বাংলাদেশী চলচিত্র নিয়ে লিখতে গিয়ে আমি অবাক হয়ে একটা ব্যাপার লক্ষ্য করেছি- আগে আমাদের দেশে যথেষ্ট ভাল ভাল মুভি হত। আমাদের প্রযুক্তি ততটা উন্নত ছিল না, কিন্তু আমাদের অভিনেতা-অভিনেত্রী আর পরিচালকরা যথেষ্ট প্রতিভাবান ছিলেন। তারা তাদের স্বীয় দক্ষতা দিয়ে প্রযুক্তিগত অপ্রতুলতাটুকু ঢেকে দিয়েছিলেন। দিন দিন আমাদের প্রযুক্তি উন্নত হয়েছে আর মুভির মান পড়েছে। তারপরও আমাদের কিছু মাস্টারপিস মুভি আছে যেগুলো বিশ্বের যেকোন দেশের চলচিত্রের সাথে টেক্কা দিতে সক্ষম। ব্রিটিশ ফিল্ম ইন্সটিটিউট, উইকিপিডিয়া, কয়েকটি বাংলা ব্লগ এবং ইন্টারনেট মুভি ডাটাবেজ ঘেঁটে সে মুভিগুলোর কথা চিরকুটের পাঠকদের জানাতেই আমার এই ক্ষুদ্র প্রয়াস।
১। জীবন থেকে নেয়াঃ জহির রায়হানের প্রযোজনা ও পরিচালনায় ১৯৭০ সালের ১০ই এপ্রিল জীবন থেকে নেয়া চলচিত্রটি মুক্তি পেয়েছিল। ভাষা আন্দোলন, তৎকালীন দেশের অশান্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের গল্প চিত্রিত হয়েছে এই ছবিতে। এই ছবিতেই প্রথম “আমার সোনার বাংলা” গানটি চিত্রিত হয়েছিল যা পরবর্তীতে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। ছবিটির সঙ্গীত পরিচালক ছিলেন খান আতাউর রহমান। এতে অভিনয় করেছেন রাজ্জাক, সুচন্দা, রোজী সামাদ, বেবি জামান, রওশন জামিল, আনোয়ার হোসেন সহ আরো অনেকে। জহির রায়হান নির্মিত সর্বশেষ চলচিত্র ছিল এটি।
২। ওরা ১১ জনঃ চাষী নজরুল ইসলাম পরিচালিত ১৯৭২ সালে নির্মিত এই ছবিটিকে এখনো পর্যন্ত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নির্মিত সেরা ছবি বলে বিবেচনা করা হয়। রাজ্জাক, শাবানা, নূতন, হাসান ইমাম, আলতাফ, মুরাদ, নান্টু বেবী সামাদ, খলিলউল্লাহ খানসহ আরো অনেক নামকরা শিল্পী এতে অভিনয় করেন। কথিত আছে এই ছবির শ্যুটিং এর সময় মুক্তিযুদ্ধে ব্যবহৃত সত্যিকারের বন্দুক ব্যবহার করা হয়েছিল। ছবিটি ১৯৭২ সালে জাতীয় চলচিত্র পুরষ্কার লাভ করে।
৩। ধীরে বহে মেঘনাঃ মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিতে নির্মিত ‘ধীরে বহে মেঘনা’ ছবিটি রচনা ও পরিচালনা করেন প্রখ্যাত চলচিত্রকার আলমগীর কবীর। এটি ছিল তার পরিচালিত প্রথম ছবি, মুক্তি পায় ১৯৭৩ সালে। প্রথম ছবিতেই তিনি জাত চিনিয়েছিলেন। ছবিটিতে অভিনয় করেছেন বুলবুল আহমেদ, ববিতা, আনোয়ার হোসেন সহ আরো অনেকে।
