একাকীত্ব অনুভব হলেই তাকে মনে পড়ে, যে তাকে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিয়েছিল। কিন্তু যখন ব্যস্ততায় কাটে সময় তখন ভুলেও মনে পড়ে না। এমন কেন হয়! ইচ্ছে হলেই তো ২৪ ঘন্টায় ২৪ সেকেন্ড বের করা যায় ভালোবাসার মানুষের জন্য! কিন্তু এমনটা হয় না সাধারণত, অজুহাত থাকে অনেক, সময় না দেওয়ার। এটা একটা বদলে যাওয়ার গল্প, যা খুব ই স্বাভাবিক ঘটনা।
কোথায় যেন শুনেছিলাম, তীব্র প্রেম বা ভালোবাসা, অস্থিরতা, পাগলামি এসব ৩-৪ মাস স্হায়ী কাল। তারপর একটু একটু করে বিষয়গুলো স্বাভাবিক মাত্রায় চলে আসে। আর ঠিক তখন ই মনে হয় অপর মানুষটি বদলে গেছে! আসলে কি বদলে যায় নাকি এটাই সময়ের চাহিদা? আজও বুঝে উঠতে পারলাম না!
আমার কাছে মনে হয় কি, একটা সম্পর্কের শুরুটা অনেক পাগলামি দিয়েই হয়, কিন্তু দিন যতই যেতে থাকে ততই বিষয়গুলো একঘেয়েমি চলে আসে। যেমন- প্রথম প্রথম ফোন দিয়ে জানতে চাওয়া হয়, কি করো? সেই সময়টাতে সে যা করে তাই উত্তর আসে। কয়েকদিন পরপর একই সময়ে একই প্রশ্নে একই উত্তর আসে তখন আর ওই প্রশ্ন টাহ করতে ইচ্ছে করে না। কারণ ততদিনে অলরেডি জানা হয়ে গেছে সে সেই সময় কি করে! তাই ফোন বা মেসেজিং করারও সময় বা কারণ টা পরিবর্তন হয়ে যায়। কথা কম হয়, মেসেজিং কম হয়, অনুভূতি গুলো কম শেয়ার করা হয়। ঠিক তখন মনে হয়, মানুষটি বদলে গেছে! শুরু হয় অবহেলিত হওয়ার কষ্ট টা! কিন্তু আমরা জানি, এটা খুব স্বাভাবিক ঘটনা, তবুও মন কেন বুঝে না! এটা একটা আবেগী কথাবার্তা অনেকেই বলবে। কিন্তু আমরা কি কেউ আবেগের বাইরে আছি?
আর এটা শুধু প্রেমিক প্রেমিকার ক্ষেত্রেই একমাত্র প্রযোজ্য তা কিন্তু নয়! এটা আমাদের সব সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। যেমন- একটা সন্তান গর্ভে আসা থেকে শুরু করে জন্মের কয়েক বছর একজন মা তার সবটুকু দিয়ে তাকে ভালোবাসে, যত্ন করে, লালন পালন করেন। কিন্তু যখন সেই সন্তান একটা সময়ের পরে মা বাবার থেকে ধীরে ধীরে গুটিয়ে নিয়ে নিজে নিজে চলতে শিখে যায়, তখন কেমন যেন আফসোস কাজ করে! এটাই কিন্তু খুব স্বাভাবিক ঘটনা। বিয়ের শুরুর দিনগুলো আর তার ১০ বছর পরের দিনগুলো কিন্তু সম্পূর্ণ আলাদা। পাশাপাশি দুটি মানুষ থেকেও দায়িত্বের ভারে যোজন যোজন দূরে চলে যায় মনের ভাব প্রকাশের ক্ষেত্রে! অনুভূতিগুলো বদলে যায় সময়ের সাথে সাথে।
যেহেতু আমরা মানুষ, আবেগ থাকবেই। যারা বলে আবেগ দিয়ে জীবন চলে না, আসলে তারা মিথ্যা বলে। কারণ আবেগ, বিবেক এই দুইয়ের সমন্বয়েই আমরা মানুষ। কিন্তু আবেগ বা বিবেক যাইহোক না কেনো কোনটাই অতিরিক্ত ভালো না, সেটাই মূলকথা! আরেকটা কথা, বিবেক বিবেচনা করে হয়তো যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়, কিন্তু কারো মায়ায় পড়তে, ভালোবাসতে বিবেক কাজ করে না, তখন আবেগটা মাথাচাড়া দিয়ে উঠে। বিবেক দিয়ে হয়তো তার থেকে দূরে থাকা যায় কিন্তু ভালোবাসা টাহ কমে না!
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই মার্চ, ২০২০ সকাল ৯:২৯