আল্লাহ বলেছেন, ‘মাই ইয়াহদিয়াল্লাহু ফালা মুদিল্লালাহ ওয়ামাই ইয়াদলিলহু ফালা হাদিয়ালাহ- আল্লাহ যাকে হেদায়েত দান করেন তার জন্য পথভ্রষ্টতা নেই। আর আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন তার জন্য হেদায়েত নেই।তারমানে আল্লাহ পথভ্রষ্ট করে দিলে হেদায়েতের আর কোন পথ থাকেনা।আল্লাহ আরো বলেছেন, খাতামাল্লাহু আলা কুলুবিহিম ওয়া আলা সাময়িহিম ওয়া আলা আবসারিহিম গিসাওয়াতুন, ওয়ালাহুম আজাবুন আজিম- আল্লাহ তাদের হৃদয় ও কর্ণে মোহর করে দিয়েছেন, তাদের চক্ষুর উপর আবরণ রয়েছে এবং তাদের জন্য রয়েছে মহা শাস্তি, সূরা ২, আল-বাকারা, আয়াত নং-৭। সেজন্য অনেক বেকুব বলে পথভ্রষ্টতার দায় আল্লাহর। কিন্তু পথভ্রষ্টতা ও মোহর মারার যদি যথাযথ কারণ থাকে তবেতো পথভ্রষ্টতার দায় আল্লাহ থেকে ব্যক্তির দিকে ঘুরে যায়।যেমন বলা হয়েছে তাদের চোখের উপর আবরণ বা পর্দা রয়েছে যা সরিয়ে তারা আল্লাহর নিদর্শন সমূহ দেখেনা। তারা এত্ত অলস!সেজন্য আল্লাহর তাদের উপর রাগ হয়। তিনি তাদের উপর বিরক্ত হয়ে তাদের হৃদয় ও কানে মোহর মেরে দেন এবং তাদেরকে পথভ্রষ্টতায় সামিল করে দেন। সংগত কারণে পথভ্রষ্ট আল্লাহ করলেও দোষ যাকে পথভ্রষ্টকরা হয়েছে তার।এই যেমন অপরাধী সনাক্ত করার জন্য ডিএনএ ম্যাচিং করা হয় এবং ফিঙ্গারপ্রিন্ট গ্রহণ করা হয়, এ ডিএনএ ও ফিঙ্গারপ্রিন্টের পিছনে কারো কি হাত নেই? খুব খেটেখুটে ভাবলে হ্যাঁ বোধক উত্তর মিলবে। আর আলস্য করে আল্লাহর কৃতিত্ব অস্বীকার করলে আল্লাহ রাগ হয়ে ঘাড় মচকিয়ে পথভ্রষ্টতার দিকে ঘুরিয়ে দিলে হ্যাঁ বোধক উত্তর মিলবেনা। তখন হ্যাঁ বোধক উত্তর না মিলার দায় অলসের ছাড়া কারো হবেনা।সংগত কারণে পথভ্রষ্টতা পথভ্রষ্ট ব্যক্তির কর্মফল।
যারা তাদের চোখের পর্দা সরিয়ে দেয় তারা আল্লাহর নিদর্শন সমূহ স্পষ্ট দেখতে পায় আর এর ফাঁক দিয়ে হেদায়েতের পথও দেখতে পায়। এতে খুশি হয়ে আল্লাহ এদেরকে হেদায়েত প্রদান করেন। এদেরকে পথভ্রষ্টকরা তখন আর কারো সাধ্যের মধ্যে থাকেনা এবং তা’ কোনভাবেই থাকেনা। হাজার জুলুমের মাঝেও এরা হেদায়েতের পথে চলে।
নিম্নোক্ত ব্যক্তিদের নিয়ে ভাবুন-
১। যার অন্য কিছু নিয়ে ভাবার অনেক সময় আছে কিন্তু আল্লাহকে নিয়ে ভাবার কোন সময় নেই।
২। যে তার বর্তমান প্রয়োজন ছাড়া আর কিছু নিয়ে ভাবেনা।
৩। যে যাখুশি করে ফেলে, কাজের ভাল মন্দ নিয়ে ভাবেনা।
৪। যার নিত্য দিনের কাজ হলো জুলুম অত্যাচর।
৫। আল্লাহর স্থানে যে অন্যকে বসায়।
৬। সব কিছুতে অপচয় করা যার কাজ।
৭। মিথ্যা ধোকা প্রতারণা যার প্রিয় কাজ।
