somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইসলামে নারীর সম্মান

০৪ ঠা মার্চ, ২০১১ রাত ১:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


নারী কে? এ সম্পর্কে জানতে Click This Link
একমাত্র ইসলামই মুসলিম নারীদেরকে ইসলামের নির্ভুল দিকনির্দেশনা ও বাস্তব-ধর্মী নীতি মালার মাধ্যমে তাদের যাবতীয় অসম্মান ও অবমাননা থেকে রক্ষা করেছে। ইসলাম তাদের নিরাপত্তা বিধান করেছে, তাদের সম্ভ্রম রক্ষার দায়িত্ব নিয়েছে, তাদের যাবতীয় কল্যাণের নিশ্চয়তা দিয়েছে। দুনিয়াও আখিরাতের সফলতা লাভের জন্য সব ধরনের পথ তাদের জন্য উন্মুক্ত করেছে। ইসলামই তাদের জন্য সুন্দর ও আনন্দদায়ক জীবন নিশ্চিত করেছে। সব ধরনের ফিতনা, ফ্যাসাদ, অন্যায় ও অনাচার থেকে ইসলাম নারীদের হেফাযত করেছে। ইসলাম তাদের প্রতি কোন প্রকার বৈষম্য, যুলুম ও নির্যাতন করার সব পথকে রুদ্ধ করেছে। আর এগুলো সবই হল, তার বান্দাদের প্রতি আল্লাহ তা'আলা অপার অনুগ্রহ, বিশেষ করে নারী জাতির প্রতি। কারণ, তিনি তাদের জন্য এমন এক শরীয়ত নাযিল করেছেন, যা তাদের কল্যাণকে নিশ্চিত করে, ফিতনা- ফ্যাসাদ থেকে তাদের হেফাযত করে, তাদের হঠকারিতা দূর ও তাদের যাবতীয় কল্যাণ নিশ্চিত করে। আল্লাহ তা'আলা ইসলামকে আমাদের জন্য এক বিশাল নেয়ামত হিসেবে দিয়েছেন। বিশেষ করে, ইসলামই আমাদের- এক কথায় আমাদের নারীদের জন্য নিরাপত্তা-স্থল ও আশ্রয় কেন্দ্র। যারা ইসলামের সুশীতল ছায়া তলে আশ্রয় নেবে, তারাই নিরাপদে জীবন যাপন করতে পারবে। বরং ইসলাম সমাজকে সব ধরনের অন্যায়-অনাচার হতে রক্ষা করে। সমাজে যাতে কোন প্রকার বিপদ-আপদ, ঝগড়া-বিবাদ, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয়, তার জন্য ইসলামই একমাত্র গ্যারান্টি। ইসলাম এ সব থেকে সমাজকে রক্ষা করে এবং একটি উন্নত সমাজ জাতির জন্য নিশ্চিত করে।
আর যখন সমাজ থেকে নারীদের সাথে সম্পৃক্ত বিধানগুলো বিলুপ্ত হয়ে যায়, তখন সমাজে অন্যায়, অনাচার, ঝগড়া, বিবাদ ও বিশৃঙ্খলা বৃদ্ধি পায়। নারীদের কোন নিরাপত্তা সে সমাজে অবশিষ্ট থাকে না। আর মানবজাতির ইতিহাস হল এর জ্বলন্ত ও উৎকৃষ্ট প্রমাণ, কারণ, যে ব্যক্তি পৃথিবীর ইতিহাসের দিকে নজর দেবে, সে অবশ্যই দেখতে পাবে, পৃথিবীতে বড় বড় বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ হল, সামাজিক বিশৃঙ্খলা, নৈতিক পতন, বেহায়াপনা ও বেলাল্লাপনার বিস্তার, অবাধে অন্যায়-অত্যাচার সংঘটিত হওয়া ইত্যাদি। আর সমাজে এ গুলো বিস্তারের পিছনে মূল কারণ হল, নারীদের অবাধ চলা ফেরা, নারীরা পুরুষের সাথে অবাধ মেলা-মেশা করা, সাজ-সজ্জা অবলম্বন-বেপর্দা হয়ে ঘর থেকে বের হওয়া, অপরিচিত লোকদের সাথে তাদের ওঠবস, লোক সমাজে তারা অত্যন্ত সুন্দর কাপড় পরিধান করে কোন প্রকার লজ্জা, শরম ছাড়াই বের হওয়া।
আল্লামা ইবনুল কাইয়্যেম রহ. বলেন, এ কথা নি: সন্দেহে বলা যেতে পারে যে, সব ধরনের অনিষ্ট ও বিপদ-আপদের মূল কারণ হল, নারীদের পুরুষদের সাথে অবাধ চলা ফেরা করতে সুযোগ পাওয়া। আর এটাই হল বড় কারণ, দুনিয়াতে ব্যাপক হারে আযাব নাযিল হওয়ার জন্য। অনুরূপভাবে নারীদের কারণেই সর্বসাধারণ হোক কিংবা বিশেষ লোক, সবার উপর বিপর্যয় নেমে আসে, সবাইকে আল্লাহর আযাবে আক্রান্ত হতে হয়।
মনে রাখতে হবে, নারীদের অবাধ মেলামেশার কারণেই সমাজে অন্যায়, অনাচার, অশ্লীলতা, যেনা ব্যভিচার বৃদ্ধি পায়, সমাজের সুনাম সুখ্যাতি বিনষ্ট হয়। আর এ সব হল, সমাজের জন্য বড় ধরনের মহামারি ও আযাবের কারণ।
