‘হজরত মোহাম্মদ (সা.) আল্লাহর নবি বা সংবাদ বাহক’ তাঁর এ দাবী সঠিক না হলে তাঁর মত অন্য কেউ আল্লাহর নামে বাণী বানিয়ে তাঁর মত আল্লাহর নবি বা সংবাদ বাহক হওয়ার দাবী উপস্থাপন করতে পারছে না কেন? অনেকেই আল্লাহর নবি হওয়ার দাবী করেছিল কিন্তু আল্লাহর নামে কোন বাণী উপস্থাপন করতে পারেনি।এজন্য তাদের নবি হওয়ার দাবীও প্রতিষ্ঠা পায়নি। এক লোক বলেছে ক্বোরআন নাকি জাবির ও নৌফেলের বাণী। যদি তাই হয় তবে তারা নিজেরা নবি হওয়ার দাবী উপস্থাপন করেনি কেন? কেউ কেউ বলছে কোরআনের বাণী মোহাম্মদ (সা.) ও তাঁর সাহাবায়ে কেরাম (রা.) মিলে বানিয়েছেন। এখন প্রশ্ন হলো তাঁর পরে যারা নিজেদেরকে নবি দাবী করেছে তারা ও তাদের সাহাবারা মিলে কেন এমন বাণী বানাতে পারেনি? নবি মোহাম্মদ গ্রন্থের লেখক ইরানী নাস্তিক আলী দস্তি বলেছে কারো রচনার অনুরূপ রচনা কেউ তৈরী করতে পারে না।তার যুক্তি অনুযায়ী কোরআন আল্লাহর বাণী সাব্যস্ত হয়। কারণ মোহাম্মদের (সা.) বাণী হাদিসের সাথে আল্লাহর বাণী কোরআনের কোন মিল নেই।এমন কি তখনকার কোন মানুষের বাণীর সাথে কোরআনের বাণীর মিল নেই।
কিন্তু আলী দস্তির দাবী সঠিক নয়, কারণ মানুষ অন্য মানুষের রচনার অনুরূপ রচনা করতে পারে। যেমন রবীন্দ্র নাথের অনুরূপ আমার রচনা নিম্নরূপ-
কামনা
ফরিদ আহমদ চৌধুরী
সম্পদে মোরে প্লাবিত কর
এ নহে মোর কামনা
দরিদ্রে আমি না যেন পাই ভয়।
হাসি খুশি আনন্দ পেতে
নাইবা হলো বঞ্চনা
সুখেই যেন থাকি চির অক্ষয়।
কষ্ট আমার না যেন জুটে
দেহের শক্তি না যেন টুটে
জীবনে সদা থাকবে গতি
হবে না কভু বঞ্চনা
নিজের মনে থাক সুখ সঞ্চয়।
আমারে তুমি দিয়েছ প্রাণ
তাই এ আমার কামনা
তোমার কথা মনেতে যেন রয়।
রিপুর ভার লাঘব করি
দূর কর সব কল্পনা
মনে যেন না থাকে সংশয়।
সুখ নাহি চাই তোমায় বিনে
নম্রশীরে তোমায় চিনে,
যদিও দেয় নিখিল ধরা
আমায় অনেক লাঞ্চনা
তবু তোমার রইব হে বিস্ময়।
প্রার্থনা
রবীন্দ্র নাথ ঠাকুর
বিপদে মোরে রক্ষা কর
এ নহে মোর প্রার্থনা
বিপদে আমি না যেন করি ভয়।
দুঃখ তাপে ব্যথিত চিতে
নাইবা দিলে সান্ত্বনা
দুঃখে যেন করিতে পারি জয়।
সহায় মোর না যেন জুটে
নিজের বল না যেন টুটে
সংসারেতে ঘটিলে ক্ষতি
লোভিলে শুধু বঞ্চনা
নিজের মনে না যেন মানি ক্ষয়।
আমারে তুমি করিবে ত্রাণ
এ নহে মোর প্রার্থনা
তরিতে পারি শকতি যেন রয়।
আমার ভার লাঘব করি
নাইবা দিলে সান্ত্বনা
বহিতে পারি এমন যেন হয়।
নম্রশীরে সুখের দিনে
তোমার মুখ লইব চিনে
দুঃখের রাতে নিখিল ধরা
যে দিন করে বঞ্চনা
তোমারে যেন না করি সংশয়।
আর হরিশ চন্দ্রের অনুরূপ আমার রচনা নিম্নরূপ-
গুণী কে?
