এত গান, এত সুর নিয়ে আচানক নেমে এলে
সদর দরজায়; আমার তখন বুভুক্ষু হৃদয়; হৃদয়ভর্তি
কলকল নদী। সুরেয় সুধায় প্রমত্ত রাত নাচে;
আমরা ভুলে যেতে থাকি ভুলের ভুবন; তখন হরষে
বিপুল চমকে সুরভিরা ফুলপরী; তখন আমরা
প্রকৃতই প্রেমে পড়ি।
তখন নিমিষে রক্তস্রোতে উথলে ওঠে সুর।
উথলে ওঠে অতীত আঁধার, ঢেউয়ের সমুদ্দুর;
মুহূর্তে চোখের সামনে রূপবান আর তাজেলের দ্বৈরথ,
হয়তবা জানো না, এমন একটি
সঘন বর্ষা জীবনেও আর আসবে না।
ভালোবাসা এক অন্ধ আবেগ; আমাকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়
দূর ভুবনের সোনালি জঠরে, যেখানে হারিয়ে ফেলেছি
অজর কুসুমের অমূল্য সুঘ্রাণ- কাঁচবন্দি প্রাণের মতো আজো
সে ঘ্রাণ প্রতিটা নিশীথে মুক্তির নেশায় কাঁদে আর বিদীর্ণ করে
কাঁচের দেয়াল।
হে আমার সুরের দেবী, আমাকে প্রেম দাও।
হে আমার ঈশ্বরিনী, আমাকে সুর দাও।
আমাকে সুর দাও, গান দাও। কী ভীষণ ক্ষুধা; অসহ্য
আমার যন্ত্রণা। তোমাকে নিঃশেষে
সবটুকু চাই, আজ এই বিশুদ্ধ সঙ্গীতে।
কাল ভোরে কার বাহুতে তোমার ঘুম ভাঙবে,
কে তোমার হৃদয় ছিঁড়ে রক্তাক্ত করবে, তা তুমি জানো না।
জানি না আমিও।
হয়তবা আমিও জলের গভীরে মহাকাল লুকিয়ে
অন্য একটি সূর্য ফোটাবো। হয়তবা
এই সুর, এই গান, উন্মাতাল ক্ষুধা ও জ্বালা
সহসা নিভে যাবে কোনো এক নিগূঢ় ফুৎকারে!
কাল রাতে হয়তবা আসবে না তুমি।
কাল রাতে গানে গানে ঘুমাবো না, জানি।
কাল রাতে মৈথুনের সব রং ফিকে হয়ে যাবে।
কাল রাত ডুবে যাবে নিস্তব্ধ অন্ধকারে, হয়তবা।
প্রেমিকারা কবিতার মতো। চলে গেলে ফিরে না তারা।
গান আর সুর; সুর আর গান- আমার হিরন্ময় প্রেমিকারা।
সুরের হৃদয় ফুঁড়ে উথলে ওঠে প্রেম; আমি ডুবে যাই।
আমি ফিরে যাই ফেলে আসা অনন্যার কাছে,
যে আমাকে চিরকাল কাঙাল করেছে, সৃষ্টি করেছে ক্ষুধা ও তৃষ্ণা;
অদ্যাবধি যে আমায় নিরবধি হত্যা করে, নিবিড় অলক্ষ্যে
নিপাতনে কুরে কুরে খায়।
২৭ নভেম্বর ২০১৬
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:২০