নিয়মকানুন জানা থাকলে কম সময়ে কম ঝামেলায় মাইক্রোওয়েভ ওভেনে বানানো যায় মজাদার সব খাবার। আধুনিক জীবনের অন্যতম সঙ্গী মাইক্রোওয়েভ ওভেন। চুলার পাশাপাশি কিছু রান্না যদি মাইক্রোওয়েভ ওভেনে করা যায়, তাহলে সময় বাঁচবে, রান্নাও দ্রুত হবে; নিজের জন্য খানিকটা সময় বের করতে পারবেন গৃহিণী। চুলায় যদি মাংস রান্না করেন তাহলে ওভেনে খিচুড়িটা রান্না করতে পারেন। সব ধরনের উপাদান মিশিয়ে ওভেনে নির্দিষ্ট তাপমাত্রা দিয়ে দিন। সবজিও রান্না করতে পারেন। অনেকে গরু বা খাসির মাংসের পাশাপাশি মুরগির নানা পদ তৈরি করেন। আগের রাতে ভালো করে মুরগির মাংস মাখিয়ে রাখুন। পরদিন ওভেনে সহজেই রান্না করতে পারবেন। তবে খিচুড়ি বা পোলাও যা-ই রান্না করুন না কেন, ন্যূনতম আধা ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। মাছের কোপ্তা করলেও একই নিয়ম মেনে চলুন। আগে থেকে মাছটা মিহি করে নিন। এ ছাড়া ফিরনি-পায়েসও ওভেনে রান্না করা যায়।
মাইক্রোওয়েভ ওভেনে মাংস রান্না করলে অবশ্যই সেটি কয়েক ঘণ্টা আগে ভালোভাবে মেখে নিতে হবে। মাংসের হাড় তাপ পরিবাহী হওয়ায় হাড়যুক্ত মাংস হাড়বিহীন মাংসের চেয়ে দ্রুত রান্না হয়। হাড়বিহীন মাংস রান্না করতে চাইলে পাতলা স্লাইস করে নিন। এতে তাড়াতাড়ি সেদ্ধ হবে। যেকোনো মাংস, সবজি রান্নার সময় একবার উল্টে দিন। যাতে এগুলো সমানভাবে রান্না হতে পারে। এ ছাড়া মাংসগুলো কাঁটাচামচ বা টুথপিক দিয়ে ছিদ্র করে নিলে সহজে সেদ্ধ হবে। মাইক্রোওভেনে রান্নার আগে মাংসের টুকরোগুলো সমান করে কেটে নিতে হবে। মনে রাখতে হবে, একসঙ্গে বেশি পরিমাণে রান্না করবেন না। তাহলে সব খাবার সমান রান্না হবে না। ভাগ করে নিতে হবে। মাংস বা সবজিতে পানি থাকলে তা ঝরিয়ে নিলে রান্না দ্রুত হবে। ডিম, পনির বা ক্রিমজাতীয় খাবার তৈরি করার সময় তাপমাত্রার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। এসব উপাদানের খাবার সাধারণ চুলার চেয়ে কম তাপমাত্রায় মাইক্রোওয়েভ ওভেনে রান্না করতে হবে। গরম মসলা, লবণ বা গোলমরিচের গুঁড়া ওভেনে রান্নার ক্ষেত্রে কম পরিমাণে ব্যবহার করুন; যাতে এসবের গন্ধ কম ছড়ায়।’ গরুর মাংসের ভুনা, খাসির রেজালা, কলিজা ভুনা, মগজ ভুনা, শিককাবাব করতে পারবেন মাইক্রোওয়েভ ওভেনে। এসবের পাশাপাশি মুরগিরও বিশেষ পদ রান্না করা যেতে পারে। চিকেন তন্দুরি, কোরমা, চিকেন শাসলিক দ্রুত রান্না করে পরিবেশন করুন। এ ছাড়া মিক্সড ভেজিটেবল সালাদসহ চমৎকার সব সালাদ তৈরি করতে পারেন ওভেনে। এতে করে একসঙ্গে কয়েকটা পদ তৈরি হয়ে যাবে।
