somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মিনিগল্পঃ ঠান্ডা মাথার বেয়াদব!!

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি বেশ দৃঢ়ভাবে না শব্দটি উচ্চারণ করলাম। এই ফ্যামিলির সাথে আমার বোন তিমার বিয়ে হতে পারে না। এত ব্যাকডেটেড একটা ফ্যামিলিতে সে মানিয়ে নিতে পারবে না। থার্ড ক্লাস, ফালতু সব লোকজন!!
আমার উচ্চকিত গলায় উপস্থিত সবাই চোখ কপালে তুলে ফেললেন। বাবা ফ্যালফ্যাল করে আমার দিকে তাকালেন। হয়ত পর্দার ওপাশে অন্দরে একত্রিত সবাই-ই চমকিত হয়েছেন। আমাকে সাধারণত বড় গলায় কথা বলতে দেখা যায় না। আজ এইরকম গুরুত্বপুর্ণ একটি ব্যাপারে সবার সামনে এমন অসভ্যতা করার মতো মানুষ অন্তত আমি এটা কেউই ভাবেনি। এই কাজ করার জন্য ছোট চাচা, বড় মামা আছেন। তাছাড়া বাবাও কম যান না।
আমার প্রচন্ড রাগ হয়েছিল যখন দেখলাম আমার বোনের পায়ের বর্ণ পরীক্ষা করার জন্য এক মহিলা জুতো খুলে ওর পায়ের কাপড়ের কিয়দংশ তুলে দেখছে। এমনও ভাবছিলাম, এই মহিলাকে এক লাত্থি দিয়ে ঘর থেকে বের করে দেই।
ওরা আরো কিছু অপরাধ করেছিল। মেয়ে বিকোবে, মেয়েদের বাজার এইসব নিম্নশ্রেণির বাক্য তাদের মুরব্বিদের মুখে শুনেছি নিজের কানেই! এই আধুনিক যুগে ওরা মেয়েদেরকে নিয়ে সামন্ততান্ত্রিক দাসত্ববাদী মানসিকতা পোষণ করছে দেখে ঘৃণায় ভেতরটা মোচড় দিয়ে ওঠলো।
ছোট মামা সাধারণত আমাকে ধমক দিয়ে অভ্যস্ত। আজ তিনিও কিছুক্ষণের জন্য স্তদ্ধ হয়ে রইলেন। এরপর আমাকে ধমক দেবার চেষ্টা করলেন- এই তোর কি হইছে? তোকে কে অধিকার দিয়েছে ইয়েস/নো বলার??
আমি চোখ লাল করে বললাম- এই অধিকার আমার আছে। এই ঘরের মানুষ হিসেবে আমার অবশ্যই এই অধিকার আছে।

বরপক্ষের লোকজন হুড়মুড় করে বেরিয়ে গেলেন। এক মাস্টার গোছের লোক আমাকে বললেন- ঠিক আছে বাবা। বিয়ে নাহয় হবে না। তুমি এদিকে একটু আসবা?
লোকটা পাঞ্জাবির পকেট থেকে একটা ছোট থলে থেকে পান বের করে চিবুতে চিবুতে বললেন। মাথা ঠান্ডা রাখতে হয় রে বাপ। এত গরম হলে চলবে?
- আচ্ছা! তুমি কি গ্রাজুয়েট?
- হ্যাঁ
- বেশ ভাল ব্যাপার। কিন্তু এইসব বেয়াদবি কি ভার্সিটি থেকে শেখায়? উহুঁ না, মাথা ঠান্ডা!
- কিছু কিছু জায়গায় বেয়াদবি না করলে হয় না। স্রোতে ভেসে গেলে চলে না।
- বেশ ভাল। তোমরা কি ভেবেছ? এই সমাজের মুল্যবোধ, ধর্মীয় অনুভূতি তাড়িয়ে দিতে পারবে? হাঃ হাঃ হাঃ কখনোই না।
- অবশ্যই সম্ভব। তবে সময় লাগবে।
- না রে বাবা! আমরা পারিনি। তোমরাও পারবা না।
- আমরা পারব!!(জোর গলায়)
- আবেগ দিয়ে আসলে তেমন কিছুই হয় না।
- আমি যুক্তি দিয়ে সবকিছু ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করি সবসময়। এই যেমন- ওরা আমার বোনের গায়ের রঙ দেখল, মেয়েদের বিয়ে নিয়ে ফালতু সব কথাবার্তা বলল এইসব দেখে আমি একটু মাথা গরম করে ফেলেছি। তবে বেয়াদবিটা ইচ্ছে করেই করেছি। একদম সেন্স রেখে।
- গুড। তোমার সাথে পরে আরো কথা বলা দরকার!
- নিশ্চয়ই!

