১ম ইনিংস শেষে বাংলাদেশ দল আজকে জিতবে তেমনটি আমি যেমন আশা করিনি তেমনি কেউই আশা করেনি। ১ম ইনিংসে ৩০০ রান করাটাও বাংলাদেশের জন্য বড় রকমের একটা কৃতিত্ব সেখানে ৩১০ রানের টার্গেটে খেলা তো অনেক দূর! বাংলাদেশ দলের নির্বাচকরা পুরনো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার যে পণ করেছিলেন সেটা কি আমরা জানতাম?
আরেহঃ আমি বলছি মোয়ার কথা! হাতের মুঠোয় পুরতে পুরতে গাঙ্গে ছেড়ে দেবার কথা! অন্য কথায় বললে তীরের কাছে এসে নৌকাডুবি! কি নিপূণ দক্ষতায় এটা করতে পারল বাংলাদেশ!! সাবাশ নির্বাচক কমিটি!!
আসুন, দেখি আজকে কি কি কারণে আমরা এমন গর্বে গর্বভতী হয়ে পড়লাম!
★★ মাশরাফি ও তাসকিন সহ বোলাররা!
খোদ জিম্বাবুয়ে, শ্রীলংকার বোলাররা অল্প রানের অভাবটা ছক্কা ও চারের সাহায্যে দলকে মিটিয়ে দেন। কিন্তু আমাদের বোলারদের কাজ তো খালি বোলিং!! তাইনা??
★★ মোসাদ্দেক সৈকত (অলরাউন্ডার)
এক ম্যাচে উনি একেবারে শেষ পর্যন্ত টিকে থেকে ভরসা দিচ্ছিলেন! আজকে উনি আমাদের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে বদ্ধপরিকর! তাইতো ফাটাফাটি লুটা(ওরফে ডাক) মারসেন! যাইহোক, বোলিংটা ভাল ছিল।
★★ মোশাররফ রুবেল (অলরাউন্দার)
আমি মনে করি, গোল্ডেন এওয়ার্ড টা উনারেই দেওয়া দরকার কারণ-
★ বল হাতে ৩ ওভারে ২৩ রান উপহার দান!
★ দলে ঢুকার আগে বলা হয়েছিল সে দলের প্রয়োজনে ভাল ব্যাটিং করতে পারে, প্রমাণ পাইছি আমরা। আফগানদের সাথে ৬(২৪ বলে) আর আজকে ৭(১৮ বলে) {থাসকি খাওয়ার ইমো হপে}
★ মোশাররফ ফিল্ডিংয়ে আজও ইজি ক্যাচ মিসের মহড়া দেখা গেছে, বেন স্টোক্স তো ক্যাচ মিসের সুযোগ কাজে লাগিয়ে বলের সাথে পাল্লা দিয়ে করেছেন সেঞ্চুরি। তাইনা?
★★ কিন্তু এরকম খেলোয়াড় দলে থাকতেই হইপে ক্যন?
উত্তর আসলে খুবই সজা, কারণ একাদশে টিমের বোতল আনাগোনার কাজে মিস্টার ফিনিশার নাসিরের এ কাজে জুড়ি মেলা ভার! লিগেন্ড বোতলবাহী হিসেবে উনারে তকমা দেওয়ার বহুদিনের সাধ আমাদের সিলেকশন টিমের, সেটা জানেন না?
★★ নির্বাচক ভাবজ
★ মোশারফ এর চাইতে নাসির ভাল
★ শফিউল এর চাইতে রুবেল হোসেন অথবা আলামিন ভাল।
এই দুটা হলো জনতার দাবী। আম জনতা কি বালটা বুঝে? বিজ্ঞ নির্বাচকদের চিন্তা তো একটু ভিন্ন হতে হবে না?? এই কারণেই আফগানিস্তান সিরিজের আগে আলামিন বাদ পরার কারণে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একজন নির্বাচক বলেছিল, আলামিন এর নাকি ফিটনেস খারাপ(ডাহা সইত্য কথা)। কিন্তু দলের সদস্যদের মধ্যে আলামিন এর ফিটনেস ছিল, সাব্বির এর ঠিক পরেই(ডাহা মিথ্যা)
★★ নাসির
নির্বাচকদের বিশেষ একটা খায়েশ হইলো বিশ্বে বাংলাদেশকে একমাত্র ক্রিকেট দল হিসেবে রেকর্ড করা যাদের ফিল্ডিং স্পেশালিষ্ট(নাসির) থাকে। আরেহঃ ফিল্ডিং টাংকি তো এরই কাম। তা না হলে পরে ৮০ টা গার্লফ্রেন্ড কি আর এমনি এমনি হয়?
যেহেতু আমাদের দলে মিস্টার ফিনিশারই নাই তখন ম্যাচের ফিনিশিং যে হতে পারবে না সেটা সিলেকশন টিম ভাল করেই জানতো।
★★ সাকিব ও ইমরুলের কন্ট্রিবিউশন
তামিম আউট হয়ে গেলেও অভিজ্ঞতার ফসল ইমরুল ভিমরুল হয়ে নির্বাচকদের হটাস করে দিয়ে কামড়াতে শুরু করেছিলেন বোলারদের! সাকিব তো একেবারে উঠেপড়ে লেগে গেসিলেন! ক্যারে ভাউ! মাথা ঠান্ডা করলে কি আর হয়? তামিম, মুশফিকের পথে একসময় সাকিবও হাটলেন সিলেকশন টিমকে সফলতা উপহার দিয়ে!
আল্লা বাঁচাইসে, সাকিব আরো পাঁচ ওভার টিকলে ঐতিহ্যটা মিসিং হয়া গেসিলো!!
★★ ঐতিহ্য সংরক্ষণ
৮৭ বলে ৯৮ রান দরকার,
৭২ বলে ৭১ রান(হাতে ৬ উইকেট)
৪৮ বলে ৩৯ রান(হাতে ৬ উইকেট)
এইসময় সাকিব আউট। সৈকত আউট পরের বলে। ২৭৪ এ মাশরাফি শেষ!
সাকিব আউট হবার পরও সম্ভাবনা ছিল ভাল। মোসাদ্দেক আউট হওয়াতে সম্ভাবনা একেবারে কমে গেল।
৩ রান সংগ্রহ করতে করতে তিন তিনটি মুল্যবান উইকেট শেষ!! ২৮০ তে ইমরুল কায়েস + শাফিউল দুজন শেষ!!
২৭০/৪উইকেট থেকে ২৮০/৯ উইকেট!! ক্যামনে ম্যান ক্যামনে?? সাবাশ বাংলাদেশ! তবে এই সাফল্যের পেছনে নির্বাচকদের অবদান ভুলার মতো নয়। কারণ মোসাদ্দেক ভাল ফিনিশার। এখানে এক্সপেরিয়েন্সড এবং পরিক্ষিত ফিনিশার নাসিরকে রাখলে মোটেও সম্ভব হইতো না। যাক, আল্লা বাঁচাইসে, আমাদের ঐতিহ্য সংরক্ষিত হইসে!!
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১২:২৬