গরুর মাংসের কোপ্তাকারি-চারজনের জন্য
উপকরণ: গরুর কিমা ১ কাপ, আদা বাটা সিকি চা-চামচ, গরম মসলা পাউডার সিকি চা-চামচ, লেবুর রস ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কিমা ১ টেবিল-চামচ, কাঁচামরিচ কুচি ১ চা-চামচ, পুদিনাপাতা ১ টেবিল চামচ, ব্রেড ক্রাম্ব ২ টেবিল-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, ডিম অর্ধেক, গোলমরিচের গুঁড়া সিকি চা-চামচ।
গ্রেভি: তেল ২ টেবিল-চামচ, ঘি আধা চা-চামচ, পেঁয়াজ বেরেস্তা ২ টেবিল-চামচ, টমেটো পেস্ট ১ টেবিল-চামচ, টকদই ২ টেবিল-চামচ, কিশমিশ ১ টেবিল-চামচ, আদা বাটা আধা চা-চামচ, রসুন বাটা সিকি চা-চামচ, মরিচ গুঁড়া সিকি চা-চামচ, জিরা গুঁড়া সিকি চা-চামচ, গরম মসলা পাউডার সিকি চা-চামচ, পোস্তদানা বাটা আধা চা-চামচ, তেজপাতা, লং ২টি করে, লবণ পরিমাণমতো, টমেটো সস ১ চা-চামচ।
প্রস্তুত প্রণালি: গরুর মাংস মিহি কিমা করে নিন। কিমার সঙ্গে পেঁয়াজ কুচি, আদা বাটা, কাঁচামরিচ, পুদিনাপাতা কুচি, লবণ, লেবুর রস, গরম মসলার গুঁড়া, ডিম, ব্রেড ক্রাম্ব—সবকিছু ভালো করে মাখিয়ে গোল গোল বল তৈরি করুন।
মাইক্রো পাওয়ার হাই সেট করুন। একটা ওভেনপ্রুফ ডিশে ২ টেবিল-চামচ তেল নিন। তেলে বলগুলো দিয়ে দিন। ডিশে ঢাকনা বন্ধ করে ২ মিনিট ভুনে নিন।
২ মিনিট পর ডিশ বের করে কোপ্তার বলগুলো আরেকটি পাত্রে রেখে আদা, রসুন বাটা, গুঁড়া মরিচ, টকদই, জিরা গুঁড়া, গরম মসলার গুঁড়া, পোস্তাদানা বাটা, টমেটো পেস্ট, তেজপাতা, লবঙ্গ, কিশমিশ ২ টেবিল-চামচ, পরিমাণ পানি ভালো করে মিশিয়ে ঢাকনা খুলে ওভেনে রাখুন। ওভেনে ২ মিনিট মসলা ভুনে নিন। ২ মিনিট পর পাত্র বের করে ভুনা কোপ্তা, ঘি, পেঁয়াজ বেরেস্তা, লবণ খুব ভাল করে মিশিয়ে ওভেনে পাতের ঢাকনা বন্ধ করে ৬ মিনিট রান্না করুন। ৬ মিনিট পর পাত্র বের করে নেড়ে নিন। পাত্রের ঢাকনা বন্ধ করে আরও ২ মিনিট রান্না করুন। ২ মিনিট পর কোপ্তাকারি বের করে ৫ মিনিট ডিশের ঢাকনা বন্ধ করে রাখুন। এরপর গরম গরম ভাত, পোলাও, পরোটা, রুটির সঙ্গে পরিবেশন করুন।
খাসির রেজালা-পাঁচজনের জন্য
