আল্লাহ বলেছেন, ‘কুলির রুহু মিন আমরিল্লাহ- বল রুহ আল্লাহর আমর বা আদেশ’। আমর বা আদেশ সম্পর্কে আল্লাহ বলেছেন, ‘ ফাইযা আমরুহু ইযা আরাদা শাইয়াঁও আঁইয়াকুলা লাহু কুন ফাইয়াকুন- তাঁর আমর বা আদেশ বা কাজ হলো এমন যখন তিনি কোন কিছু করতে ইচ্ছা করেন তখন তিনি উহাকে বলেন হও অতঃপর উহা হয়ে যায়’।তারমানে হও তিনি উহাকে বলেন। তার মানে হও বলার আগে উহার সব লিমিট শেষ হয়ে উহা হওয়ার যোগ্য হওয়ার পর আল্লাহ উহাকে হও বলেন।এখানে লিমিট মোটেও অনুপস্থিত নয়। হও মানে ডান কমান্ড প্রদান করেন প্রোগ্রামার। প্রোগ্রামার সফট ওয়্যারের যাবতীয় লিমিট প্রদান করেন। তিনি উহাকে যেমন হওয়া কামনা করেন তেমন লিমিট প্রদান করেন। এর একটা নামও তিনি দিয়ে দেন। তারপর তিনি ডান বা হও কমান্ড দিলে সফটওয়্যার বা প্রোগ্রাম হয়ে যায়।মানব দেহের প্রাণ হলো এর সফটওয়্যার বা প্রোগ্রাম। হার্ডওয়্যার সচল হতে বা সচল থাকতে সফটওয়্যার লাগে।মানব দেহের যেটা রুহ সেটাও মূলত সফটওয়্যার যা এটা সচল হতে ও সচল থাকতে কাজে লাগে। যেহেতু রুহের বিভিন্ন লিমিট রয়েছে সেহেতু এটা বোধগম্য যে রুহের লিমিট সমূহ প্রদানের পর আল্লাহ একে হও বলার পর এটা হয়েছে।সংগত কারণে এতেও পদ্ধতি বা সিস্টেম বিদ্যমান এটা অদ্ভুত জাতীয় কিছু নয়। আর এখন আল্লাহর খলিফা বা রিপ্রেজেন্টিটিভ বা প্রতিনিধি হিসেবে মানুষ সফটওয়্যার তৈরী করতে পারছে। তবে তারা এখনো রুহ তৈরী করতে পারছেনা। রুহ বিভিন্ন রকম রয়েছে কোনটা সচল কারক রুহ আর কোন রুহ এর মধ্যে সচল করার গুণ নেই। এগুলো শুধুমাত্র এদের দেহকে টিকিয়ে রাখতে পারে। এ ধরনের রুহ এর মধ্যে রয়েছে পাথরের রুহ।আর সচল করার গুণসম্পন্ন রুহের মধ্যে রয়েছে মানুষের রুহ। তারমানে আল্লাহ তাঁর সব সৃষ্টির মাঝেই এটা টিকে থাকা ও এক সময় শেষ হওয়ারমত সফটওয়্যার দিয়ে রেখেছেন। এ রুহের মধ্যে কিছু আছে অভিভাজ্য আর কিছু আছে বিভাজ্য।অবিভাজ্য রুহের কিছু অংশ মূল অংশ থেকে আলাদা হলে আলাদা অংশের বিলুপ্তি ঘটে।তবে বিভাজ্য রুহ এর দেহের সব অংশে সমভাবে বিরাজ করে। কাজেই এর কোন অংশ কোন অংশ থেকে আলাদা হলেও সব অংশেই এর রুহ কার্যকর থাকে। আল্লাহর কথার ভিত্তিতে এসব আমার উপলব্ধিগত জ্ঞান। যদিও এটাকে লব্ধজ্ঞানে পরিণত করতে আমার আরো সময় লাগবে।
আল্লাহর সৃষ্টি রুহ ও মানুষের তৈরী সফটওয়্যারের মধ্যে প্রধান পার্থক্য হলো, রুহ চলে গেলে দেহ আর টিকে থাকেনা। তখন দেহও বিলুপ্তির পথ ধরে। কিন্তু মানুষের তৈরী সফটওয়্যার না থাকলেও হার্ডওয়ার মোটামুটি টিকে থাকে।সম্ভবত মানুষ আল্লাহর তৈরী রুহের মত কোন সফটওয়্যার তৈরী করতে সক্ষম হবে না। তবে মানুষ যা করেছে তাও কম অবাক করার মত নয়। এখন অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে মানুষ আল্লাহকে বাদ দিয়ে মানুষের উপাসনা শুরু করেছে।অথচ মানুষ আল্লাহর সৃষ্টি ছাড়া কিছুই তৈরী করতে পারে না। কাজেই মানুষের বুঝা উচিৎ তার মানুষ নয় বরং আল্লাহর উপাসনা করা উচিৎ।
মানুষ যা করেছে তা মোটেও কম কিছু করেনি। কিন্তু যিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন তিনি মানুষ থেকে কম হন কেমন করে? আল্লাহ যদি মানুষ সৃষ্টি না করতেন তবে এমন অবাক করার মত কাজ কেমন করে হতো? মানুষ যখন ছিলনা সে সময়কার ইতিহাস তো মানুষ এখন বলছে।তখনতো এমন কিছু ছিলনা। মানুষের সাথে যখন অবাক করার মত কিছু ঘটল তখন মানুষের সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ না দিয়ে পারা যায় কেমন করে? সংগত কারণে মানুষের উচিৎ মানুষ বা অন্যকারো নয় বরং তার সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর উপাসনা করা। নতুবা সে আল্লাহর বিচারে অপরাধী সাব্যস্ত হলে আর তার পক্ষে কি বলার থাকবে? কাজেই মানুষ কি করছে সে বিষয়ে তার ভাবনা থাকা দরকার।
বিঃদ্রঃ ‘ইসলামের সঠিকতার অকাট্য প্রমাণ’ গ্রন্থের একটি অধ্যায় হিসেবে লেখাটি লেখা হয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:১১