ফরিদ আহমদ চৌধুরী
নিজেরে যে গুণী ভাবে
সে কি হয় গুণী?
আমরা গুণীর কথা
লোক মুখে শুনি।
সাধনায় গুণীজন
গুণী হয়ে থাকে।
গুণীর গুণেতে তারে
লোকে মনে রাখে।
গুণীজন মান্যগণ্য
হয় যে সমাজে।
তারাও সর্বদা থাকে
গুণময় কাজে।
বড় কে?
হরিশ চন্দ্র
আপনারে বড় বলে
বড় সে নয়।
লোকে যারে বড় বলে
বড় সে হয়।
বড় হওয়া সংসারেতে
কঠিন ব্যাপার।
সংসারে সে বড় হয়
বড় গুণ যার।
গুণেতে হইলে বড়
বড় বলে সবে।
বড় যদি হতে চাও
ছোট হও তবে।
এভাবে মানুষের অনেক কিছুই মানুষ নকল করে দেখাতে পেরেছে।আলী দস্তি অস্বীকার করলেও সত্য এটাই যে মানুষের রচনার নকল মানুষ করতে পারে। তবে আল্লাহর রচনার নকল মানুষ করতে পারে না।
নবি মানে সংবাদ বাহক। মোহাম্মদ (সা.) আল্লাহর নবি বা সংবাদ বাহক না হয়ে থাকলে, তিনি যদি আল্লাহর নামে নিজে সংবাদ বানিয়ে প্রচার করে থাকেন তবে তেমন সংবাদ অন্যদেরও বানাতে পারার কথা। একজন মানুষ যদি আল্লাহর নামে সংবাদ বানাতে পারে তবে অন্য মানুষ কেন তা’ পারবে না? এর কি কারণ থাকতে পারে? এর কারণতো একটাই হতে পারে যে এমন পারা আল্লাহ ঠেঁকিয়ে রেখেছেন। কারণ আল্লাহ বলেছেন এমন কেউ করতে পারবে না। এ জন্য কেয়ামত পর্যন্ত কেউ কোরআনের সূরার অনুরূপ সূরা বানাতে পারবে না। যদি আল্লাহ বলে কেউ না থাকতেন। যদি কোরআন আল্লাহর বাণী না হতো। যদি মোহাম্মদ(সা.) নিজেই কোরআন বানাতেন তবে কোরআনের অনুরূপ সূরা অন্যরাও বানাতে সক্ষম হতো। কিন্তু আল্লাহ আছেন, কোরআন আল্লাহর বাণী, আল্লাহ কোরআনের অনুরূপ সূরা বানানোর সক্ষমতা কাউকে দিচ্ছেন না বলেই কেউ কোরআনের অনুরূপ সূরা বানাতে পারছে না এবং পারবে না কোন দিন।
মোহাম্মদ (সা.) আল্লাহর সংবাদবাহী বাণী প্রচার করেছেন, যা আল্লাহর বানী হিসেবে অকাট্যভাবে প্রমাণ করা যায়। যিনি আল্লাহর সংবাদবাহী হয়ে সে সংবাদ প্রচার করেছেন তিনি আল্লাহর সংবাদ বাহক বা আল্লাহর নবি সাব্যস্ত। যারা তাঁর নবুয়ত অস্বীকার করছে তারা আল্লাহর বাণীকে কিছুতেই আল্লাহর বাণী নয় বলে সাব্যস্ত করতে পারছে না। এখন অযোক্তিক ভাবে কেউ কারো যেক্তিক দাবী অস্বীকার করলে তাকে আর কি বলার থাকে। কারণ অযোক্তিকভাবে মানুষ কোন কথা বললেতো আর তাকে ঠিঁকিয়ে রাখা যায় না।
বিঃদ্রঃ ‘ইসলামের সঠিকতার অকাট্য প্রমাণ’ গ্রন্থের একটি অধ্যায় হিসেবে লেখাটি লেখা হয়েছে।
প্রাথমিক কথা
ভিন্ন চিন্তা
নাস্তিক্যবাদ
আস্তিক্যবাদ
কোরআন অবশ্যই আল্লাহর বাণী
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ৯:২২