৪। তিতাস একটি নদীর নামঃ অদ্বৈত মল্লবর্মণের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ ছবিটি পরিচালনা করেছেন পশ্চিম বাংলার নামকরা পরিচালক ঋত্বিক ঘটক। বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ প্রযোজনায় ১৯৭৩ সালে নির্মিত এই ছবিটিকে ব্রিটিশ ফিল্ম ইন্সটিটিউট সর্বকালের সেরা ১০ বাংলা ছবির তালিকায় স্থান দিয়েছে। এতে অভিনয় করেছেন গোলাম মোস্তফা, কবরী, রোজী সামাদ, প্রবীর মিত্র সহ অনেক বিখ্যাত শিল্পী।
৫। সীমানা পেরিয়েঃ এই ছবির কাহিনীটি আপনার পরিচিত মনে হবে। জলোচ্ছ্বাসের কবলে পড়ে দুজন মানব মানবী ভাসতে ভাসতে এক নির্জন দ্বীপে এসে পড়ে। তারপর জন-মানবহীন সে দ্বীপে তাদের বেঁচে থাকার সংগ্রাম শুরু হয়। বহুদিন পর নৌবাহিনীর একটি টহল জাহাজ তাদের দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে মূল ভূ-খন্ডে নিয়ে আসে। সাথে কিছু ফ্যামিলি ড্রামা ছবিটিকে করেছে অনন্য। কি, কাহিনীটি পরিচিত না ? একই রকম কাহিনী নিয়ে পৃথীবীর নানা দেশে আরো অনেক ছবি তৈরি হয়েছে। ১৯৭৩ সালে নির্মিত ছবিটির পরিচালক ছিলেন আলমগীর কবীর আর এতে অভিনয় করেছেন বুলবুল আহমেদ, জয়শ্রী কবীর, তনুজা ও গোলাম মোস্তফা। গুরত্বপূর্ণ একটি চরিত্রে অতিথি শিল্পী হিসেবে আরো অভিনয় করেছেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী ভূপেন হাজারিকা।
৬। রূপালী সৈকতেঃ ১৯৭৯ সালে মুক্তি পাওয়া এই ছবিটিকে পরিচালক আলমগীর কবীরের জীবনের সেরা কাজ বলে গণ্য করা হয়। কথিত আছে- এই ছবিটি তিনি নিজের জীবনে ঘটে যাওয়া বাস্তব ঘটনা অবলম্বনে তৈরি করেছেন। এতে অভিনয় করেছেন- বুলবুল আহমেদ, জয়শ্রী কবীর, আনোয়ার হোসেন, শর্মিলী আহমেদ, অঞ্জনা রহমান সহ আরো অনেকে। ব্রিটিশ ফিল্ম ইন্সটিটিউট বাংলাদেশের স্ররব কালের সেরা ১০ চলচিত্রের মাঝে এটিকেও স্থান দিয়েছে।
৭। সূর্য দীঘল বাড়ীঃ আবু ইসহাকের উপন্যাস অবলম্বনে ‘সূর্য দীঘল বাড়ি’ চলচিত্রটি যৌথভাবে পরিচালনা করেছেন মসিহউদ্দিন শাকের ও শেখ নিয়ামত আলী। ১৯৭৯ সালে নির্মিত ছবিটিতে ডলি আনোয়ার, জহিরুল হক, রওশন জামিল, কেরামত মাওলা, এ টি এম শামসুজ্জামান সহ আরো অনেকেই অভিনয় করেন। ১৯৮০ সালে জার্মানির ‘ম্যানহেইম চলচিত্র উৎসবে’ অংশ নিয়ে ছবিটি ৩টি ক্যাটাগরিতে পুরষ্কৃত হয়। এছাড়া পর্তূগালের ‘ফিগুয়েরা চলচিত্র উৎসব’ থেকেও একটি পুরষ্কার ছিনিয়ে আনে ছবিটি। বাংলাদেশের প্রথম সরকারি অনুদানে নির্মিত ছবিটি জাতীয় চলচিত্র পুরষ্কারও লাভ করে।
