somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নারী কে?

০৩ রা মার্চ, ২০১১ রাত ৮:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নারীদের সম্পর্কে আলোচনার পূর্বে নারীর সংজ্ঞা বা নারী বলতে আমর কি জানি তা আমাদের জানা থাকা আবশ্যক। المرأة শব্দটি المرء শব্দের স্ত্রী লিঙ্গ, অর্থ নারী। শব্দটি একবচন, এর কোন বহুবচন হয় না। তবে অপর শব্দ থেকে এ শব্দের বহু বচন হল نساء। অর্থাৎ নারী হল তারা যাদের আল্লাহ তা'আলা দুনিয়াতে পুরুষের অর্ধাঙ্গিনী হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। মূলত: আল্লাহ তা'আলা নারীদের পুরুষ হতেই সৃষ্ট করেছেন, যাতে তাদের পরষ্পরিক সম্পর্ক সুদৃঢ় ও গভীর হয় এবং তাদের মধ্যে প্রেম, ভালোবাসা ও দয়া-অনুগ্রহ যেন হয়, অতীব সুন্দর ও মধুময়।
আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ হে মানুষ তোমরা তোমাদের রবকে ভয় কর, যিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এক নফস থেকে। আর তা থেকে সৃষ্টি করেছেন তার স্ত্রীকে এবং তাদের থেকে ছড়িয়ে দিয়েছেন বহু পুরুষ ও নারী। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, যার মাধ্যমে তোমরা একে অপরের কাছে চাও। আর ভয় কর রক্ত সম্পর্কিত আত্মীয়ের ব্যাপারে। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের উপর পর্যবেক্ষক। [কুরআন, সূরা আন-নিসা, আয়াত-১} আয়াত দ্বারা এ কথা স্পষ্ট যে, আল্লাহ তা'আলা আদম আলাইহিসসালাম এর স্ত্রী হাওয়া আলাইহাসসালামকে তার থেকেই সৃষ্টি করেছেন। তারপর আল্লাহ তা'আলা তাদের উভয় থেকে অসংখ্য নারী ও পুরুষ সৃষ্টি করেছেন। আর এসব সৃষ্টি তিনি করেছেন, বিশেষ একটি পদ্ধতিতে যাকে আমরা বিবাহ বলে আখ্যায়িত করি।
এখানে আরও একটি কথা অবশ্যই মনে রাখতে হবে, আল্লাহ তা'আলা পুরুষদের সৃষ্টি করেছেন নির্ধারিত ও স্বতন্ত্র কিছু গুণাবলী ও বৈশিষ্ট্য দিয়ে, অনুরূপভাবে নারীদেরও কিছু নির্ধারিত গুণাবলী ও বৈশিষ্ট্য দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। অবশ্যই তাদের উভয়কে নির্ধারিত ও স্বতন্ত্র যেসব বৈশিষ্ট্য ও গুণাবলি দেয়া হয়েছে, তা নিয়েই তাদের জীবন যাপন করতে হবে। তারপরও যদি উভয় তাদের মৌলিক বৈশিষ্ট্য হতে বের হয়ে যায়, তাহলে বুঝতে হবে, সে তার মূল স্বভাব ও বৈশিষ্ট্য হতে দূরে সরে গেল এবং সঠিক পথ হতে ছিটকে পড়ল।
এতে প্রমাণিত হয় যে, আল্লাহ তা'আলা নারীদের সৃষ্টি করার মূল উপাদানেই তাদের এমন কিছু বৈশিষ্ট্য ও বিশেষ গুণ দিয়েছেন, যা পুরুষের মধ্যে দেননি এবং পরুষদেরও সৃষ্টি লগ্নে এমন কিছু বৈশিষ্ট্য দিয়েছেন যা নারীদের তিনি দেননি, যার ভিত্তিতেই একজন নারী জীবনের বিভিন্ন সময়, প্রেক্ষাপট ও স্থানকাল পাত্র-বেধে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন হয়। কখনো সে মা হয়, কোমল ও দুর্বল হয়, আবার কখনো সে স্ত্রী হয়। নারীরা মনের দিক দিয়ে পুরুষদের অধিক দয়ালু হয়ে থাকে। আর তাদের অবস্থার অধিক পরিবর্তন হয়ে থাকে, যা পুরুষদের বেলায় প্রযোজ্য নয়। যেমন, তার মাসিক হয়, গর্ভ ধারণ করে, সন্তান প্রসব করে, তারা বাচ্চাদের দুধ পান করায়, বাচ্চাদের লালন-পালন করে, ইত্যাদি। এ সব গুনগুলো হল নারীদের সাথে খাস ও তাদের একান্ত বৈশিষ্ট্য, যা পুরুষদের মধ্যে চিন্তা করা যায় না। অনুরূপভাবে পুরুষেরও কিছু বৈশিষ্ট্য আছে যেগুলো তাদের সাথেই খাস ও তাদের সতন্ত্র বৈশিষ্ট্য, নারীদের জন্য সে গুলো কোন ক্রমেই প্রযোজ্য নয়।
