জন্মসূত্রে কেউ মানুষ, কেউ বড় লোক, কেউ মুসলমান, কেউ সুদর্শন, কেউ নিকৃষ্ট প্রাণী, কেউ গরিব, কেউ অমুসলিম, কেউ কূৎসিৎ, কেউ প্রতি বন্ধী, কেউ নারী, কেউ পুরুষ। সবার প্রাপ্তি সমান নয়। সবার প্রাপ্তি সমান করার জন্য সব মানুষ, পুরুষ, সুদর্শন, বড়লোক ও মুসলমান করা সম্ভবছিল কি? কূৎসিৎ ও প্রতিবন্ধি না হলেও হয়ত হতো। কিন্তু নারী নাহলে পুরুষ হতো কি? আদমের (আঃ) মত সব বানালে কেউ কারো আত্মীয় হতো কি? গরীব না হলে বড়লোকের সেবা করত কে? কোন সেবাকারী ছাড়া বড়লোক বড়লোক হতো কেমন করে? জন্মসূত্রে মুসলমান করার জন্য অমুসলমানের কোন সন্তান না হলে সেটা কেমন হতো? আল্লাহ বলেছেন তিনি বিনা দরকারে কিছু করেননি। সব মানুষ, পুরুষ, সুদর্শন, বড়লোক ও মুসলমান করা সম্ভবছিল না বলেই সেটা করা হয়নি।জগৎ সাজাতে সব পদ লাগে।শাস্তি ও পুরস্কারও লাগে নতুবা লোকে তাঁকে মানবে কেন? কূৎসিত ও প্রতিবন্ধীও হওয়া লাগে নতুবা এসব না হওয়ার জন্য লোকে তাঁর শুকরিয়া করবে কেন? এখন যে ভাল কিছু হয়নি সে আল্লাহকে মানবে কেন? সে আল্লাহকে মানবে যা সে হতে পারেনি সেটা হওয়ার জন্য। যে ভাল কিছু হয়েছে সে এর জন্য অবশ্যই শুকরিয়া করবে নতুবা তার জন্য অপেক্ষা করছে কঠিন শাস্তি।এ ক্ষেত্রে অনেকে যে ন্যায় বিচার কামনা করে সেটা আসলে কোনভাবেই সম্ভব নয়। যাদেরকে আল্লাহ ঠকিয়েছেন আল্লাহ তাদের হিসাব সহজ ও পুরস্কার বেশী করে সমতা বিধানের ব্যবস্থা করেছেন।যারা মানুষ ও জ্বীন হয়নি তারা আবার জাহান্নামের ঝুঁকি থেকে মুক্ত।তথাপি যারা ঠকেছে তারা অথবা তাদের পক্ষে অন্য কেউ হয়ত আল্লাহর সাথে বাক-বিতন্ডা করবে।এর মোকাবেলা আল্লাহ কিভাবে করবেন সেটা তাঁর বিষয়। এটা সৌভাগ্যবানদের কোন বিষয় নয়। তবে তিনি সবার উদ্দেশ্যে বলেছেন তিনি বিনা দরকারে কিছু করেননি।
মলমূত্রে জন্ম নেওয়া কীট কেন এমন হলো? তার জবাব তাকে তার আল্লাহ দিবেন।এ নিয়ে চিন্তা করে আমার মাথা নষ্ট করার দরকার কি? আমার যদি কৌতুহল থাকে তবে আমি না হয় শেষ বিচার পর্যন্ত অপেক্ষা করি। তখন দেখি আল্লাহ কি করেন? অথবা সে কীট যদি আল্লাহকে সে প্রশ্ন না করে তবে না হয় যার কৌতুহল সে আল্লাহকে সে প্রশ্ন করুক যে কি দোষে ওদেরকে মলমূত্রের কীট বানানো হলো? বুঝলাম আল্লাহ প্রশ্নকারীর সন্তোষ জনক জবাব দিতে পারলেন না তো এর জন্য আল্লাহকে প্রশ্নকারী কি করতে পারবে? তাঁকে সে দোষী সাব্যস্ত করবে? এতে লাভটা কি? কিলাভ আল্লাহকে দোষী সাব্যস্ত করে যদি তাঁকে এর জন্য শাস্তি প্রদান করা না যায়? তবে আল্লাহ বলেছেন তিনি নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে পারবেন। তো এখন আমি আল্লাহর উপর অভিযোগ উত্থাপন করে তাঁকে যদি অমান্য করি আর অভিযোগ থেকে যখন আল্লাহর দায় মুক্তি ঘটবে তখন আমার অমান্যতার কি হবে? আমি কি তখন আল্লাহর শাস্তি থেকে রক্ষা পাব? আল্লাহ যদি বলেন আমার চিন্তা তুমি মাথায় নিলে কেন তখন আমি কি জবাব দেব? বুঝিনা মানুষ কেন এত বেকুব হয়? অমুসলমানের সন্তান হয় কেন সেজন্য আপনি আল্লাহকে মানবেন না? তো অমুসলিমের সন্তান ইব্রহীমতো আল্লাহর বন্ধু বা খলিল ছিলেন। অমুসলিমের কোটি কোটি সন্তান মুসলমান হতে পারলে আপনার সমস্যা কি ছিল? আপনার জন্মসূত্রে মুসলমান এ অভিযোগের নিস্পত্তির জন্য কি করা যেত? মুসলমানের সন্তান হবে না নাকি অমুসলমানের সন্তান হবেনা কোনটা করা যেত? আপনি কে যে আপনার খায়েশমত কিছু হতে হবে? যা হয়েছে সেটা বিধাতার