ইচ্ছে করে মুদির মতন সমস্ত দিন পাল্লা মাপি
জ্বরের ঘোরে প্রলাপ বকি, লেপ মুড়িয়ে তুমুল কাঁপি
গোত্তা খাওয়া ঘুড়ির মতন ঘাসের বুকে আছড়ে পড়ি
নতুন বইয়ের বাঁধাই ছিঁড়ি, উল্টো ঘুরাই দেয়াল ঘড়ি
মেঘের ঝুঁটি খামচে ধরি, বৃষ্টি মুছি ঘামের মতো
রঙধনুটা হেঁচড়ে লুটাই, মেঘের বুকে হোকনা ক্ষত
শেষ গোধুলির রঙের পটে ছিটিয়ে দিই ঘৃণার কালি
সব জোনাকি বন্দী করি, দু-ভাগ করি চাঁদের ফালি
ইচ্ছে করে ভয় ছড়িয়ে বন্ধ করি নাটক পাড়া
শ্রীকান্তটার সুর কেটে দিই, সুমনটা হোক ছন্নছাড়া
পুঁথি ছাপার যন্ত্র ভেঙে পাল্লা মেপে বিক্রি করি
লেখককে দিই আটক সাজা, বাউলকে দিই ফাঁসির দড়ি
হিরণ পয়েন্ট শ্মশান করি, জ্যান্ত পোড়াই চিত্রা হরিণ
বাঘ শেয়ালের গহিন ঘরে যন্ত্র নাচাই তাক ধিনা ধিন
পশুর নদীর তেলের গায়ে বারুদ ঘষে আগুন জ্বালি
ইট পাথরের ভবন বানাই হাড়বাড়িয়া- কচিখালি
ইচ্ছে করে দেওয়ের মতো অনন্তকাল সাগর সেঁচি
নদীর টুটি সাপটে ধরি, চর জাগিয়ে দখল বেচি
হাঁস-মোরগের গেরস্থালি ভাসিয়ে দিই বানের জলে
কাঠবাদামের বাবুই পাখি সেদ্ধ করি চালের কলে
সব পানোখির দাঁত ভেঙে দিই, সব সাপুড়ের বিন
সব কাঠুরের কুঠার ভাঙি, সব তুরগের জিন
ময়ুর পাখির পেখম ছিঁড়ে রক্তে ভাসাই হাত
ময়লা ফেলে নষ্ট করি শিশুর থালার ভাত
ইচ্ছে করে হিমালয়ের চূড়ার পরে বসি
অন্নপূর্ণা-এ্যাভারেস্টে ভীমের গদা ঘষি
এ দেশ-ও দেশ, মানচিত্র মনের মতন আাঁকি
পোড়া মাটির খাঁচায় পুষি পৌরাণিকের পাখি
মাটির কলস আছড়ে ভাঙি, রসের হাঁড়ি টুটি
ভরদুপুরে ঘন্টা বাজাই, ইস্কুলে দেই ছুটি
ঘূর্ণিঝড়ের সামনে দাঁড়াই, জলোচ্ছ্বাসে ভাসি
উটকো রোদে চাবকে কাঁদাই চৈতি মেঘের মাসি
ইচ্ছে করে শেষ প্রহরে কাব্য করার ক্ষণে
কান ফাটিয়ে ডঙ্কা বাজাই, ঝান্ডা উড়াই রণে
আকাশ-মাটি চূর্ণ করি কেয়ামতের মতো
ইচ্ছে করে ইচ্ছে মেটাই আমার ইচ্ছেমতো