৮। প্রতিটি ক্ষেত্রে যে অকৃতজ্ঞ।
৯। যার অবস্থান কোন কারণ ছাড়াই তার আপনজনদের বিপরীতে।
১০। যে মানুষের মাঝে ঝগড়া বাধায়।
১১। যে মানুষের দোষ বলে বেড়ায়।
১২। যে অপরকে অহেতুক কষ্টদেয়।
১৩। কারো বিপদে যার সাড়া মিলেনা।
১৪। যে আল্লাহর গুণগুলো না দেখে তাঁর দোষ খুঁজে বেড়ায়।
১৫। যে আল্লাহর প্রিয় হাবিবের গুণগুলো না দেখে তাঁর দোষ খুঁজে বেড়ায়।
১৬। যে আল্লাহর কোরআনের গুণ না দেখে এর দোষ খুঁজে বেড়ায়।
১৭। যে আল্লাহর মনোনীত ইসলামের গুণ না দেখে এর দোষ খুঁজে বেড়ায়।
১৮। আল্লাহ নবি (সা.) কোরআন ও ইসলামের জন্য যে শুকরিয়া জ্ঞাপন করেনা।
১৯। যে হেদায়েত কামনা করেনা এবং পথভ্রষ্টতা থেকে বাঁচতে চায়না।
এমন সব লোকদেরকে যদি আল্লাহ তাঁর প্রিয় জিনিস প্রদান না করেন তবে কি আল্লাহর দোষ হবে? আর এদের প্রতি আল্লাহ রাগ হয়ে যদি এদেরকে তিনি পথভ্রষ্ট করে দেন তাহলেও কি তাঁর দোষ হবে? আল্লাহর প্রিয় জিনিস হেদায়েত ও জান্নাত। যার বিপরীত পথভ্রষ্টতা ও জাহান্নাম। কেউ প্রথমটা না পেলে পরেরটা পায়। আর প্রথমটা না পাওয়ার কারণ যোগ্যতা নেই। আর পরেরটা পাওয়ার কারণ এটাই তাদের প্রাপ্য। আর আল্লাহ কারো প্রাপ্য প্রদানে কার্পণ্য করেননা।
যারা আল্লাহর দরবারে কান্নাকাটি করে হেদায়েত কামনা করে দেখা গেছে তারা হেদায়েতের পথেই চলে।কিন্তু যারা আল্লাহর দরবারে হেদায়েতের কামনা করেনা দেখা গেছে তারা হেদায়েতের পথে চলেনা। আর হেদায়েতের পথে না চলাই পথভ্রষ্টতা। এর দ্বারা প্রতিয়মান হয় যে পথভ্রষ্টতার একটি কারণ হেদায়েত কামনা না করা।
গৌতম বোদ্ধ মানব মঙ্গলের বিষয় নিয়ে ভেবেছেন।মানব মঙ্গলের কিছু উপায় তিনি পেয়েছেন। কিন্তু সৃষ্টিকর্তা আছে কি নেই বা পরকাল আছে কি নেই এ বিষয়ে তিনি ভাবেননি। এজন্য তাঁর এ সব বিষয়ে কোন বক্তব্য নেই।এর দ্বারা বুঝাগেল তিনি যা পাননি সে বিষয়ে প্রাপ্তির বিষয়ে তাঁর চেষ্টাও ছিলনা।
কার্লমাক্স ও ফ্রেডারিক এঞ্জেল বঞ্চিতদের বঞ্চনার প্রতিকার খুঁজতে গিয়ে মনেকরেছেন যে ঈশ্বরবাদ ও পরকালবাদ বঞ্চিতদের বঞ্চনার অন্তরায়। সেজন্য ঈশ্বর বা পরকাল থাকলেও এ বিশ্বাস গ্রহণে তাদের মন প্রস্তুত ছিলনা।তাদের অবস্থান ছিল এসব বিষয় না থাকা সংক্রান্ত ভাবনার পক্ষে। সংগত কারণে তারা যা পায়নি (ঈশ্বর থাকা বিষয়ক জ্ঞান) তা পাওয়া বিষয়ে তাদের চেষ্টাও ছিলনা।
