somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ওদের দরকার একটুখানি সাপোর্ট ...:)

৩০ শে নভেম্বর, ২০১০ রাত ১১:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


যাচ্ছিলাম দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে।আর আমরা যে ট্রেনে যাচ্ছিলাম সেই ট্রেনেই বেশীরভাগ পরীক্ষার্থী যাচ্ছিল যাদের মধ্যে আমার পুরনো অনেক বন্ধু ছিল।তাই কিছু সময়ের জন্য্ ষ্টেশন চত্বর যেন আমাদের বন্ধুদের এক অভাবনীয় মিলনমেলায় পরিণত হয়েছিল।আমরা সবগুলো মিলে আড্ডা দিচ্ছিলাম, এমন সময় দুটি শিশু এসে আমাদের পাশে দাড়ালো।তাদের চোখের চাহনিতে তাদের চাওয়ার মাত্রাটা ফুটে উঠলো। হয়তো শীত তখনো পড়েনি বলে আমরা কেউই ওদের খালি গায়ের দিকে লক্ষ্য করিনি।যদি শীতের রাত হতো তাহলে হয়তো কেউ না কেউ ওদের খালি গা দেখে একটু ন্যুনতম সমবেদনাও জানাত।যাই হোক ,ওদের দেখে আমি কিছুক্ষণের জন্য আনমনা হয়ে পড়েছিলাম। তাছাড়া আমার সাথের ফাজিলগুলোও ওদেরকে আমার দিকে ঠেলে দিল এবং এমনভাবে ওদের কাছে মিথ্যা পরিচয় করিয়ে দিলো যাতে ওরা আমার কাছে ব্রিটিশ মুদ্রা পেনীর আবদার ধরল।আমি ওদেরকে বুঝাতে চাইলেও ওরা যেন বুঝতে চায়না।অনেক কষ্টে বুঝিয়ে শুনিয়ে ওদেরকে কিছু টাকা দিয়ে বিদায় করলাম।শিশু দুটো ছিল খুব চঞ্চল।টাকা নিয়ে যাবার পর ওরা কি মনে করে আবার আসল এবং আমাদের সাথে আড্ডায় যোগ দিল।আমরাও মুহূর্তটা দারুণ উপভোগ করছিলাম।কিছুক্ষণ পর ট্রেনের আগমনী বার্তা শুনে ওদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ট্রনে উঠতে হল।চলার পথে ট্রেনের জানালার পাশে বসে ওদের কথা খুব মনে পড়ছিল এবং বিচ্ছিন্ন কিছু ভাবনা এসে আমাকে ঘিরে ধরল।এই যে আমরা আজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে যাচ্ছি অথচ ওরা শিক্ষার ন্যূনতম অধিকার থেকে বঞ্চিত।আমরা কি ওদের জন্য কিছুই করতে পারিনা?ওদের কি আমাদের কাছে কোনই অধিকার নেই?মানুষতো মানুষেরই জন্য।ওদের প্রতি কি আমাদের কোনই দায়বদ্ধতা নেই?শিক্ষার অভাবে একদিন ওরাই সমাজের জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে।অন্ন,বস্ত্র,বাসস্থান,শিক্ষার মত মৌলক মানবাধিকার থেকে যখন ওরা বঞ্চিত তখন আমরা এই অধিকারগুলো লাভ করার পর বিলাসিতা করাকে অধিকার রুপে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করে যাচ্ছি।এসব ভাবতে ভাবতে কখন যেন ঘুমিয়ে পড়লাম।



তারপরের ঘটনা ভিন্ন।এবার ঈদুল আযহার পরদিন আমার এক আপুর সাথে কথা বলছিলাম।কথাপ্রসঙ্গে বললেন উনি খুব ব্যস্ত থাকেন।আমি বললম তোমারতো পড়া ছাড়া আর কোন কাজ নেই,ছাত্ররাজনীতিও কর না,তাহলে এত ব্যস্ততা কিসের?জবাবে উনি যা বললেন তাতে আমি আবার ওই রেলষ্টেশনে হারিয়ে গিয়েছিলাম।আমার মত অসংখ্য তরুণের মনের সুপ্ত বেদনাটুকু যেন ওরা বুঝতে পেরেছে।এই বেদনাটাকে শক্তিতে পরিণত করে ওরা ছিন্নমূল শিশুদের পিছনে কাজ করার একটা প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে।তারপর বিস্তারিত জানতে চাইলে উনি যা বললেন তার সারকথা হল তারা এই পথশিশুদের সামাজিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে বিভিন্ন কর্মসূচী হাতে নিয়েছে।তারমধ্যে অন্যতম হল ``আশ্রয় Asroy`` নামের একটি সংগঠন।বিভিন্ন সংকীর্ণতার কারণে এই সংগঠনটি যদিও তেমন বিস্তৃত হতে পারেনি,তবুও ইতোমধ্যে তারা ঢাকার পাশাপাশি চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতেও তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে।এবছর তাদের কার্যক্রমের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে রমজানে এইসব পথকলিদের নিয়ে ইফতার মাহফিল;তাদের মধ্যে শিক্ষা সামগ্রী,কাপড়,বিভিন্ন সময়ে খাদ্যদ্রব্য ইত্যাদি বিতরণ।এমনকি এই কুরবানীর ঈদেও ওরা বঞ্চিত থাকেনি।গরু কিনে কুরবানী করে শুধুমা্ত্র এইসব ছিন্নমূলদের মাঝেই বিতরণ করা হয়েছে।এমনকি আশ্রয় কিছু শিশুর স্থায়ী দায়িত্বও নিয়েছে।আর এই সংগঠটির কার্যক্রমের একটা অংশ পরিচালিত হয় সামাজিক যোগাযোগের সাইট ফেসবুকের মাধ্যমে।ফেসবুকে ``আশ্রয় Asroy`` নামে তাদের পেজ আছে যেখনে তাদের কর্মসূচী এর বিভিন্ন কর্যক্রমের ছবি আছে।উনার সাথে কথা বলার পর আমর নিরাশ মনে একটু আশার উদয় হল।বোধোদয় হল যে,আমরা,আমাদের তরুণ সমাজই পারি দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে,আমরাই পারি সোনার বাংলাদেশ গড়তে।শূভ কামনা,আশ্রয়....Go Ahead
:):)

৯টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×