অনাকাংখিত ঘটনার কথা সম্প্রতি আপনারা জানেন একটি অনাকাংখিত ঘটনার কথা । সেটি হলো দৈনিক জনকন্ঠ সামহোয়্যার ইন ব্লগে প্রকাশিত আমার একটি লেখা হুবুহু কপি পেস্ট করে গত ২৯-১১-২০১১ ইং তারিখে তাদের চতুরঙ্গ বিভাগে ছাপিয়েছিলো। এই বিষয়ে আমি জনকন্ঠের চতুরঙ্গ বিভাগের সম্পাদক দুলাল আচার্য্য, পত্রিকার সম্পাদক তোয়াব খান, নির্বাহী সম্পাদক স্বদেশ রায়ের সাথে আলাদা আলাদা ভাবে কথা বলি। এই তিন জন সম্পাদককে আমি আমার অভিযোগ প্রথমে টেলিফোনে জানাই এবং এর অনুরোধ করি যেন তারা আমার চুরি হয়ে যাওয়া লেখাটি তাদের পত্রিকার পাতা থেকে সরিয়ে ফেলেন কিংবা আমার নাম দিয়ে প্রকাশ করেন এবং সেই সাথে তাদের এই কৃতকর্মের জন্য পত্রিকাতেই ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
আমার উপরের সকল অনুরোধের প্রেক্ষিতে তারা সচিবালয়ের ফাইল চালা-চালির মত আমাকে এক অপারেটর থেকে আরেক অপারেটরে ঘুরাতে থাকেন এবং দুই মিনিট পর পর-ই টেলিফোনের লাইন কেটে দিতে থাকেন। লন্ডন থেকে ফোন করা, বাংলাদেশের সময় অনুযায়ী ফোন করা এবং দুই মিনিট পর পর লাইন কেটে দেয়া, সব কিছু মিলিয়ে আমাকে একটা ভালো রকমের হেনস্থাই করা হয়। কিন্তু সবকিছুর পরেও যখন আমি ভদ্রভাবে আমার অভিযোগটি সম্পাদক তোয়াব খানের কাছে ফাইনালি জানাই, তিনি আমাকে বলেন, আমি যেন আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে আমার সকল অভিযোগ তথ্য ও উপাত্ত দিয়ে জানাই। আমি তার কথা মত জনকন্ঠের পত্রিকার নীচে দেয়া দুইটি ইমেইলেই জানাই এবং কিছুক্ষন পর জনকন্ঠের নিজস্ব ইমেইল ঠিকানা থেকে আমার ই-মেইল্টি ফেরত আসে কেননা এই ইমেইল ঠিকানাটি এখন অকার্যকর। কিন্তু জি মেইল ঠিকানার ই মেইল টিতে আমার অভিযোগ যায় এবং একটি কনফারমেশনও আমি পাই সাথে সাথে।
এই ঘটনার কিছু আগে জনকন্ঠের আরেকজন নির্বাহী সম্পাদক জনাব স্বদেশ রায় আমার সাথে অত্যান্ত খারাপ আচরণ করেন এবং আমাকে বাংলাদেশের কপিরাইট আইন বুঝাবার বেদম চেষ্টা চালাতে থাকেন এবং বলেন, জনকন্ঠ কোনোভাবেই অন্যের জালিয়াতিতে বা প্লেইজারিজমে দায়ী নয় ও দায়ী হতে পারে না। তিনি এও বলেন, এসব হাজার হাজার ব্লগ আবার কে পড়ে? এগুলো খুঁজে দেখবে কে, আমাদের কি আর কোনো কাজ নেই? একজন সম্মানিত প্রফেসর মানুষ, যিনি আমাদের নিয়মিত লেখক, আমরা তাকে তো বিশ্বাস করবই।
এক পর্যায়ে আমি তাকে পরিচয় দেই একজন আইনজীবি হিসেবে এবং তাকে জানাই যে, কপিরাইট বিষয়ক আপনার কথা গুলো আইনের দৃষ্টিতে হাস্যকর এবং এই ব্যাপারে না যেনে এভাবে কমন্সেন্স থেকে কথা বলাটা একেবারেই ঠিক না। আর তাছাড়া আপনি ব্লগকে যেভাবে তাচ্ছিল্য করে কথা বলছেন, অথচ ব্লগ থেকেই লেখা চুরি করে ছাপাচ্ছেন এতে করে আপনাদের শাস্তি হওয়া উচিৎ।
আমার এই কথার পর তিনি প্রচন্ড ক্ষিপ্ত হয়ে যান এবং এক পর্যায়ে তোতলাতে তোতলাতে ইংরেজী ও বাংলা মিশিয়ে এক আশ্চর্য ভাষায় তিনি কথা বলতে থাকেন। আমি এই পর্যায়ে তাকে অনুরোধ করি যে, আপনি ভুল ইংরেজীতে কথা না বলে বরং বাংলায় কথা বলুন। আমি আপনার কথা বুঝতে পারছি না। ঠিক এই সময় তিনি ফোন রেখে দেন।
এরপরেও আমি কয়েকবার কথা বলবার চেষ্টা করেছি। কিন্তু, আমার নাম শোনামাত্রই তারা সবাই ফোন কেটে দেন।
ভদ্র ও ভালোভাবে ব্যাপারটাকে মিউচুয়াল করতে আমি চেয়েছিলাম। এবং এই অন্যায়টি যাতে করে আর কারো ক্ষেত্রেই কখনো না হয় সে চেষ্টাই করেছিলাম। কিন্তু বুঝাই যাচ্ছে যে জনকন্ঠ আমার বিরুদ্ধে সঙ্ঘটিত এই অন্যায়ের প্রতিকারের ব্যাপারে একেবারেই আগ্রহী নয়।
আর আমার লেখা মেরে দেয়া লেখকের সাথে বিভিন্ন ভাবে যোগাযোগের চেষ্টা করেছি। কিন্তু তাকে পাইনি কোথাও। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সোশিওলজি'র অধ্যাপক এবং ঢাকার পিপল'স ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর। এসব প্রতিষ্ঠানে টেলিফোন করেও তাকে পাইনি। সুতরাং তার কথা শুনবার সৌভাগ্য আমার হয়নি।
সব কিছু বিবেচনা করে আমি, দৈনিক জনকণ্ঠ এবং প্রফেসর মুহাম্মদ আসলাম ভুইয়ার বিরুদ্ধে আদালতে যাবার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
সামনের সপ্তাহে আইনগত সকল কাগজ-পত্র তৈরীর কাজ শুরু হবে এবং অভিযুক্ত ব্যাক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে আইনি নোটিস পাঠানো হবে বলে আশা করছি। এরি মধ্যে সামহোয়্যার ইন ব্লগকে আমার পক্ষ থেকে অনুরোধ করেছি যে এই আইনী প্রক্রিয়ায় তারা যেন আমাকে সহযোগিতা করেন।
আর ব্লগার, আপ্নারা তো আমার সাথেই আছেন এবং ছিলেন। আমি এই শক্তিতেই মূলত এই অন্যাইয়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছি। আশা করি আপনাদের সহযোগিতা আমি সব সময়ই পাব আগের মতন।