ইসলাম হলো আল্লাহর ইচ্ছার প্রতি আত্মসমর্পণ। আল্লাহর ইচ্ছা থেকে যাদের নিকট নিজের বা আল্লাহ ছাড়া অন্যের ইচ্ছা অধিক গুরুত্বপূর্ণ তাদের উপর আল্লাহর খুশী হওয়ার কথা নয়।আল্লাহ পথভ্রষ্ট করেন রাগের কারণে।রাগের মাত্রার ভিন্নতা অনুযায়ী পথভ্রষ্টতার মাত্রা বিভিন্ন মাত্রায় হয়। রাগের মাত্রা একশতে উপনিত হলে আল্লাহ পথভ্রষ্টতার উপর সিলগালা বা মোহরাঙ্কীত করেন।এসব লোক আর কিছুতেই ইসলামের পথ খুঁজে পায় না।আল্লাহ বলেছেন, ‘ওয়ামাই ইউদলিলহু ফালা হাদিয়ালাহ- আর তিনি যাকে পথভ্রষ্ট করেন তার জন্য পথপ্রাপ্তি বা হেদায়েত নেই। বেকুব পথভ্রষ্টদের বলতে শুনা যায়, আল্লাহ পথভ্রষ্ট করলে পথভ্রষ্ট হওয়ার জন্য আমাদের দোষ কোথায়? অথচ তাদের দোষের কারণেই আল্লাহ তাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছেন। তাদের যে দোষের কারণে আল্লাহ তাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছেন তাদের জনে জনে সে দোষের কথা বলবে কে? তবে আল্লাহ শেষ বিচারের দিন তাদের সে সব দোষের কথা বলে দিবেন যে সব দোষের কারণে তিনি তাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছেন। তবে সে জানা তাদের শাস্তি লাঘবে কোন কাজে লাগবে না। তারা শাস্তিযোগ্য তারা এটা পরিস্কার বুঝবে ঘটনা এ পর্যন্ত।
অনেক লোককে বলতে শুনি এমন হলে সে জান্নাতে যেতে চায় না। তো সে জাহান্নামে গিয়ে দেখুক কেমন লাগে!আল্লাহর তৈরী নিতান্ত সুন্দর জান্নাত তিনি এমন বেকুবদের জন্য বরাদ্দ নাও করতে পারেন। আর কারো জন্য জান্নাত বরাদ্দ না হলে তার জন্য পথভ্রষ্টতা বরাদ্ধ হতেই পারে।কতিপয় লোকের কথা শুনলে মনে হয় আল্লাহর যেন তাদেরকে জান্নাত প্রদানের দায় পড়েছে। কেনরে বাপু জাহান্নামে কি জায়গার টান পড়েছে যে তোমাদেরকে জান্নাত দিতে হবে? জান্নাততো শুধু আল্লাহর স্পেশাল বা বিশেষ লোকদের জন্য।এটা যারা বুঝে তারা খেটে খুটে কেঁদে কেটে জান্নাত হাসিলের চেষ্টা করে। আর বেকুবেরা মনে করে তাদেরকে জান্নাত প্রদানে আল্লাহর বিশেষ গরজ রয়েছে।তারা এমন মনে করে কারণ লোকেরা তাদেরকে জান্নাতের পথে চলার জন্য আবেদন নিবেদন করে থাকে। অথচ লোকেরা এমন করে নিজেদের জান্নাতের পথ সুগম করার জন্য। আল্লাহ বেকুবদেরকে জান্নাতের পথে ডাকার আয়োজন করেছেন দোষ ছাড়ানোর জন্য।অনেকের ক্ষেত্রে জান্নাতের পথে ডাকার আয়োজনও করা হয়নি কারণ তারা সেটাওে যোগ্য নয়। তাদের অযোগ্যতা তাদের জীবন সম্পর্কে তাদের কোন প্রশ্ন নেই। যাদের প্রশ্ন থাকে তাদের উত্তরের ব্যবস্থা হয়। কিন্তু প্রশ্ন করেই যাদের দায়িত্ব শেষ উত্তরের প্রতি আবার তাদের মনোযোগ থাকে না। কিছু সংখ্যক তো সত্যের আহবান পায় না। আর কিছু সংখ্যকতো সত্যের আহবান পেয়ে সাড়া দেয় না। আহবান পায়নি কারণ তাদের