সন্ধ্যার পর বাসায় ফিরে আসলাম। বাবা তাঁর বেডরুমে ডেকে পাঠালেন। আমি খানিকটা ভয়ে ভয়ে গেলাম। কারণ আজ সবচেয়ে বড় মাত্রার একটা দুর্ঘটনা ঘটিয়ে ফেলেছি। কিন্তু বাবার চোখে আনন্দের একটা ঝিলিক লক্ষ্য করলাম। পিঠ চাপড়ে বললেন- সাবাশ বেটা! আমার এত পরিশ্রমের পয়সা তাহলে বিফলে যায়নি! তোমরাই আধুনিক মানুষ হতে পারবা!!

আমি বেশ দৃঢ়ভাবে না শব্দটি উচ্চারণ করলাম। এই ফ্যামিলির সাথে আমার বোন তিমার বিয়ে হতে পারে না। এত ব্যাকডেটেড একটা ফ্যামিলিতে সে মানিয়ে নিতে পারবে না। থার্ড ক্লাস, ফালতু সব লোকজন!!
আমার উচ্চকিত গলায় উপস্থিত সবাই চোখ কপালে তুলে ফেললেন। বাবা ফ্যালফ্যাল করে আমার দিকে তাকালেন। হয়ত পর্দার ওপাশে অন্দরে একত্রিত সবাই-ই চমকিত হয়েছেন। আমাকে সাধারণত বড় গলায় কথা বলতে দেখা যায় না। আজ এইরকম গুরুত্বপুর্ণ একটি ব্যাপারে সবার সামনে এমন অসভ্যতা করার মতো মানুষ অন্তত আমি এটা কেউই ভাবেনি। এই কাজ করার জন্য ছোট চাচা, বড় মামা আছেন। তাছাড়া বাবাও কম যান না।
আমার প্রচন্ড রাগ হয়েছিল যখন দেখলাম আমার বোনের পায়ের বর্ণ পরীক্ষা করার জন্য এক মহিলা জুতো খুলে ওর পায়ের কাপড়ের কিয়দংশ তুলে দেখছে। এমনও ভাবছিলাম, এই মহিলাকে এক লাত্থি দিয়ে ঘর থেকে বের করে দেই।
ওরা আরো কিছু অপরাধ করেছিল। মেয়ে বিকোবে, মেয়েদের বাজার এইসব নিম্নশ্রেণির বাক্য তাদের মুরব্বিদের মুখে শুনেছি নিজের কানেই! এই আধুনিক যুগে ওরা মেয়েদেরকে নিয়ে সামন্ততান্ত্রিক দাসত্ববাদী মানসিকতা পোষণ করছে দেখে ঘৃণায় ভেতরটা মোচড় দিয়ে ওঠলো।
ছোট মামা সাধারণত আমাকে ধমক দিয়ে অভ্যস্ত। আজ তিনিও কিছুক্ষণের জন্য স্তদ্ধ হয়ে রইলেন। এরপর আমাকে ধমক দেবার চেষ্টা করলেন- এই তোর কি হইছে? তোকে কে অধিকার দিয়েছে ইয়েস/নো বলার??
আমি চোখ লাল করে বললাম- এই অধিকার আমার আছে। এই ঘরের মানুষ হিসেবে আমার অবশ্যই এই অধিকার আছে।

