রং কে না চেনে? কিন্তু সেই রং চেনার উপায় যদি হয় অন্য কিছু? ধরুন শব্দ থেকে যদি কেউ রং চিনতে পারে তাহলে কেমন হয়। যুক্তরাজ্যের চারুশিল্পী নেইল হার্বিসন। তিনি কালার ব্লাইন্ড। কালো এবং সাদা বস্তু ছাড়া অন্য কিছু দেখতে পান না। তাই তিনি মাথায় ছোট কম্পিউটারযুক্ত রংয়ের আলোক তরঙ্গ গ্রাহক (কালার রিসিভিং ডিভাইস) ব্যবহার করেন, যা তাকে সবকিছু দেখতে সাহায্য করে। তবে তার এ দেখা কিন্তু আমাদের মতো সরাসরি কোনো কিছু দেখতে পাওয়া নয়। আলোক তরঙ্গ গ্রাহক যন্ত্র যে কোনো রংকে কম্পিউটারের সাহায্যে শাব্দিক কোডে পরিণত করে, আর তখন তিনি সে বস্তুর রং বুঝতে পারেন। এ শিল্পীই হচ্ছেন পৃথিবীতে এভাবে শব্দ শুনে রং বুঝতে পারা প্রথম মানুষ। নেইল হার্বিসনের জন্ম যুক্তরাজ্যে। বড় হয়েছেন স্পেনের ক্যাটালোনিয়ায়। ১৬ বছর বয়সে তিনি চারুকলায় ভর্তি হন। এর আগেই তিনি সংগীত, নৃত্য ও নাট্যকলায় তালিম নেন। এরপর এসব বিষয়ে আরও ব্যাপকভিত্তিক শিক্ষা অর্জনের জন্য ২০০২ সালে লন্ডনে চলে আসেন এবং ডার্টিংটন আর্ট কলেজে ভর্তি হন। তবে রং নিয়ে তার দৃষ্টিপ্রতিবন্ধিতার কারণে তিনি গভীরভাবে চিন্তা করছিলেন রং এবং শব্দের মধ্যে কোনো অজানা সম্পর্ক আছে কিনা। তা ছাড়া চারুশিল্পী হিসেবে তার কাজকর্মই তো রংতুলি নিয়ে। নেইল হার্বিসন যখন দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র তখন তাদের কলেজে অ্যাডাম মনট্যান্ডো (রং ও শব্দের তরঙ্গবিষয়ক প্রযুক্তিবিদ) এ বিষয়ে এক বক্তৃতা করেন। ওই বক্তৃতা ছাত্র হার্বিসন মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং অ্যাডাম মনট্যান্ডোর কাছে তার চোখের সমস্যার কথা বলেন এবং জানতে চান এর সমাধান আছে কিনা। অ্যাডাম মনট্যান্ডো বলেন, আছে। তখন থেকেই নেইল হার্বিসনের মাথায় কম্পিউটারসহ অ্যান্টেনাযুক্ত এ যন্ত্রের ব্যবহার শুরু। চারুশিল্পী নেইল হার্বিসন গণমাধ্যমকে বলেন, যন্ত্রটি আমার মাথায় আটকানো থাকে। এর অ্যান্টেনা ঘাড়ের পেছন দিক থেকে কপালের সামনে এসে ঝুলে থাকে। এর সঙ্গে যুক্ত অতি ক্ষুদ্র কম্পিউটারটি বাঁধা থাকে মাথার পেছন দিকে। ওই কম্পিউটারই রংয়ের আলোক তরঙ্গকে শাব্দিক কোডে পরিণত করে। এ পদ্ধতিতেই আমি কোড শুনে কোনো বস্তুর রং ধরতে পারি।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১২ দুপুর ১:০২