৮। বেদের মেয়ে জ্যোৎসাঃ ঐতিহাসিক কাহিনী নির্ভর ‘বেদের মেয়ে জ্যোৎসা’ বাংলাদেশের চলচিত্র ইতিহাসের অন্যতম ব্যবসাসফল ছবি। ১৯৮৯ সালে তৎকালীন ২০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ছবিটি ১.৫ কোটি টাকা আয় করে। তোজাম্মেল হক বকুল পরিচালিত এই ছবিটিতে ইলিয়াস কাঞ্চন, অঞ্জু, ফারজানা ববি, নাসির খান, প্রবীর মিত্র, রওশন জামিল, দিলদার সহ আরো অনেকেই অভিনয় করেন।
ব্রিটিশ ফিল্ম ইন্সটিটিউটের বিচারে বাংলাদেশের সেরা ১০ চলচিত্রে স্থান পাওয়া এই ছবিটিকে পরে ভারতে রিমেক করা হয়।
৯। পদ্মা নদীর মাঝিঃ মানিক বন্দোপাধ্যায়ের উপন্যাস অবলম্বনে বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ প্রযোজনায় ‘পদ্মা নদীর মাঝি’ ছবিটি পরিচালনা করেন প্রখ্যাত ভারতীয় চলচিত্র পরিচালক গৌতম ঘোষ। এতে অভিনয় করেছেন বাংলাদেশের রাইসুল ইসলাম আসাদ, চম্পা ও হুমায়ূন ফরিদী আর ভারতের রবি ঘোষ এবং রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। ছবিটি বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দেশেই জাতীয় চলচিত্র পুরষ্কার লাভ করে।
১০। আগুনের পরশমনিঃ হুমায়ূন আহমদের উপন্যাস অবলম্বনে এবং তারই পরিচালনায় ১১৯৪ সালে নির্মিত ‘আগুনের পরশমনি’ বাংলাদেশের অন্যতম সেরা মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক চলচিত্র। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম গেরিলা সংগঠন ‘ক্রাক প্লাটুনের’ একটি সত্য অভিযান অবলম্বনে ছবিটি তৈরি করা হয়েছে। ছবিটিতে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেন আসাদুজ্জামান নূর, বিপাশা হায়ান, আবুল হায়াত এবং ডলি জহুর। সরকারি অনুদানে নির্মিত এই ছবিটি ১৯৯৪ সালে ৮টি ক্যাটাগরিতে জাতীয় পুরষ্কার জিতে নেয়। IMDb তে মুভিটির রেটিং ৮.৭/১০ এবং রটেন টম্যাটোসে ৬২% দর্শক ছবিটি দেখার ইচ্ছা পোষণ করেন।
১১। দীপু নাম্বার টুঃ মুহাম্মদ জাফর ইকবালের উপন্যাস অবলম্বনে শিশুতোষ এই চলচিত্রটি পরিচালনা মোরশেদুল ইসলাম। ইমপ্রেস টেলিফিল্মের প্রযোজনায় ছবিটিতে অভিনয় করেন বুলবুল আহমদ, ববিতা, আবুল খায়ের এবং গোলাম মোস্তফা। দীপুর বাবার বদলীর চাকরি। ছোটবেলায় তার বাবা-মার ডিভোর্স হয়ে যাওয়ায় সে তার বাবার সাথে থাকে, তার সাথেই দেশের নানান প্রান্তে ঘুরে বেড়ায়। এজন্য তার এক বছর কাটে এক স্কুলে। সম্প্রীতি সে যে স্কুলে এসেছে সেখানে আগেই দীপু নামের একজন থাকায় তার নাম হল দীপু নাম্বার টু ! দীপু এবং তার বন্ধুদের নিয়েই এই ছবি। দীপু চরিত্রে অরুণ আর তারেক চরিত্রে শুভাশীষের অভিনয় এদেশের শিশু-কিশোররা অনেক দিন মনে রাখবে। এখনো দেশে নির্মিত শিশুতোষ চলচিত্রের কথা আসলে ১৯৯৬ সালের ডিসেম্বরে মুক্তি পাওয়া ১৫৩ মিনিটের এই ছবিটির কথাই সবার আগে আসে।
