somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শান্তির ধর্ম বলতে কিছু নাই .

১৬ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ৮:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ক্রিষ্টান যে কাওকে এখন জিজ্ঞাসা করেন তারা বলবে এটা একটা শান্তির ধর্ম , ভালবাসার ধর্ম। যিশু সবাই কে ভালবাসেন . কিন্তু আমরা বেশি না মাত্র ১০০ বছর আগে যদি তাকাই তাহলে একটা শব্দ খুব জোরে সরে শুনতে পাব , শব্দ টি হচ্ছে "Christendom" বা দুনিয়া তে ক্রিষ্টের বাণী পৌছে দেয়া , বা সবাই কে ক্রিষ্টান বানানো . অবশ্যই সেটা যে কোন মাধ্যমে মূলত প্রথমে মিশনারী তার পিছনে বেবসা অতপর মিলিটারী পাঠিয়ে। অসব্য জাতি গুলা কে সব্য বানানোর মহান প্রচেষ্টা।

তো কি হোল শব্দটার ? কিসে ধংশ হল এই মহান প্রচেষ্টা ? আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, সাউথ আমেরিকা, আফ্রিকা সব জায়গায় তো এরা সর্য বীর্যের সাথে , লক্ষ লক্ষ মানুষ কচুকাটা করে, দাস বানিয়ে মহান ক্রিষ্টান ধর্মের প্রচার করে যাচ্ছিল . কিসে থামল সেই প্রসেস ?

জার্মান গবেষক মেকলিক এর মতে , ক্রুসেড নয় ( ক্রুসেডের এর পর ও ক্রিষ্টান ধর্ম বেপক প্রচার ও প্রসার লাভ করেছে ) , দাস প্রথাও নয় , লক্ষ লক্ষ "কলোনিয়াল" মানুষ জন গণ হত্যার পর ও না . এটা এসে থামল ১৯১৪ তে যখন সকল ক্রিষ্টান সম্রাজ্য ( এবং তার ক্রিষ্টান সম্রাট রা) যুদ্ধে নেমে গেল একে অপরের সাথে . অস্ট্রিয়া, জার্মানি , রাশিয়া , ব্রিটেন সবাই। বা প্রথম বিশ্ব যুদ্ধ . যেখান থেকে পরে উত্থান ভয়ঙ্কর ফাশিসেম এবং অনন্য মতবাদ এর।

মজার বেপার হল তখন কার মুসলিম খেলাফত , বা অটোমান সম্রাজ্য , পৃথিবী ব্যাপী ক্রিষ্টান সম্রাজ্যের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা দিয়ে এই যুদ্ধে শরিক হল . হাস্যকর ঘটনা হচ্ছে তারা জার্মান অস্ট্রিয়ান হাঙ্গেরির "ক্রিষ্টান" সম্রাট দের পক্ষে নামল . যদিও ইসলামিক জেহাদ দুই পক্ষের সাথেই হবার কথা ছিল !

মনে রাখা দরকার মুসলিম খেলাফত কিন্তু তখন অটোমান সম্রাট দের হাতে। মুসলিম খেলাফত তখন আরবদের হাত থেকে চলে এসেছে তুর্ক সেলজুক দের হাতে। মক্কা, মদিনা, বাগদাদ, ইস্তানবুল থেকে ত্রিপোলি সবই অটোমান সম্রাজ্যের অংশ ছিল।

মুসলিম খেলাফত শুধু যুদ্ধ না, ১৯২৪ এর ভিতরে খেলাফত ও হারিয়ে ফেলল।

হাস্যকর বেপার হচ্ছে এই খেলাফত হচ্ছে একমাত্র সম্রাজ্য যার অনুসারী বা ফান ক্লাব এখনো আছে দুনিয়া জুড়ে . হিজবুত তাহরীর , মুসলিম ব্রাদার হুদ বা খেলাফত আন্দোলন বাংলাদেশ এদের লক্ষ্য হচ্ছে খেলাফত য়ে ফেরত যাওয়া। জার্মান, ব্রিটিশ বা রাশিয়ান দুনিয়াজোড়া সম্রাজ্য কেও এখন না চাইলেও। ইসলামিক খেলাফত এর স্বপ্ন দোষ য়ে ভোগেন এখনো অনেকে বাংলাদেশ য়ে বা মুসলিম বিশ্বে, যাকে বলা হয় দারুল ইসলাম . কিন্তু দারুল হারব বা অমুসলিম দেশ যেমন বৃটেন , আমেরিকা তেও এদের সংগঠন আছে।

