ধর্মমুক্ত পৃথিবী গড়ার একটা প্রচেষ্টা শুরু করেছে কিছু মানুষ। কারণ ধর্মের সংঘাত। ধর্মের শাখায় প্রশাখায় উপশাখায় লতায় পাতায় ঝগড়া। প্রধান ধর্মের মধ্যে সংঘাততো আছেই। তা’ছাড়াও প্রত্যেক ধর্মের শাখায় প্রশাখায় উপশাখায় লতায় পাতায় সংঘাত রয়েছে।এর থেকে নিস্তার লাভের জন্য ধর্মমুক্তির প্রচেষ্টা। ধর্মহীনদের কথা হলো এটা মানুষের বানানো। এর কোন সঠিকতা নেই। সেহেতু এটা অহেতুক। কাজেই শান্তিতে থাকতে হলে ধর্ম ছাড়তে হবে। তারা ধর্মমুক্ত পাঁচটি রাষ্ট্রকে শান্তির মডেল হিসেবে উপস্থাপন করে।ধর্মীয় দিক থেকে ইসলামের উপর অশান্তির দায় অধীক চাপানো হয়। ইসলামের অনুসারী পাঁচটি রাষ্ট্রকে অশান্তির মডেল হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। তারমানে বুঝানো হয় সবার আগে মুসলমানদেরকে ইসলাম ছেড়ে ধর্মহীন হওয়া দরকার।এর মধ্যে কতিপয় ইসলাম ত্যাগীর মহা হাম্বি-তাম্বী শুনা যায়।তারা বলছে তারা এক মহাকাজ করেছে অন্যদেরকেও কাল বিলম্ব না করে ইসলাম ত্যাগ করা উচিত।লোকদেরকে ইসলাম ত্যাগে উৎসাহিত করার জন্য ইসলামের নবির বিরুদ্ধে কতিপয় গুরুতর অভিযোগ উপস্থাপন করা হয়।তথাপি লোকেরা ইসলাম ছাড়ছেনা, ধর্ম ছাড়ছেনা; এটা ধর্মহীনদের মহা বিরক্তির কারণ। আর এদিকে মুসলীম ও ধার্মীকেরা ধর্মহীনদের উপর মহা ক্রুদ্ধ।তারা ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত হানার অপরাধে ধর্মহীনদের শাস্তি দিতে চায়। এ ক্ষেত্রে অনেক সময় তারা বে-আইনি তরিকাও অবলম্বন করে। এভাবে অনেক খুনের ঘটনা ঘটেছে। পালা এমন হলো যে ধর্মীয় মারামারি যেমন চলছে তেমন ধর্ম উচ্ছেদ প্রচেষ্টায় নতুন মারামারির অবস্থা তৈরী হচ্ছে। তারমানে মারামারি বাড়ছে বই কমছেনা।তবে ধর্মমুক্তির আন্দোলন কিছুটা লাভবানতো হয়েছে। তাদের পাঁচটি শান্তির রাষ্ট্র। ফেস বুক, গুগল সহ জ্ঞান-বিজ্ঞানের অনেক ক্ষেত্রে তাদের অসামান্য অবদান রয়েছে। তথাপি লোকেরা ধর্ম ছাড়ছেনা। কারণ তারা ঐটাকেই সঠিক মনে করছে।
ধার্মীকদেরকে ধর্মহীনেরা বলে ধর্মান্ধ।তারা তাদের থেকে জানতে চায় তারা কেন এ ক্ষতিকর নেশার ঘোরে আটকে আছে? কোথায় কোন ঈশ্বর যার নেই কোন পাত্তা তার ভয়ে কেন তারা ধর্মের খাঁচায় আটকা পড়ে আছে? এ অন্ধকার থেকে ধর্মের লোকদের মুক্ত করতে মুক্তমনা আন্দোলন শুরু হয়েছে। বাংলা ভাষায় মুক্তমনা নামে একটা ব্লগও রয়েছে। যারা প্রতিষ্ঠাতাকে হত্যা করা হয়েছে।
ধর্মের সঠিকতার কি প্রমাণ? ধার্মীকেরা এ প্রশ্নের জবাব দেয়না আবার ধর্ম ছাড়েওনা।এখানেই ধর্মহীনদের রাগ একটু বেশী।আমাকেও এমন প্রশ্ন করা হয়েছে। আমি জবাব দিচ্ছি।ধর্মের পক্ষে আমার শক্ত অবস্থান রয়েছে।‘আল্লাহর অকাট্য প্রমাণ’ নামে আমি এর মধ্যে একটা পুস্তক রচনা করেছি। এরপর আমাকে জানানো হলো সমস্যা আল্লাহকে নিয়ে নয়, সমস্যা হলো ধর্মনিয়ে।তারা বলছে আল্লাহ কোন ধর্ম তৈরী করেননি। ধর্মগুলো তৈরী করেছে মানুষ।এখন আমি ‘ইসলামের সঠিকতার অকাট্য প্রমাণ’ নামে আরেকটা পুস্তক রচনা করছি।এটাতেও অনেকের আপত্তি। তারা বলছে ইসলামকে সঠিক প্রমাণ করা হলে অন্যদেরকে বেঠিক প্রমাণ করা হয়। তাই বলে কি আমি সঠিককে সঠিক প্রমাণ করবনা?
