মুসলমান কেন কষ্টে থাকে? এটা ইসলামের প্রতি অনেকের সন্দেহ পোষণের একটি কারণ। তারা মনে করে ইসলাম সঠিক হলে এর অনুসারীদের সুখে ও সম্পদে থাকার কথা।উল্টো এরা কেন এমন নির্যাতিত নিপিঢ়িত অবহেলিত দূর্বল কেন? কিন্তু কিছু মুসলমান সুখে ও সম্পদেও থাকে। যদিও সেটা সন্দেহ পোষণকারীদের বিবেচনায় আসে না। তারা দেখে নেতিবাচক দিক। তারা ইতিবাচক দিক দেখে না।
মূলত ভাল থাকা, মন্দ থাকা আল্লাহর পরীক্ষার, শাস্তির ও পুরস্কারের বিষয়। তেমনটাই তিনি বলেছেন।কিছু মানুষকে আল্লাহ কষ্ট দিয়ে দেখেন তারা তাঁর পথ ছেড়ে যায় কি না। এদের যারা আল্লাহর পথে টিকে থাকে তারা পরে আল্লাহর গৌরবের কারণ হয়।পরকালে এদের পুরস্কারের পরিমাণ যারা সুখে থাকে তাদের চেয়ে অনেক বেশী হবে।তারমানে কষ্টদান আখেরে আল্লাহর অধিক পুরস্কার প্রদানের কারণ।
সুখে ও সম্পদে রেখে আল্লাহ কৃতজ্ঞতার পরীক্ষা করেন। এটা দিয়ে আল্লাহ দেখতে চান লোকে এটাকে আল্লাহর দান না নিজের অর্জন ভাবে? যারা কৃতজ্ঞ তারা সুখে ও সম্পদে থাকার পর কৃতজ্ঞতার জন্য আল্লাহর নিকট থেকে পুরস্কার প্রাপ্ত হবে।
অমুক কেন কষ্টে আছে সে জন্য কেউ যদি জাহান্নামে যেতে চায় তার জন্য আল্লাহর কি করার থাকতে পারে? জাহান্নামে গিয়ে তারা সুখে থাকবে নাকি? অমুক কেন সুখে ও সম্পদে আছে তার জন্যও যদি কেউ জাহান্নামে যেতে চায় তার জন্যওবা আল্লাহ কি করতে পারেন? জাহান্নামই যখন তাদের একান্ত পছন্দ তো তারা খুশীমনে সেথায় যাক, আল্লাহ হয়ত তাদের এমন আনন্দ যাত্রায় বাধা হতে চান না। যেমন ইহুদী রাষ্ট্র ইযরায়েলের উন্নতি ও সমৃদ্ধি আর এর পাশাপাশি পিলিস্তিনিদের অসহ্য কষ্ট দেখে অনেকের মনে হয়েছে ইহুদী ও ইযরায়েল সঠিক পথে রয়েছে।কিন্তু আল্লাহর ব্যবস্থায় ইযরায়েলের ও ইহুদীদের উন্নতি ও সমৃদ্ধি তাদের সঠিক পথে থাকার পরিচায়ক নয়। তারমানে আল্লাহর ব্যবস্থায় শুধুমাত্র উন্নতি ও সমৃদ্ধি মানে সঠিকতা আর অবনতি ও দারিদ্র মানে বেঠিকতা এমন কিছু নয় বরং সঠিকতা উল্টো দিকেও থাকতে পারে আবার উন্নতি ও সমৃদ্ধির দিকেও থাকতে পারে।অনেক সময় আল্লাহ শাস্তি প্রদানের জন্যও কষ্টে রাখেন। সাকু্যে কথা হলো উন্নতি সমৃদ্ধি কষ্ট অবনতি দারিদ্র এসব আল্লাহর ব্যবস্থায় সঠিকতা ও বেঠিকতার কারণ জাতীয় মূল বিষয় নয় বরং এসব বিবিধ কারণে হতে পারে।
মানুষ উন্নতি সমৃদ্ধি শান্তি ও সুখের জন্য আল্লাহর পথ ছেড়ে উল্টা পথে চলা শুরু করে। তারা যা চায় তারা তা’ পেয়ে মনে করে তারা সঠিক পথেই আছে কিন্তু তাদের এ সঠিক পথের শেষ প্রান্তে যে জাহান্নাম স্থাপিত রয়েছে এটা তারা মোটেও বুঝতে পারে না। তারা হাসতে হাসতে জাহান্নামে চলে যায়। অনেকে অবনতি কষ্ট দারিদ্র কবুল করে আল্লাহর পথে চলতে থাকে। তাদের কষ্ট দেখে তাদের চেয়ে বিপথগামীরা তাদের চেয়ে বেশী কষ্ট পায়।তারা কষ্টের পথ ছেড়ে তাদের পথে কেন হাটে না এটাই তাদের আক্ষেপ। অবশেষে তাদের আক্ষেপ উপেক্ষা করে বোকা লোকেরা কাঁদতে কাঁদতে জান্নাতে চলে যায়।এরপর পরিস্থিতি উল্টা হয়। একপক্ষ হাসির পরে কাঁদে আর অন্যপক্ষ কান্নার পরে হাসে।
