অধরা
হে দূরবর্তী বাতিসমগ্র, তোমরা জ্বলে ওঠো এবং আলো দাও, হাসো এবং আনন্দ ছড়াও, তোমরা একেকটা নিশানা মনোরম ঘোরের মতো যুগপৎ নিভে যাও
হে সুরঞ্জিতা, শত শত বিস্ময়প্রদীপের জননী, তোমার অজর আলোর কারুকাজ ইথারে জেগে থাকে, এমনকি তুমি ঘুমিয়ে গেলেও- যেমন এখন
হে শতরূপা, অভ্রচারিণী কুহেলিকা, তোমার অন্তর্ধানের পরও আমাদের বন্দনায় জেগে থাকে তোমার মোহিনীকুহক উদ্ভাস- যেমন এখন
হে অনামিকা, যতোদূর জানা যায়, তোমার নিজস্ব কোনো নাম নেই; অথচ সকল নামের গভীরে তোমার বাস; আমরা তোমার কোনো ঠিকানা জানি না, কিন্তু 'ঘরে ঘরে তোমার ঘর আছে' তবু;
হে অপ্সরীকন্যা, নভোনিবহের তারার ভিড়ে তোমাকে দেখি, সোঁদা ফুলের গনগনে গন্ধ তোমার নিরঞ্জন শরীরে; তুমি এক তুমুল বিপুল রূপস্বরা; সহজেই ছুঁয়ে দাও, অথচ আজন্ম দূরবর্তী, অনিশ্চিত, অধরা।
*৪ মে ২০১০
দুর্জ্ঞেয়বাসিনী
তোমার এখনও ঘুম হয় না রাতে, স্নানের শেষে
আগুন জড়িয়ে কাঁদো। কদলীকাণ্ডে পুষ্পঋণ রেখে
নিজেকে ছুটি দাও সারণির গানে।
তখন বিশুদ্ধ দিনে দরজা-জানালায় ধীরে ধীরে বাতাসের সমাহারে
একখণ্ড ছায়া নেমে আসে।
তোমার জন্য কবিতা লিখি আজও; লিখতে বলেছিলে বলে
সব নেশা কেটে গেছে, সনাতনী নেশাটুকু বিলকুল গেলো রয়ে
এভাবেই প্রতিদিন বেঁচে উঠি, আরেকবার প্রদক্ষিণ ঘটে
তোমার উদ্ভাস হেসে ওঠে আলোকবর্ষ সুদূরের হতে
তোমার আঙুলগুলোয় দিধিষু নদীর কুয়াশা
এ কথা সকলেই বোঝে, দু-একজন ছাড়া।
*২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১১
এবং দূরবর্তিনী
তুমি আর কোনোদিন নাম বলো নি
পাখি
তুমি আর কোনোদিন গান করো নি
নদী
তুমি আর কোনোদিন হাত ধরো নি
পথে
তুমি আর কোনোদিন চোখ রাখো নি
চোখে
আমরা দুজন এক আকাশে
উড়ি
আমরা দুজন এক ঘরেই
থাকি
*২৫ সেপ্টেম্বর ২০১০