যাঁদের কবিতা সংকলনে থাকছে
যেসব কবিতা সবুজ অঙ্গনের জন্য
ব্লগারগণের নিজের পছন্দ, অন্যের পছন্দ ও আমার পছন্দ মিলিয়ে মোটামুটি বিশাল আকারের একটা সংকলন দাঁড় করানো হয়েছিল শুরুতে। কাটছাট করতে করতে শেষ পর্যন্ত এই সাইজে আসে। কিন্তু এটাও বিশাল আকারেরই রয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত আরও অনেক কাটছাট করে ৭ ফর্মায় (১১২ পৃষ্ঠা) নামিয়ে আনা হয়।
১ ফেব্রুয়ারিতে মূল বই ছাপা হয়ে গেছে। ৩ বা ৪ তারিখে কভার পাওয়ার কথা ছিল, শেষ খবর জানি না। আশা করি ১৫'র আগেই বইটা স্টলে চলে আসবে। আর ধারণা করছি, আমার আগেই অনেকে বইটা দেখে ফেলবেন সেক্ষেত্রে কভার পেইজটা কেউ ব্লগে দিয়ে দিলে খুশি হবো
আগের কথা
একুশে বইমেলা-২০০৩-এ সবুজ অঙ্গন সাহিত্যপত্রিকার প্রথম সংখ্যা বের হয়েছিল। এরপর মোটামুটি নিয়মিত ভাবে ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে ১৩শ সংখ্যা পর্যন্ত বের হলেও ২০০৭-এর পর নানাবিধ কারণে তা সাহিত্যপত্রিকার আঙ্গিকে বের করা সম্ভব হয় নি। মাঝখানে অবশ্য একুশে বইমেলা-২০০৫-এ কবিতা ও ছোটগল্প সংকলন এবং একুশে বইমেলা-২০০৬-এ অণু-উপন্যাস সংকলন বের করা হয়েছিল; সেই ধারাবাহিকতায় একুশে বইমেলা-২০০৯-এ ইন্টারনেটে প্রকাশিত কবিতা লয়ে সবুজ অঙ্গন আন্তর্জালিক কবিতাগুচ্ছ প্রকাশ করা হয়। ব্যক্তিগত কর্মব্যস্ততার দরুণ এ বছর আমার দ্বারা এ কাজটা সম্ভব হবে না বোধহয়, এটা ভেবে একজন বিশিষ্ট ব্লগার ও কবিকে সম্পাদনার কাজটি করতে অনুরোধ জানিয়েছিলাম; কিন্তু শেষ মুহূর্তে তিনিও কাজটি করে উঠতে পারলেন না- অথচ এটা আমার নেশা, আমাকে করতেই হবে.... এর পরের ঘটনাক্রম ব্লগবাসী বন্ধুগণ জানেন।
এ সংকলনে ৮৯ জন কবির ৮৯টা লেখা রয়েছে। কবিতা আহ্বানের পাশাপাশি আমি ব্যক্তিগতভাবে বিভিন্ন কবির ব্লগে ভ্রমণ করেছি; আমার দৃষ্টিতে যাঁদের কবিতা ভালো ও উন্নত মানের মনে হয়েছে, আমি তাঁদের কাছে কবিতা চেয়েছি; এবং পেয়েছি। কবিদের নিজস্ব পছন্দ, অন্যান্য ব্লগারদের পছন্দ, সর্বোপরি আমার নিজের পছন্দ- সব মিলিয়ে আমার বিচারে এ ৮৯ জন কবির সেরা লেখাটাই এ সংকলনের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। আমি পুরোপুরি সন্তুষ্ট।
ব্লগের কবিতাজগৎ একটা বিরাট বিস্ময়ের ব্যাপার- যাঁরা নিয়মিত ব্লগের কবিতা পড়েন তাঁরা নিশ্চয়ই আমার সাথে এ ব্যাপারে একমত হবেন। অনেক প্রসিদ্ধ কবির কবিতা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এসব ব্লগে- ব্লগার হিসেবে হয়তো তাঁরা অনেকেই ততোটা জনপ্রিয় নন, কিন্তু তাঁদের উচ্চমার্গীয় কবিতাসম্ভার যে কোনও কবিতাপিপাসুর দৃষ্টি কাড়বে ও তৃষ্ণা মেটাবে বলে আমি দৃঢ় ভাবে বিশ্বাস করি। ব্লগে কবিতা অনুসন্ধান করতে গিয়ে আমি রীতিমতো বিস্মিত ও মুগ্ধ হয়েছি এসব কবিতা পড়ে। এ অনুসন্ধানের কাজটি আমি নিজে না করলে এ বিস্ময়ভুবনটি এতো তাড়াতাড়ি আমার সামনে উন্মোচিত হতো না নিঃসন্দেহে। কবিগণ তাঁদের কবিতা পাঠিয়ে, ও প্রকাশের সম্মতি দিয়ে আমার সংকলনের মান সমৃদ্ধ করেছেন। আমি তাঁদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। মাহবুব