রাষ্ট্রীয়ভাবে এই দেশটির নাম হচ্ছে "কিংডম অফ থাইল্যান্ড" বা থাই রাজ্য। পূর্বে এই দেশের নাম ছিল "সিয়াম বা শ্যাম দেশ"। উত্তর-পূর্ব এশিয়ার ইনডো-চাইনিজ উপদ্বীপের একটি দেশ। এই দেশটিতে ৭৬ টি প্রদেশ রয়েছে। পৃথিবীর ৫০ তম বৃহত্তম দেশ এবং ২২ তম জনবহুল দেশ। রাজধানীর নাম হচ্ছে ব্যাংকক। যা "চাও পেরায়া" নদীর তীরে অবস্থিত।
থাইল্যান্ড কে বলা হয় "মুক্তভূমি"। অর্থাৎ এই দেশটি অতীতে কখনো উপনিবেশ গড়ে ওঠেনি। বিখ্যাত "চাকরি সাম্রাজ্য"সহ অতীতে বিভিন্ন ধরনের সাম্রাজ্য এই দেশে গড়ে উঠেছিল।
থাইল্যান্ডকে "সাদা হাতির দেশ" বলা হয়। মূলত সাদা হাতি হচ্ছে থাইল্যান্ডের রয়েল ক্ষমতার প্রতীক। হাতি হচ্ছে এই দেশের জাতীয় প্রতীক।
সাক্ষরতার হার এখানে শতকরা ৯৫ ভাগ। থাইল্যান্ডের মুদ্রার নাম "বাত"।
"সুবর্ণভূমি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর" থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে অবস্থিত।
এই দেশের অফিসিয়াল ভাষা এবং জাতীয়তা হচ্ছে "থাই"। জনসংখ্যা প্রায় ৯৫% মানুষ বৌদ্ধ ধর্মালম্বী এবং ৪ শতাংশ মুসলিম।
দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদীয় পদ্ধতিতে এই দেশটিতে পরিচালিত হয়। তবে এখানে সাংবিধানিক রাজতন্ত্র বিদ্যমান। বর্তমান রাজার নাম হচ্ছে মহা ভাজিরালংকর্ন। রাজাদের "রামা" বলা হয়।
মধ্যম আয়ের দেশের ভিতরে এই দেশটি বহুদিন সামরিক একনায়ক জান্তার অধীনে পরিচালিত হয়ে আসছে। অর্থাৎ বেশ কয়েকটি সামরিক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যায়। দেশটি গত ৮৩ বছরের ভিতরে ৫৫ বছর সামরিক কর্তাদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়ে আসছে ।বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর ও পুলিশ প্রধান এর নাম "চাঁদ-ও-চা"। যিনি একজন সামরিক স্বৈরশাসক।
থাকসিন সিনাওয়াত্রা এবং ইংলাক সিনাওয়াত্রা এই দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।
তবে বর্তমানে থাইল্যান্ডকে নতুন শিল্পায়িত দেশের অর্থনীতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হচ্ছে থাইল্যান্ড। এই দেশটিতে বেকারত্বের হার (১.২%) খুবই কম।
এর প্রধানতম সমুদ্র বন্দরের নাম হচ্ছে "ল্যাম চাবাং"
পাতায়া হচ্ছে থাইল্যান্ডের একটি রিসোর্ট শহর যা রাজধানী ব্যাংকক থেকে 100 কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত এবং এটি থাইল্যান্ড উপসাগরের তীরে অবস্থিত। পাতায়া ভ্রমণকারীদের জন্য খুব প্রসিদ্ধ এক গন্তব্য স্থল। মূলত, সস্তা পতিতা শিল্প এবং রাতে জীবনের জন্য খুব বিখ্যাত। হোস্ট বার, গোগো বার এবং শরীর মেসেজ পার্লার এখানকার বিখ্যাত। যা "ওয়াকিং স্ট্রীট" ঘিরে তৈরি হয়েছে।
ট্যুরিজম থাইল্যান্ডের অর্থনীতিতে বড় একটি অবদান রেখে আসছে। মোট দেশজ উৎপাদনের ১৮% যোগান দেয় এই ট্যুরিজম সেক্টর। থাইল্যান্ডের ট্যুরিজম কর্তৃপক্ষের স্লোগান হচ্ছে "অ্যামেইজিং থাইল্যান্ড"!
"পুকেট" হচ্ছে আন্দামান সাগরের পাশে একটি দ্বীপ যেখানে প্রচুর ভ্রমণকারী সমাগম হয়ে থাকে। পিপি দ্বীপ এবং নানান ধরনের বুদ্ধ মন্দির এখানে ভ্রমণকারীদের গন্তব্য স্থান.
১৯৯৭ সালে এশিয়ান অর্থনৈতিক সংকট সঙ্কটে থাইল্যান্ডের অর্থনৈতিক উন্নতি দারুণভাবে বাধাগ্রস্ত হয়েছিল। উল্লেখ্য যে এই সংকটে থাইল্যান্ড মালয়েশিয়া ইন্দোনেশিয়া এবং দক্ষিণ কোরিয়া দারুণভাবে আক্রান্ত হয়েছিল।
এই দেশটি "আশিয়ান" এবং ওপেকের (এশিয়া প্যাসিফিক ইকোনমিক কোঅপারেশন) এর সদস্য।
থাইল্যান্ড প্রচুর পরিমাণে ধান উৎপাদন করে থাকে। চাল রপ্তানিতে বিশ্বে ভারতের পরে থাইল্যান্ড এর অবস্থান।
গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গেল থাইল্যান্ডে অবস্থিত। মূলত থাইল্যান্ড, মায়ানমার ও লাওস এর কিছু অঞ্চল মাদক উৎপাদন ও চোরাচালানের জন্য গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গেল বলা হয়। অন্যদিকে, গোল্ডেন ক্রিসেন্ট (আফিম উৎপাদন) আফগানিস্থানে অবস্থিত।
বিশ্বব্যাপী থাই রন্ধনশিল্প বিশেষভাবে সুনাম করেছে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় থাইল্যান্ড জাপানের পক্ষ নেয়, তবে যুদ্ধের পরবর্তী সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র পরিণত হয়!
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৪:৩৭