উপকরণ: খাসির মাংস (হাড়ছাড়া) ৫০০ গ্রাম, পেঁয়াজ কুচি ২ টেবিল-চামচ, আদা বাটা ১ চা-চামচ, তেল ২ টেবিল-চামচ, ঘি ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ বেরেস্তা ১ টেবিল-চামচ, ক্রিম ২ টেবিল-চামচ, রসুন বাটা আধা চা-চামচ, কাঠবাদাম বাটা আধা চা-চামচ, পোস্তদানা বাটা আধা চা-চামচ, জিরার গুঁড়া আধা চা-চামচ, কাঁচামরিচ ২-৩টি, টকদই আধা কাপ, লবণ আধা চা-চামচ, আস্ত এলাচ, দারচিনি, লবঙ্গ, তেজপাতা ১টি করে, জাফরান সামান্য, গোলাপ জল ১ চা-চামচ।
প্রস্তুত প্রণালি: খাসির মাংস ২ ইঞ্চি লম্বা ও পাতলা করে কেটে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। টকদই মাখিয়ে ১ ঘণ্টা ঢেকে রাখুন।
একটা ওভেনপ্রুফ ডিশে তেল দিয়ে পেঁয়াজ কুচি, আদা, রসুন, কাঠবাদাম, পোস্তদানা বাটা, ধনে, জিরা ও গরম মসলা গুঁড়া, আস্ত এলাচ, দারচিনি, লবঙ্গ, তেজপাতা ও ২ টেবিল-চামচ পানি মিশিয়ে ডিশের ঢাকনা খুলে ওভেনে রাখুন। মাইক্রো পাওয়ার হাই সেট করে ২ মিনিট ওভেনে মসলা ভুনে নিন। ২ মিনিট পর ডিশ বের করে টকদই মেশানো মাংস মসলার সঙ্গে মিশিয়ে নিন এবং ডিশের ঠাকনা বন্ধ করে ৮ মিনিট ঢেকে রান্না করুন।
ওভেন বন্ধ করে ৩ মিনিট রাখুন। এরপর ওভেন থেকে বের করে ক্রিম মিশিয়ে ৫ মিনিট ডিশের ঢাকনা বন্ধ করে রাখুন।
তেহারি-ছয়জনের জন্য
পোলাও তৈরি
উপকরণ: পোলাওয়ের চাল ৫০০ গ্রাম, গরম পানি ১ লিটার, পেঁয়াজ বেরেস্তা ১ টেবিল-চামচ, ঘি ১ চা-চামচ, লবণ আধা চা-চামচ, আস্ত এলাচ, দারচিনি, লবঙ্গ, তেজপাতা ১টি করে, তেল ২ টেবিল-চামচ।
মাংস তৈরি: খাসির মাংস ১ কেজি, আদা বাটা ১ টেবিল-চামচ, রসুন বাটা ১ চা-চামচ, জিরার গুঁড়া আধা চা-চামচ, মরিচ গুঁড়া আধা চা-চামচ, কাঠবাদাম বাটা ১ চা-চামচ, পোস্তদানা বাটা ১ চা-চামচ, গরম মসলা পাউডার আধা চা-চামচ, টকদই ১ কাপ, আলু বোখারা ৪টি, ঘি ১ টেবিল-চামচ, তেল ২ টেবিল-চামচ, পেঁয়াজ বেরেস্তা ১ কাপ, লবণ আধা চা-চামচ, কাঁচামরিচ ৫-৬টি।
প্রস্তুত প্রণালি: পোলাওয়ের চাল ধুয়ে ভিজিয়ে রাখুন আধা ঘণ্টা। একটা ওভেনপ্রুফ ডিশে তেল, ঘি, চাল, আস্ত এলাচ, দারচিনি, লবঙ্গ, তেজপাতা, পেঁয়াজ বেরেস্তা, লবণ মিশিয়ে ডিশের ঢাকনা খুলে ওভেনে রাখুন।
মাইক্রো পাওয়ার হাই সেট করুন। ২ মিনিট চাল ভুনে নিন। ২ মিনিট পর ডিশ বের করে নিন। ভুনা চালের সঙ্গে গরম পানি মিশিয়ে ১০ মিনিট ডিশের ঢাকনা বন্ধ করে রান্না করুন। মাঝে একবার ডিশ বের করে নেড়ে দিন।
খাসির মাংস ছোট টুকরা করে কেটে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। একটা ওভেনপ্রুফ ডিশে তেল, টকদই, আদা, রসুন, পোস্তদানা বাটা, মরিচ, জিরা, গরম মসলা পাউডার, আলু বোখারা, পেঁয়াজ কুচি, ঘি ২ টেবিল-চামচ পানি মিশিয়ে ডিশের ঢাকনা খুলে ওভেনে রাখুন। ২ মিনিট মসলা ভুনে নিন।