ইসলামের আগমন হয়েছে মানব জাতিকে আপদ-বিপদ হতে রক্ষা করা এবং মানবতাকে চিকিৎসা ও সংশোধন করার জন্য, যাতে সমাজে যে সব ফিতনা-ফ্যাসাদ দেখা দেয় এবং বিপর্যয় নেমে আসে তা থেকে মানবতাকে মুক্ত করা যায়। ইসলাম হল মূলত: এমন একটি পবিত্র শিক্ষা, যা মানুষকে ধ্বংস ও অশ্লীল কার্যকলাপ হতে রক্ষা করে। এ জন্য বলাবাহুল্য যে, ইসলাম হল আল্লাহর পক্ষ হতে মানব জাতির জন্য বিশেষ রহমত, যা দ্বারা বান্দাদের আত্ম মর্যাদার সংরক্ষণ হয় এবং তাদেরকে দুনিয়াতে অপমান অপদস্থ হওয়া ও আখিরাতের আযাব হতে রক্ষা করে।
হাদিস কুরআন পর্যালোচনা করলে আমরা দেখতে পাই, নারীদের ফিতনার কারণেই দেশ ও সমাজে ফিতনা ফাসাদ, অনিষ্টতা ও এমন এমন বিপর্যয় দেখা দেয়, যার পরিণতি ও শাস্তি যে কত ভয়াবহ, তা আয়ত্ত করা কারোর পক্ষেই সম্ভব নয়।
বুখারী ও মুসলিমে উসামা ইবনে যায়েদ রা. হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমার পর পুরুষদের জন্য নারীদের ফিতনার চেয়ে মারাত্মক ও ক্ষতিকর আর কোন ফিতনা আমি রেখে যাইনি। [বুখারি: ৫০৯৬; মুসলিম: ২৭৪]
এ কারণেই আল্লাহ তা'আলা নারী ও পুরুষদের জন্য আলাদা আলাদা নীতিমালা আরোপ করেছেন, যেগুলো মেনে চললে এবং সমাজে বাস্তবায়ন করলে যাবতীয় কল্যাণ ও দুনিয়া আখিরাতের সম্মান লাভ করা যাবে। সমাজ বা দেশে কোন প্রকার ফিতনা, ফাসাদ আর অবশিষ্ট থাকবে না। আল্লাহ তা'আলা বলেন, মুমিন পুরুষদের বল, তারা তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখবে এবং তাদের লজ্জা-স্থানের হিফাজত করবে। এটাই তাদের জন্য অধিক পবিত্র। নিশ্চয় তারা যা করে সে সম্পর্কে আল্লাহ সম্যক অবহিত। আর মুমিন নারীদেরকে বল, তারা তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখবে এবং তাদের লজ্জা-স্থানের হিফাজত করবে। [সূরা আন-নূর, আয়াত- ৩০-৩১]তিনি আরো বলেনঃ- হে নবী-পত্নীগণ, তোমরা অন্য কোন নারীর মত নও। যদি তোমরা তাকওয়া অবলম্বন কর, তবে (পরপুরুষের সাথে) কোমল কণ্ঠে কথা বলো না। তাহলে যার অন্তরে ব্যাধি রয়েছে, সে প্রলুব্ধ হয়। আর তোমরা ন্যায় সংগত কথা বলবে। আর তোমরা তোমাদের নিজ গৃহে অবস্থান করবে এবং প্রাক-জাহেলী যুগের মত সৌন্দর্য প্রদর্শন করো না। [সূরা আল-আহযাব: ৩২,৩৩]
এ বিষয়ে কুরআন ও সুন্নাহের বর্ণনা অনেক। ইসলাম নারীদের বিষয়ে যে সব বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে, তা মানুষের অকল্যাণ বা তাদের স্বাধীনতা হরণ করার জন্য করে নি, বরং তা করা হয়েছে সমাজকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা, সামাজিক আত্ম-মর্যাদাবোধ ও সমাজের স্থিতিশীলতা বজায় রাখার লক্ষে।
ইসলাম নারীদের জন্য যে সব বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে, তা তাদের স্বাধীনতা কেড়ে নেয়ার জন্য করেনি, বরং তারা যাতে কোন প্রকার অন্যায় ও অশ্লীল কাজে জড়িয়ে না পড়ে, নিরাপত্তা-হীনতায় না পড়ে, সে জন্যই তাদের উপর এ সব বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে। আল্লাহ তাদের উপর বিধি নিষেধ আরোপ করার মাধ্যমে, নারীদের অশ্লীল কাজের দিকে নিয়ে যায়, এমন সব ধরনের উপায় উপকরণ বন্ধ করে দিয়েছেন। আর এটিই হল নারীদের জন্য সত্যিকার সম্মান ও মর্যাদা। হে আল্লাহ আমাদেরকে বুঝার জ্ঞান দান করুন। ইনশাল্লাহ আগামীতে (ইসলামের সুশীতল ছায়ায় নারী)
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা মার্চ, ২০১১ রাত ১:০৬
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×