অনেকের উপাস্য ঈশ্বর। তাঁর আবার স্ত্রী ও সন্তান আছে। তবে এদের দৃষ্টিতে ঈশ্বর সবচেয়ে বড়। অনেকের উপাস্য দেব-দেবী যারা সংখ্যায় অনেক।এদের মধ্যে বড়-ছোট আছে। এদের কাজ আবার আলাদা। যে কাজে যাকে প্রয়োজন সে কাজে তার কাছে মিনতি সহকারে আরজি পেশ করে তার আরাধনা করা হয়। অনেকের উপাস্য দেব-দেবী ও ভগবান। এদের দেব-দেবী ও ভগবানও সংখ্যায় অনেক।অনেকের উপাস্য শুধুই আল্লাহ। যার স্ত্রী ও সন্তান নেই। আর সব কাজ শুধু একজন আল্লাহ করে থাকেন।অনেকের উপাস্য বিজ্ঞান এরা ঈশ্বর দেব-দেবী ভগবান ও আল্লাহকে কাল্পনিক বলে এবং শুধুমাত্র বিজ্ঞানকে যথাযথ বলে।এদের কেউ কেউ নিজমত সঠিক বলে তার মত যে সঠিক বলে না তার সাথে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে পরিবেশ পরিস্থিতি জটিল করে তোলে। অনেকে বলে সবার মত সঠিক যা কোনভাবেই সম্ভব নয়।তাহলে এখন উপায়? উপায় হলো কার মত কিভাবে সঠিক সে বলুক। যারা মত যার ভাল লাগে সে তার মত গ্রহণ করুক কিন্তু সবাই মিলেমিশে শান্তিতে থাকুক।
বাণী সূরা মন্ত্র ও সূত্র নিয়ে আলাদা কাজ-বাজ চলছে। অনেকে আবার সবটা একত্রে করে জগাখিচুড়ি পাকায়। তারা আবার এটা বুঝেনা যে অন্যের মত গ্রহণ করলে তার নিজের মত বজায় থাকেনা। সেজন্য অনেকে বলে যার মতে সে থাকুক তবে নিষ্ঠার সাথে থাকুক। নতুবা আম ও ছালা দু’টোই হারাতে হবে। কেউ তাকে নিজমতের লোক হিসেবে গ্রহণ করবেনা।অবশ্য জগা খিচুড়ি একদল হলে এরাও একটা দল পাবে।
কিন্তু যে মতের উপকার কেউ কামনা করে সে ঐ মতে না থাকলে সে ঐ মতের উপকার পায় কেমন করে? এজন্য স্বকীয়তার দরকার আছে। যেমন কেউ বলে সে মুসলমান অথচ সে কোরআনের কথা বিশ্বাস না করে বিজ্ঞানের কথা বিশ্বাস করে তাহলে সে বিজ্ঞানবাদী হলো না মুসলমান রইলো? আর সে মুসলমানই যদি না থাকে তবে তার ক্ষেত্রে ইসলামী তরিকা কিভাবে পালন করা যাবে? সে ইসলামী কথা মানবে না কিন্তু তার ক্ষেত্রে ইসলামী তরিকা মানতে হবে এটা কেমন কথা? এক কমরেডকে দেখলাম যে জীবনে নামাজ পড়েনি তার মরনে লোকেরা জানাজা নামাজের জন্য অস্থির হয়ে গেল। তো যার জীবনে নামাজ প্রয়োজন হয়নি তার মরনে নামাজ কেন প্রয়োজন হবে?
কেউ একমতের কাজ করে অন্য মতের পরিচয় প্রদান করাকে প্রতারণা না বলে উপায় কি? ইসলামে এসব লোককে মোনাফেক বলে।আর এ প্রতারক ও মোনাফেকরা সবচেয়ে বিপদ জনক। কারণ একমতের লোকেরা তার মতের লোক মনে করে এদের সাথে মিশার পর এরা পিছন থেকে ছুরি মারে। আর এতেকরে লোকেরা ধোকায় পড়ে ক্ষতিগ্রস্থ্য হয়। সে জন্য বলি যে যার মতে থাক তবে নিষ্ঠার সাথে থাক। এক মতে থেকে অন্যমতের ভেস ধরা জঘণ্য। রাজনীতির ক্ষেত্রেও এ ধরনের মোনাফেক থাকে। যাদের দ্বারা লোকেরা প্রতারিত হয়। এরা স্বার্থের কারণে যে কোন সময় যে কোন মত গ্রহণ করে তার এত দিনের সাথীর পিঠে ছুরি মারতে পারে। তা’ছাড়া এসব ক্ষেত্রে মানুষ বন্ধুরূপি শত্রু দেখে দিশেহারা হয়ে পড়ে।
আমারমতে সঠিক মত খুঁজে সেটা মেনে চল। যে মত মানবে সেটা নিষ্ঠার সাথে মানবে। মোনাফেকি বা প্রতারণা করবে না। এবার সেটা ধর্মনীতি বা রাজনীতি বা যে নীতি হোক।আর সব মানুষ মিলেমিশে সুখে শান্তিতে থাক। অশান্তি সৃষ্টির কোন দরকার নেই। যার মত তার কাছে ঠিক সেটা মেনে নিজ মতে চল। নিজ মত ও অপরের মতের সাথে খিচুড়ি পাকাবার দরকার নেই। কারণ এতে লোকেরা প্রতারিত হয়। আর ইসলামে মোনাফেক সবচেয়ে ঘৃণিত আর বাস্তবেও এর চেয়ে জঘণ্য কেউ নেই। কারণ এরা ছদ্মভেসী শয়তান।
বিঃদ্রঃ ‘ইসলামের সঠিকতার অকাট্য প্রমাণ’ গ্রন্থের একটি অধ্যায় হিসেবে লেখাটি লেখা হয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:০৮