৯০-৯১ এর কথা।শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় ,সবেমাত্র ফার্স্টব্যাচ নিয়ে যাত্রা শুরু করেছে।মূল গেট থেকে এক কিলো পার হয়ে “এ” বিল্ডিং অবধি একটা গাছ দূরে থাক এক রত্তি সবুজের পোচ ও নেই। দেখে মনে হবে খাঁ খাঁ নিদান মরুভুমি।খাবার দাবারের দোকান অন্যুন সাত কিলো দূরে।হলের ডায়নিং মিস হয়ে গেলে গুডবয়দের স্টকে থাকা মুড়ি চিড়া ভরসা।
এহেন খাদ্যাভাবে অপুষ্টিতে ভুগে, ফার্স্ট ব্যাচের লিংকন ভাই এর একটা সমাধান বের করলেন।
শাহপরান হলের পেছনে টিলা , স্যাতস্যাতে বনের মত যায়গা। উনি প্রতিদিন সেই টিলা থাকে বড় ব্যাং ধরে আনতেন এর পর ভাল করে মসলা মাখিয়ে ব্যাং এর ঠ্যাং এর রোস্ট খাওয়া শুরু করলেন।অন্যান্য ছাত্ররা তা দেখে অনভ্যস্ততার কারনে খেতে চাইতোনা।পড়ে দেখা গেল, লিংকন ভাই যখুনি ব্যাংয়ের রোস্ট ভাজা শুরু করতেন , কোথা থেকে অন্যান্য রা রোস্ট খাবার লোভে উনার রুমে হাজির হতো ।
লিংকন ভাই একটু মুখচোরা মানুষ।উনার ভাগ কমে যায় এ কারনে নাও করতে পারেন না।তাই একদিন উনার রুমে সবাইকে ডাকলেনঃ
সবাইকে ট্রেনিং দিলেন কিভাবে দুই হাতে পলিথিন বেধে ব্যাং ধরতে হয়। ট্রেনিং এর সবচাইতে গুরুত্বপুর্ন টিপস হলো, ব্যাং ধরতে হলে সামনে থেকে ধরতে হয় পেছন থেকে ধরতে গেলে ব্যাংলাফ দিয়ে পালিয়ে যাবে। এর পর শেখালেন রান্নার কৌশল,কুনোব্যং খাওয়ার কুফল, ঘাউয়া ব্যাং এর উপকারিতা।
এক সপ্তাহের মাথায় অত্র এলাকায় বড় ব্যাং সাবাড়, এর পর ব্যাঙ্গের আকৃতি ছোট হতে লাগলো।
সংসারে সবাই একই হজম শক্তি নিয়ে আসে না। কোন এক গুণধর ছাত্র কথা টা হজম করতে না পেরে ভিসি স্যার এর কানে যাবার ব্যাবস্থা করলেন। ভিসি স্যার প্রথমটায় বিশ্বাস করতে চান নাই, এটা কিভাবে সম্ভব। পড়ে উনার নিযুক্তখাস পেয়ারা চর মারফতে নিশ্চিত হলেন আসলেই হলের ছাত্ররা ব্যাং ভোগি আর এর মুল নায়ক লিংকন ভাই।
স্যার লিংকন ভাইকে রুমে ডেকে একটা কথাই বললেন,”জানি ব্যং খেতে মানা করা আছে,এরকম কোন রুল নাই তারপরও আমার একটা কথা রেখো।বাবা দয়া করে আর ব্যাং খেয়োনা, এতে পরিবেশে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ফেলবে।”
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৮:৩২