তারা বলছে ইসলামে অশান্তি। আমি বলছি তা’এখন। তবে মরার পর ইসলামে অধীক লাভ।তারা বলছে মরার আর পর নেই। মৃত্যুর মাধ্যমেই মানব জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটবে। আমি বলছি এটা সঠিক নয়। মানুষের পরিবর্তন আছে পরিসমাপ্তি নেই।এ কথাই আমি বিভিন্নভাবে বুঝানোর চেষ্টা করছি। তারা বলছে এটা বুঝানোর দরকার নেই। আমি বললাম, তাহলে তোমাদের কথা সঠিক সেটা আমাকে বুঝাও। কারণ এক বেঠিক ছেড়ে আরেক বেঠিক গ্রহণ করায় কোন যুক্তি নেই।
মোহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে আমার কথা হলো তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলেও তাঁর দাবী কিন্তু বেঠিক নয়। তো ব্যক্তির প্রতি অভিযোগের কারণে আমি তাঁর সঠিক দাবী কেন মানব না? একজন বলছে ও দিকে যেয়োনা ডাকাতে সব কেড়ে নিবে। আরেক জন বলছে ওর কথা শুনবেনা ও লোক ভাল না। এখন সে লোক ভাল না হলে কি তার কথা অমান্য করে আমি ওদিকে গেলে ডাকাত আমাকে ছেড়ে দেবে? এখানেই ধর্মহীনদের যুক্তি মার খায়। কারণ মোহাম্মদের (সা.) ভাল না হওয়ার সাথে তাঁকে নবি না মানার কোন সংগত কারণ নেই। বরং তাঁকে নবি মানায় লাভ দেখলে লোকেরা তাঁকে নবি মানবেই। তাঁকে নবি মানা থেকে লোকদেরকে তাঁর কূৎসা দিয়ে বিরত রাখা যাবেনা।এখানে ধর্মহীনদের সাফল্য আটকে যায়।
যদি মৃত্যুর পরের জীবনকে বেঠিক প্রমাণ করতে না পারে তবে মৃত্যুর আগের জীবনের সাফল্য দিয়ে পরকাল বিশ্বাসীদেরকে ধর্মহীনতার পথে ফিরানো যাবেনা।আর এভাবেই আমি আমার প্রতিপক্ষকে তার করনীয় জানাতে চাই। আর সাকুল্যে আমি মানুষের মঙ্গল চাই।
# সংবাদ বাহকের ভাল-মন্দ হওয়া বিবেচ্য বিষয় নয়। বিবেচ্য বিষয় হলো সংবাদের সঠিকতা। আর এক্ষেত্রেই মোহাম্মদের (সাঃ) কূৎসা অহেতুক কাজ বলে স্বীকৃত হয়।
বিঃদ্রঃ ‘ইসলামের সঠিকতার অকাট্য প্রমাণ’ গ্রন্থের একটি অধ্যায় হিসেবে লেখাটি লেখা হয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ৭:৫১