আমার এক বন্ধুর কোন সন্তান হচ্ছে না । ওর বাসায় যখন যাই, সারাটা ঘর সুনসান নীরব । সেদিন কথায় কথায় জানলাম, নীরবতা যখন অসহ্য লাগে তখন টিভিতে ইউটিউবে বাচ্চাদের দুষ্টুমি ছেড়ে একটু হালকা হয় ।
প্রাইভেট চাকরিতে প্যারা অনেক বেশী । এত বেশী যে কেউ একবারও বলে না, ভাল আছি । ‘এই চাকরি মাইনষে করে, জীবনডা শেষ’ এরকম কত শত আফসোস ।
অথচ এই রকম একটা চাকরি কত শত বেকারের কত বড় স্বপ্ন !
আমাদের আফসোস পেঁয়াজ নাই !
শুধু খাদ্যের অভাবেই ইয়েমেনে প্রতি চার ঘন্টায় মারা যাচ্ছে একটি করে শিশু ।
‘এই বেতনে চলে না’ । ‘কোন রকম বেঁচে আছি’ ।
আর এই কোন রকমেই বেঁচে থাকতে চায় কত যে মানুষ ।
ঋণে জর্জরিত মানুষটা মানিব্যাগের দশ টাকার নোটটা ভাঙতে গিয়েও ভাঙে না ।
পৃথিবীতে সবচে বেশী অসহায় তারা, লোক লজ্জার ভয়ে যারা হাত পাতে না । না খেয়ে মরবে তবু ভিক্ষে করবে না । আমাদের আঁশে পাশেই আছে এরা ।
ছোট্ট বাসা নিয়ে আমাদের খুব আফসোস ! সিরিয়ার একটা ফিচার পড়লাম সেদিন । হাজার হাজার মানুষ খোলা আকাশের নীচে রাত দিন । এক সময়ের সচ্ছল ছ’জনের একটা পরিবার যুদ্ধ বিধ্বস্ত একটা মাইক্রোবাসে বছর কাটাচ্ছে ।
যদি আমি হাসতে পারি । তবে জানা উচিত ঠোঁট মেলে শেষ কবে হেসেছিল এমন মানুষও গুনে শেষ করা যাবে না এ দুনিয়ায় ।
চেয়ারে বসে নামাজ পড়া এক বৃদ্ধকে একদিন খুব কাঁদতে দেখলাম । তার আফসোস সে সিজদা দিতে পারে না । আমরা যারা সিজদা দিতে পারি তারা যদি বৃদ্ধের কষ্টটা বুঝতাম তবে সিজদা থেকে সহজে মাথা উঠাতাম না ।
শুধু স্ট্যাটাস বাড়াতে সব সন্তান বিদেশ পাঠিয়ে এখন ঔষধ কিনে দেয়ার লোকও নাই । সেদিন জানলাম একটা অনলাইন মেডিসিন সপ দাঁড়িয়েছে, যারা এমন ফ্যামিলিগুলোর পাশে আছে সব সময় ।
সন্তান বিদেশ না পাঠাতে পারা দু:খিত মানুষগুলো এই খবরের খোঁজ রাখে না ।
এই খবর কেন রাখবে ?
আসলে আমাদের না পাওয়ার লিস্টটা খুব বড় ।
অথচ কি পেয়েছি সে লিস্টটা যে আরো বড়- এ খবরটা অজানা ।
।। আলহামদুলিল্লাহ ।।
সংগৃহীত
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৩:২৩