এ সংক্রান্ত গরজ নেই। আহবান গ্রহণ করেনি কারণ তাদের এ সংক্রান্ত গরজ নেই। তারমানে যার যেটার গরজ থাকে আল্লাহ তার জন্য সেটার ব্যবস্থা করেন। এখানে গরজটাই ফ্যাক্ট বা মূল বিষয়। এ জন্য বলা হয় লোকে যাহা চায় ইলাহী মিলায়। যদিও চাওয়ার সাথে যথাযথ প্রচেষ্টা যোগ না হলে অনেক সময় কিছুই মিলে না। অনেক সময় প্রছেষ্টা ছাড়া পাওয়া যায় কারো দোয়ায়, আল্লাহর দয়ায় অন্য কোন কারণে আল্লাহ তার প্রতি দয়াশীল হলে, অথবা পরীক্ষা মূলকভাবে আল্লাহ যদি দেন।
জান্নাতে কেন বাহাত্তর হুর? বনুকোরায়জার হত্যা কান্ড কেন ঘটলো? মহানবি (সা.) কেন এত বিবাহ করলেন? তিনি কেন পালিত পুত্রের স্ত্রী বিবাহ করলেন? তিনি কেন বালিকা আয়েশাকে বিবাহ করলেন? তিনি কেন উটের মুত পান করতে বললেন? আবু বাছিরদেরকে (রা.) কেন তিনি ডাকাতি করতে বারণ করলেন না? ছুফিয়াকে (রা.) কেন তিনি বিবাহ করলেন? কেন আলী (রা.) ও মুয়াবিয়া (রা.) যুদ্ধ করলেন? কেন আয়েশা (রা.) ও আলী (রা.) যুদ্ধ করলেন? আই এস কেন নাদিরাকে ভোগ করলো? মুসলমান কেন এত দল? এ সব কারণে কেউ যদি জান্নাতে যেতে না চায় আর তারা যদি জাহান্নামে যেতে চায় তবে আল্লাহ তাদেরকে জান্নাতের পথ থেকে পথভ্রষ্ট করলে সমস্যা কোথায়? আল্লাহতো জোর করে জান্নাতের পথে কাউকে চালাতে চান না।
অনেকে আমার নিকট আল্লাহ, নবি (সা.), ইসলাম, কোরআন, হাদিস, মুসলমান, সৌদি আরব ইত্যাদি বিষয়ে অনেক দোষ বলে। আমি বলি তুমি চাওটা কি? জাহান্নামে যেতে চাও? বারণ করেছে কে? তোমাকে কে কি জোর করে জান্নাতের দিকে টেনে নিয়ে যায়? তবে অভিযোগটা কোথায়? আমি বাপু জান্নাতে যেতে চাই। জাহান্নামে যেতে চাই না। কাজেই এসব অহেতুক প্রশ্ন করে আমি মাথা নষ্ট করতে চাই না। আর এসব প্রশ্নে উত্তর দেবেইবা কে? শেষ বিচারে আল্লাহর কাছে এ সব বিষয়ে প্রশ্ন করা যেতে পারে।তো সেই সময়ের কাজের কথা এখন ভেবে মাথা নষ্ট করার দরকার কি? এখন প্রশ্ন একটাই, জান্নাতে যেতে চাই কি? উত্তর ‘হ্যাঁ’ হলে জান্নাতের কাজ করতে থাক। উত্তর ‘না’ হলে জান্নাতের কাজ করার দরকার নেই। যেটা যার কাজ নয় সে কাজ নিয়ে যারা পড়ে থাকে আল্লাহ তাদেরকে জান্নাতের পথে চালানোর প্রয়োজন মনে করেন না।
আমরা কয়েকটা দৃষ্টান্ত আলোচনা করলাম, সবগুলো আলোচনা করলাম না। কয়েকটা দৃষ্টান্তের আলোকে অন্যগুলো বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করলেই হয়।সার কথা হলো ইসলামের পথে চলার অযোগ্যতার কারণেই আল্লাহ লোকদেরেকে ইসলাম থেকে পথভ্রষ্ট করেন।আর ইসলামের পথে তারা আসে না যারা এর জন্য যথেষ্ট চেষ্টা করেনি।
বিঃদ্রঃ ‘ইসলামের সঠিকতার অকাট্য প্রমাণ’ গ্রন্থের একটি অধ্যায় হিসেবে লেখাটি লেখা হয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:০৬