সৃষ্টিকর্তার স্ত্রী ও সন্তান থাকা বা না থাকা বিষয়ে দু’রকম মত বিদ্যমান এ ক্ষেত্রে ভুল সিদ্ধান্তের কারণ হিসেবে দূর্বল ভাবনাকে দায়ী করা যায়। সৃষ্টিকর্তার স্ত্রী ও সন্তান থাকা বা না থাকা পরস্পর বিপরীত মত বিধায় একসঙ্গে দু’টোই সঠিক হওয়া সম্ভব নয়। এ ক্ষেত্রে একটি ভাবনা সঠিক অন্য ভাবনা সঠিক নয়। সংগত কারণে এ ক্ষেত্রে ভুল সিদ্ধান্তকে দূর্বল ভাবনার ফল বলা যেতে পারে।
মুসলমানদের আল্লাহ বিশ্বাস, ইহুদী খ্রিস্টানদের ঈশ্বর বিশ্বাস ও হিন্দুদের ভগবান বিশ্বাসের ক্ষেত্রে যথেষ্ট প্রভেদ রয়েছে। পরস্পর বিপরীত বিশ্বাস একসঙ্গে সঠিক মানা অসম্ভব। যদি এটা সম্ভব হতো তবে এ ধর্মগুলো আলাদা ধর্ম না হয়ে এক ধর্ম হয়ে যেত।এসব ক্ষেত্রে অনুসন্ধানগত ত্রুটি ভুল সিদ্ধান্তের কারণ হতে পারে। যে ভুল সিদ্ধান্তকারী উল্টা নিজ সিদ্ধান্ত সঠিক বলে। সবাই নিজ সিদ্ধান্ত সঠিক বলায় এ নিয়ে মারামারিও হয়। আমরা বলি সঠিকতার দাবীর পিছনে প্রমাণ থাকা দরকার। যদি প্রমাণ না থাকে তবে এ নিয়ে ঝামেলা না পাকিয়ে চুপ থাকা উচিৎ। আর প্রমাণ থাকলেও তা’ অপর পক্ষকে বুঝাতে সক্ষম না হলে কারো উপর বুঝাতে অক্ষম হওয়া প্রমাণ মেনে নিতে জোর করা ঠিক নয়।
এখন বিষয়ের ব্যাপারে আমাদের বক্তব্য হলো পথ ভ্রষ্টতার মূল কারণ পথ ভ্রষ্টতা থেকে আত্মরক্ষার যথাযথ প্রচেষ্টা না থাকা। যে পরিমাণ চেষ্টার কারণে আল্লাহর পথ ভ্রষ্টতা থেকে রক্ষার কথা সে পরিমাণ চেষ্টার উপস্থিতি না পেলে আল্লাহ পথভ্রষ্ট করবেন।এ ক্ষেত্রে হাদিসে একটা ঘটনার কথা বলা আছে। ঘটনাটি নিম্নরূপ-
সালমান ফারসী (রা.) ইরানী অগ্নি পুজক ছিলেন। তাঁর মতের সাথে অন্য মতের গরমিল দেখে তিনি সৃষ্টিকর্তার নিকট সঠিক পথের প্রার্থনা করেন। এরপর দস্যুরা তাকেঁ ধরে নিয়ে দাস হিসেবে বিক্রি করে দেয়। সিরিয়ান খ্রিস্টান মনিব তাঁকে কিনে নেয়। তিনি তখন মনিবের খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করলেন। এরপর মনিবের অভাব দেখা দিলে মনিব তাঁকে মদিনার এক ইহুদীর কাছে বিক্রি করে দেয়। এবার তিনি ইহুদী মনিবের ইহুদী ধর্ম গ্রহণ করলেন। মহানবি (সা.) মদিনায় আসলে তিনি মনিবের কাছে ইসলাম গ্রহণের অনুমতি চাইলেন। মনিব এতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করলে তিনি মনিবের কাছে মুক্তি চাইলেন। মনিব মুক্তির জন্য শর্ত দিল, তাকে একশত তোলা স্বর্ণ দিতে হবে। আর মহানবি (সা.) তাকে একটা খেজুর বাগান করে দিবেন যাতে বীজ লাগানোর ছয় মাসের মধ্যে খেজুর ধরবে। মহানবি (সা.) হজরত আলী (রা.) ও সালমান ফারসীকে (রা.) নিয়ে খেজুর বাগানে বীজ লাগাতে গেলেন, তিনি হজরত আলী (রা.) ও সালমান ফারসীকে (রা.) বললেন বীজ লাগানোর সময় যেন পিছনে না তাকায়। বীজ লাগানো শেষ হলে মহানবি (সা.) তাদেরকে পিছনে তাকাতে বললেন। তখন তারা সবাই দেখলেন সব গাছ গজিয়ে মাটির উপর উঠে গেছে।