সুতরাং, এক শ্রেণির জন্য যে সব গুণাবলী বা বৈশিষ্ট্য রয়েছে, তার প্রতি অপর শ্রেণীর কর্ণপাত করার কোন প্রয়োজন নাই। প্রত্যকে তার নিজ নিজ দায়-দায়িত্ব যথাযথ আঞ্জাম দিতে চেষ্টা করবে। নারীরা যদি বলে আমরা যেমন সন্তান ধারণ করি, অনুরূপভাবে পুরুষদেরও সন্তান ধারণ করতে হবে! তাহলে তা কি কোন দিন সম্ভব? অনুরূপ ভাবে নারীরা যদি বলে পুরুষরা যা যা করে আমরাও তাই করবো, তাও কোন দিন সম্ভব নয়। আল্লাহ তা'আলার সৃষ্টির সূচনা লগ্ন থেকেই নারী ও পরুষদের সতন্ত্র বৈশিষ্ট দিয়ে সৃষ্টি করেছেন এবং প্রত্যেককে আলাদা আলাদা যোগ্যতা দিয়েছেন। আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ- আর তোমরা আকাংখা করো না সে সবের যার মাধ্যমে আল্লাহ তোমাদের একজনকে অন্য জনের উপর প্রাধান্য দিয়েছেন। পুরষদের জন্য রয়েছে অংশ, তারা যা উপার্জন করে তা থেকে এবং নারীদের জন্য রয়েছে অংশ, যা তারা উপার্জন করে তা থেকে। আর তোমরা আল্লাহর কাছে তার অনুগ্রহ চাও। নিশ্চয় আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সম্যক জ্ঞানী। [সূরা আন-নিসা: আয়াত: ৩২]
পরুষরা নারীদের তত্ত্বাবধায়ক, এ কারণে যে, আল্লাহ তাদের একের উপর অন্যকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন এবং যেহেতু তারা নিজদের সম্পদ থেকে ব্যয় করে। [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৩৪]
পুরুষ নারীদের উপর ক্ষমতাধর হওয়ার বিষয়টি হল, আল্লাহর অপার অনুগ্রহ, তিনি কতককে কতকের উপর বিশেষ মর্যাদা দিয়েছেন। কারণ, আল্লাহ তা'আলা পুরুষদের এমন কতক বৈশিষ্ট্য দিয়েছেন, যে গুলা মহিলাদের দেয়া হয়নি। যেমন, পুরুষরা জ্ঞানে পরিপূর্ণ, নারীদের তুলনায় অধিক ধৈর্যশীল, তারা অধিক শক্তিশালী, তারা ক্ষেতে খামারে কাজ করতে পারে, যে কোন ভারি কাজ তারা করতে পারে ইত্যাদি। এ ছাড়াও আল্লাহ তাদের এধরনের কিছু গুন দিয়েছে যে গুলো নারীদের মধ্যে নাই। এ কারণেই আল্লাহ নারীদের পুরুষদের উপর কিছু অধিকার দিয়েছে, যে গুলো তার শক্তি সামর্থ্য ও স্বভাবের সাথে একাকার ও অভিন্ন। আবার পুরুষদের জন্য নারীদের উপর কিছু অধিকার দিয়েছেন, যে গুলোর সাথে তার শক্তি সামর্থ্য ও স্বভাবের সম্পূর্ণ মিল রয়েছে। নারীদের দেয়া দায়-দায়িত্ব গুলো পরুষদের দ্বারা আদায় করা কোন দিন সম্ভব নয়।
এ ভাবেই আল্লাহ তা'আলা নারী ও পুরুষের সৃষ্টি করেছেন এবং তাদের উভয়ের মাঝে ভারসাম্য রক্ষা করেছেন, যাতে দুনিয়ার নিয়ম ও ধারাবাহিকতা ঠিক থাকে এবং কোথাও যেন কোন প্রকার অসামঞ্জস্যতা এ শূন্যতা দেখা না দেয়। কিন্তু যদি আল্লাহর সৃষ্টির বাইরে গিয়ে এক শ্রেণির দায়-দায়িত্ব নিয়ে অপর শ্রেণি টান-হে-ছড়া করে, তাহলে পৃথিবীর ভারসাম্য বিনষ্ট হবে, মানবতা চরম অবনতির দিকে যাবে এবং মানবতার অস্তিত্ব নিয়ে শঙ্কা তৈরি হবে। আল্লাহ আমাদেরকে বুঝার তাউফিক দান করুন। ইনশাল্লাহ আগামীতে (ইসলামে নারীর সম্মান)
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা মার্চ, ২০১১ রাত ৮:৪৩
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×