১২। শ্রাবণ মেঘের দিনঃ হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস অবলম্বনে এই ছবিটি পরিচালনা করেন হুমায়ূন স্যার নিজেই। জাহিদ হাসান, শাওন, মাহফূজ আহমেদ, আনোয়ারা, গোলাম মোস্তফা এবং মুক্তি এই ছবিতে অন্যবদ্য অভিনয় করেন। এই ছবিতে ব্যবহৃত গানগুলো ব্যাপক জনপ্রিয় হয়েছিল। একটা ছিল সোনার কন্যা, শুয়াচান পাখি, পূবালী বাতাসে, আমার ভাঙ্গা ঘরের মত গানগুলোর জৌলুস এখনো কিছুটা কমেনি বৈকি। নুহাশ চলচিত্র প্রযোজিত এই ছবিটি ১৯৯৯ সালে মুক্তি পায়।
১৩। চিত্রা নদীর পাড়েঃ ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর পূর্ব বাংলার হিন্দু ও মুসলমানদের জীবনে এর যে বিরূপ প্রভাব পড়েছিল, তাকে উপজীব্য করেই এই ছবির কাহিনী আবর্তীত হয়েছে। পরিচালক তানভীর মোকাম্মেলের রচনা ও পরিচালনায় ১১০ মিনিট দৈর্ঘের এই ছবিটি ১৯৯৮ সালে মুক্তি পায়। আফসানা মিমি, তৌকির আহমেদ, মমতাজউদ্দিন আহমদ, রওশন জামিল প্রমুখ এতে অভিনয় করেছেন। ছবিটি একাধিক বিভাগে জাতীয় পুরস্কার পায়।
১৪। লাল সালুঃ সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহর উপন্যাস অবলম্বনে লালসালু ছায়াছবিটি পরিচালনা করেন তানভীর মোকাম্মেল। একাধিক জাতীয় পুরস্কার পাওয়া এই ছবিতে অভিনয় করেন তৌকির আহমেদ, চাঁদনী, রাইসুল ইসলাম আসাদ, চিত্রলেখা গুহ, রওশন জামিল, আলী জাকের প্রমুখ। ধর্মভীরু বাঙালীকে ধর্মের দোহায় দিয়ে কত সহজে যে প্রতারিত করা যায় এই ছবিতে মূলত তাই দেখানো হয়েছে। ১১০ মিনিট দৈর্ঘের ছবিটি ২০০১ সালে মুক্তি পায়।
১৫। মাটির ময়নাঃ তারেক মাসুদ পরিচালিত মাটির ময়না প্রথম বাংলাদেশী ছবি হিসেবে আন্তর্জাতিক কান চলচিত্র উৎসবে পুরস্কৃত হয় এবং এখনো পর্যন্ত একমাত্র বাংলাদেশী চলচিত্র হিসেবে ‘সেরা বিদেশী ভাষার চলচিত্র’ বিভাগে অস্কারে মনোনয়ন পাওয়া ছবি। মজার ব্যাপার হচ্ছে- ২০০২ সালে মুক্তি পাওয়া আন্তর্জাতিকভাবে পুরস্কৃত এই ছবিটি বিএনপি-জোট সরকারের আমলে ২০০৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে নিষিদ্ধ ছিল ! ষাটের দশকের শেষভাগে ধর্ম ও দেশপ্রেমের দৌলাচালে একটি পরিবার ধ্বংস হয়ে যাবার করুণ কাহিনী দেখানো হয়েছে এতে। ছবিটিতে জয়ন্ত চটোপাধ্যায়, রোকেয়া প্রাচী, নুরুল ইসলাম বাবলু, মঈন আহমেদ, আব্দুল করিম প্রমুখ অভিনয় করেছেন। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ছবিটিকে ৮ টি ক্যাটাগরিতে জাতীয় চলচিত্র পুরস্কার প্রদান করা হয়।
