প্রায় ১ বৎসর আগে ইউটিউব এ হিপ্নোটিজম নিয়ে ১ টা ভিডিও দেখি। এরপর জিনিসটা মাথায় ঢুকে যায় পুরোপুরি ভাবে। গত বৎসর এ ইন্টারনেট এ এই ব্যাপারে যতগুলো বই পেয়েছি পড়েছি। ইউটিউব এ কয়েকশত ভিডিও দেখেছি । এবং জিনিসটা এখন আমি পারি। খুব ভালভাবে পারি তা বলবনা। কেননা এটা এমন ১ টা ব্যাপার যেটা একা একা শেখা খুব কষ্টের। আর আমাদের দেশে সেই সুযোগ নেই। যাহোক সিদ্ধান্ত নিলাম যে আমি যতটুকু পারি তা সবার সাথে শেয়ার করবো। লেখাগুলো আমি ধাপে ধাপে দিবো। আমি আগে হিপ্নটিজম সম্পর্কে পরিস্কার ধারনা দেয়ার চেষ্টা করব। এবং সব শেষে সবচেয়ে সহজ টেকনিক টা আপনাদের শিখিয়ে দিবো এবং এটি এতই সহজ যে সবাই সফল হবেন।
আমার লেখাগুলো আমি ৫ টি ভাগে লিখবঃ
১। হিপ্নোটিজম সম্পর্কে প্রচলিত ভুল ধারনাগুলো
২। হিপ্নোটিজম কি?
৩। হিপ্নোটিজম কিভাবে কাজ করে?
৪। হিপ্নোটিজম দিয়ে কি কি করা যায় ?
৫। কিভাবে হিপ্নোটিজম করা হয়?
হিপ্নোটিজম সম্পর্কে প্রচলিত ভুল ধারনাগুলো:
হিপ্নোটিজম নামটা শুনলেই আমাদের মনে যে চিত্র টা আসে সেটা হল জাদুকর টাইপ এর ১ জন কাউকে হিপ্নটাইজ করে বশ করে রেখেছে অথবা কাউকে হিপ্নটাইজ করে বলা হল যে তার হাতের মাটির ঢেলা টা কুকি বিস্কুট আর সে সেটা খাউয়া শুরু করল। আসলে হিপ্নোটিজম ব্যাপারটা এমন না। বিভিন্ন সিনেমা উপন্যাসে আসলে এইভাবে ভুলভাবে ব্যাপারটা কে উপস্থাপন করা হয়। এখনও হচ্ছে বিভিন্ন স্টেজ শো তে। এবং এসব করে তারা নিজেদের আয় বারাতে এবং দর্শক দের কাছে নিজের কেরামতি দেখাতে। আর এদের কারনে হিপ্নোটিজম সম্পর্কে মানুষ ভুল ধারনা পাচ্ছে আর এর ভালো দিক অর্থাৎ হিপ্ন-থেরাপি থেকে দূরে থাকছেন। এটা নিয়ে পরে আরও কোথা হবে।মুল কথায় আসি। হিপ্নোটিজম নিয়ে মিথ গুলো হলঃ
১। হিপ্ন-টিস্ট দের বিশেষ কোনও শক্তি আছে>> পুরাই ভুয়া। এটা সত্য হলে দুনিয়া শাসন করত এরা।
২।সুধু দুর্বল মনের মানুষ রাই হিপ্ন-টাইজড হতে পারে>> ভুয়া ।হিপ্ন-টাইজড হওয়া কোনও অযোগ্যতা না। এটা ১ টা যোগ্যতা। এবং শিক্ষিত , বুদ্ধিমান মানুষ তারাতারি হিপ্ন-টাইজড হয়। কারণ এদের মনোযোগ শক্তি ও কল্পনা শক্তি ভালো থাকে।
৩। হিপ্ন-টাইজড মানুষ( সাবজেক্ট) এর উপর হিপ্ন-টিস্ট এর ১০০% নিয়ন্ত্রণ থাকে এবং তাকে দিয়ে যা খুশী করানো যায়।>> ভুল। সাবজেক্ট চাচ্ছেনা, অথবা তার ক্ষতি হবে বা তার বিশ্বাস ও আদর্শ পরিপন্থি কোনও কাজ তাকে দিয়ে করানো সম্ভব না।
৪। কেউ কি হিপ্ন-টাইজড অবস্থার মাঝে চিরদিনের জন্য আটকে যেতে পারে??>> আরে না ভাই। খুব বেশি হলে ভালো ১ টা ঘুম দিবে এবং ঘুম শেষে স্বাভাবিক ভাবে উঠে পরবে।
৫। কাউকে কি ইচ্ছার বিরুদ্ধে হিপ্ন-টাইজ করা যায়???? না না না!!! তাইলে ত আমি অবামা ক হিপ্নটাইজ করে অর জাইগায় আমি বসতাম। তবে কথার মারপ্যাঁচে ফেলে কাজ হাসিল করা যায়। এটা কে NLP বলে। এবং অবামা তার বক্তৃতায় এটা ব্যাবহার করেন বলে অভিযোগ আছে।
৬। হিপ্ন-টাইজড অবস্থায় যেহেতু আমি হিপ্ন-টিস্ট এর কথা শুনেছি সেহেতু আমি হিপ্ন-টাইজড হইনি।>> ভুল আপনি কথা শুনবেন। আপনার সেসব মনে থাকবে( সব না)। এবং আপনার ভালো না লাগ্লে উঠে পরবেন। এটাই স্বাভাবিক।
৭। আমাকে কেউ হিপ্নটাইজ করতে পারবে না!!! চেলেঞ্জ!!>>> অবশ্যই পারবেনা। আমার দাদাও পারবেনা। এটা ক্রিকেট খেলা না যে সাব্জেক্ত ব্যাটসম্যান আর হিপ্ন-টিস্ট বলার। আর তার কাজ সাব্জেক্ত এর ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে আউট করা। সাবজেক্ট সহায়তা করলেই কেবল তাকে হিপ্নটাইজ করা যায়। আর কেউ যদি ইচ্ছার বিরুদ্ধে করতে পারে তাহলে উনি হয়ত তিব্বত এর পাহাড়ের গুহায় থাকেন।এটা আমার ধারনা।
অনেক কপচালাম। আজকের মত এখানেই থাক। পরের পর্বে হিপ্ন-টিজম এর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা এবং আমাদের প্রতিদিনের জীবনে আমরা প্রতিদিন ই কিভাবে নিজের অজান্তে হিপ্ন-টাইজড হই সেটা নিয়ে বলব। কারো কিছু জানার থাকলে প্রশ্ন করবেন আর কোনও ভুল হয়ে থাকলে ধরিয়ে দিবেন দয়া করে।B-
২ য় পর্বের লিঙ্ক Click This Link