পানাম নগর পৃথিবীর ১০০টি ধ্বংসপ্রায় ঐতিহাসিক শহরের একটি। World Monument Fund ২০০৬ সালে পানাম নগরকে বিশ্বের ধ্বংসপ্রায় ১০০টি ঐতিহাসিক স্থাপনার তালিকায় প্রকাশ করে। ঈসা খাঁ-র আমলের বাংলার রাজধানী পানাম নগর । বড় নগর, খাস নগর, পানাম নগর -প্রাচীন সোনারগাঁর এই তিন নগরের মধ্যে পানাম ছিলো সবচেয়ে আকর্ষণীয়। এখানে কয়েক শতাব্দী পুরনো অনেক ভবন রয়েছে, যা বাংলার বার ভূইয়াঁদের ইতিহাসের সাথে সম্পর্কিত। ঢাকার অদূরে ২৭ কি.মি দক্ষিণ-পূর্বে নারায়নগঞ্জ এর খুব কাছে সোনারগাঁতে অবস্থিত এই নগর। সোনারগাঁর ২০ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে এই নগরী গড়ে ওঠে। ঐতিহাসিকভাবে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি শহর। জানা যায়, ১৪০০ শতাব্দীতে এখানে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় যেখানে পৃথিবীর নামি-দামি শিক্ষকরা পড়াতে আসতেন। এখানে একটি ভৃত্য বাজার ছিল বলে জানা যায়। এখনো ওখানে দেখা মিলবে ১৫০০-১৮০০ শতাব্দীর নিপূণ কারুকার্য। মোটা মোটা দেওয়ালে তৈরি দালান। যার অধিকাংশই ভঙ্গুর প্রায়। এখনো মুঘল সম্রাজ্যের কিছু বাড়ি, উপাসনালয়, সেতু ইত্যাদি অবশিষ্ট আছে। পানাম নগরীর সেইসব দালান বর্তমানে অযত্নে অবহেলায় প্রায় ভঙ্গুর ও অবৈধ দখলের খপ্পরে। সেগুলোর কয়েকটি ছবিঃ
১।
২।
৩।
৪।
৫। এই মসজিদটি সোনারগাঁও এ অবস্থিত গোয়ালদি মসজিদ নামে পরিচিত।
পানাম নগর শত শত বছরের পুরনো যেন এক নির্বাসিত শহর। যে শহরে কোলাহল নেই, নেই কোন ব্যস্ততা বা হট্টগোল। গোধূলীলগ্নে পানাম নগরকে একটি ভূতুড়ে জায়গা বলেই মনে হবে । বেশিরভাগ স্থাপনাগুলোর এখন শুধু ধ্বংসাবশেষ চোখে পড়ে। দুঃখের বিষয় গুরুত্বপূর্ণ এ জায়গাটিতে নেই কোন সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা, নেই কোন নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ঐতিহাসিক এই জায়গাটিকে সংরক্ষণের জন্য এখন পর্যন্ত সরকারি বা বেসরকারি কোন উদ্যোগই নেওয়া হয়নি। বর্তমানে স্থানীয় কিছু লোকজন জায়গাটি ভোগদখল করে আছে। পর্যটকরা জীবন ও সম্পদের ঝুকি নিয়ে ঘুরতে আসে এই ঐতিহাসিক স্থান।
পানাম নগরী তে ঘুরতে গেলে সেখানের ঐতিহাসিক সৌন্দর্য ছাড়া প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও আপনাকে আকৃষ্ট করবে। যেদিন ঘুরতে গেছিলাম সেদিন বৃষ্টি হওয়ায় এরকম পরিবেশ ও আমাদের মুগ্ধ করেছিলঃ
৬।
৭।
এছাড়াও বৃষ্টির পর পর এরকম ঝলমলে রোদে ঘুরে আসতে পারেন মেঘনা নদীর ঘাট থেকেঃ
ধন্যবাদ সবাইকে। এবং ব্লগে দেওয়া ছবিগুলোর উন্নত মান দেখার জন্য ভ্রমণ করতে পারেন এই লিঙ্কেঃ
/////আমার ফেসবুক পেইজ////
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা জুন, ২০১৪ বিকাল ৪:৪১