বিবেচনা। যে হয়েছে এখানে তার কোন দায় নেই। যে মানুষ হয়েছে, যে পুরুষ হয়েছে, যে মুসলমানের ও বড় লোকের সন্তান হয়েছে, যে প্রতিবন্ধি ও কূৎসিত না হয়ে সুঠাম ও সুদর্শন হয়েছে এটা তার দোষ নয়। যারা এ সব সুবিধা পায়নি তাদের কৈফিয়ত এরা দিবেনা। যদি তারা কোন দিন বিধাতাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করার সুযোগ পায় সে দিন না হয় তারা এ বিষয়ে তাঁর থেকে জানার চেষ্টা করবে সত্যিটা আসলে কি? তারা যদি মনে করে তারা সন্তোষ জনক জবাব না পাওয়া অবদি বিধাতা আল্লাহকে মান্য করবে না তবে সেটা তাদের খুশির বিষয়। তবে তারাও যেন এটা মনে রাখে যে বিধাতা আল্লাহ অবশ্যই দায় মুক্ত হবেন এবং তিনি তাদেরকে সন্তোষ জনক জবাব প্রদান করতে সক্ষম হবেন আর তখন তাঁর শাস্তিথেকে অভিযোগকারীর রেহাই মিলবে না। কাজেই যে যেমন হয়েছে সেটাকে সহজভাবে মেনে নিয়ে আল্লাহকে মেনে চলা বুদ্ধিমানের কাজ। কারণ আল্লাহর বিরুদ্ধে করা অভিযোগ তাঁর ক্ষমতা না থাকার কোন প্রমাণ নয়। তাঁর ক্ষমতা আছে। তিনি যাকে খুশী শাস্তি দিতে পারেন। কাজেই উচিৎ কাজ হলো তাঁকে ভয় করা ও তাঁর হুকুম মেনে চলা। এটা বুঝি বলেই আমি একজন মুসলিম। আর মুসলিম মানে আল্লাহর ইচ্ছার ইচ্ছার প্রতি আত্মসমর্পণ। যার আরবী ইসলাম। সংগত কারণে ইসলাম সাকুল্যে সঠিক।
আল্লাহ কেন আপনাকে মুসলমানের সন্তান করেননি সেজন্য আপনি আল্লাহকে অমান্য করবেন? সে জন্য আপনি ইসলাম গ্রহণ করবেন না? তো হাসরের দিন আল্লাহ আপনার প্রশ্নের সন্তোষজনক সঠিক জবাব প্রদান করলে তখন আপনার উপায় কি হবে? তখন আপনি শাস্তির যোগ্য বিবেচিত হলে আল্লাহর শাস্তি থেকে আপনার রক্ষা মিলবে কেমন করে? সুতরাং ও সব চালাকি কথা বাদ দিয়ে বরং যা করলে আল্লাহর শাস্তি থেকে রক্ষা পাবেন সেটা করার চেষ্টা করেন। যদি মনে করেন সব ঝুট হ্যায়, এসব কিছু হবে না। তবে হয় কি না সে জন্য অপেক্ষা করুন। আর যখন হবে তখন এর করুণ পরিণতি আপনাকে ভোগ করতেই হবে। সে দিন আপনার বিজ্ঞান, আপনার ভুল ধারণা আপনার কোন কাজে আসবে না। আপনার কাজ মোহাম্মদ (সা.) সঠিক বলেছেন কি না সেটা খতিয়ে দেখা। যদি দেখেন যে তিনি সঠিক বলেছেন। তবে তাঁর কথামত আপনার ভালো হওয়ার চিন্তা ও চেষ্টায় থাকুন। তাঁর দোষ, আল্লাহর দোষ, মুসলমানের দোষ, ইসলামের দোষ এসব বাদ দিন। কারণ দোষ এসবের বেঠিকতার প্রমাণ নয়। আর কারো প্রশ্নের সঠিক জবাব দিতে আল্লাহ সক্ষম হবেন না এমন মনে করার সংগত কোন কারণ নেই। সঠিক কথা হলো আল্লাহর কোন দোষ নেই। দোষ তাদের যাদেরকে আল্লাহ শাস্তি দিবেন। কে কিভাবে দোষী সেটা আল্লাহ তাকে ভালভাবে বুঝিয়ে দিবেন বলে ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন। কাজেই আল্লাহকে অমান্যকারীর মুক্তির কোন পথ নেই।
তখন আল্লাহ আপনার প্রশ্নের সঠিক জবাব দিতে পারবেন না মনে করে এখন তাঁকে অমান্য করার মানে কি? তখন আল্লাহ আপনার প্রশ্নের সঠিক জবাব দিতে পারলে, আপনার আল্লাহকে অমান্যতার পরিণতি কি হবে? কাজেই অহেতুক প্রশ্নজাল তৈরী করে বেকুবরা মুলত নিজেদেরকে ঝুঁকির মধ্যে নিক্ষেপ করছে। সকলের কাজ সত্য উৎঘাটন করে সে অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করা।
# যে পোষ্টের প্রতিক্রিয়ায় এ পোষ্ট তা’হলো-
আমি কেন মুসলিম?
বিঃদ্রঃ ‘ইসলামের সঠিকতার অকাট্য প্রমাণ’ গ্রন্থের একটি অধ্যায় হিসেবে লেখাটি লেখা হয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:৪৭