বিপথে চলেও অনেকে সুখে থাকে না। কারণ বিপথেও সুখে ও সমৃদ্ধিতে থাকার কাজ করতে হয়। আর আল্লাহর পথেও সুখ ও সমৃদ্ধি থাকতে পারে যদি আল্লাহ দেন। বোকা লোকেরা সূত্র মিলায়, আর সূত্র না মিললে ধান্দায় পড়ে। এটা বুঝে না যে সূত্রের আবার বিকল্প সূত্রও থাকতে পারে।
সুখ মানে সুপথ, দুঃখ মানে কূপথ অথবা সুখ মানে কূপথ, দুঃখ মানে সুপথ এ সব সমীকরণ নিয়ে যারা পড়ে থাকে তাদের কপালে মন্দই লেখা হয়। এ সব নয় বরং সুপথ ও কূপথ আলাদা সূত্রে বুঝে নিতে হয়।ই্হুদীদের উন্নতি আর মুসলমানের অবনতি দেখে ইহুদী সঠিক আর মুসলমান বেঠিক এমন ভাবনা ভাবে বড় বেকুবেরা।
পৃথিবী মূলত পরীক্ষার স্থান, প্রতিফলের স্থান নয়। এ জন্য এখানে ভুল হলেই আল্লাহ প্রতিফল দেওয়া শুরু করে না। আবার শুদ্ধ হওয়া মাত্রই পুরস্কার প্রদান করে না। তবে কোন কোন ক্ষেত্রে তিনি নগদেই শাস্তি বা পুরস্কার প্রদান করেন। এ ক্ষেত্রে কখন তিনি কি করবেন সেটা তাঁর বিবেচনা। আল্লাহর বিষয় নিজের মাথায় নিয়ে মাথা নষ্ট করার কোন মানে হয় না।
সিরিয়ানদের কষ্ট ও আমেরিকানদের সুখ দেখে কেউ জাহান্নাম পছন্দ করলে আল্লাহ তার জন্য কি করবেন? তো যেহেতু সে জাহান্নাম কামনা করে সেহেতু আল্লাহ তার জন্য জাহান্নামই বরাদ্ধ করে দিবেন। জান্নাতে যেতে হলে সিরিয়ানদের কষ্ট দেখার পর এবং আমেরিকানদের সুখ দেখার পরেও জান্নাতের পথেই হাটতে হবে, নতুবা কপালে জান্নাত ঝুটবে না।
ইসলামের নিয়ম মেনে মুসলমানও উন্নতি ও সমৃদ্ধি লাভ করতে পারে। তো মুসলমান নিয়ম ছেড়ে বে নিয়মে কাজ করলে উন্নতি ও সমৃদ্ধি হবে কেমন করে? আর শয়তান তাদেরকে সারাক্ষণ ভুল পথে ঠেলতে থাকে যেন তারা উন্নতি ও সমৃদ্ধি থেকে দূরে থাকে। এর সে যেন এটা দেখিয়ে আরো অনেক লোককে ধোকায় ফেলতে পারে। এখন লোকেরা শয়তানের প্রতি অমনোযোগী থেকে ধোকায় পড়লে তাদের জন্য আর কি করা যায়।
এদিকে অনেকেই মুসলমানের অবনতি অমুসলমানের উন্নতির কথা বলে বলে মুখে ফেনা তুলছে। যেন মুসলমান অমুসলমানের পথটাকেই সঠিক মনে করে।অনেকে তাদের ধোকায় পড়ে আর কেউ কেউ পড়ে না। তবে খাস কথা হলো মুসলমান অমুসলমানই উন্নতি ও অবনতির একমাত্র কারণ নয় এটা যারা বুঝে তাদেরকে ধোকায় ফেলা যায় না।
ঘটনা হলো সঠিক পথের অনুসারী সব বাধা অতিক্রম করে সঠিক পথেই চলবে। আর অবোধ জনেরা কূ-কথায় কান দিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ্য হয়। আমাদের উচিত অপ্রাসঙ্গিক বিষয়কে প্রাসঙ্গিক করে না ফেলা। যারা সত্য পথে চলতে চায় তাদের উচিৎ সত্য পথের আসল সূত্র নির্ণয় করে সত্য পথ খুঁজে বের করে তারপর সে পথে চলা। খুচরো কথায় কান দিলেই বিভ্রান্তির গভীর খাদে পড়ে ক্ষতিগ্রস্থ্য হতে হবে।
বিঃদ্রঃ ‘ইসলামের সঠিকতার অকাট্য প্রমাণ’ গ্রন্থের একটি অধ্যায় হিসেবে লেখাটি লেখা হয়েছে।
প্রাথমিক কথা
ভিন্ন চিন্তা
নাস্তিক্যবাদ
আস্তিক্যবাদ
কোরআন অবশ্যই আল্লাহর বাণী
হজরত মোহাম্মদ (সা.) অবশ্যই আল্লাহর নবি
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৮:২৭