লীলেন, মুজিব মেহদী আমার প্রিয় কবি। তাঁদের অনুমোদন নেয়া সম্ভব হয় নি, কিন্তু এতে তাঁরা অখুশি হবেন না, আমার দৃঢ় বিশ্বাস। রথো রাফি ও নৃপ অনুপের কবিতা নেয়া হয়েছে অন্যান্যদের পছন্দের ভিত্তিতে, যদিও কবিদের অনুমতি নেয়া সম্ভব হয় নি। এ চার জন ছাড়া অন্য দু ব্যক্তি আছেন, যাঁদের অনুমতি ছাড়া তাঁদের লেখা ছাপা হচ্ছে। চিন্তাশীল, মননশীল ও জনপ্রিয় এ দুজন ব্লগারের লেখা দুটি কবিতা নয়, তা সত্ত্বেও লেখা দুটি সংকলনে দেখে কারো আপত্তি থাকবে না, শতভাগ নিশ্চিত।
এবারের সংকলনের জন্য বিপুল সাড়া পেয়েছিলাম; ২০০৯-এর তুলনায় অনেক গুণ বেশি। কবিদের প্রতি আবারও আমার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি তাঁদের কবিতার জন্য। সেই সাথে যাঁরা কবিতা নির্বাচনে আমাকে সহায়তা করেছেন- বিশেষ করে ব্লগার ইমন জুবায়ের, শেখর সিরাজ, আইরিন সুলতানা, শত রুপা, কবিতার কথা, শামান সাত্ত্বিক, এরশাদ বাদশাহ, পথিক!!!!!!!- এঁদের প্রতি আমার সবিশেষ কৃতজ্ঞতা থাকলো।
অনেক ব্লগারের আসল নাম ঢাকা পড়ে গেছে তাঁদের ব্লগীয় নামের ডামাডোলে। অনেকের আসল নাম আমরা জানতেও পারি না। ব্লগীয় নামেই কবিগণ সমধিক পরিচিতি পেয়েছেন বিধায় ব্লগীয় নামেই তাঁদেরকে উপস্থাপিত করা হবে; আর যাঁদের আসল নাম জানা গেছে, তাঁদের সম্মতিক্রমে আসল নামটিও ছাপা হবে ব্লগীয় নামের নিচে।
ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশকে আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি- জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে অসম্ভব ব্যস্ততা সত্ত্বেও এ সংকলনটি ছাপবার বিড়ম্বনা গ্রহণ করবার জন্য।
যাঁদের কবিতা সংকলনভুক্ত করা গেলো না, তাঁদের জন্য সমবেদনা ও আগামী বছরের শুভেচ্ছা থাকলো।
সবশেষে ধন্যবাদ- সামহোয়্যারইনব্লগ, প্রথম আলো ব্লগ, আমারব্লগ ও মুক্তমঞ্চের কর্তৃপগণকে- তাঁদের বিশাল ব্লগভুবনে কবিদের কবিতা প্রকাশের সুযোগ থাকার ফলে আমরা তা থেকে কবিতা সংগ্রহ করে এমন একটা সংকলন বের করতে পারলাম।
ভালো কথা, অনেকেই সংশয় প্রকাশ করে খোঁচা দিয়েছেন- সংকলন বের করার পেছনে লাভ-লোকসানের প্রসঙ্গ তুলে নানান তামাশা ও টালবাহানা করেছেন পরবর্তীতে কবিতা দিলেও তাঁদের কবিতা বর্জন করা হয়েছে তবে, তাঁদের জ্ঞাতার্থে বিনয়ের সাথে বলতে চাই- এটা নিছকই আমার নিজের গাঁটের অর্থ জলে ফেলে দেবার নামান্তর- যা আমি প্রায় প্রতি বছরই করে থাকি। সাহিত্যপত্রিকা বের করে কেবল ফতুর হওয়াই সম্ভব- ভুক্তভোগীরা তা জানেন... ফতুর হচ্ছি আমিও- যাঁদের সাথে ব্যক্তিগত পরিচয় আছে, তাঁদের এ খবর জানা রযেছে; আশা করি বোঝাতে পেরেছি।
সবাই ভালো থাকুন।
শুভ ব্লগিং...
মূল লিংক
******
একুশে বইমেলা ২০০৯-এ প্রকাশিত সবুজ অঙ্গন বইটি এবারের মেলায় যথারীতি ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশের স্টলে পাবেন। স্টল নং ১৬৯-৭০।
এ ব্যাপারে দেখুন :
Click This Link
Click This Link
গত বইমেলায় প্রকাশিত
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১০ বিকাল ৩:৪২