কয়েকদিন যাবত জ্বর জ্বর লাগছিল। বিশেষ করে সকালবেলা, যা কিনা ঘুমের জন্য শ্রেষ্ট সময় বলে দীর্ঘকালব্যাপী আমার ধারণা, সেই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে কিনা পালা করে ঘুম ভেঙে যায়! আর এরপর জ্বর!!!
বুঝতেই পারিনি, এটা ভাইরাস ইনফেকশনের কারনে হচ্ছিল। ডাক্তারের সাথে কথা বলতে গিয়ে করলাম অন্তত ২ টা ভুল। এই যেমন এখানে টা লিখতে ট্যাঁ লিখে ফেলেছিলাম।
যাক, পয়লা ভুল হইল দুই পা না হেঁটে রিকশায় করে খানিক দুরের একটা ক্লিনিকে গিয়ে বের করলাম একজন এম. বি. বি. এস. ডাক্তার! মনে হল ভদ্রলোক চশমার ব্রিজে মোলায়েমভাবে তর্জনী আর বুড়া আঙুল বুলিয়ে কো-অর্ডিনেট ঠিক আছহে কি-না সেইটা নিশ্চিত হলেন।
পরিস্থিতির পূর্ণ ধারণা নিতে চাইলে ক্লাস টেনে (আমরা থাকতে) ইংরেজি ১ম পত্রের একটা গল্পে চলে যাইতে হবে। দুইটা ইঁদুর আর একটা বানরের মাপজোখ সংক্রান্ত ব্যাপার স্যাপার আছে ওটাতে।
ওই ইঁদুর বেটারা বানরের কাছে আসছিল কুড়িয়ে পাওয়া এক টুকরা রুটির ভাগাভাগি নিয়া! যতদূর মনে পড়ে ওই জজ বানর রুটির বড় খণ্ডটা পয়লা দুই টুকরা করে দেখায়। এরপরে মুখে কামড় মেরে পেটে খানিক চালান করে ব্যালান্স করার নাম করে আবার কামড় দেয়!
এইভাবে ক্রমাগত ব্যালেন্স প্রক্রিয়া দেখতে থাকার পর ইঁদুর বেটারা মরিয়া হয়ে ওঠে। এরপরে কি হয়েছিল আশা করি বাকিটা জানেনই! আমি ডাক্তার সাহেবের সামনে ঐ ইঁদুর দুটির মতো পরিস্থিতি অনুভব করছিলাম!!
- তো, প্রসংগ থেকে চলে যাচ্ছি! ডোনাল্ড ট্রাম্প নিয়ে কিছু ভাবনা শেয়ার করব ভাবছিলাম! শুরুটা করলাম নিজের দুর্গতি নিয়া! তবে আপনি নিরাশ হবেন যে সে ভরসাও দিতে পারছি না! এর ঠিক উল্টোটাও না!
প্রথম দর্শনে আমার কাছে মনে হয়েছিল , প্রৌঢ় বয়সের ওই ডাক্তারের সামনে ১ সেকেন্ড দাঁড়ানো মানে রেলওয়ে স্টেশনে ১০ মিনিট দাঁড়ানোর সমান! তবে কিছুক্ষণ(!) পরে সেই যন্ত্রণা থেকে মুক্তিও পেয়ে গেলাম!
টেবিলে বাঁ হাতে চাটি মেরে বললেন “আরে মিয়াঃ আপনাদের নিয়া হইসে আমাদের এক্সট্রা জ্বালা!! সামান্য জ্বর এসে সকালবেলা ডিসটাপ করে আর হই হই করে চলে এলেন ডাক্তারের কাছে!”
আমার মনে হল- এরপরে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করবেন উনার কাছে একটা ব্যাঙ এসে সর্দি হয়েছে বলে অভিযোগ করে বসবে!! ডাক্তার হয়ে উনি বিরাট ভুল করে ফেলেছেন! এখন সে ভুলের প্রায়শ্চিত্য করছেন!
খানিকটা ক্ষুণ্ণমনে ক্লিনিক থেকে বের হয়ে আসলেও আমি মোটামুটি আশ্বস্ত হলাম! কিন্তু আসল ঘটনা ত ঘটল আরো কয়েকদিন পরে।
পক্স বের হওয়া শুরু হল। শরীরের নানান অংশে এই নাদান ভাইরাস আক্রমণ করতে শুরু করল!
এদিকে বাসার মালিক আমার সম্পর্কে দাদা হন। উনার কাছে এইসব গুটি দেখাতেই ডাক্তার দেখাতে তোড়জোড় শুরু করলেন। দাদা বললেন উপরে চারতলায় আলমগীর সাহেবকে দেখালেই চলবে।
কিন্তু পূর্বোক্ত অভিজ্ঞতার দরুণ আমি ইতস্ত করছিলাম দেখে দাদা প্রায় টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গেলেন উনার কাছে!
অবশ্য ভাগ্য ভালই ছিল আমার! উনি একেবারে ফল পাকিবার আগেই ফ্রি ট্রিটমেন্ট দিয়ে দিয়েছিলেন!!
