ব্লু হোয়েল(Blue Whale)
কিছু কৌতূহল,কিছু জানানো(যা জানি) আর _ _ _
ব্লু হোয়েল কি?
সবার মতো আমি ফয়েজও মনে করতাম এইটা আসলে একটা গেম।আসলে,একটু খুঁটিয়ে দেখার পর বুঝলাম,একে ঠিক গেম এর আওতায় আনেন না অভিজ্ঞরা।এটিকে কোন সংজ্ঞায়িত করতে তারা নারাজ।যাই হোক,সবার মোটামুটি জানা আছে আশা করি,এটা ৫০দিনের একটা চ্যালেঞ্জ।যে চ্যালেঞ্জের সর্বশেষ পরিণতি আত্মহত্যা।আর তাছাড়া বিভিন্ন উদ্ভট কিছু স্টেপ তো আছেই।
সহজ স্টেপ দিয়ে শুরু হওয়া চ্যালেঞ্জটি আস্তে আস্তে কঠিন দিকে অগ্রসর হয়।
সচাইতে বড় প্রশ্ন:
কোথায় পাবো এই ব্লু হোয়েল???
সবার একই প্রশ্ন,Blue Whale কই পাবো???
প্রায় সবাই,প্লে স্টোর,এ্যাপল স্টোর,গুগল সব জায়গাতেই ঢুঁ মারছেন।কিন্তু পান নাই।অনেকে আবার Blue Whale লেখা দেখেই নাচানাচি শুরু করছেন।সামনে পিছনে না দেইখ্যায় ইন্সটল দিয়া মাথায় হাত দিয়া বইয়া আছেন।বালের গেম নামাইলাম বেহুদা এইডা আসল নাহ।
আমি আজ দুইদিন যাবৎ এই গেম খুঁজলাম।এরপর এই সিদ্ধান্ত নিলাম যে,যদি বেশি ঘাটাঘাটি করি এই ফয়েজ কয়েকদিনের মধ্যেই ফয়েইজ্জা পাগলায় রুপান্তরিত হবে,কিন্তু তবুও এইটা পাইতাম নাহ।
একটু ঘুরাফিরা করে বুঝলাম:::-
ব্লু হোয়েল এমন একটা গেম যেটা একটা সময় ডার্ক ওয়েব এ ছিলো।(ডার্ক ওয়েব/ডীপ ওয়েব সম্পর্কে না জানলে পরে জানাচ্ছি)
এই ডার্ক ওয়েবে যেতে হলে মোবাইল আবার রুট(এ্যান্ডয়েডের একটি এ্যাডভান্স অপশান)হতে হয়।
আপনার মোবাইল রুট করা হলে ডার্ক ওয়েবে ঘুরেফিরে হয়ত একটা সময় ব্লু হোয়েল পেতে পারতেন।
কিন্তু এখন অভিজ্ঞদের মন্তব্য হচ্ছে এমন যে,
ব্লু হোয়েল এখন Surface Web(যা আমি আপনি চালাই এবং ইন্টারনেট জগতের মাত্র ৫%),Deep Web(ইন্টারনেট জগতের অন্ধকার জগৎ,যা আপনার হাতের বাইরে এবং ইন্টারনেট জগতের ৯০%)
Dark Web(যা ইন্টারনেট এর সবচাইতে সিকিউরড জায়গা এবং ইন্টারনেটের কম জায়গা জুড়েই আছে)
এর একটাতেও এর অস্তিত্ব নেই।অর্থ্যাৎ Blue Whale আপনি এখন কোথাও খুঁজে পাবেন নাহ।
তাহলে এটি পাবো কোথায়?
হুম,ভালো প্রশ্ন।
অনেকের মতে,বর্তমানে ব্লু হোয়েল একটি মাত্র উপায়েই পাওয়া সম্ভব।তা হলো,
Blue Whale কিউরেটর রা যদি আপনাকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সাথে যোগাযোগ করে।
কিউরেটর রা কিভাবে যোগাযোগ করে???
কিছু মানুষের মতে,এরা আপনার কর্মকান্ড পর্যবেক্ষণ করে(ভার্চুয়ালে)এর পর যদি তাদের মনে হয় আপনাকে তাদের পরবর্তী শিকার বানানো সমভব তখনই আপনাকে চ্যালেঞ্জটির লিংক প্রদান করবে।আর একমাত্র তখনই আপনি এই চ্যালেঞ্জটির সন্ধান পাবেন।
কেনো এতো ভয়ানক এই চ্যালেঞ্জ?