২ মিনিট পর ডিশ বের করে মাংস মসলার সঙ্গে মিশিয়ে নিন। মসলার সঙ্গে মাংস মিশিয়ে ডিশের ঢাকনা বন্ধ করে ১০ মিনিট রান্না করুন। ১০ মিনিট পর ডিশ বের করে ভালো করে নেড়ে দিন। এরপর আরও ৫ মিনট রান্না করুন। ৫ মিনিট পর ডিশ বের করে রান্না করা পোলাওয়ের সঙ্গে কাঁচামরিচ, পেঁয়াজ বেরেস্তা মিশিয়ে দিন। ডিশের ঢাকনা বন্ধ করে ৩ মিনিট রান্না করুন। ৩ মিনিট পর ডিশ বের করে ওভেনের বাইরে রেখে দিন আরও ৫ মিনিট। ৫ মিনিট পর গরম গরম পরিবেশন করুন।
পাস্তা বাস্তা
পাস্তাগুলোকে প্রথমে সেদ্ধ করে নিতে হয়। সেদ্ধ হয়ে গেলে গরম পানি থেকে তুলে ঠান্ডা পানিতে ভেজানো হয়। ঠান্ডা হয়ে গেলে পাস্তাগুলোকে তুলে জলপাই তেল মাখিয়ে রাখতে হয়, যাতে পাস্তাগুলো ঝরঝরে থাকে।
আগে থেকে বেশামেল তৈরি করে রাখতে হয়। ময়দা, মাখন, জয়ত্রী, দুধ, লবণ দিয়ে তৈরি বিশেষ মিশ্রণের নামই বেশামেল।
এরপর মাশরুম, চিকেন ব্রেস্ট, অরিগানো, টিমিয়ান সস, রসুনের তেল, চিজ ও বেশামেলের সঙ্গে পাস্তাগুলোকে মেশানো হয়।
চিনামাটির বাটিতে করে এবার এই মিশনকে ওভেনে দিতে হয়।
৩৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ১০ থেকে ১৫ মিনিট রান্না করতে হয়।
গরম গরম পাস্তা বাস্তা পরিবেশন করা হয়। সঙ্গে থাকে দই, মেয়োনেজ ও কেচাপের তৈরি বিশেষ সস।
চকলেট লগ কেক
উপকরণ: ডিম ৮টা, চিনি ২০০ গ্রাম, ময়দা ২০০ গ্রাম, ভ্যানিলা ৫ গ্রাম, মাখন ৫০ গ্রাম, কোকো পাউডার ২০ গ্রাম, ডার্ক চকলেট ১০০ গ্রাম।
প্রণালি: চিনি ও ডিম বিট করে নিন। পরে ময়দা ছেঁকে নিয়ে বিট করা চিনি ও ডিমের সঙ্গে মিশিয়ে নিন। মাখন তরল করে নিয়ে ভ্যানিলা ও মাখন মিশিয়ে খামির তৈরি করুন। ওভেনে ১৮০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় ২০ মিনিট রেখে নামিয়ে ফেলুন। ঠান্ডা হলে কেটে ডার্ক চকলেট ক্রিম দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
রেইজিন ব্রেড
উপকরণ: ময়দা ১ কেজি, চিনি ১৫০ গ্রাম, লবণ ১৫ গ্রাম, মাখন ৫০ গ্রাম, ইস্ট ২০ গ্রাম, ইমপ্রুভার পাউডার ১০ গ্রাম, ডিম ১টা, কিশমিশ ২৭৫ গ্রাম, পানি পরিমাণমতো।
প্রণালি: সব উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে খামির তৈরি করুন। প্রতিটি ৪০০ গ্রাম করে কেটে নিয়ে ২০০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপে ৩৫ মিনিট পর তুলে ফেলুন।