মহানবির (সা.) হাতে করা সে বাগান এখনো বিদ্যমান এবং এর খেজুর অতি উৎকৃষ্ট মানের।ইহুদী মনিবের দাবী অনুযায়ী তাকে একশত তোলা স্বর্ণও প্রদান করা হয়। এরপর সালমান ফারসি (রা.) ইসলাম গ্রহণ করেন। পরে মুসলমানদের ফারস্য বা ইরান জয়ের পর সালমান ফারসী (রা.) ফারস্য বা ইরানের গভর্ণর হন।এ কাহিনীর মাধ্যমে এটা বলা হলো যে আল্লাহর কাছে হেদায়েত চাইলে সেটা পাওয়া যায়। আর কেউ যদি আল্লাহর কাছে হেদায়েত না চায় অথবা কেউ যদি হেদায়েতের তালাশ না করে তবে সে হেদায়েত পায়না বা আল্লাহ তাকে হেদায়েত দেননা।তখন পথভ্রষ্টতা তার পাওনা হয়ে যায়। আর এমন লোককে আল্লাহ পথভ্রষ্ট করেন। আর এর কারণ হলো হেদায়েত না চাওয়া ও হেদায়েত তালাশ না করা।
যেহেতু হেদায়েত বেশ লাভ জনক সেহেতু আল্লাহ যাদের উপর খুশী তিনি তাদেরকে হেদায়েত প্রদান করেন। আর যাদের উপর তাঁর ক্রোধ তিনি তাদেরকে পথভ্রষ্ট করে দেন।আর পথ ভ্রষ্টতার বড় কারণ জুলুম ও আলস্য।
পথ ভ্রষ্টতার শাস্তি জাহান্নাম। রাহমানুর রাহীম বা দয়াময় মেহেরবান আল্লাহ কেন পথভ্রষ্ট করেন? আল্লাহ পথভ্রষ্ট না করলেইতো মানুষ জাহান্নাম থেকে বেঁচে যায়।আল্লাহ পথ ভ্রষ্ট করলে পথভ্রষ্ট হওয়ার জন্য মানুষের দোষ কোথায়? কতিপয় প্রশ্নের মাধ্যমে কতিপয় মানুষ বুঝাতে চায় মানুষের পথভ্রষ্টতার দায় মানুষের নয়। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো পথভ্রষ্টতার দায় মানুষের না থাকলেও জাহান্নামে মানুষকেই যেতে হবে। সেজন্য কতিপয় লোক ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করে তাঁর নিকট জাহান্নাম থেকে মুক্তি চায় এবং দেখা যায় এরা হেদায়েত পেয়ে যায়। যারা এ রকম কান্নাকাটি করে আল্লাহর দরবারে জাহান্নাম থেকে মুক্তি চায় তারা জাহান্নামের পথে চলে কি? অনুসন্ধান করে দেখা গেছে এরা জাহান্নামের পথে নয় বরং জান্নাতের পথে চলে। এতে বুঝাগেল যারা হেদায়েত চায় তারা হেদায়েত পায়। আর যারা হেদায়েত চায়না তারা হেদায়েত পায়না। তারা পথভ্রষ্ট হয়। তারমানে পথভ্রষ্টতার কারণ এ বিষয়ে চিন্তামুক্ত থাকা। পথভ্রষ্টতার কারণে বরাদ্ধ শাস্তির ভয় না থাকা।আপনি পথ বা হেদায়েত চান না। আল্লাহ আছে কি নেই আপনি জানতে চান না।তো আপনাকে হেদায়েত প্রদানের আল্লাহর কি দায় পড়েছে? যেহেতু আপনি হেদায়েত পেলেন না সেহেতু হেদায়েতের বিপরীত পথভ্রষ্টতা আপনার প্রাপ্য। যেহেতু আল্লাহ ন্যায় বিচারী সেহেতু ন্যায় বিচারী আল্লাহ আপনার প্রাপ্য আপনাকে না দিবেন কেন?