সশস্ত্র জিহাদ কে ফরজ কর্তব্য বলে গণ্য করা হয় ইসলামে, এবং এই খেলাফতের অলিক স্বপ্ন দেখা সংগঠন গুলোতে . তাই তারা বিভিন্ন জায়গায় বোমাবাজি , সন্ত্রাসী সংগঠন গড়ে তুলেছে যেমন আল কায়দা . নিরহ মানুষ হত্যা করে জাতি গত , ধর্ম গত বিদ্বেষ ছড়ান এদের পুরানো কৌশল। রাজনীতিক কারণে এরা মেন স্ট্রিং রাজনীতিক দলে ছত্র ছায়া তে থেকে বা, পর্দার অন্তরাল থেকে কাজ করে . বাংলদেশ য়ে যেমন জামাতে ইসলামী/ বিএনপি র মদদে গড়ে ওঠা বাংলা ভাই, সায়েক আব্দুর রহমান . ইত্যাদি। এদের সংঘাত মূলক থ্রেট এখন কেও কার্টুন আকল কিনা, বা নবী নিয়ে প্রশ্ন করলো কিনা , সব কিছু তে পাওয়া যায়।

ইতিহাস সাক্ষী দেয় এক সময় ক্রিষ্টান সম্রাজ্য গুলো ও , সংশয় বাদীদের ধরে ধরে প্রকাশ্যে ফাসি দিত . ব্লাসফেমি আইন ক্রিষ্টান দের আরো কঠিন ছিল। কিন্তু এখন দেখেন গলা নামায়ে মিন মিন করে কথা বলে।

হাজার হাজার কার্টুন, কৌতুক , চুটকি , যিশু বা খোদা কে নিয়ে, প্রকাশ্যে বলা হয় . কোনো রকম রিয়েকশন ছাড়াই। কিন্তু কার্টুন য়ে বিড়াল এর নাম নিয়ে, এখনো বাংলাদেশ য়ে লঙ্কা কান্ড ঘটে।

এখন আপনি এটা পড়তে পড়তে প্রথম চিন্তা করতেসেন, না ইসলাম শান্তির ধর্মই , যারা অশান্তি করতেসে তারা সত্যিকার এর মুসলিম নয়। ভাবতেই পারেন এমন, এটাই ডিফেন্স মেকানিসম আপনার ব্রেন এর।

আমার প্রশ্ন , কারা তাহলে সত্যিকার এর মুসলিম? কে দিবে সেই ডেফিনেশন ? শান্তির ধর্মে কিভাবে, বাইরের ধর্মের কথা বাদ দেন নিজের ধর্মের ভিতরে হানাহানি যেখানে এখনো বন্ধ হয় নাই . সেখানে কিভাবে এটা শান্তির ধর্ম আমার মাথায় ঢুকে না।

ইসলাম এর নবী (স) মৃত্যুর পর ৪ খলিফার তিন খলিফা সহিংস ভাবে নিহত হন কিন্তু মুসলিম দের দ্বারা। মুসলিম জেহাদ তসবিহ হাতে হয় নাই . হইসে সামরিক অভিযান এর মাধ্যমে। গতকাল ছিল ইসলামের এমন এক সহিংস অধ্যায় যা নিয়ে দন্ধ ইসলামিক সমাজে পরিষ্কার , শিয়া এবং সুন্নি। তার ভিতর তো শত শত ধারা , উপধারা আছেই . মাঝাবি, লা মাহজাবি, অমুক পন্থী, তমুক তরিকা . নবীর নাতি কিন্তু কাফের দের সাথে না মুসলিম দের নিজেদের যুদ্ধে নিহত হন। তার বিপক্ষে হাজার হাজার সাহাবা দাড়িয়েছিলেন যুদ্ধ ক্ষেত্রে . নবীর সঙ্গী সাহাবা একজন দুইজন না হাজার !