সুইট কর্ন ব্রেড
উপকরণ: ময়দা ১ কেজি, চিনি ১৫০ গ্রাম, লবণ ১৫ গ্রাম, মাখন ৫০ গ্রাম, ইস্ট ২০ গ্রাম, ইমপ্রুভার পাউডার ১০ গ্রাম, ডিম ১টা, সুইট কর্ন ২৭৫ গ্রাম, পানি পরিমাণমতো।
প্রণালি: সব উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে খামির তৈরি করুন। প্রতিটি ৪০০ গ্রাম করে কেটে নিয়ে ২০০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপে ৩৫ মিনিট পর তুলে ফেলুন।
ওটমিল ব্রেড
উপকরণ: ময়দা ১ কেজি, চিনি ৪০ গ্রাম, লবণ ১৫ গ্রাম, মাখন ৫০ গ্রাম, ইস্ট ২০ গ্রাম, ইমপ্রুভার পাউডার ১০ গ্রাম, ডিম ১টা, ওটমিল ১০০ গ্রাম, পানি পরিমাণমতো।
প্রণালি: সব উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে খামির তৈরি করুন। প্রতিটি ৪০০ গ্রাম করে কেটে নিয়ে ২০০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপে ৩৫ মিনিট পর তুলে ফেলুন।
রয়েল আইসিন কেক
উপকরণ: মাখন ৫০০ গ্রাম, চিনি ৫০০ গ্রাম, ডিম ১০টা, ময়দা ৬২৫ গ্রাম, বেকিং পাউডার ৫ গ্রাম, ভ্যানিলা ৫ মিলি লিটার, চেরি ১০০ গ্রাম, কমলার খোসা ১০০ গ্রাম, কাঠবাদাম কুচি ১০০ গ্রাম, কিশমিশ ১০০ গ্রাম, গুঁড়া চিনি ৫০০ গ্রাম, ৩টা ডিমের সাদা অংশ।
প্রণালি: মাখন ও চিনি ডিমের সঙ্গে মিশিয়ে বিট করুন। ময়দা ও বেকিং পাউডার ছেঁকে নিয়ে মিশিয়ে দিন। এবার ভ্যানিলা, চেরি, কমলার খোসা, কাঠবাদাম কুচি কিশমিশ দিয়ে ভালো করে খামির তৈরি করুন। এবার এটাকে ১৮০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেট তাপমাত্রায় আঁচ দিন। ৩০ থেকে ৩৫ মিনিট পর নামিয়ে ঠান্ডা করে নিন। চিনির গুঁড়া ও ডিমের সাদা অংশ দিয়ে রয়েল আইসিন তৈরি করুন। ঠান্ডা কেক সাইজ করে কেটে নিয়ে রয়েল আইসিন দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
ভ্যানিলা লগ কেক
উপকরণ: ডিম ৮টা, চিনি ২০০ গ্রাম, ময়দা ২০০ গ্রাম, ভ্যানিলা ৫ গ্রাম , মাখন ৫০ গ্রাম, বাটার ক্রিম।
প্রণালি: চিনি ও ডিম বিট করে নিন। পরে ময়দা ছেঁকে নিয়ে বিট করা চিনি ও ডিমের সঙ্গে মিশিয়ে নিন। মাখন তরল করে নিয়ে ভ্যানিলা ও মাখন মিশিয়ে খামির তৈরি করুন। ১৮০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় ২০ মিনিট রেখে নামিয়ে ফেলুন। ঠান্ডা হলে ক্রিম দিয়ে রোল করে নিন। পরে লগ আকৃতিতে কেটে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
