somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিহাইন্ড দ্যা সিন মেকিং নোবেল পিস প্রাইজ -মালালা ইউসুফজাই :P :P :P

১৩ ই অক্টোবর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



মাত্র ১১ বছর বয়সে বিদ্যালয় জীবন ও সমকালীন পরিস্থিতি নিয়ে ডায়রি লেখা শুরু করে মালালা। সোয়াত উপত্যকায় নিয়ন্ত্রণ কায়েম করে সে সময় মেয়েদের বিদ্যালয়ে যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে তালেবানরা। সোয়াতে তালেবানদের উত্থানের সময় বিবিসি উর্দু সার্ভিসে তার দিনলিপিটি প্রকাশ হতে থাকে। তার লিখিত দিনলিপি ‘লাইফ আন্ডার দি তালিবান’ প্রচারিত হওয়ার পর থেকেই ব্যাপক পরিচিতি পায় সে। জঙ্গিদের প্রতিহিংসা থেকে রক্ষা পেতে এ সময় গুল মাকাই ছদ্মনামে প্রকাশ হতো তার দিনলিপি। তালেবানরা সোয়াত থেকে বিতাড়িত হওয়ার পর প্রথম প্রকাশ্যে আসে মালালা।



আলফ্রেড নোবেল এর উইল অনুযায়ী এই "নোবেল পিস পুরস্কার পাবেন এমন কোনও ব্যক্তি বা সংগঠন, যিনি বা যারা বিবাদ নিরসন বা যুদ্ধমান দল ও দেশগুলির মধ্যে শান্তি আনবেন বা এমন কাজ করবেন যা দীর্ঘমেয়াদী শান্তি আনতে অবদান রাখবেন"।
কি এমন কাজ করলেন যার জন্য মালালা নোবেল পেল?

১. সে ২০০৮ থেকে ব্লগ লেখে, নিজের উৎসাহে স্বপ্রণোদিত হয়ে নয়, বাবার নির্দেশে, এবং বিবিসির পরিকল্পনায়।

২. ২০১২ তে নিজের নিরাপত্তার প্রতি মনোযোগী না হয়ে, ছদ্মনাম থেকে আত্মপ্রকাশ করার ফলে এবং মিডিয়াতে প্রচারণার কারনে তার পরিচয় প্রকাশিত হয়ে যায়, তাকে গুলিবিদ্ধ হতে হয়। তালেবানরা তাকে গুলি করে।

৩. ২০১৩ থেকে ২০১৪ এর ফেব্রুয়ারির মধ্যে সে মালালা ফান্ড নামে একটি তহবিল খোলে। সে, তার বাবা, এক পাকিস্তানি বংশোদ্ভুত নারী সাংবাদিক সিজা শহিদ এর যুগ্ম প্রতিষ্ঠাতা। মালালার বাবা কিন্তু বার্মিংহামে পাকিস্তান কনসুলেটের শিক্ষা অ্যাটাচি। এর সিইও হলেন ক্লিনটনের গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ ও বোনোর ওয়ান ক্যাম্পেইনের সাথে জড়িত সাবেক জাতিসংঘ কর্মকর্তা মেহান স্টোন। যার মূল কাজ বিপনণ। আর আছেন উপদেষ্টা হিসেবে সিএনএন এর সাবেক সাংবাদিক এসন জর্ডান ও আরেক জাতিসংঘ কর্মচারী পি জে কাজিক। এই মালালা তহবিল কাজ করে কেনিয়া, জর্ডান, পাকিস্তান ও নাইজেরিয়াতে।

মালালা তহবিল খোলা হয়েছিল ২০১২ সালের অক্টোবরের ১১ তারিখে, সে গুলিবিদ্ধ হবার মাত্র দু্ইদিন পরে। মেহান স্মিথ একসময় গুগলে কাজ করতেন। এসএমএস করে ১০ ডলার পাঠানোর আবেদন করে এর কাজ শুরু হয়েছিল। বলা হয়েছিল এটা নাকি মালালার শেষ ইচ্ছা। কেমন একটা রহস্যময় ব্যাপার নয় কি? যার নামে ফান্ড সে তখনও কোমায়, বাঁচে বা মরে ঠিক নাই। তার মানে মালালার নিজের এই তহবিল খোলার বিষয়ে সামান্যই অবদান। কেবল শেষ ইচ্ছা প্রকাশ ছাড়া। ইচ্ছা কিন্তু ছিল মালালা ফাউন্ডেশন করার। হয়ে গেল ফান্ড।

