খুব কমন একটা মুভি হল 'আপ', এটা দেখেননি এমন মুভিখোর খুব কমই আছে। এর আগে মুভি রিভিউ কখনই লেখা হয়নি, এটা আমার লেখা প্রথম মুভি রিভিউ । খুব একটা ভালো হয়তো হয় নি। পরবর্তীতে আরও ভালো লেখার চেষ্টা করব।
এডভেঞ্চারের সাথে কমেডির এক দুর্দান্ত মিশেলে তৈরি আমেরিকান একটি মুভি হল "আপ"। ২০০৯ সালে রিলিজ পাওয়া কম্পিউটার এনিমেটেড এই মুভিটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আপনাকে সমান ভাবে টানবে। আপনি যদি এনিমেটেড মুভি পছন্দ করে থাকেন তবে তো কোনো কথাই নেই আর যদি পছন্দ নাও করে থাকেন তবে বাজি ধরে বলতে পারি এই মুভি দেখার পর থেকে আপনি এনিমেটেড মুভির পুরো অন্ধভক্ত হয়ে যাবেন।
মুভির কাহিনি সংক্ষেপঃ কার্ল ফ্রেডরিকসন খুব লাজুক এবং শান্ত একটি ছেলে। ঘটনাচক্রে কার্ল এর সাথে খুব চঞ্চল এবং কিছুটা অদ্ভুত স্বভাবের মেয়ে এলির পরিচয় এবং বন্ধুত্ব হয়। পরিত্যাক্ত একটি বাড়ি যেটা ছিল এলির ক্লাব হাউস, সেখানে সে কার্ল কে নিয়ে যায়, যেখান থেকে "প্যারাডাইস ফলস" খুব সুন্দর দেখা যায়। এলি রাতে কার্ল এর রুমে আসে এবং কার্ল কে প্রতিজ্ঞা করায় যে "প্যারাডাইস ফলসে" যেতে সে এলিকে সাহায্য করবে।
দীর্ঘ সময় পরে এলি এবং কার্ল বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। কার্ল একজন খেলনা বেলুন বিক্রেতা হিসেবে কাজ করতে থাকে। খুব আনন্দে কাটতে থাকে এলি এবং কার্ল এর বিবাহিত জীবন, কিন্তু ডাক্তার জানায় যে কখনো তাদের কোনো সন্তান হবে না।
"প্যারাডাইস ফলস" ভ্রমণের জন্য তারা পয়সা জমাতে থাকে কিন্তু বিভিন্ন প্রয়োজনে তাদের জমানো পয়সা খরচ হয়ে যায়। ভ্রমণের জন্য বয়স্ক কার্ল অবশেষে পয়সা জমাতে সমর্থ হয় ঠিকই কিন্তু হঠাৎ এলি অসুস্থ হয়ে যায় এবং বৃদ্ধ কার্লকে একা রেখে পরপারে পাড়ি জমায়।
কিছুদিন পর নগর ডেভেলপাররা কার্ল এর বাড়িটি কিনে নিতে চাইলে কার্ল তা বিক্রি করতে অসম্মতি জানায়। কার্ল এবং এলির স্মৃতি বিজড়িত মেইল বক্সটি ডেভেলপার কর্তৃক ক্ষতিগ্রস্ত হলে কার্ল একজন কর্মচারীর মাথা ফাটিয়ে দেয় এবং কোর্ট থেকে নোটিশ আসে যে কার্ল জনসাধারণের জন্য হুমকিস্বরূপ এবং এ কারণে তাকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠানো হবে।
৭৮ বছর বয়স্ক কার্ল তার আজীবন লালিত স্বপ্ন "প্যারাডাইস ফলস" ভ্রমণের জন্য এবং বৃদ্ধাশ্রমে যাওয়ার হাত থেকে বাঁচার জন্য রাতের মধ্যেই হাজার হাজার হিলিয়াম বেলুন তার বাড়ীর সাথে লাগিয়ে বাড়ীটিকেই একটি এয়ারশিপ বানিয়ে ফেলে। পরদিন বৃদ্ধাশ্রম থেকে তাকে নিতে এলে কার্ল তার বেলুন বাড়ীটিকে নিয়েই আকাশে উঠে যায় এবং দুর্ঘটনাচক্রে তার সঙ্গী হয় একজন উপবন অনুসন্ধানকারী ৮ বছরের বালক রাসেল। বলা যেতে পারে মুভির আসল কাহিনী এখান থেকেই শুরু ! পুরো গল্প বলে দিলে মুভি দেখার মজাটাই মাটি হয়ে যাবে। বাকিটুকু জানার জন্য তাই মুভিটা দেখতেই হবে। ওয়াল্ট ডিজনির ব্যানারে নির্মিত এই মুভির IMDb 8.3 ই বলে দেয় মুভিটির বক্স অফিস হিটের কথা। যারা এখনো দেখেননি তারা "টরেন্ট" থেকে নামিয়ে নিন আর উপভোগ করুন দুর্দান্ত একটি এনিমেটেড মুভি "আপ"।