বিবর্তন নয় কারণ শূণ্যতে বিবর্তন সম্ভব নয়। প্রবর্তন হওয়ার কারণ প্রবর্তন সর্বাবস্থায় সম্ভব।শূণ্যতে পদার্থ প্রবর্তন সম্ভব নয় কারণ পদার্থে স্থান প্রয়োজন, কিন্তু শূণ্যে স্থানতো দূরে থাক বরং কিছুই থাকেনা।শূণ্যতে শক্তি প্রবর্তন সম্ভব কারণ শক্তিতে স্থান আবশ্যক নয়।বাতাস এর স্থানকে বাড়িয়ে দেয় কিন্তু বিদ্যুৎ এর স্থানকে বাড়িয়ে দেয়না। তাপের কারণে স্থান বাড়ে তবে তাপ বাড়তি স্থানে নয় পুরো স্থানে থাকে। বাতাস কিন্তু বাড়তি স্থানে থাকে বা স্থানের ফাঁকা অংশে থাকে। তাপ থাকে ফাঁকা ও ভরাট উভয় স্থানে।সংগত কারণে পদার্থ ও শক্তির অবস্থা এক নয় বরং উভয় ক্ষেত্রে স্পষ্ট ভিন্নতা রয়েছে।ভিন্নতার কারণে শূণ্যতে পদার্থের প্রবর্তন সম্ভব না হলেও শক্তির প্রবর্তন সম্ভব। ভিন্নতা হলো পদার্থের জন্য স্থানের শর্ত রয়েছে কিন্তু শক্তির জন্য স্থানের শর্ত নেই।
রিক্সা চালক কেন বিমান চালাতে পারেনা? সঠিক উত্তর যোগ্যতা নেই।তবে রিক্সা চলাকও যদি বিমান চালনা শিখেফেলে তবে রিক্সা চালককও বিমান চালাতে পারে। পারেনা কেন প্রশ্ন করলেই উত্তর এটা হবে যে যোগ্যতা না থাকা।এখন যদি প্রশ্ন করা হয় আল্লাহ কেন নিজে নিজে অস্তিত্বলাভ করতে পারেন? উত্তর একটাই তাঁর সে যোগ্যতা আছে। আল্লাহ ছাড়া আর কারো নিজে নিজে অস্তিত্বলাভ সম্ভব নয় কেন? উত্তর একটাই আল্লাহ ছাড়া আর কারো নিজে নিজে অস্তিত্বলাভ করার যোগ্যতা নেই। এক বাজারে দু’রকম বেচাকিনি কেন? উত্তর একটাই জিনিস ভিন্ন কাজেই একদামে বিক্রি হবেনা। মুরগী আর গরু কি একদামে বিক্রি হবে? আল্লাহ হলেন অসীম সর্বশক্তিমান। এরকম আছে শুধু একজন। আর সব পদার্থ না হয় সসীম শক্তি।(মুর্তি গড়ে ঈশ্বরকে সসীমত্বের রূপ দিয়ে বে-ইজ্জতি করা হয়। এতে তাঁকে ছোট করা হয়। তাঁকে ছোট করে পুজা করেও তাঁর রাগ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবেনা)।
পদার্থ ও সসীম শক্তি যোগ্যতা না থাকায় নিজে নিজে অস্তিত্বলাভ করতে পারেনা।যোগ্যতা থাকায় অসীম সর্বশক্তিমান নিজে নিজে অস্তিত্বলাভ করতে পারেন।পদার্থ ও সসীম শক্তি সীমাবদ্ধ হওয়ায় এদের সীমাবদ্ধ করতে সীমাবদ্ধ করার উপকরন বা কিছু না কিছু প্রয়োজন। শূণ্যে কিছু না থাকায় কিছু না কিছুর অভাবে শূণ্যে এদের নিজে নিজে অস্তিত্বলাভ সম্ভব নয়।পক্ষান্তরে অসীম সর্বশক্তিমান সসীম না হওয়ায় তাঁর সীমানেই। সংগত কারণে তাঁর সীমা দেওয়ার দরকার নেই। শূণ্যে কিছু নেই আর তাঁর সীমাদেওয়ার জন্য কিছুর দরকার না থাকায় তাঁর কোন কিছুর দরকার নেই। সর্বসমতার সূত্রে শূণ্যের সাথে কোনভাবেই তাঁর অসমতা তৈরী হয়না।সংগত কারণে তিনি শূণ্যের সাথে সর্বসম। অসীম শূণ্য অসীম তিনিও অসীম কাজেই অসমতার কোন সুযোগ নেই। অথচ অসীম সর্বশক্তিমান ছাড়া আর সব কিছুর সাথে অসীম শূণ্যের অসমতা স্পষ্ট বিদ্যমান।আর এটাই যোগ্যতা থাকা ও না থাকা। সংগত কারণে অসীম শূণ্য বিবর্তন হয়ে কোন কিছু না হয়ে তাতে অসীম সর্বশক্তিমানের প্রবর্তন ঘটেছে।সংগত কারণে বিবর্তনের ধারণা ভূয়া আর প্রবর্তন অনিবার্য সত্য।
