কালকে সামুতে জাফর ইকবাল স্যারের মেয়ে ইয়েশিম কে নিয়ে অনেকগুলো পোস্ট দেখলাম। যারা যারা পোস্ট দিয়েছে তারা আবার বেশ কায়দা করে একটা আলাদা ওয়েবসাইটে সেসব ছবি আপ্লোড করে সেগুলোর নীচে নানবিধ প্রশ্ন জুড়ে দিয়েছে। যেমন-
১) স্যার নিজে বাঙালিত্ব নিয়ে কথা বলে, তবে মেয়ের এই হাল কেন?
২) নিজের মেয়েকে কি স্যার সামলে রাখতে পারে না?
৩) মেয়েটা অনেকগুলো ছেলের সাথে ছবি তুলেছে, এটা বাঙালিত্বের বিরোধী।
এই ধরনের অনেক প্রশ্ন। যেসব সাইটের লিঙ্ক গুলো ওইসব বিভিন্ন পোস্টের লেখকেরা দিয়েছিলেন তাতে করে সেখানে গিয়ে দেখলাম এলাহী কান্ড। উক্ত সাইটটি একটি ছাগু বই ডাউনলোডের সাইট এবং সেখানে গো। আজম ও মওদূদীর বইয়ে বইয়ে ধূল পরিমাণ। সুতরাং খুব সহজেই অনুমেয় যে, কিছু ছাগু পোনারা ধান্দায় ব্যাস্ত।
জাফর স্যারকে তুলোধুনা করবার চেষ্টা আজকে নতুন না। এর আগেও মেয়ের কাঁধে হাত রেখে নাচাতে জামাতে ইসলামী সহ সব রাজাকারের বাচ্চা কাচ্চা সহ সব ছাগু এক ধরনের মিলিত ধ্বনি করে ম্যাৎকার করেছিলো যা পরবর্তীতে ব্লগারদের লাত্থি, গুতা আর চড়ের মাধ্যমে ঠান্ডা হয়ে গিয়েছিলো। এবারো হয়ত সেটির ব্যাতিক্রম হবে না।
স্যারের মেয়ে বা ছেলে কোনো ছেলে বা মেয়ের সাথে ছবি তুল্ল, হাফ প্যান্ট পরে তুল্ল না জাইঙ্গা পরে তুল্ল এতে করে কোন চুদির ভাইয়ের কি সমস্যা? স্যারের মেয়ের বন্ধু ১০০ তা থাক কিংবা ৫০০ তা থাক এটা তার ব্যাক্তিগত ব্যাপার। এখানে কার সমস্যা কোথায়? দেশের বাইরে যারা পড়তে এসেছে তারা মাত্রই জানেন, বিশেষ করে পশ্চিমা দেশ গুলোতে যে এখানে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের ছেলে মেয়েরা পড়তে আসেন, একজন আরেক জনের সাথে পরিচিত হয়, বন্ধুত্ব হয়। সেরকম ইয়েশিমের সাথে ১০০ জনের বন্ধুত্ব্ব হতেই পারে, হতেই পারে এক বা একাধিক মানুষের সাথে তার সম্পর্ক। তাতে কার বাপের কি আসে যায়? এটা তার অধিকার এবং এটা তার ইচ্ছা। ইয়েশিমের বন্ধুত্ব্ব বা সম্পর্কের কারনে জবাব্দিহি জাফর স্যারকে করতে হবে কেন?
বাঙালী সংস্কৃতি মানে কে লাল পাড়েড় শাড়ী পড়ে কোনো রোমশ মোচালা লোকের উরুবন্দী হয়ে থাকা? পান আর চা হাতে স্বামীর আপ্যায়ন করা? বাঙালীত্ব দেখাতে গেলে তো আমাকে জিন্স আর টি শার্ট ছেড়ে ধুতি পরতে হবে এখন। কিংবা আমার বাপকে শার্ট ছেড়ে পাঞ্জাবী পরে থাকতে হবে ২৪ ঘন্টা। আসলে এই আইপড, ম্যাক, নিউ ক্লিয়ারের যুগে কি করে এমন অর্বাচীনের মত প্রশ্ন কিংবা অনুযোগ উত্থাপন করা যায়, সেটিই আমার মাথায় ঢোকে না। বাঙালীত্ব্ব কি পোষাকে থাকে? বাঙালীত্ব কি রয়েছে প্যান্টের চিপায়? নাকি শার্টের পকেটে? আমি এমনো কয়েকশ মানুষকে চিনি যারা জন্ম থেকেই অভিবাসী, এবং তাদের সব কিছুই পশ্চিমা শুধু তাদের বুকটি বাংলাদেশের। এটাই কি যথেষ্ঠ নয়? মুখে বাঙালিত্বের গান গেয়ে খুর দিয়ে রগ কাটতে গেলেই কি বাঙালি হওয়া যায়?
যেসব ছেলে পেলেরা এসব ছবি দিয়েছে, নিশ্চিত ভাবেই বলা যায় এদের সামাজিক গন্ডি অনেক ছোট। জীবনে হয়তবা গোলাম আজম, নিজামীর সমাবেশে তাদের কথা শুনবার জন্য খুর নিয়ে গিয়েছে কিংবা সেখান থেকে খুর নিয়ে বাসায় ফিরেছে। তা না হলে হয়ত সারা জীবন এদের শরীয়তি বাপের কারনে জোব্বার নীচে অনেক বছর গুজরান করেছে। সুতরাং হঠাৎ করে এসব ছবি দেখলে এদের খিদে চাগাড় দিয়ে উঠবেই এবং অসুস্থ ইতরের মত ইতরপনাও এরা জমিয়ে ফেলবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। খোঁজ নিলেই দেখা যাবে, এসব মওদূদীর চ্যালাদের বাপেরা একাত্তরে অসংখ্যা বাঙালী মা-বোন কে ধর্ষন করেছে কিংবা হত্যা করেছে।
আসলে কিছুই বল্বার নেই। যা আছে তা হচ্ছে ভয় পাবার। দেশের আনাচে কানাচে এমন অসুস্থ জামাতী পশুগুলো কেমন যেন আক্রোশ নিয়ে বসে আছে। যেন সুযোগ পেলেই খাবলে খাবে লাল সবুজের পতাকা কিংবা মানচিত্র। দেশে যেটুকু ভালো রয়েছে তার পুরোটাই এই ইতর প্রজাতীরা হামলে পড়ে শেষ করে ফেলতে চায়। এরা খুন করেছে হুমায়ুন আজাদকে, এরা খুন করেছে আমাদের মুক্ত চিন্তাকে, এরা খুন করেছে আমাদের স্বাধীনতাকে, এরা খুন করেছে একাত্তরে।
আর এদের পায়ু নিঃসৃত জারজেরা এখন প্রতিটি দিন, প্রতিটি মুহূর্তে খুন করতে চায় বাংলাদেশকে।