পৃথিবীতে বহু মানুষ তাদের বেঁচে থাকা বিষয়ে কিছু ভাবেনা। তারা ভাবে তারা বেঁচে আছে তারপর একদিন মরে যাবে ঘটনা এ পর্যন্ত।বহু মানুষ তাদের পরিবার ও সমাজ থেকে কিছু কথা শুনে সে সব কথা তারা মেনে চলে। এসব কথা সঠিক না বেঠিক সে বিষয়ে তারা কিছু ভাবেনা।কিছু মানুষ সৃষ্টিকর্তা ও পরকাল নিয়ে ভাবে। এ সংক্রান্ত গরমিল কথা নিয়ে ভাবে। এ সংক্রান্ত সঠিক কথা নির্ণয়ের চেষ্টা করে। এরা যদি এ সংক্রান্ত সঠিক কথা নির্ণয় করতে সক্ষম হয় তবে কি এটা তাদের কোন ভাল অর্জন নয়? কেউ কেউ বলে যারা সঠিকটা অর্জন করতে সক্ষম হলো তাদের সন্তানেরা সেটা বিনা কষ্টে পেয়ে যায়। তো এটাই নিয়ম পৈত্রিক সম্পত্তি মানুষ বিনা কষ্টেই পেয়ে থাকে। জন্মসূত্রে কেউ কোটিপতি আর জন্মসূত্রে কেউ ভিখারী। এ ক্ষেত্রে সৃষ্টিকর্তা কি করতে পারেতেন? তিনি কি এটা করতেন যে কোটিপতি বা ভিখারীর সন্তান হবে না? তাহলে জন্মসূত্রে সন্তান হওয়ার বিষয়টা বাদ দিতে হতো। তাহলে মানুষ আত্মীয় স্বজন কি করে পেত? আত্মীয় স্বজনতো মানুষ জন্মসূত্রে পায়।পৃথিবীতে চার হাজারের উপর ধর্ম ও মত রয়েছে। সব ধর্ম ও মতের লোকের সন্তান হয়। জন্মসূত্রে প্রাপ্ত ধর্ম ও মত তারা মেনে নেয়। জন্মসূত্রে প্রাপ্ত ধর্ম ও মত সঠিক কিনা এটা তারা যাচাই করেনা। এটাই তাদের ভুল ধর্ম ও মত ছাড়তে না পারা ও সঠিক ধর্ম ও মত গ্রহণ করতে না পারার প্রধান কারণ। আর যাচাই কাজে ভুল করা সঠিক ধর্ম ও মত গ্রহণ করতে না পারার আরেকটি প্রধান কারণ। তবে যারা সঠিক ধর্ম ও মতের লোকের ঘরে জন্ম গ্রহণ করে তারা তাদের জন্মসূত্রে প্রাপ্ত ধর্ম ও মত যাচাই না করেও সঠিক ধর্ম ও মতে জীবন যাপন করে এটা অনেকের ধারণা। তবে তাদের এ মত নিশ্চিত সঠিক হওয়ার কোন কারণ নেই। আল্লাহ বলেছেন হেদায়েত বা সঠিক পথে চালানোর দায়িত্ব আল্লাহর। আর তিনি বিনা কারণে কিছু করেন না। আল্লাহর দাবী অনুযায়ী সঠিক ধর্ম ও মতে থাকার পিছনে ব্যক্তির ব্যক্তিগত কারণ রয়েছে। সঠিক পথে থাকার যোগ্য বলেই কেউ সঠিক ধর্ম ও মতে জন্মগ্রহণ করে সঠিক ধর্ম ও মতে বজায় থাকে। এ সংক্রান্ত অযোগ্যতার কারণে অনেকে সঠিক ধর্ম ও মতে জন্মগ্রহণ করেও সঠিক ধর্ম ও মত পরিত্যাগ করে ভিন্ন পথে চলে। সার্বিক অনুসন্ধানে এটাই প্রতিয়মেয় যে যারা হেদায়েত পাওয়ার যোগ্য আল্লাহ তাদেরকে হেদায়েত প্রদান করেন। আর যারা হেদায়েত পাওয়ার যোগ্য নয় এমন হেদায়েত পাওয়ায় অযোগ্য লোকদেরকে আল্লাহ পথভ্রষ্ট করেন।কাজেই কোন লোককে আল্লাহ পথভ্রষ্ট করলেও তিনি সেটা করে থাকেন মূলত তার দোষের কারণে। সংগত কারণে কাজ আল্লাহর হলেও কাজের দায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির। এ বিষয়ে কিছু লোক ইসলামের যে ভুল ধরার চেষ্টা করে মূলত তাদের ভুল ধরাটাই ভুল। এ ক্ষেত্রে ইসলাম শতভাগ সঠিক।
বিঃদ্রঃ ‘ইসলামের সঠিকতার অকাট্য প্রমাণ’ গ্রন্থের একটি অধ্যায় হিসেবে লেখাটি লেখা হয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:০৯