"শেখ হাসিনাকে অভিনন্দনকারীদের অভিনন্দন":
-অবৈধ উপায়ে ক্ষমতা ধরে রাখা একনায়িকা শেখ হাসিনা'কে কিছু বিদেশী রাষ্ট্রপ্রধানেরা অভিনন্দন জানানোয় গণতন্ত্রকামী অনেক ভাই-বোন অল্প-বেশি মনোক্ষুন্ন।
আমার কেন মনটা ক্ষুন্ন হলো না, আমি সেটাই ভাবছিলাম।
সেটা বুঝতে অভিনন্দনদাতাদের তালিকাটা বিশ্লেষন করে দেখলাম দেখলাম।
প্রথমেই ভারত!
এই ভারত বঙ্গবন্ধু'কে হত্যার করে যেই খন্দকার মোশতাকের সরকার এসেছিল তাদেরও স্বীকৃতিস্বরুপ দুইদিনের ভেতরই অভিনন্দন জানিয়েছিল, সুতরাং এদের অভিনন্দনের মূল্য আপনিই যাচাই করুন। তাছাড়া প্রহসনের এই নির্বাচন নামক ঘটনাটা তো ভারতেরই অবদান, তাই শেখ হাসিনা নিজে যে ফোন করে ভারতকে অভিনন্দন জানায়নি, এটাই বাংলাদেশীদের ভাগ্য।
এর পর চীন!
চীন হলো বিশ্বের অন্যতম গণতন্ত্র বিরোধী শক্তি। ১৫০ কোটি মানুষকে গণতন্ত্র বঞ্চিত করে রাখছে অর্ধশতাব্দীর চেয়ে বেশি সময় ধরে, এরা শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানাবে না তো কি ফ্রান্স অভিনন্দন জানাবে? তাছাড়াও বিশ্বের যেখানেই স্বৈরাচার মাথাচাড়া দেয় চীন'কে তাদের পাশে পাওয়া যায়। মজার বিষয় হলো চীন এমনই এক শক্তি যেটা যখনই কোন স্বৈরাচারকে সমর্থন দেয় তার কিছুদিনের মধ্যেই তার পতন ঘটে।
এরপর রাশিয়া!
রাশিয়ার পুতিন হলো জনপ্রিয় স্বৈরশাষক, যে ২ বার প্রেসিডেন্ট থেকে, একটা রাশিয়ান এরশাদ ম্যানেজ করে আরো ৫ বছর একরকম সিএমএইচ'এ আটকে রেখে আবার প্রেসিডেন্ট হয়েছে। বঙ্গদেশে কোন নারী তাকে ফলো করছে দেখে সে যে শুধু অভিনন্দন জানিয়েছে, এটাই কমই! তার তো বাংলাদেশে এসে শেখ হাসিনার পিঠ চাপড়ে দিয়ে যাবার কথা।
এরপর ভিয়েতনাম-
ভিয়েতনাম হলো শেখ হাসিনার স্বপ্নের একদলীয় স্বৈরাচার শাষিত দেশ। শেখ হাসিনা বছর খানেক আগে সারা বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হবার সময় থেকেই বেলারুশ আর ভিয়েতনামের মত গণতান্ত্রিক বিশ্বে কুখ্যাতদের সাথে জোট বেঁধেছে। বিপদের দিনে ওরা বন্ধুত্বের দাবী রেখেছে
কম্বোডিয়া-
বেশি কিছু বলার নাই, শুধু এটুকুই বলি যে, বিখ্যাত মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এর সাউথ এশিয়ান ডাইরেক্টর ডেভিড রবার্টস কম্বোডিয়াকে ব্যাখ্যা করছেন এই বলে যে," "vaguely communist free-market state with a relatively authoritarian coalition ruling over a superficial democracy."
আর বেলারুশ!
হাসি থামাই আগে। বেলারুশ হলো ইউরোপের একমাত্র কুখ্যাত স্বৈরতন্ত্র। এক ব্যাক্তি ও এক দলের শাষন, এবং সে দেশের প্রেসিডেন্ট অনেক গণতান্ত্রিক দেশে ভ্রমনও করতে পারে না। আর মজার তথ্য হলো, আমার ধারনা শেখ হাসিনার সাথে বেলারুশের প্রেসিডেন্টের বন্ধুত্বে কিছুটা বিভ্রান্তজনিত কারন, শেখ হাসিনা নোবেল ভালবাসেন, আর বেলারুশের প্রেসিডেন্ট গতবছর শান্তিতে নোবেল জিতেছেন, তবে সেটা আসল নোবেল না, কটাক্ষমূলক 'ইগ নোবেল', বেলারুশ প্রেসিডেন্ট তার পুলিশবাহিনীর সাথে যৌথভাবে এটা পেয়েছে কারন সে আইন করে সভা-সমাবেশে তালি বাজানোয় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, এবং তার পুলিশ তালি বাজানোর অপরাধে এক হাত নেই এমন একজন'কে গ্রেপ্তার করেছে
----------------------
আমি ওদের পরিচয় দিলাম, তো এবার সিদ্ধান্ত আপনার, এসব অভিনন্দনগুলোকে কিভাবে দেখবেন! আমি তো বলি এসব অভিনন্দন জানিয়ে বাংলাদেশের ঘাড়ে চেপে বসা শেখ হাসিনা'র প্রকৃত রাজনৈতিক আদর্শ পরিষ্কার করায় অভিনন্দনকারীদের জনগণের তরফ থেকে অভিনন্দনসহ ধন্যবাদ জানানো উচিত!