সূরাঃ ৫৭ হাদীদ, ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩।তিনি প্রথম, তিনি শেষ, তিনি প্রকাশ্য, তিনি গোপন এবং তিনি সব কিছু জানেন।
সূরাঃ ১১২ ইখলাস, ১ নং আয়াতের অনুবাদ-
১। বল, তিনি আল্লাহ, এক-অদ্বিতীয়।
* আল্লাহ প্রথম।তিনি এক। প্রথম ও একের পূর্বে শূন্য। সেজন্য আল্লাহর পূর্বে কিছুই নাই।সুতরাং তাঁর পূর্বে কোন সৃষ্টিকর্তা না থাকায় তিনি সৃষ্টি নন, বরং তিনি উদ্ভব।তাঁর পূর্বে কিছুই না থাকায় কারো সহায়তা ছাড়াই তাঁর উদ্ভব ঘটেছে। অন্য আর কোন কিছুর এমন উদ্ভব ঘটেনি তারা সসীম হওয়ার কারণে। কারণ সসীমের পূর্বে এর সীমা দাতা থাকতে হয়। সীমা দাতা না থাকায় উদ্ভবে আল্লাহ অসীম হয়ে গেলেন। আল্লাহ ছাড়[ আর কারো উদ্ভব ঘটেনি কেন? কারণ সীমা দাতা ছাড়া সকল অসীম উদ্ভব একত্রিত হয়ে এক আল্লাহর উদ্ভব ঘটেছে। কারণ অসীমকে সীমা দিয়ে আলাদা করা যা্য় না।কারণ সীমা দিলে অসীম আর অসীম থাখে না, বরং সসীম হয়ে যায়।
শূন্যের প্রকৃতি এটা পূর্ণ হতে চায়। শূন্য পূর্ণ হতে ক্রিয়া লাগে। ক্রিয়ার থাকে প্রতিক্রিয়া। ক্রিয়া প্রতিক্রিয়ায় উদ্ভব ঘটে শক্তির।এভাবে সকল অসীম শক্তির উদ্ভব ঘটে একত্রিত হয়ে অসীম সর্বশক্তিমানের উদ্ভব ঘটে। তাঁর মধ্যে অসীম জ্ঞান শক্তি থাকায় তিনি সকল সসীমের সীমা জানেন। তাঁর জ্ঞান অনুযায়ী তিনি সকল সসীমের সীমা দিয়ে হও বললে সব হয়ে গেছে। এভাবে সব কিছু সৃষ্টি করে তিনি সবার সৃষ্টিকর্তা হলেন।
অসীম বিধায় আল্লাহর আকার নাই। কারণ আকার থাকে সসীমের। যারা আল্লাহর আকার সাব্যস্ত করে তারা আল্লাহর কুফুরী করে। আল্লাহ আকার ধারণ করে আমাদের সাথে দেখা দিবেন। আকার থাকা আর আকার ধারণ করা এক কথা নয়। আল্লাহ নিরাকার বিধায় তাঁর অঙ্গ সমূহ নিরাকার। সুতরাং অঙ্গের দোহাই দিয়ে আল্লাহর আকার সাব্যস্ত করা যাবে না।বান্দার সাথে দেখা দেওয়ার পর আল্লাহ আবার আকার ছেড়ে নিরাকারে অবস্থান করবেন। কারণ সেটাই তাঁর স্থায়ী অবস্থা।
সূরাঃ ২ বাকারা, ২৫৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৫৫। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই।তিনি চিরঞ্জীব চির বিদ্যমাণ।তাঁকে তন্দ্রা অথবা নিদ্রা স্পর্শ করে না।আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সমস্তই তাঁর।কে সে যে তাঁর অনুমতি ছাড়া তাঁর নিকট সুপারিশ করবে? তাঁর সামনে পিছনে যা কিছু আছে তা’ তিনি জানেন।তাঁর ইচ্ছা ছাড়া তাঁর জ্ঞানের কিছুই কেউ আয়ত্ব করতে পারে না।তাঁর ‘কুরসী’ আকাশ ও পৃথিবী জুড়ে বিস্তৃত।এ দু’টির হেফাজত তাঁকে ক্লান্ত করে না।আর তিনি পরম উচ্চ-মহিয়ান।
* আল্লাহর পূর্বে শূন্য থাকায় তাঁর সীমা দাতা ছিলো না। সেজন্য তিনি অসীম হয়েছেন। অসীম ফুরিয়ে যায় না বিধায় আল্লাহ চির বিদ্যমাণ। আর তাঁর সত্তায় অসীম প্রাণ শক্তি থাকায় তিনি চিরঞ্জিব। সমগ্র জগৎ জুড়ে আল্লাহর কুরসী বিদ্যমাণ। কুরসী মানে পাদানী।তারমাণে আল্লাহর পা সর্বত্র বিরাজমাণ। সুতরাং যেখানেই আল্লাহকে সিজদা করা হয় সেখানেই আল্লাহর পা সেই সিজদা গ্রহণ করে। আল্লাহর আরশ সমগ্র জগতের উপরে।সেথায় আল্লাহ অধিষ্ঠিত। তারমানে পা ছাড়া আল্লাহর সত্ত্বার অবশিষ্টাংশ সমগ্র জগতের উপরে।
