১। প্রান্তিক পরিবার সমূহের প্রধান কর্মক্ষেত্র গার্মেন্টস সেক্টরের প্রায় ৪০% শ্রমিক গত কাল পর্যন্ত হালনাগাদ বেতন পায়নি। বি দ্রঃ এদের ভাতা বলে কিছু নাই।
২। দেশের প্রায় চল্লিশ লাখ পরিবহন শ্রমিক ঈদ বোনাস থেকে বঞ্চিত।
৩। দেশের লক্ষ লক্ষ শিশু শ্রমিকের ঈদ বোনাস বলে স্বীকৃত কিছু নেই।
৪। দেশের লক্ষ লক্ষ দিনমজুর, রিক্সা ওয়ালা, ভাসমান শ্রমিকের ঈদ বোনাস বলে স্বীকৃত কিছু নেই।
৫। দেশের লক্ষ লক্ষ কাজের বুয়া দের ঈদ বোনাস বলে স্বীকৃত কিছু নেই।
এই ধরনের সমাজ বাস্তবতায় খুশির "ঈদ" হয়ে উঠেছে শুধু মাত্র আমাদের মধ্য বিত্ত, উচ্চ মধ্য বিত্ত এবং উচ্চ বিত্তের বা ধনিক শ্রেণির উৎসব।
তাই রমজানের ঐ রোজার শেষে যে খুশির "ঈদ" এবং "ঈদ মোবারক" এল, তা সার্বজনীন নয়, অন্তত সমাজের মুখোশ এবং লেবাসের হিসেব বাদ রাখলে।
৬।
ভিন্ন ঈদঃ বিগত বছরের সরকার বিরোধী আন্দোলনে যে সব পরিবারের (বিএনপি, জামাত শিবির, রাজাকার, হেফাজত,পুলিশ, আনসার, পথচারী, হরতালের আগুনে ঝলসিত মানুষ এবং অন্য ভিক্টিম) কর্মক্ষম সদস্য প্রান হারিয়েছেন কিংবা পঙ্গু হয়েছেন, সেই সব পরিবারের আর্থিক পরাজয়ের মধ্যে হাজির হয়েছে এই ঈদ। সেই সব পরিবাবের জন্য সমবেদনা। আশা করি, একদিন রাষ্ট্র বুঝে উঠবে তাঁর চোখে নাগরিক যেই হোক না কেন, সে সমান অধিকার রাখে।
"আজ ঈদ, ঘরে ঘরে আনন্দ" , এই ঘর গুলোর মধ্যে যেন আমাদের প্রান্তিক মানুষের ঘর, বস্তি ঘর, কৃষকের কুঁড়ে ঘর অথবা ঘর হীনের উন্মুক্ত প্রান্তর অন্তর্ভুক্ত হয়। আমাদের রাষ্ট্র যেন সেই, নিয়তে কাজ করে আগামীতে। আমাদের অর্থনীতি ও রাজনীতি যাতে সেই লক্ষ্যে নিবেদিত হয়।
এইসব বস্তিবাসী "ফকিন্নির পো" রা যতদিন না শক্তি মান এবং প্রিভিলেজড হবে আমার আপনার মত, তত দিন স্বাধীনতার তাৎপর্য বৃথা। স্বাধীনতার সুফল যদি কারো ভোগ করার অধিকার থাকে, তাহলে রাষ্ট্র কাঠামোয় একেবারেই অবহেলিত এই প্রান্তিক গোষ্ঠীরই রয়েছে সবার আগে। মুক্তির আন্দোলন সংগ্রামে এরাই বুক চিতে দেয়, এদের রক্তেই সিক্ত হয় মাটি, রাজপথ।
মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তা পাক বাংলার সকল কর্মজীবি শিশু, সকল প্রান্তিক মানুষ। বাঁচার তাগিদে আর ক্ষুধার যন্ত্রণায় যেন কাজ করতে না হয় কোন শিশুর। অর্থনৈতিক মুক্তি আসুক সকল নিন্ম বিত্ত বিশেষ করে বস্তির মানুষের।