ইসলাম হলো আল্লাহর ইচ্ছা অনুযায়ী জীবন যাপন। আল্লাহর ইচ্ছার বিপরীতে অন্যকারো ইচ্ছা অনুযায়ী জীবন যাপন না করা।এমন কি আল্লাহর ইচ্ছার বিপরীতে নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী জীবন যাপন না করা। এটা অবশ্যই সঠিক। কারণ আল্লাহর ইচ্ছা অনুযায়ী জীবন যাপন না করলে বিপদ ঘটবেই।এমতাবস্থায় বিপদ তাৎক্ষণিক না আসলেও কোন না কোন সময় বিপদ আসবেই।আল্লাহ প্রদত্ত অবকাশকাল শেষ হলেই বিপদ আসবে।এ কথাগুলো কেউ বিশ্বাস না করলেও বিপদ আসবে।কারণ অবিশ্বাস করলেই সত্য মিথ্যা হয়ে যায় না।
অণুপরিমাণ ভাল কাজ ও অণুপরিমাণ মন্দ কাজ অবশ্যই কাজে লাগবে। জান্নাতে গেলেও মন্দকাজের ক্ষতি ভোগ করতে হবে, আর জাহান্নামে গেলেও ভাল কাজের উপকার পাওয়া যাবে। মন্দকাজ অনুপাতে জান্নাতে সুখ অনুভব কম হবে। ভাল কাজ অনুপাতে জহাহান্নামে কষ্ট অনুভব কম হবে। সংগত কারণে নাস্তিক হলেও ভাল কাজ করাই ভাল, আর মহাঈমানদার হলেও মন্দকাজ পরিত্যাগ করতে হবে।অনেকেই বলে ওমুকের আর ভাল কাজ করে কি লাভ, আর অমুকের একটু মন্দ করলেইবা কি ক্ষতি! বাস্তবিক মন্দকাজ যতটা করা হবে ততটাই ক্ষতি, আর ভালকাজ যতটা করা হবে ততটাই উপকার।এখানে ভাল কাজ করা আল্লাহর ইচ্ছা, আর মন্দকাজ না করা আল্লাহর ইচ্ছা। যেহেতু আল্লাহর ইচ্ছা অনুযায়ী চলা ইসলাম, কাজেই স্বীকার না করলেও ভালকাজ যার মধ্যে আছে তার মধ্যে ইসলাম আছে, আর স্বীকার না করলেও মন্দকাজ যার মধ্যে আছে তার মধ্যে অনিসলাম আছে।যার মধ্যে ইসলাম যতটা আছে সেটা সঠিক, যার মধ্যে অনিসলাম যতটা আছে সেটা বেঠিক।অনেকে মুসলমানের কতিপয় বেঠিক আচরণ সনাক্ত করে বলে এইতো ইসলাম বেঠিক! কিন্তু বাপু ওগুলোতো ইসলামী কাজ নয়। যা মোটে ইসলামী কাজ নয় তার জন্য ইসলাম বেঠিক হতে যাবে কোন কারণে? বাস্তব হলো কাজটা মুসলমানের অনিসলামী কাজ। যেমন তাবলীগ জামাতের পরস্পর মারামারি ইসলামী কাজ নয়। কারণ আল্লাহ নিজেদের মধ্যে এমন মারামারি করতে বলেননি। এটা আল্লাহর ইচ্ছা নয়।কাজেই মুসলমানের অনিসলামী কাজের দায় ইসলাম গ্রহণ করবে না। কেউ যদি মুসলিম হয়ে অনিসলামী কাজ করে এতে তার মুসলমানিত্ব কমে যাবে তবে মুসলমানিত্ব নাই হয়ে যাবে না।আর এভাবেই ইসলাম এমন দোষ প্রতিরোধক যে এর মধ্যে কোন দোষ চাপানো যায় না। কারণ দোষণীয় কাজ হওয়া আল্লাহর ইচ্ছা নয়।এখন যারা ইসলামের ঘাড়ে দোষ চাপাতে অভ্যস্ত তারা হই হই করে আসতে পারেন, কিন্তু তাদেরকে আমি সবিনয়ে বলব আপনারা যতই হই হই করুন না কেন তবে ইসলামের ঘাড়ে দোষ চাপানো কিন্তু অসম্ভবই থেকে যাবে। কারণ আপনারা যে সবের কথা বলছেন সে সব হলো ইসলামের মধ্যে অনিসলাম। সেগুলো মোটে ইসলামই নয় তো এর দ্বারা ইসলামের দোষ স্বীকার করা যায় কেমন করে?
অনেকের প্রশ্ন আমি জন্মসূত্রে অমুসলিম হলে ইসলামগ্রহণ করতাম কি না? এর উত্তর হলো হ্যাঁ। কারণ আমি সঠিকটা খুঁজে বের করার চেষ্টা করি।অন্য যারা জন্মসূত্রে অমুসলিম নয় তারাও হয়ত ইসলাম গ্রহণ করতো।যেমন যরা জন্মসূত্রে মুসলিম তাদের অনেকে মুসলিম থাকে না।কারণ তাদের নিকট ইসলামের সঠিকতা বোধগম্য নয়। ইসলামের সঠিকতা বোধগম্য হওয়ার জন্য যে সব জ্ঞান অর্জন প্রয়োজন তারা সে সব জ্ঞান অর্জন করেনি বিধায় ইসলামের সঠিকতা তাদের বোধগম্য থাকেনি।এর দ্বারা বুঝাগেল জন্মসূত্রে মুসলমান হলেও মুসলমান থাকা ব্যক্তির অর্জনের বিষয়। আর জন্মসূত্রে মুসলমান না হলেও মুসলমান হওয়া ব্যক্তির অর্জনের বিষয়। অনেকে বলবেন ইসলাম গ্রহণ করা না করা আল্লাহর ইচ্ছা। এটা অবশ্যই সঠিক। তবে আল্লাহর ইচ্ছা বিনা কারণে হয় না।আল্লাহর ইচ্ছার পিছনে কোন না কোন কারণ থাকে। অহেতুক আল্লাহ কোন লোককে পথভ্রষ্ট করে দেন না। আর এমনি এমনি তিনি কাউকে হেদায়েত প্রদান করেন না। কারণ তিনি বলেছেন তিনি বিনা কারণে কিছুই করেন না। কাজেই ব্যক্তির প্রাপ্তি ও বঞ্চনাকে তার অর্জন বলা যায় যা হয়ে থাকে আল্লাহর দয়া ও ক্ষোভে। ভাল হয় আল্লাহর দয়ায়। আর মন্দ হয় আল্লাহর ক্ষোভে।
বিঃদ্রঃ ‘ইসলামের সঠিকতার অকাট্য প্রমাণ’ গ্রন্থের একটি অধ্যায় হিসেবে লেখাটি লেখা হয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:১৭