কথা হলো,আপনি যদি এই গেমটি ইন্সটল করেন তাহলে একে আর আনইন্সটল করতে পারবেন না(point to be noted)
এরপর,এই চ্যালেঞ্জটি ইন্সটল করার সাথে সাথেই আপনার মোবাইলের সকল ডাটা Blue Whale কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করতে থাকবে।যেমন গ্যালারির ছবি,ফেসবুক আইডি পাসওয়ার্ড,ইমেইল আইডি সহ আরো অনেক কিছু যা আপনার মোবাইলে সংরক্ষিত রয়েছে।এরপর একপ্রকার বাধ্য করবে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করার জন্য।প্রথম ২০টি চ্যালেঞ্জ সহজ বলা চলে।এরপর আস্তে আস্তে কঠিন হয়।
যেমন ২৭তম দিনে আপনাকে হাতে ব্লেড দিয়ে তিমি মাছ আঁকতে হবে।৩৩তম দিন(সম্ভবত) নিজের গার্লফ্রেন্ডের সাথে কুকর্মের ভিডিও দেয়া।
শেষ পর্যন্ত নিজের ফাঁদেই নিজে পা দিবেন আপনি যখন সরে আসতে চাইবেন তখন আপনার এই তথ্য গুলো দিয়েই আপনাকে ব্ল্যাকমেইল করবে।সর্বশেষ চাল দিবে ৩৯তম দিনে তারা আপনাকে কিছু হিপটোনাইজ করার চাল হিসেবে কিছু গান দিবে।সেগুলো শুনলে নাকি সম্মোহিত হয়ে যাবেন।আর শেষ পর্যন্ত এভাবেই আপনাকে মৃত্যুর দিকে নিয়ে যাবে।
আমার কিছু প্রশ্ন(অজ্ঞ ব্যাক্তির কিছু অদ্ভুত প্রশ্ন বলতে পারেন):::
১/যদি এটি ইন্সটল করলে সিস্টেম এ্যাপই হয়ে যায় তাহলে সমস্যা কি?রুট করলে তো সিস্টেম এ্যাপও ডিলেট করা যায়।তবে,এটা কেনো করা যাবে না???
২/আপনার সকল তথ্য নিয়ে নিবে গেম।যদি কেউ একটু বুদ্ধি খাঁটিয়ে কেউ যদি সকল তথ্য মুছে দিয়ে ইন্সটল করে তখন???
৩/লোকেশন ট্রেস করা:
যদি আপনি এডভান্স ইউজার হয়ে থাকেন,তাহলে লোকেশন ট্রেস করা আটকাতে পারবেন আইপি এ্যাড্রেস চেঞ্জ করে।
৪/আপনি যে ভিডিওগুলো দিচ্ছেন সেগুলো যদি ভূয়া করে তৈরী করেন?
যেমন:বন্ধুর ফোন চুরি করতে বলা হলে।আপনি আপনার বন্ধুকে যদি ব্যাপারটি বুঝিয়ে ভূয়া অভিনয় করে ভিডিও বানান?
অথবা নিজের গার্লফ্রেন্ডের সাথে করা আকাম-কুকামের জায়গায় অন্য কোন দেহব্যাবসায়ীর সাথে ভিডিও আপলোড করেন?তারা কিভাবে বুঝবে?আর যার গার্ল্ফ্রেন্ডই নাই???
৫/আমি যদি মোবাইলটা ভেংগে ফেলি?তখন???
আরো অনেক প্রশ্নের উদ্ভব হতো আরেকটু ঘাটাঘাটি করলে।
যাই হোক,এসব প্রশ্নের উত্তর দেয়া প্রায় অসম্ভব যদি কখনো না খেলে থাকেন।
বাংলাদেশে ব্লু হোয়েল???
এই পর্যন্ত প্রায় ২০০জন হয়ত মারা গিয়েছে ব্লু হোয়েলের প্রকোপে।সম্প্রতি,হলিক্রসের এক মেয়ের আত্মহত্যা ব্লু হোয়েলের কারণে হয়েছে বলে মেয়েটির বাবার দাবি।
মেয়েটির বাবা আরো দাবি করছে বাংলাদেশে এই নিয়ে ৬১জন এই চ্যালেঞ্জের প্রকোপে মারা গেছে।
কস কি!!!
এই খবর পাইলে তো ফীলিপ বুদেকিন খুশিতে নিজেই আত্মহত্যা করবে।
অথবা ব্লু হোয়েল নিজেই ডাঙায় এসে নাচানাচি শুরু করবে।
যাই হোক,মেয়েটির হাতে কোন তিমির চিহ্ন নেই।গায়ে কোন আঁচড়ের দাগ নেই।অথবা মেয়েটির ফোনেও ব্লু হোয়েলের অস্তিত্ব পাওয়া যায় নি।
এটি একটি মিথ্যে অভিযোগ বলেই বলছে অভিজ্ঞরা।
সম্ভবনা কম হলেও নেই বলা যায় না।
যাই হোক,অনেক গ্যাজাইলাম।কি বললাম,তা নিজেও না জেনেই বলছি,আমি নিজেও কিন্তু সিউর নই যে,কথাগুলো সত্য নাকি মিথ্যা।আমাকে প্রশ্ন করে লাভ নেই।কারণ,আমিও আনাড়ি।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১২:০২