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল।আমার সব আক্ষেপ,ক্ষোভ পাকিস্তান সরকার,রাষ্ট্রের প্রতি।পাকিস্তানের নাগরিক প্রতি নয়।
অনেকেই আবার তাদের পাকিপ্রেম জাস্টিফাই করতে গিয়ে বলেন তাহলে কেন বাংলাদেশ পাকিস্তানের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করছে এখনো।
ধরুন আপনার প্রতিবেশী খুব খারাপ একজন মানুষ। আপনার অবর্তমানে সে আপনার ঘরে এসে ভাংচুর করে গেল।এখন একজন সুশীল এবং সুনাগরিক হিসেবে আপনি তার উপর কোন প্রতিশোধ নিলেন না।কিন্তু ধরুন বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে আপনার সাথে তার দেখা হয়ে গেল।এখন আপনিই বলুন আপনি কী করবেন?তার জন্য কি আপনি নিজে আপনার সামাজিকতা ত্যাগ করবেন?অথবা আপনার সবকিছু ঠিক রেখে ভদ্রভাবে যতটুকু পারা যায় তার প্রতিবাদ করবেন?
অতীত নিয়ে কথা বলতে আজকাল অনেকেই অপ্রস্তুত বোধ করেন।কিন্তু আমার মতে আমার অতীত আমার অহংকার,আমার অস্তিত্ব।আর কিছু না থাকা আমাদের গর্ব করার মত একটি ইতিহাস রয়েছে।আমি চাই না এই অতীত আমরা ভুলে গিয়ে আস্তাকুড়ে ছুড়ে ফেলে দিই।আজ না হোক কাল আমাদের শহীদরা তাদের স্বীকৃতি পাবেই।যতদিন না পায় ততদিন আমি পাকিস্তানী ফ্ল্যাগের প্রতি ঘৃণা করেই যাব।