৪. সে একটা বই লিখে ফেলে আই অ্যাম মালালা নামে, যার কো রাইটার ক্রিস্টিনা ল্যাম্ব নামে একজন বৃটিশ সাংবাদিক। তার সব লেখাতেই কেন জানি সাথে আরেকজন থাকে। ব্লগ লিখত হাতে। টাইপ করত বিবিসির সাংবাদিক। বইটাও সঙ্গে লিখলেন ক্রিস্টিনা। প্রকাশিত হয় ৮ অক্টোবর ২০১৩ সালে। এই বইটিতে পাকিস্তান ও ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে অবমাননাকর বক্তব্য আছে বলে অভিযোগ করে পাকিস্তানের প্রাইভেট স্কুল অ্যাসোসিয়েশন তাদের সমিতির অন্তর্ভুক্ত স্কুলগুলিতে এটি নিষিদ্ধ বলে ঘোষণা করে।

৫. সে বড় বড় রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে দেখা করতে থাকে এবং জাতিসংঘে বক্তৃতা দেয় ১২ জুলাই ২০১৩।

৬. সে নাইজেরিয়াতে বোকো হারামের বিরুদ্ধে কথা বলে।

৭. সে সিরিয়া সীমান্তে গিয়ে ক্যামেরার সামনে একটি রিফিউজি শিশুকে কোলে করে সীমান্ত পার করিয়ে দেয়। যদিও গাজাতে অবরুদ্ধ ও নিহত শিশুদের বিষয়ে নিরব থাকে।

৮. সে বিভিন্ন সময়ে পাকিস্তানে নারী শিক্ষার বিষয়ে বক্তব্য দেয়।

৯. এরই মধ্যে সে সিতারা এ জুরাক, ন্যাশনাল ইয়ুথ প্রাইজ, মাদার তেরেসা পদক, রোম পুরস্কার , সিমন দ্য বুভোয়া পদক, ডোটি স্ট্রিট অ্যাডভোকেসি পদক, ফ্রেড ও অ্যানি জারভিস পদক, গ্লোবাল লিডারশিপ পদক, ক্লিন্টন পদক, ডক্টরেট, হার্ভার্ড ফাউন্ডেশন পদক, ওপেক উন্নয়ন পদক , শাখারভ পদক সহ ছোট বড় ২৮ টি পদক, ডিগ্রি ও সম্মাননা পায়। এটা কি একটু অস্বাভাবিক নয় যে পৃথিবীর প্রায় সব পদক দেওয়ার সংস্থাগুলি গত এক বছরে মালালা ছাড়া আর কাউকে খুঁজে পায়নি সারা পৃথিবীতে যাদের পদকের ক্ষেত্রগুলিতে যথেষ্ট অবদান আছে? পৃথিবীর ইতিহাসে মালালা ছাড়া আর কারও এক বছরে এত পুরস্কার পাবার কৃতিত্ব নেই। এজন্য তার নাম গিনেস বুকেও যেতে পারতো।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০৫
১০টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মপোলব্ধি......

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৫১

আত্মপোলব্ধি......

একটা বয়স পর্যন্ত অনিশ্চয়তার পর মানুষ তার জীবন সম্পর্কে মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যায়। এই বয়সটা হল পঁয়ত্রিশ এর আশেপাশে। মানব জন্মের সবকিছু যে অর্থহীন এবং সস্তা সেটা বোঝার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি !

লিখেছেন হাসানুর, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩২



হঠাৎ ইলিশ মাছ খেতে ইচ্ছে হল । সাথে সাথে জিভে ..জল... চলে এল । তার জন্য একটু সময়ের প্রয়োজন, এই ফাঁকে আমার জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প ক্ষমতায় আসছে এটা ১০০% নিশ্চিত। আমেরিকায় ইতিহাসে মহিলা প্রেসিডেন্ট হয়নি আর হবেও না।

লিখেছেন তানভির জুমার, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৩৩

আর এস এস সহ উগ্র হিন্দুদের লিখে দেওয়া কথা টুইট করেছে ট্রাম্প। হিন্দুদের ভোট-আর ইন্ডিয়ান লবিংএর জন্য ট্রাম্পের এই টুইট। যার সাথে সত্যতার কোন মিল নেই। ট্রাম্প আগেরবার ক্ষমতায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প জিতলে কঠোর মূল্য দিতে হবে ইউসুফ সরকারকে?

লিখেছেন রাজীব, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৪২

ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক মন্তব্যে বাংলাদেশের মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে। ৫ তারিখের নির্বাচনে ট্রাম্প জিতলে আরেকবার বাংলাদেশের মিষ্টির দোকান খালি হবে।

আমি এর পক্ষে বিপক্ষে কিছু না বললেও ডায়বেটিসের রুগী হিসেবে আমি সবসময়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×