আমি ছিলাম।
ভীষণ রোদ তাঁতা যেকোনো দুপুরে
ক্লাস শেষে একগাদা অযথা কথা
মাথায় জমিয়ে
তুমি যখন বাস ধরবে বলে
ক্লান্ত পা ফেলে ফেলে এগোও,
তোমার ঠিক পেছনেই
বাসের শেষ যায়গা না পাওয়া মানুষটা হয়ে
আমিই পাহারা দিয়েছি তোমাকে !
পাঁচ টাকার খুচরো হয় নি বলে
রিকশাচালক তোমাকে বেশ দু'কথা শুনিয়ে দিচ্ছিলো ।
তখন "ব্রেকিং নিউজ"বেচতে চলা যে ছেলেটা
দু'টো কয়েন বাড়িয়ে দিয়েছিলো
সরল হাসির সাথে,
তুমি ধরতে পারো নি,
হাসি টুকু আসলে আমারই ছিলো !
" দুটো পরীক্ষার মাঝে একেবারেই সময় রাখেনি এঁরা।
এইভাবে মানুষ পড়তে পারে !! "
চোখে-কন্ঠে উষ্মা নিয়ে
পায়চারি করতে করতে
বিরক্ত নাকের ডগায় বই গুঁজে রেখেছিলে যখন ;
রাজপথে অচেনা কোন বালকের অসতর্ক শিষ
তোমার ভ্রূকুটি মুছে দিয়েছিলো ।
সেই শিষটা আমিই !
মধ্যরাতের প্রহর জানান দিলে
মুঠোফোনে তুমি
আর "তোমার মানুষটা"
মেতে যাও " আছে-আছে, নেই-নেই " আলাপে ।
তোমাদের মোহময় সময়ে বাঁধ পড়ে মাঝে সাঝে !
প্রায় রাতেই, তোমাকে মাঝ পথে চমকে দেয়
অপরিচিত আধফোটা হাহাকার ।
একদিনও টের পাও নি,
তোমাদের অর্থহীন অফুরন্ত আলাপে আড়ি পাতে,
জানালায় দাঁড়িয়ে থাকে একটা বিষণ্ণ ছায়া ।
বুঝে উঠবেও না, আমি বুঝতে দেবোও না,
"তোমার মানুষটা" না হবার সেই হাহাকার,
আমিই ছিলাম !