অসীম শূণ্যতে পদার্থ ও সসীম শক্তি তাতে কিছু না থাকায় সীমাতে আটকে সীমাবদ্ধ হয়ে অস্তিত্বলাভ করতে পারেনি। তা’ছাড়া সীমাতে আটকাতে একজন কর্তা দরকার সেথায় সে কর্তাটা আবার কে? তাতে তো নেই কোন কিছু। অসীম সর্বশক্তিমানের সীমা নেই আটকানোর প্রয়োজন পড়েনি। সেজন্য তিনি নিজে নিজে হতে পেরেছেন।এরপর তিনি কর্তা হয়ে সীমা দিয়ে সকল পদার্থ ও সসীম শক্তি সৃষ্টি করেছেন।সংগত কারণে মহাজগতে বর্তমানে বিদ্যমান পদার্থ, সসীম শক্তি ও অসীম সর্বশক্তিমানের মধ্যে পদার্থ ও সসীম শক্তি অসীম সর্বশক্তিমানের সৃষ্টি আর অসীম সর্বশক্তিমান তিনি ছাড়া আর সব কিছুর সৃষ্টিকর্তা, এটা বিদ্যমান মহাসত্য।
উপরোক্ত ঘটনা সম্পর্কে আল্লাহ বলেছেন, কুল্লুমান আলাইহা ফান, ওয়া ইয়াবকা অজহু রাব্বিকা জুল জালালি ওয়াল ইকরাম-তাতে সব কিছু বিলিন হয় বাকী থাকে তোমার প্রতিপালকের সত্ত্বা যিনি মহিমাময় ও মহানুভব। পবিত্র কোরআন, সূরা ৫৫, আর-রাহমান, আয়াত নং ২৬ ও ২৭। তাতে মানে কোথায়? মহাশূণ্য এবং মহাজগতে।বিলিন হয় তিনি ছাড়া সব সসীম। কেন্? সসীম সীমা না পেয়ে বিলিন হয়। আবার আল্লাহ যখন তাদের সীমা ছেড়ে দিবেন বা বাঁধ কেটে দিবেন তখন তারা তাদের প্রদত্ত সীমা হারিয়ে বিলুপ্ত হবে। সীমা না থাকায় বা অসীম হওয়ায় সর্বাবস্থায় আল্লাহ বাকী বা বিদ্যমান বা অবশিষ্ট।
বিবর্তন বাদীরা যে তথ্য ও উপাত্ত সংগ্রহ করেছে তাতে এটা প্রমাণ হয়না যে বিবর্তন হয়েছে। এ ক্ষেত্রে এটাও হতে পারে যে সৃষ্টিকর্তা কাছাকাছি আকৃতি দিয়ে ভিন্ন ভিন্ন সৃষ্টি উপস্থিত করেছেন। যেহেতু শূণ্য থেকে বিবর্তন সম্ভব নয় সেহেতু কাছাকাছি আকৃতির সৃষ্টি সৃষ্টিকর্তার কাজ হিসেবে সাব্যস্ত হবে। আর বিবর্তনবাদীদের প্রাপ্ত তথ্য ও উপাত্ত এ সত্যই প্রমাণ করে যে নেচারাল সাইন্স বা প্রকৃতি বিজ্ঞান অনুযায়ী বিবর্তন নয় বরং প্রবর্তন সঠিক।
বিবর্তন সঠিক না হওয়ার আরো একটি কারণ বিবর্তীত প্রাণীটি বিলুপ্ত না হওয়া। যেমন বানর বিবর্তীত হয়ে যদি মানুষ হয়ে থাকে তবে বানর রয়ে গেল কেন? নাকি অবশিষ্ট বানর মনের ভুলে বিবর্তীত হতে পারেনি?
# শূণ্য থেকে বিবর্তন অসম্ভব কিন্তু প্রবর্তন সর্বাবস্থায় সম্ভব। সেহেতু বিবর্তন নয় প্রবর্তন সঠিক। কারণ অস্তিত্বের পূর্বাবস্থা শূণ্য। যার থেকে বিবর্তন সম্ভব নয়। সংগত কারণে বিবর্তন সঠিক নয়। তা’ছাড়া কাছাকাছি আকৃতি বিবর্তনের মাধ্যমে হওয়ার চেয়ে তা’ সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টি হওয়া অধিক সহজ বোধ্য। সংগৃহিত তথ্য উপাত্ত উভয় ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হতে পারে বিধায় এসব তথ্য- উপাত্ত শুধুমাত্র বিবর্তন বাদের প্রমাণ বহন করেনা। আর বিজ্ঞানী মানুষ হিসেবে তারও ভুল হতে পারে। সংগত কারণে বিবর্তনবাদের ক্ষেত্রে বিজ্ঞানীর বক্তব্য নিচক ভুল ধারণা হিসেবে গৃহিত হবে।
বিঃদ্রঃ ‘ইসলামের সঠিকতার অকাট্য প্রমাণ’ গ্রন্থের একটি অধ্যায় হিসেবে লেখাটি লেখা হয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:৪৬