এরপরের ঘটনা অবশ্য আশা করছি আর বলা লাগবে না।
এই পোস্টের নামকরণের পেছনের কারন যদি জানতে চান তাহলে শুনুন। ব্লগর ব্লগর এর মত করে আমিও কিছু একটা লিখতে চাচ্ছিলাম। এদিকে মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের মত আমিও খানিক খামখেয়ালি ক্রিয়েটিভ কি-না! তাই ব্লগর ব্লগর নাম না দিয়ে শুরু করলাম ত্লগর-ব্লগর (অন্যভাবে তর্জন-গর্জন)!!
অনেক্ষন নিজেকে নিয়ে বক বক করলাম! এখন দেশের দিকে নজর দিই! (অকালপক্ষ কি-না)
জাতীয় মাল সাহেবের কাছ থেকে ডঃ ইউনুসের খানিক কুকর্ম শুনার পর নেক্সট চ্যানেলে যেতেই দেখি মিরগা মাছ বলছেন- সার্চ কমিটি নিরপেক্ষ হয়নি! এর পরের চ্যানেলে দেখি ওবায়দুল সাহেব বলছেন উনার কাছে মনে হচ্ছে এই সার্চ কমিটি নিরপেক্ষ!
যাক, রাজনীতি নিয়া লিখতে গিয়ে আসল টপিকের কথা মনে হয়ে গেল। বসছিলাম ডোনাল্ড ট্রাম্প নিয়া কিছু মতামত/ভাবনা শেয়ার করমু। তো এবার পূর্বপরিকল্পিত টপিকে ফিরেই আসি!
মিঃ ট্রাম্প নিয়া বেশীরভাগ মিডিয়া, বেশীরভাগ পাবলিক সন্দিহান ছিল! কিন্তু ট্রাম্পকার্ড তার ভূমিকা নামেই না, কাজেও দেখিয়ে ছাড়ল! অথচ দেখুন, এই লোকটারে নিয়া কি-না করা হইসিল এক সময়!!!
ট্রাম্প ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটা বড়সড় কান্ড ঘটিয়ে ফেলসে।
“A draft executive order seen by Reuters that Trump is expected to sign in the coming days would block the entry of refugees from war-torn Syria
suspend the entry of any immigrants from Muslim-majority Middle Eastern and African countries Syria, Sudan, Somalia, Iraq, Iran, Libya and Yemen while permanent rules are studied.”
বুঝতেই পারতেছেন, বাংলাদেশের যারা যারা ম্রিকা যায়া সুখে শান্তিতে বসবাস করার আশায় ছিলেন কিংবা অলরেডি অনেকেই সেখানে অবৈধ/বৈধভাবে বাস করছিলেন তাদের জন্য এইটা খুবই খারাপ খবর!!
এরমধ্যে ৭ দেশের ভিসা ব্যান করে দিয়েছেন এই নয়া প্রেসিডেন্ট! সংবাদ ব্যাবসায়ীদের অবশ্য এখন খবর তৈরির জন্য আর বেশি করে কষ্ট না করলেও চলবে সেটা বুঝা যাচ্ছে ঢের!
ডোনাল্ডের নেয়া সিদ্বান্তগুলো বেশ বড়সড়ই! বিশেষ করে ওয়াল বিনির্মাণ, টিপিপি(আমাদের জন্য ভালই ), ওবামা কেয়ার, ইমিগ্রান্ট ইস্যু না বললেই নয়!!
এই গোঁয়ার লোকটার ইচ্ছা হইলো বিশ্বের অন্য সব মানবগোষ্টি গোল্লায় যাক, আমার সাদা আমেরিকানরা সুখী হউক! এই জন্য চায়না, মুসলিম, মেক্সিকান, আফ্রিকান থেকে শুরু করে বাকি সবাই শত্রু হিসেবে সে(/তারা) ভাবে! এইটা কোন ভাল খবর না। ট্রাম্প জিতে একটা ভাল খবর দিয়েছিল- রাজনীতির ভণ্ডরা নিপাত যাক!!!
এই শেষ। এরপর সব খবর হল বিধ্বংসী!!
এর সবচেয়ে ভয়ংকর দিক হল বড় বড় জাতিগুলো যদি নিজেদের স্বার্থ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে তাইলে তো রহিম, গফুর, কার্তিক, গণেশদের কি হইপে? জাতিগত দাঙ্গা তথা মধ্যযুগীয় দর্শনে চলে যাচ্ছি না তো?
র্যাপ ব্যাতলঃ
সেই কখন থেকে নানান টেনশন দিয়ে আসলাম! এবার সেইগুলা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলেন। এই র্যাপ সং-গুলা যদি না শুনে থাকেন তবে হেভি মগা পাবেন! বিফলে সাইকি দেখান!!
প্রথমেই আমেরিকান ভার্সন অব দেশনেত্রী!!
এরপর নিজেই চেকান....
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:২৯