জিঞ্জার ব্রেড কুকিজ
উপকরণ: মাখন ৩৫০ গ্রাম, ব্রাউন সুগার ২৫০ গ্রাম, খাওয়ার সোডা ৫ গ্রাম, লবণ ৪ গ্রাম, আদা গুঁড়া ৫ গ্রাম, দারচিনি পাউডার ৫ গ্রাম, লবঙ্গ গুঁড়া ২ গ্রাম, ডিম ২টা, মধু ৪৪০ গ্রাম, ময়দা ৭৫০ গ্রাম।
প্রণালি: মাখন ও চিনি একসঙ্গে মাখাতে হবে। নরম হলে ডিম ভেঙে দিতে হবে। এবার বাকি সব মিশিয়ে খামির তৈরি করুন। এবার ১৮০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপে ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর নামিয়ে ফেলুন।
সিনামন লিপস কুকিজ
উপকরণ: মাখন ১ কেজি, চিনি ৮০০ গ্রাম, ডিম ২টা, ডিমের কুসুম ৪টা, ময়দা ১৮০০ গ্রাম, এলাচ গুঁড়া ৩০ গ্রাম।
প্রণালি: মাখন ও চিনি একসঙ্গে মেখে ডিম ও ডিমের কুসুম দিয়ে মেখে নিতে হবে। পরে ময়দা, এলাচ গুঁড়া মিশিয়ে খামির তৈরি করে পাতার আকৃতিতে কেটে নিতে হবে। এবার ১৮০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় ২০ মিনিট রেখে নামিয়ে নিতে হবে।
আইস বক্স কুকিজ ও পিনাট বাটার কুকিজও একই নিয়মে আলাদা আকৃতিতে কাটতে হবে।
যত্নে থাকুক মাইক্রোওয়েভ ওভেন
জীবনযাপনের কাজে ব্যবহূত বৈদ্যুতিক যন্ত্রের মধ্যে যেসব যন্ত্রের নাম আসে এর মধ্যে মাইক্রোওয়েভ ওভেন অন্যতম। খাবার গরম করার কাজে এর তুলনা হয় না। সঙ্গে মজার খাবার তৈরির কাজও রয়েছে। এই বৈদ্যুতিক যন্ত্রটি ব্যবহার করতে হয় অত্যন্ত সাবধানতার সঙ্গে। এ ছাড়া যত্ন নিতে হয় সব সময়। কিন্তু অনেকেই মাইক্রোওয়েভ ওভেনের সঠিক যত্ন কীভাবে নিতে হয়, তা জানেন না। ফলে যন্ত্রে ত্রুটি দেখা যায়। অনেক সময় স্থায়ীভাবে বিকলও হয়ে যেতে পারে দরকারি এ যন্ত্রটি।
মাইক্রোওভেনের যত্ন নিতে হলে যেসব বিষয় খেয়াল রাখতে হবে তা হলো—
মাইক্রোওভেনের ভেতরটা খুবই উত্তপ্ত থাকে। তাই এখানে অবশ্যই ওভেনপ্রুফ বাসন ব্যবহার করতে হবে।
এতে ধাতব কোনো বাসন ব্যবহার করা যাবে না। ফলে ওভেন নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
মাইক্রোওয়েভ ওভেন কম ভোল্টেজে চালানো যাবে না। এতে এর ট্রান্সফরমার নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এমনকি এটি স্থায়ীভাবে নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
বিপদ থেকে মুক্তির জন্য এতে প্রটেক্টর লাগিয়ে নিলে ভালো হয়। এতে বিপদের আশঙ্কা কম থাকে।
