লেখার জন্য আমার একটা আলাদা খাতা আছে। সেই খাতার একটা পৃষ্ঠায় নীল কালি দিয়ে প্রশ্নবোধক চিন্হ আঁকা। প্রশ্নবোধক চিন্হটার নিচে গুটি গুটি অক্ষরে লেখা- ১৩ নভেম্বর তারিখটা কেন বিখ্যাত? পরের পৃষ্ঠাতেই উত্তরটা দেওয়া আছে। ১৩ নভেম্বর হুমায়ুন আহমেদের জন্মদিন। ১৯৪৮ সালে নেত্রকোনা জেলায় তার জন্ম। হুমায়ুন আহমেদের নামের আগে অনেকেই বিভিন্ন বিশেষন ব্যবহার করেন। আমি সেসব বিশেষন এড়িয়ে গেলাম। আজ আমি লিখলাম শুধুই হুমায়ুন আহমেদ।
হিমুস্রষ্টার নামের সাথে কোনো বিশেষন যোগ করার প্রোয়োজনীয়তা বোধ করছি না। সে বাংলা সাহিত্যের প্রবাদ পুরুষ। নন্দিত নরকে কিংবা শঙ্খনীল কারাগারে জোত্স্না ও জননীর গল্প যতদিন থাকবে, ততদিন রাতের দ্বিতীয় প্রহরে কিংবা মধ্যন্হে হিমু হাটবে। রাতের তারায়, চাঁদের জোত্স্নায়, সমুদ্রের ঢেউয়ে, বর্ষার বৃষ্টিতে বেঁচে থাকবে পাঠকের একান্ত নিজস্ব প্রিয় হুমায়ুন আহমেদ।
১৯৭১ সালে পাকিস্তানী সেনাবাহীনি আটক ও নির্জাতন শেষে গুলি চালালে অলৌকিকভাবে বেঁচে যাওয়া হুমায়ুন আহমেদ বাংলা সাহিত্যে এনে দিয়েছে এক অপার্থিব মহিমা। সেইদিনের পরে তিনি বেঁচে ছিলেন অনেক দিন। বাংলা সাহিত্যের প্রতিটি লাইনে এনেছেন ভীন্নতা। সাহিত্যের প্রতিটি কনা নিয়ে তিনি খেলেছেন। লেখায় এনেছেন নতুন মোহ। যা পাঠকের মনে এনেছে মুগ্ধতা। পাঠককে চিনিয়েছেন সু-সাহিত্য। যা তাকে নিয়ে গেছে এক অনন্য উচ্চতায়। অতি আধুনিক উগ্র তরুন প্রজন্মকে সহিতের গুনে সাহিত্যের মাঝে টেনে এনেছেন। তরুন প্রজন্মের কাছে তার তুঙ্গস্পর্শী জনপ্রিয়তা। কেউ পারেননি। পেরেছেন শুধুই হুমায়ুন অহমেদ।
আজ এই মহান সাহিত্যিকের জন্মদিন। তার জন্য শুভেচ্ছা। সাহিত্যের জন্য শুভেচ্ছা। পাঠকদের জন্য শুভেচ্ছা। আমি জানি- একমাত্র পাঠক হৃদয়েই তিনি বেঁচে আছেন, থাকবেন।