আমি বেশ দৃঢ়ভাবে না শব্দটি উচ্চারণ করলাম। এই ফ্যামিলির সাথে আমার বোন তিমার বিয়ে হতে পারে না। এত ব্যাকডেটেড একটা ফ্যামিলিতে সে মানিয়ে নিতে পারবে না। থার্ড ক্লাস, ফালতু সব লোকজন!!
আমার উচ্চকিত গলায় উপস্থিত সবাই চোখ কপালে তুলে ফেললেন। বাবা ফ্যালফ্যাল করে আমার দিকে তাকালেন। হয়ত পর্দার ওপাশে অন্দরে একত্রিত সবাই-ই চমকিত হয়েছেন। আমাকে সাধারণত বড় গলায় কথা বলতে দেখা যায় না। আজ এইরকম গুরুত্বপুর্ণ একটি ব্যাপারে সবার সামনে এমন অসভ্যতা করার মতো মানুষ অন্তত আমি এটা কেউই ভাবেনি। এই কাজ করার জন্য ছোট চাচা, বড় মামা আছেন। তাছাড়া বাবাও কম যান না।
আমার প্রচন্ড রাগ হয়েছিল যখন দেখলাম আমার বোনের পায়ের বর্ণ পরীক্ষা করার জন্য এক মহিলা জুতো খুলে ওর পায়ের কাপড়ের কিয়দংশ তুলে দেখছে। এমনও ভাবছিলাম, এই মহিলাকে এক লাত্থি দিয়ে ঘর থেকে বের করে দেই।
ওরা আরো কিছু অপরাধ করেছিল। মেয়ে বিকোবে, মেয়েদের বাজার এইসব নিম্নশ্রেণির বাক্য তাদের মুরব্বিদের মুখে শুনেছি নিজের কানেই! এই আধুনিক যুগে ওরা মেয়েদেরকে নিয়ে সামন্ততান্ত্রিক দাসত্ববাদী মানসিকতা পোষণ করছে দেখে ঘৃণায় ভেতরটা মোচড় দিয়ে ওঠলো।
ছোট মামা সাধারণত আমাকে ধমক দিয়ে অভ্যস্ত। আজ তিনিও কিছুক্ষণের জন্য স্তদ্ধ হয়ে রইলেন। এরপর আমাকে ধমক দেবার চেষ্টা করলেন- এই তোর কি হইছে? তোকে কে অধিকার দিয়েছে ইয়েস/নো বলার??
আমি চোখ লাল করে বললাম- এই অধিকার আমার আছে। এই ঘরের মানুষ হিসেবে আমার অবশ্যই এই অধিকার আছে।
বরপক্ষের লোকজন হুড়মুড় করে বেরিয়ে গেলেন। এক মাস্টার গোছের লোক আমাকে বললেন- ঠিক আছে বাবা। বিয়ে নাহয় হবে না। তুমি এদিকে একটু আসবা?
লোকটা পাঞ্জাবির পকেট থেকে একটা ছোট থলে থেকে পান বের করে চিবুতে চিবুতে বললেন। মাথা ঠান্ডা রাখতে হয় রে বাপ। এত গরম হলে চলবে?
- আচ্ছা! তুমি কি গ্রাজুয়েট?
- হ্যাঁ
- বেশ ভাল ব্যাপার। কিন্তু এইসব বেয়াদবি কি ভার্সিটি থেকে শেখায়? উহুঁ না, মাথা ঠান্ডা!
- কিছু কিছু জায়গায় বেয়াদবি না করলে হয় না। স্রোতে ভেসে গেলে চলে না।
- বেশ ভাল। তোমরা কি ভেবেছ? এই সমাজের মুল্যবোধ, ধর্মীয় অনুভূতি তাড়িয়ে দিতে পারবে? হাঃ হাঃ হাঃ কখনোই না।
- অবশ্যই সম্ভব। তবে সময় লাগবে।
- না রে বাবা! আমরা পারিনি। তোমরাও পারবা না।
- আমরা পারব!!(জোর গলায়)
- আবেগ দিয়ে আসলে তেমন কিছুই হয় না।
- আমি যুক্তি দিয়ে সবকিছু ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করি সবসময়। এই যেমন- ওরা আমার বোনের গায়ের রঙ দেখল, মেয়েদের বিয়ে নিয়ে ফালতু সব কথাবার্তা বলল এইসব দেখে আমি একটু মাথা গরম করে ফেলেছি। তবে বেয়াদবিটা ইচ্ছে করেই করেছি। একদম সেন্স রেখে।
- গুড। তোমার সাথে পরে আরো কথা বলা দরকার!
- নিশ্চয়ই!
সন্ধ্যার পর বাসায় ফিরে আসলাম। বাবা তাঁর বেডরুমে ডেকে পাঠালেন। আমি খানিকটা ভয়ে ভয়ে গেলাম। কারণ আজ সবচেয়ে বড় মাত্রার একটা দুর্ঘটনা ঘটিয়ে ফেলেছি। কিন্তু বাবার চোখে আনন্দের একটা ঝিলিক লক্ষ্য করলাম। পিঠ চাপড়ে বললেন- সাবাশ বেটা! আমার এত পরিশ্রমের পয়সা তাহলে বিফলে যায়নি! তোমরাই আধুনিক মানুষ হতে পারবা!!
