কিছু রীতি ও আচারকে মানুষ তার মান্যতার জন্য নির্ধারন করেছে। এর কোনটিকে বলে ধর্ম, আর কোনটিকে বলে মত।
ধর্মের ক্ষেত্রে ধরা-বাঁধা রীতি-আচার থাকে, মত এর বিরোধী। মতের কথা হলো মানুষের জন্য আইন বানাবে মানুষ। সময়ের প্রেক্ষাপটে সে আইন মানুষ আবার প্রয়োজন মত বদলাবে।কিন্তু কোন চিরকালিন রীতি-আচারে মানুষকে বেঁধে ফেলা যাবেনা।মানুষের মন যখন যা চাইবে তখন সে তাই করবে। ইচ্ছে হলে মানুষ পোশাক পরবে, ইচ্ছে হলে মানুষ পোশাক পরবে না।পোশাক না পরার কারণে কোন মানুষকে জ্বালাতন বা অপমান করা যাবেনা।মানষের জন্য ধরাবাঁধা নিয়ম নয় বরং লাগবে আইন। সে আইন মানুষ তৈরী করবে। মনুষ্য ফোরামে আইন পাশ হবে।সে আইন মানুষ মেনে চলবে। সে আইন কোন গুরু সন্যাসী পাদরী পুরোহীত বা হুজুর ঠিক করবেনা। কোন গুরু সন্যাসী পাদরী পুরোহীত বা হুজুরের আইন চলবে না চলবে না।ঈশ্বরের দোহাই দিয়ে মানুষের উপর কোন নিয়ম চাপিয়ে দেওয়া যাবেনা।ঈশ্বর-মিশ্বর বলতে কিছু নেই। ঈশ্বর মানুষের মনের কল্পনা।ঈশ্বর যে মানুষের মনের কল্পনা যুক্তি ও বিজ্ঞান দিয়ে সেটা প্রমাণের দূর্নিবার প্রচেষ্টা চলছে।যদিও ঈশ্বরবাদীরা এসব যুক্তি ও বিজ্ঞানকে থোড়াই কেয়ার করে। মতের লোকেরা আবার সে জন্য রাগ হয়ে এদেরকে ধর্মান্ধ বলে গালি দেয়।
কেমন কি রকম জীবন যাপন করবে এক্ষেত্রে একেক এলাকার লোকের মত একেক রকম হয়ে থাকে। সে জন্য মত হাজার রকমের হয়ে থাকে। যেমন কোন এলাকার লোকের মত পোশাক পরা। কোন এলাকার লোকের মত পোশাক না পরা। কোন এলাকার লোকের মত যখন ইচ্ছা পোশাক পরা, যখন ইচ্ছা পোশাক না পরা। কোন এলাকার লোকের মত বেশী পোশাক পরা। কোন এলাকার লোকের মত সামান্য পোশাক পরা।তারমানে মতের ক্ষেত্রে কোন এলাকার বসবাসরত লোকদের ইচ্ছাটাই শেষ কথা। সেখানে তাদের ইচ্ছাটাই নিয়ম।কারো চাপিয়ে দেওয়া নিয়ম তারা কিছুতেই মানতে রাজি নয়।যারা মানুষের উপর কোন রীতি বা আচার চাপিয়ে দিতে আসে তারা তাদের উপর প্রচন্ড নাখোশ। যারা ধর্ম মানে তাদেরকে এরা মিষ্টিকথায় ধর্মান্ধ বলে। ধর্মগুরুদের মধ্যে এরা মোহাম্মদকে (সা.)সবচেয়ে বেশী আক্রমন করে কথা বলে। ধর্মের মধ্যে ইসলাম এদের আক্রমনের সবচেয়ে বড় শিকার।
ধর্ম ধরা-বাঁধা রীতি আচার মান্য করে। সবার রীতি-আচার এক নয় সে জন্য ধর্ম সংখ্যাও হাজার হাজার। মতের সংখ্যাও হাজার হাজার। সব মিলিয়ে ধর্ম ও মত রয়েছে চার হাজারের উপর।ধর্মকে সাধারণত ঈশ্বরের নামে চালানো হয়। কোন কোন ধর্মে পরকাল আছে। আবার কোন কোন ধর্মে পরকাল নেই।তারমানে কোন কোন ধর্মের লোক ইহকালে ভাল থাকার জন্য ধর্ম মানে, যেমন বোদ্ধ ধর্ম।আর কেউ কোউ ইহকাল ও পরকালে ভাল থাকার জন্য ধর্ম মানে। যেমন ইসলাম, খ্রিস্টান, ইহুদী ও হিন্দু ধর্ম।
ধর্ম ও মতের মধ্যে একমত না থাকায় ঝগড়া-ঝামেলার শেষ নেই। মিল মিশের কথা হলো যে যার ধর্ম ও মত নিয়ে থাক। কেউ কারো অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার মত কথা না বলুক। কিন্তু মতের লোকেরা নিজেদেরকে দমিয়ে রাখতে পারেনা। তারা মুখ ফসকে ধর্ম বিরোধী কথা বলেই ফেলে। আর এর জন্য খুন খারাবির ঘটনাও ঘটে।
প্রত্যেকে নিজ ধর্ম ও মতকে সঠিক বলে। অপরের ধর্ম ও মতকে বেঠিক বলে। এনিয়ে ঝামেলা তৈরী হয়। আমার মতে নিজের ধর্ম ও মতকে সঠিক বললেও অপরের ধর্ম ও মতকে বেঠিক বলার দরকার নেই। আর নিজের ধর্ম ও মতকে সঠিক বললেও সেটা কি ভাবে সঠিক সেটা বলা দরকার।নতুবা সেটা যে সঠিক সেটা লোকেরা বুঝবে কেমন করে?
মানুষ সঠিকতাকে পছন্দ করে। সেজন্য সঠিকতার আলোচনা চলতে পারে। তবে এর জন্য মারামারি কাটাকাটি চলতে পারেনা।সবাই মিলে শান্তিতে থাকার প্রচেষ্টা প্রতিটি মানুষের একান্ত কর্তব্য।এমত না মেনে যদি কেউ গুতাগুতি করতে চায় তবে সবাই মিলে তাদেরকে থামাতে হবে।নতুবা তা’ গুরুতর অশান্তির কারণ হতে পারে।
বিঃদ্রঃ ‘ইসলামের সঠিকতার অকাট্য প্রমাণ’ গ্রন্থের একটি অধ্যায় হিসেবে লেখাটি লেখা হয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:০৯