একজন জেনারেলের সাথে একটি শালিক পাখির দেখা হয়েছিল ২য় বারের মত , পৃথিবীর আয়ু যে তলানীতে তাই সে বেলুনের মত চুপসে যাচ্ছে সেটা বুঝেই কিনা , শালিকটা সূর্যগামী হল ।ইকারাসের আকাশ কুসুমের দায় তুমি কিভাবে এড়াবে ব্যাটা শালিক ?
অবজেকশন ইয়োর অনার !!!
পাখির ডানায় পাচার হচ্ছে ইউরেনিয়াম , সীমান্ত অরক্ষিত করে এদের তুমুল ডানাঝাপটানি সীমান্তরক্ষীদের কানে গুলির আওয়াজকে নিশি প্রেমের ডাক বলে এক মরিচীকাময় প্রহেলিকা আর আমন্ত্রন বানিয়ে ছাড়ছে ।
বিচারক এবার নড়েচড়ে বসেন , তার নড়াচড়ায় পদ আর পদমর্যাদা ক্যাঁচক্যাঁচ করে উঠে , কিন্তু ঘুলঘুলিতে বসে চড়ুইটি কিন্তু হাড়ের ঠকঠক শুনে নিল । চোখের উপরে দুটো শুঁয়োপোকা থরথর করে কেঁপে উঠে , ভ্রুর নাচে নৈশব্দ নামে । আঁধারের বিস্তারের মত এক নীরবতা স্যাঁতস্যাঁতে দেয়াল থেকে উঠে আসে আর দখল নিতে থাকে , সামনের তিনটে চেয়ারের ছয়টি চোখে এক হেঁয়ালি হয়ে ঘরময় ছুটে বেড়ায় । ঘুলঘুলি থেকে ঝরে পরে পাখির পালক । আর একটা আরশোলা, হ্যাঁ একটা ফ্যাঁকাসে আরশোলা উড়া শুরু করে মেঝের তিনচার হাত উপরে । এবার কিন্তু চাঞ্চল্য আসে , মহামান্য টেবিলে বাড়ি মারবার জন্য হাতুড়িটা খোঁজেন , হাকিমের হুকুমদারী ফিরে আসতে দেখে ঘরটা একটু আস্থা ফিরে পায় , পাখিটি ঘুলঘুলিতে ঢুকে যায় , আর তেলাপোকাটার ডানায় ক্লান্তি । তারপরও নৈশব্দ ঝুলতে থাকে , আর মাকড়সার জালে ধরা পড়া মাছির মত , থেমে থেমে , হটাৎ টান মারে অর্বাচীন শব্দ ।
এবার কিন্তু কথা বলে উঠেন বিচারক , আশ্চর্য সুরেলা কণ্ঠ , বলেন “আমি বিব্রতবোধ করছি , আজকের মত মুলতবী” সমস্বরে “না” বলে উঠে সামনের চেয়ার তিনটি , বিচারক দরজার দিকে তাকান এবং দরজা খুঁজে পান না , তার ভ্রমণরত চাহনির সমগামী বাকি তিনজোড়া দৃষ্টি এবার আতঙ্কিত, তারা কেউ দরজাটা খুঁজে পায় না । তাদের কণ্ঠ , যা কিনা কিছুক্ষণ আগেই সমবেত "না" উচ্চারণে ছিল আত্নবিশ্বাসী , দাম্ভিক । তাতে ভর করে এক বেসুরো স্তব্ধতা ।
বিচারক উঠে দাঁড়ান , এবার তার হাড়ের ঠোকাঠুকি সবাই শোনে , ডান চেয়ারের লোকটা কিন্তু এবার দৃশ্যমান হয় , মাঝ বয়সী , গোলগাল ভদ্রলোক তিনি যেন ভরসা পেলেন , যথাযথ শব্দ খোঁজার চেষ্টায় কিছুক্ষণ আমতা আমতা করে "ধর্মাবতার" বলে কেঁদে উঠলেন । বামের দেহটি যখন একটু দুলে উঠলো তখনই মাঝের চেয়ারে বসে থাকা যুবকটি দেখে ইয়োর অনারের কপালে লম্বা লম্বি শুয়ে থাকা শুঁয়োপোকাদুটি খসে পড়ে । এবার বামের জনকে নারী বলে ঠাওর হয় , বিচারকের দিকে তাকিয়ে সে তীক্ষ্ণ একটা হাসি ছুঁড়ে দেয় এবং প্রতিধ্বনি ফাটল ধরাতে থাকে , দেয়ালে , মেঝেতে । আচমকা নারীটি হয়ে উঠে লজ্জাবতী ঝোপ , আর যুবকটি একদঙ্গল প্রজাপতি।
এতক্ষণে চড়ুইটি পাখা ঝাপটায় । কোন এক সীমান্তের দিকে ছুটে যায় , যেখানে দলবেঁধে পাখিরা আত্নহত্যা করে , তাদের এখবর জানাতে যে পৃথিবী অমরত্বের সন্ধান পেয়েছে ।