সূরাঃ ৫৫ রাহমান, ২৬ নং ও ২৭ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৬। তাতে সব বিলিন হয়
২৭। আর বাকী থাকে তোমার প্রতিপালকের সত্তা, যিনি মহিমাময়, মহানুভব।
* আল্লাহ দেখেছেন সবকিছু বিলিন হয়ে তিনি বাকী থাকছেন। তাঁর বাকী থাকার কারণ তিনি অসীম। আর অসীম ফুরিয়ে যায় না বলে তিনি বাকী থাকেন। তাঁর অসীম হওয়ার কারণ কেউ তাঁর সীমা দেয়নি।অন্যরা বিলিন হওয়ার কারণ তারা সসীম।সসীমের সীমা কেটে দিলেই এটা বিলিন হয়ে যায়। আল্লাহ সসীমের সীমা দিতেও জানেন এবং তিসি সীমের সীমা কেটেও দিতে জানেন। সেজন্য তাঁর থেকে কেউ আত্ম রক্ষা করতে পারে না বিধায় তিনি ছাড়া আর সব কিছু বিলিন হয়ে তিনি বাকী থাকেন। আল্লাহ অসীম বলে তাঁর সীমা নাই। সুতরাং তাঁর কাটার মত কোন সীমা নাই। সুতরাং তাঁকে বিলিন করা সম্ভব নয়। সেজন্য তিনি বিলিন না হয়ে বাকী থাকেন। সেজন্য তিনি চিরবিদ্যমান বা আল কাইউম।
সূরাঃ ২ বাকারা ১১৭ নং আয়াতের অনুবাদ-
১১৭। আকাশ মন্ডলী ও পৃথিবীর দৃষ্টান্ত বিহীন নতুন স্রষ্টা। আর যখন তিনি কোন কিছু করতে সিদ্ধান্ত করেন তখন উহার জন্য শুধু বলেন ‘হও’ আর উহা হয়ে যায়।
* সসীমে সীমা না দিলে সসীম বিলিন হয়। সসীমে সীমা দিয়ে ‘হও’ বললে সসীম হয়ে যায়। আল্লাহ এ কাজটি করতে জানেন। সেজন্য তিনি সৃষ্টিকর্তা হলেন।অন্য কেউ এটা জানে না বিধায় তারা হয়েছে তৈরী কারক। সৃষ্টিকর্তা সৃষ্টি করেন এবং তৈরী কারক রূপান্তর ঘটায়।
সূরাঃ ২১ আম্বিয়া, ৩০ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩০। যারা কুফুরী করে তারা কি ভেবে দেখে না যে, আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী মিশেছিল ওতপ্রতভাবে। অতঃপর আমি উভয়কে পৃথক করে দিয়েছি। আর প্রাণবান সব কিছু সৃষ্টি করেছি পানি হতে। তথাপি কি তারা ঈমান আনবে না?
* আল্লাহ আকাশ ও পৃথিবীকে প্রথমে একত্রিত অবস্থায় সৃষ্ট করেছেন, তারপর এগুলোকে পৃথক করেছেন। তারপর তিনি পানি থেকে প্রাণবান সব কিছু সৃষ্টি করেছেন।
সূরাঃ ২০ তা-হা, ৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫। দয়াময় আরশের উপরে সমাসীন আছেন।
সূরাঃ ৩৯ যুমার, ৬৭ নং আয়াতের অনুবাদ-
৬৭। তারা আল্লাহর যথাযথ সম্মান করে না। কিয়ামতের দিন সমস্ত পৃথিবী থাকবে তাঁর হাতের মুঠোয় এবং আকাশ মন্ডলী থাকবে ভাঁজ করা অবস্থায় তাঁর ডান হাতে। পবিত্র ও মহান তিনি, তারা যাকে শরীক করে তিনি তার উর্ধ্বে।
* মহাজগতের উপর আল্লাহর আরশ। শেষ বিচারে আরশের সম্মুখে বিচারের জন্য আল্লাহর সৃষ্টিকুলকে হাজির করা হবে। তখন আকাশ ও জমিন আল্লাহর হাতে থাকবে। তাঁর কাজে তাঁর কোন অংশিদার নেই।
আল্লাহ বিশ্বাস জান্নাত লাভের প্রধান শর্ত। এরপর জান্নাত পেতে আল্লাহর ইবাদত লাগে।আল্লাহ বিশ্বাস ছাড়া তাঁর ইবাদত গৃহিত হয় না। সুতরাং জান্নাত পেতে আগে ঠিকঠাক আল্লাহ বিশ্বাস, তারপর তাঁর ঠিকঠাক ইবাদত লাগবে। কারণ বেঠিক কোন কিছুই আল্লাহ কর্তৃক গৃহিত হয় না।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই মার্চ, ২০২৫ রাত ৯:০৮