"টোকাই"
সব বেঁচে দিবে ওরা
সমস্ত কিছু।
নগদে বা বাকীতে
যা কিছু আছে তার-
আমার দুঃখী মা’র।
সোনার গয়না, লাল পেড়ে জামদানী,
নাকের ফুল, আসবাব দামী দামী;
ভিটে-মাটিও পড়বেনা বাদ
সব হবে ছারখার;
ওরা তার সুযোগ্য উত্তরাধিকার।
ওরা নরকের কীট, আবেগশূণ্য
একদা মানব শিশু,
ওরা দু’মুখো সাপ, বিষের চাষী
ছদ্মবেশী পশু;
ওরা পায়ের তলায় বিবেক পিষেছে
ভুলেছে মায়ের আদর,
ওরা লাভের লোভে দু’চোখ বেঁধেছে-
হয়েছে সওদাগর…
ওরা পা-চাটা নেশায় খুন করেছে
রক্তজ সহোদর,
জননী ভাসে দু’চোখের জলে
ওরা অবাক স্বার্থপর...
আমরা নগণ্য অতি
সাধারণ ও অপ্রধান,
আমরা মায়ের অযোগ্য সন্তান।
যদিও মা খোকা বলে
আর ওরা বলে টোকাই
ওদের রক্তচক্ষুকে তবু
বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাই।
আমরা নির্ভয়
আমরা জেনেছি মুখোশধারীর প্রকৃত পরিচয়।
তস্কর ও ডাকাতের দল আস্তাকুঁড়ে যাক,
মায়ের মুখে হাসির রেখা ধ্রুবক হয়ে থাক।
"লাল-সবুজ আকাশ"
দ্বারগুলো সব রুদ্ধ হয়েছিল একে একে,
বাদ পড়েনি একটি বাতায়নও,
কনক্রিটের নিরেট দেয়ালে ছিলনা ন্যূনতম ফাটলের সুযোগ।
অভেদ্য আঁধারে বন্দী ছিল সেই দুর্গটি
আর ছিল অগণিত অন্ধ মানুষ।
আমি বলি তাদের কী দোষ?
যারা কখনো আলোর পরশ পায়নি
তারা কীভাবে চোখ মেলে তাকাবে?
তারা তো অপরিণত ব্যঙ্গমী,
এখনো যাদের চোখই ফোটেনি।
তবে প্রাচীরের বাইরে আকাশ ছিল, সূর্য ছিল
ছিল এক ঝাঁক তারকার দল;
তাদের হৃদয় ছিল,
বুকের মাঝে লুকিয়ে ছিল বারুদ আর জল।
তাই আজ অন্তপুরেই কাহিনী সমাপ্য নয়,
যথেষ্ট নয় নক্ষত্রের সমানুপাতিক বিকিরণ।
আজ প্রয়োজন ভীষণ এক বিস্ফোরণ,
যেন শিকল বিক্রিয়ার মতো একে একে জেগে উঠে
সব পতিত ও মৃত তারকা-
যারা একদা আলো বিলাতো অনিঃশেষ;
তারপর অবশম্ভ্যাবী এক তুমুল মহাপ্রলয়।
আমাদের সেই প্রাচীর ভাঙতেই হবে,
ডাইনোসরের মত আগ্নেয় স্লোগানের উত্তাপে
গলিয়ে দিতে হবে লোহার গারদ,
শোণিত ধারায় আঁকতে হবে নতুন নকশা-
গলিত মাংসের পাথরের উপর গড়তে হবে
হীরকের ভিত।
তবেই অজস্র এপিটাফের আড়ালে সৃষ্টি হবে
একটি বাগান ও একটি প্রাসাদ।
অতঃপর,
আরেকটি আরক্ত ভোর ও নিবেশিত নির্মল বাতাস
মাথার উপর উড়িয়ে দিবো লাল-সবুজ আকাশ।