আমি বেশ দৃঢ়ভাবে না শব্দটি উচ্চারণ করলাম। এই ফ্যামিলির সাথে আমার বোন তিমার বিয়ে হতে পারে না। এত ব্যাকডেটেড একটা ফ্যামিলিতে সে মানিয়ে নিতে পারবে না। থার্ড ক্লাস, ফালতু সব লোকজন!!
আমার উচ্চকিত গলায় উপস্থিত সবাই চোখ কপালে তুলে ফেললেন। বাবা ফ্যালফ্যাল করে আমার দিকে তাকালেন। হয়ত পর্দার ওপাশে অন্দরে একত্রিত সবাই-ই চমকিত হয়েছেন। আমাকে সাধারণত বড় গলায় কথা বলতে দেখা যায় না। আজ এইরকম গুরুত্বপুর্ণ একটি ব্যাপারে সবার সামনে এমন অসভ্যতা করার মতো মানুষ অন্তত আমি এটা কেউই ভাবেনি। এই কাজ করার জন্য ছোট চাচা, বড় মামা আছেন। তাছাড়া বাবাও কম যান না।
আমার প্রচন্ড রাগ হয়েছিল যখন দেখলাম আমার বোনের পায়ের বর্ণ পরীক্ষা করার জন্য এক মহিলা জুতো খুলে ওর পায়ের কাপড়ের কিয়দংশ তুলে দেখছে। এমনও ভাবছিলাম, এই মহিলাকে এক লাত্থি দিয়ে ঘর থেকে বের করে দেই।
ওরা আরো কিছু অপরাধ করেছিল। মেয়ে বিকোবে, মেয়েদের বাজার এইসব নিম্নশ্রেণির বাক্য তাদের মুরব্বিদের মুখে শুনেছি নিজের কানেই! এই আধুনিক যুগে ওরা মেয়েদেরকে নিয়ে সামন্ততান্ত্রিক দাসত্ববাদী মানসিকতা পোষণ করছে দেখে ঘৃণায় ভেতরটা মোচড় দিয়ে ওঠলো।
ছোট মামা সাধারণত আমাকে ধমক দিয়ে অভ্যস্ত। আজ তিনিও কিছুক্ষণের জন্য স্তদ্ধ হয়ে রইলেন। এরপর আমাকে ধমক দেবার চেষ্টা করলেন- এই তোর কি হইছে? তোকে কে অধিকার দিয়েছে ইয়েস/নো বলার??
আমি চোখ লাল করে বললাম- এই অধিকার আমার আছে। এই ঘরের মানুষ হিসেবে আমার অবশ্যই এই অধিকার আছে।
বরপক্ষের লোকজন হুড়মুড় করে বেরিয়ে গেলেন। এক মাস্টার গোছের লোক আমাকে বললেন- ঠিক আছে বাবা। বিয়ে নাহয় হবে না। তুমি এদিকে একটু আসবা?
লোকটা পাঞ্জাবির পকেট থেকে একটা ছোট থলে থেকে পান বের করে চিবুতে চিবুতে বললেন। মাথা ঠান্ডা রাখতে হয় রে বাপ। এত গরম হলে চলবে?
- আচ্ছা! তুমি কি গ্রাজুয়েট?
- হ্যাঁ
- বেশ ভাল ব্যাপার। কিন্তু এইসব বেয়াদবি কি ভার্সিটি থেকে শেখায়? উহুঁ না, মাথা ঠান্ডা!
- কিছু কিছু জায়গায় বেয়াদবি না করলে হয় না। স্রোতে ভেসে গেলে চলে না।
- বেশ ভাল। তোমরা কি ভেবেছ? এই সমাজের মুল্যবোধ, ধর্মীয় অনুভূতি তাড়িয়ে দিতে পারবে? হাঃ হাঃ হাঃ কখনোই না।
- অবশ্যই সম্ভব। তবে সময় লাগবে।
- না রে বাবা! আমরা পারিনি। তোমরাও পারবা না।
- আমরা পারব!!(জোর গলায়)
- আবেগ দিয়ে আসলে তেমন কিছুই হয় না।
- আমি যুক্তি দিয়ে সবকিছু ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করি সবসময়। এই যেমন- ওরা আমার বোনের গায়ের রঙ দেখল, মেয়েদের বিয়ে নিয়ে ফালতু সব কথাবার্তা বলল এইসব দেখে আমি একটু মাথা গরম করে ফেলেছি। তবে বেয়াদবিটা ইচ্ছে করেই করেছি। একদম সেন্স রেখে।
- গুড। তোমার সাথে পরে আরো কথা বলা দরকার!
- নিশ্চয়ই!
সন্ধ্যার পর বাসায় ফিরে আসলাম। বাবা তাঁর বেডরুমে ডেকে পাঠালেন। আমি খানিকটা ভয়ে ভয়ে গেলাম। কারণ আজ সবচেয়ে বড় মাত্রার একটা দুর্ঘটনা ঘটিয়ে ফেলেছি। কিন্তু বাবার চোখে আনন্দের একটা ঝিলিক লক্ষ্য করলাম। পিঠ চাপড়ে বললেন- সাবাশ বেটা! আমার এত পরিশ্রমের পয়সা তাহলে বিফলে যায়নি! তোমরাই আধুনিক মানুষ হতে পারবা!
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:১১