খাবার গরম করার সময় অনেক সময় বেশি গরম হয়ে তা মাইক্রোওয়েভ ওভেনের ভেতরে পড়ে যেতে পারে। তাই খাবার গরম হয়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে এটি পরিষ্কার করতে হবে। অন্যথায় এটির ভেতর দুর্গন্ধ হয়ে যেতে পারে। এমনকি পরে গরম করা খাবার নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
মাইক্রোওয়েভ ওভেনের পেছনের যে ফাঁকা জায়গা আছে সেখানে তেলাপোকা, মাকড়সা বা টিকটিকি ঢুকে যেতে পারে। এসব ক্ষেত্রে যেকোনো সময় খাবার নষ্টের কারণ হতে পারে। তাই সব সময় মাইক্রোওভেনের পেছনের দিক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
মাইক্রোওভেনের সুইচ চালু রাখা যাবে না। কাজ শেষ করে এটি বন্ধ রাখতে হবে। সুইচ চালু থাকলে এ থেকে বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।
মাইক্রোওয়েভ ওভেন অনেক সময় বিদ্যুতায়িত হয়ে যেতে পারে। এ থেকে রক্ষা পেতে আর্থিং ব্যবহার করতে হবে।
খাবারের পরিমাণ অনুযায়ী মাইক্রোওয়েভ ওভেন চালু রাখা উচিত। বেশি খাবারের ক্ষেত্রে সময় বেশি ও পরিমাণে অল্প খাবারের ক্ষেত্রে কম সময় এটি চালু রাখা। খাবার যাতে পুড়ে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখা।
মাইক্রোওয়েভ ওভেনটি যাতে শিশুদের নাগলের বাইরে থাকে, এমন স্থানে এটি রাখতে হবে।
পরিষ্কার করার নিয়ম:
ওভেনের প্লাগটি খুলে নিন এবং ভেতরের ট্রে বা টার্নটেবিল বের করুন।
দুটি পাত্রে পানি নিয়ে দুটি স্পঞ্জ বা সুতির নরম কাপড় নিন। একটি পাত্রে গলানো সাবান নিয়ে তাতে স্পঞ্জ চুবিয়ে বাড়তি পানিটা ফেলে দিয়ে ওভেনের ভেতরের চারপাশ ভালো করে মুছে নিতে হবে। এরপর পরিষ্কার পানির মধ্যে অপর স্পঞ্জ চুবিয়ে ভালো করে কয়েকবার মুছে নিতে হবে। এখন সুতি কাপড় দিয়ে ওভেনের ভেতরটি ভালোভাবে মুছে নিন, যেন গায়ে পানি লেগে না থাকে। তারপর ওভেনের ট্রে ভেতরে বসিয়ে প্লাগ লাগিয়ে দিন।
গন্ধ দূর করার জন্য এক কাপ পানিতে এক চা-চামচ শিরকা বা লেবুর রস মিশিয়ে এক মিনিট মাইক্রো পাওয়ার হাইতে গরম করলে গন্ধ দূর হবে।
গ্রিল বা কনভেকশন ওভেনে ব্যবহারের পর ওভেন ঠান্ডা হয়ে এলে পরিষ্কার করার কাজ করুন।
মনে রাখুন:
ওভেনপ্রুফ তৈজসপত্র ব্যবহার করতে হবে। যা-ই রান্না করুন না কেন, ঢেকে দিতে ভুলবেন না।
রান্নার সময়টা ঠিকমতো পরীক্ষা করে নিতে হবে।
মাইক্রোওয়েভ ওভেনে ডুবোতেলে কোনো খাবার রান্না করবেন না। এতে তেল ফুটে ও ছিটে খাবার পুড়িয়ে দেবে।
উৎস: প্রথম আলো