সাংস্কৃতিক আগ্রাসনে নতুন মাত্রা :
ওয়ারিদের যাত্রা শুরু পহেলা বৈশাখে এদেশের সংস্কৃতি এবং লৌকিকতা তুলে ধরে চিত্রায়িত বাপ্পা মজুমদারের সালাম বাংলাদেশ গানের মাধ্যমে।কিন্তু সেদিক থেকে বিবেচনা করলে এয়ারটেলের প্রথম বিজ্ঞাপনটি আমাদের সংস্কৃতির সাথে সামঞ্জস্যতাপূর্ণ নয়ই বরঞ্চ বিজ্ঞাপনটি দেখে ধারনা করা যায় এটি ভারতে চিত্রায়িত এবং ভারতীয় মডেলদ্বারা অভিনীতও বটে ।ইউনিলিভারের কল্যাণে আমরা ইতিমধ্যেই আমাদের দেশীয় চ্যানেলে ভারতীয় নায়ক নায়িকাদের পশ্চাৎদেশ দেখার সৌভাগ্য অর্জন করেছি ।শাহরুখ খানের পদধুলির সুবাদে ডেসটিন এর চ্যানেল বৈশাখী একমাস অনবরত হিন্দী গানের আসর বসিয়েছিল।এখন সেই যাত্রায় নতুন মাত্রা যোগ করতে এলো এয়ারটেল।আমরা জানি আমাদের চ্যানেলগুলোর আয়ের সিংহভাগই আসে টেলিকম সেক্টরের বিজ্ঞাপন থেকে।তাই এসব বিজ্ঞাপন আমাদের সমাজের সাথে যাক বা না যাক এই নিয়ে তাদের কোন মাথা ব্যথা বোধ করি নেই।নীচে দেখুন এয়ারটেলের নতুন বিজ্ঞাপনটি।
শুধু ভারতীয় মডেল দ্বারা বিজ্ঞাপন দিয়েই তারা ক্ষান্ত থাকেনি তাদের লঞ্চিং বোনাঞ্জার প্রথম পুরস্কার হিসেবে তারা রেখেছে বলিউডের সেলিব্রেটী জুটি সাইফ এবং কারিনার সাথে ডিনারএর সুযোগ।সাইফ এবং কারিনা আমাদের আম জনতার কাছে ম্যরাডোনা পেলে বা শচীন টেন্ডুলকারের মত জনপ্রিয় কেউ নন যে তাদের সাথে ডিনার এমন ঘটা করে বিজ্ঞাপন দিতে হবে।পুরো ব্যাপারটাকে আমার যথেষ্ট আপত্তিকরই মনে হলো।ভারাতীয় সাংস্কৃতিক আগ্রাসন বাদে অন্যকোনভাবে ব্যাপারটিকে নিতে পারলাম না।
আমার প্রশ্ন হল আমাদের সংস্কৃতিকে না ভালবেসে,আপন না করে তারা কি পারবে আমাদের ভালাবসায় সিক্ত হতে?
৩০০ মিলিয়ন নতুন বিনিয়োগ।টেলকম খাতে নতুন চাকরী সৃষ্টি নাকি টেলকম খাতকে ভারতীকরন?
প্রথমেই স্বীকার করে নিতে হয় এই ব্যাপারে আমার ধারনা নিতান্তই অল্প।টেলকোর ভাইরা এই ব্যাপারে বিশদ বলতে পারবেন।আপাতদৃষ্টিতে যেটি মনে হচ্ছে আইবিএম ইন্ডিয়া যেহেতু ভারতী এয়ারটেলকে আইটি সাপোর্ট দিয়ে থেকে সে থেকে ধারনা করা যায় বাংলাদেশেও এর ব্যতিক্রম হবেনা।ওয়ারিদকে সাপোর্ট দিতো মধ্যপ্রাচ্য ভিত্তিক কোম্পানি আইটিএস এবং ওয়ারিদে তাদের বাংলাদেশি রিক্রুটও ছিল অনেক।এখন সেইসব বাংলাদেশীদের পরিবর্তে ভারতীয় ইঞ্জিনিয়াররাই এয়ারটেলের আইটি নিয়ন্ত্রণ করবে তা বলাই বাহুল্য।তবে নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের কারণে অনেক নতুন জব ক্রিয়েট হবে তা সত্য।
একমাত্র লাভ : স্বল্প খরচে উন্নতমানের টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদান।
উন্নত গ্রাহক সেবা,কম কল চার্জ বিবিধ কারণে ভারতী এয়ারটেল আজ বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অপারেটরে পরিণত হয়েছে। শুধু টেলকমই নয় তারা ব্রডব্যান্ড,ডিজিটাল টিভি ইত্যাদি সেবাও তারা দিয়ে আসছে ভারতে।বাংলাদেশেও তাদের লক্ষ্য অতিদ্রুত থ্রীজি নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ।গ্রাহকের কাছে তাদের কমিটমেন্ট অনুযায়ী আশা করি তারা এদেশের টেলিযোগাযোগ খাতকে এগিয়ে নিয়ে যাবে এবং গ্রামীণ এর একচ্ছত্র আধিপত্যের অবসান ঘটাবে।তবে আমাদের সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে তারা তাদের মার্কেটিং পলেসী ঠিক করবেন এই কামনা করি।
নতুন যাত্রায় এয়ারটেলের প্রতি রইলো শুভকামনা।
আপডেট : সম্প্রতি এয়ারটেল থেকে প্রতিদিন দুটি করে এসএমএস দেওয়া হচ্ছে বলিউড ওয়ালপেপার ডাউনলোডের।এই ব্যাপারে তাদের কাস্টমার কেয়ারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান তারা ভবিষ্যতে এসএমএস কন্টেন্ট বাংলাদেশের সংস্কৃতির সাথে মানানসই করে পাঠানোর চেষ্টা করবেন।