বরপক্ষের লোকজন হুড়মুড় করে বেরিয়ে গেলেন। এক মাস্টার গোছের লোক আমাকে বললেন- ঠিক আছে বাবা। বিয়ে নাহয় হবে না। তুমি এদিকে একটু আসবা?
লোকটা পাঞ্জাবির পকেট থেকে একটা ছোট থলে থেকে পান বের করে চিবুতে চিবুতে বললেন। মাথা ঠান্ডা রাখতে হয় রে বাপ। এত গরম হলে চলবে?
- আচ্ছা! তুমি কি গ্রাজুয়েট?
- হ্যাঁ
- বেশ ভাল ব্যাপার। কিন্তু এইসব বেয়াদবি কি ভার্সিটি থেকে শেখায়? উহুঁ না, মাথা ঠান্ডা!
- কিছু কিছু জায়গায় বেয়াদবি না করলে হয় না। স্রোতে ভেসে গেলে চলে না।
- বেশ ভাল। তোমরা কি ভেবেছ? এই সমাজের মুল্যবোধ, ধর্মীয় অনুভূতি তাড়িয়ে দিতে পারবে? হাঃ হাঃ হাঃ কখনোই না।
- অবশ্যই সম্ভব। তবে সময় লাগবে।
- না রে বাবা! আমরা পারিনি। তোমরাও পারবা না।
- আমরা পারব!!(জোর গলায়)
- আবেগ দিয়ে আসলে তেমন কিছুই হয় না।
- আমি যুক্তি দিয়ে সবকিছু ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করি সবসময়। এই যেমন- ওরা আমার বোনের গায়ের রঙ দেখল, মেয়েদের বিয়ে নিয়ে ফালতু সব কথাবার্তা বলল এইসব দেখে আমি একটু মাথা গরম করে ফেলেছি। তবে বেয়াদবিটা ইচ্ছে করেই করেছি। একদম সেন্স রেখে।
- গুড। তোমার সাথে পরে আরো কথা বলা দরকার!
- নিশ্চয়ই!

সন্ধ্যার পর বাসায় ফিরে আসলাম। বাবা তাঁর বেডরুমে ডেকে পাঠালেন। আমি খানিকটা ভয়ে ভয়ে গেলাম। কারণ আজ সবচেয়ে বড় মাত্রার একটা দুর্ঘটনা ঘটিয়ে ফেলেছি। কিন্তু বাবার চোখে আনন্দের একটা ঝিলিক লক্ষ্য করলাম। পিঠ চাপড়ে বললেন- সাবাশ বেটা! আমার এত পরিশ্রমের পয়সা তাহলে বিফলে যায়নি! তোমরাই আধুনিক মানুষ হতে পারবা!
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:১১
৩৭টি মন্তব্য ৩৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শীঘ্রই হাসিনার ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৩৮


পেক্ষার প্রহর শেষ। আর দুই থেকে তিন মাস বাকি। বিশ্ব মানবতার কন্যা, বিশ্ব নেত্রী, মমতাময়ী জননী, শেখ মুজিবের সুয়োগ্য কন্যা, আপোসহীন নেত্রী হযরত শেখ হাসিনা শীগ্রই ক্ষমতার নরম তুলতুলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাছে থেকে আমির হোসেন আমুকে দেখা একদিন....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৪৬

আমির হোসেন আমুকে দেখা একদিন....

২০০১ সালের কথা। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একটা আন্তর্জাতিক দরপত্রে অংশ গ্রহণ করে আমার কোম্পানি টেকনিক্যাল অফারে উত্তীর্ণ হয়ে কমার্শিয়াল অফারেও লোয়েস্ট হয়েছে। সেকেন্ড লোয়েস্টের সাথে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সংস্কারের জন্য টাকার অভাব হবে না, ড. ইউনূসকে ইইউ

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



বুধবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ঢাকায় নিযুক্ত ইইউর রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার এবং সফররত এক্সটার্নাল অ্যাকশন সার্ভিসের এশিয়া ও প্যাসিফিক বিভাগের পরিচালক পাওলা... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নারী বুকের খাতায় লিখে রাখে তার জয়ী হওয়ার গল্প (জীবন গদ্য)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৩২



বুকে উচ্ছাস নিয়ে বাঁচতে গিয়ে দেখি! চারদিকে কাঁটায় ঘেরা পথ, হাঁটতে গেলেই বাঁধা, চলতে গেলেই হোঁচট, নারীদের ইচ্ছেগুলো ডিমের ভিতর কুসুম যেমন! কেউ ভেঙ্গে দিয়ে স্বপ্ন, মন ঢেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিশ্রী ও কুশ্রী পদাবলির ব্লগারদের টার্গেট আমি

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৫



আমাকে জেনারেল করা হয়েছে ১টি কমেন্টের জন্য; আমার ষ্টেটাস অনুযায়ী, আমি কমেন্ট করতে পারার কথা; সেটাও বন্ধ করে রাখা হয়েছে; এখন বসে বসে ব্লগের গার্বেজ পড়ছি।

সম্প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×