এই ধর্মের বিশাল কিছু দাবি ও আছে, যেমন এটাই একমাত্র ধর্ম, এবং সর্বশেষ ধর্ম, এবং এটার কোনো রকম চেঞ্জ করা যাবে না যুগের সাথে. কোরানের প্রতি টি শব্দ নির্ভুল , ইসলামে সব কিছুর উত্তর দেয়া আছে, আপনার বাথরুম করা থেকে ধরে , বিয়ে করা , যৌনতা , রাষ্ট্র নীতি আপনার খাবার, আপনার পোশাক আশাক, আপনার অন্য ধর্মী মানুষ দের সাথে আচরণ। নাস্তিক দের সাথে আচরণ ( মৃত্যুদন্ড) সব কিছুর বিধান এখানে দিয়ে দিসে টোটাল কন্ট্রোল যাকে বলে ..আর কোন ধর্ম বা মতবাদ খোদার পক্ষ থেকে আসবেও না কখন ও।। এটা absolute , final, last , যাই বলেন না কেন সব কিছু . কিন্তু সাথের মজার বেপার হচ্ছে, এগুলা নিয়ে আপনে প্রশ্ন ও তুলতে পারবেন না .

প্রশ্ন তুললে আপনি মুরতাদ ( শাস্তি মৃত্যুদন্ড !) কোন প্রমান চাইলে , বা কোন বিষয় নিয়ে সংশয় প্রকাশ এর শাস্তি মৃত্যুদন্ড .
এই বেবস্থা রাখা হয়েছে যাতে আপনার সামনে যে দুইটা মডেল তুলে ধরা যায় , ১) একজন নিখুত মানুষ ( মোহাম্মদ (স) ) এবং একটা নিখুত বই ( কোরান) .

এখানেই সমস্যা, নিখুত মানুষ বলতেও কিছু নাই, absolute বই , যা কখন রিভিশন হবে না , এমন ও কিছু নাই . তাই দিন দিন মুসলিম সম্প্রদায় বিশ্বের দরবারে যা এখন জ্ঞান বিজ্ঞান এর জগত, তা থেকে বহু দূর য়ে অবস্থান করছে।

তাই যেকোন চালেঞ্জ কে এরা ধর্মের এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ হিসাবে ধরে নেয় , এবং সহিংস আচরণ করে . যেমন সম্প্রতি অনসারুল্লা বাংলা টিম দ্বারা , ব্লগার রাজীব এর হত্যা কান্ড .

আমি তো সামান্য মানুষ, সম্প্রতি ইজিপ্ট এর কপ্টিক ক্রিষ্টান দের , প্রায় ১০ লক্ষ্ মিশরীয় ক্রিষ্টান প্রধান পোপ কে মিশরীয় টিভি তে বলতে বাধ্য করা হয় যে কোরানে কোন ভুল নাই , থাকতে পারে না ! কারণ কোন এক মিশরীয় বিশপ বলেছিল যে উনার মনে হয় , কোরানের কিছু আয়াত বা অংশ পরে যোগ করা হয়েছে। !

এমন একটা ধর্ম যেখানে ছোট বেলা থেকে ,আরবের গোত্র ভিত্তিক যুদ্ধের গল্প শুনতে শুনতে বড় হয় না সুধু, মুখস্ত ও করানো হয়। হাজার হাজার মানুষ নিজ হাতে হত্যাকারী দের "বীর" হিসাবে মাথায় পুতে দেয়া হয়। যেন কত বড় পবিত্র কাজ করেছে তারা . এমন একটা গ্রন্থ যেখানে প্রমিজ করা হয়েছে ইসলাম এর বিজয় আসবে অনন্য ধর্মের উপর, এবং পৃথিবী তে একটাই ধর্ম থাকবে এবং তার পর পৃথিবী ধংশ হয়ে যাবে। এমন একটা ফর্মুলা কখনো শান্তি আনতে পারে না .

এখন দেখেন , ক্রিষ্ট্রান , ইহুদি এরা কেও দাবি এখন আর করে না যে বাইবেল এর প্রতিটা সব নিখুত। কিন্তু মুসলিম রা করে। অসম্ভব একটা দাবির ফলাফল সবসময় সহিংসতা দিয়ে শেষ হয়।

ধন্যবাদ।


সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ৮:৩৯
২৯টি মন্তব্য ২০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×