১৬। হাজার বছর ধরেঃ জহির রায়হানের অমর উপন্যাস ‘হাজার বছর ধরে’ অবলম্বনে নির্মিত এই ছবিটি পরিচালনা করেন তারই সহধর্মিনী এককালের দর্শকনন্দিত অভিনেত্রী কোহিনূর আক্তার সুচন্দা। সরকারি অনুদানে নির্মিত এই ছবিটিতে অভিনয় করেন সুচন্দা নিজে, রিয়াজ, শশী, শাহনূর এবং এ টি এম শামসুজ্জামান। ২০০৫ সালে নির্মিত ১৪০ মিনিট দৈর্ঘের এই ছবিটি ৬ টি ক্যাটাগরিতে জাতীয় চলচিত্র পুরস্কার এবং ৪ টি ক্যাটাগরিতে মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার অর্জ়ন করে। এছাড়াও ছবিটির জন্য সুচন্দাকে আমেরিকার ‘ওহিও স্টেট ইউনিভার্সিটি’ প্রশংসাসূচক শুভেচ্ছাসনদ প্রদান করে।
১৭। মনপুরাঃ গিয়াসউদ্দিন সেলিমের রচনা ও পরিচালনায় এই ছবিটির কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেন চঞ্চল চৌধুরী ও ফারহানা মিলি। এছাড়া মামুনুর রশীদ, ফজলুর রহমান বাবু, শিরীন আলম এবং মনির খান শিমুলের অভিনয় ছিল দেখার মত। প্রেম, বিরহ, কুসংস্কার এবং গ্রামীণ পারিবারিক ষড়যন্ত্রই ছিল এই ছবির মূল উপজীব্য। অর্ণবের সঙ্গীতায়োজনে এই ছবির গানগুলো ব্যাপক শ্রোতাপ্রিয় হয়েছিল।
২০০৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ১৩৮ মিনিটের মনপুরা ৫ টি বিভাগে জাতীয় পুরস্কার লাভ করে। IMDb তে ৮.২/১০ রেটিং পাওয়া ছবিটি ভারতে রিমেক হওয়ার কথা রয়েছে।
১৮। রানওয়েঃ ধর্মকে ঢাল বানিয়ে জঙ্গিবাদ কিভাবে বিস্তার লাভ করে প্রয়াত চিত্রপরিচালক তারেক মাসুদের ‘রানওয়ে’তে তাই দেখানো হয়েছে। ছবিটি যৌথভাবে রচনা করেছেন তারেক মাসুদ ও তার স্ত্রী ক্যাথরিন মাসুদ, এর চিত্রগ্রাহক ছিলেন তারেক মাসুদের দীর্ঘদিনের সহযোগী এবং তার সাথে একই সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত প্রয়াত মিশুক মনীর। ২০১০ সালে মুক্তি পাওয়া ৯০ মিনিটের এই ছবিতে অভিনয় করেন জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, নাজমূল হুদা বাচ্চু, মোসলেম উদ্দীন, নাসরিন আক্তার এবং রিকিতা নন্দীনী শিমু।
১৯। মনের মানুষঃ বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ প্রযোজনার ছবি ‘মনের মানুষ’ পরিচালনা করেন ভারতের বিখ্যাত পরিচালক গৌতম ঘোষ। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত ছবিটিতে অভিনয় করেন প্রসেনজিৎ, রাইসুল ইসলাম আসাদ, চঞ্চল চৌধুরী, শুভ্র কুন্ড, পাওলি ধাম এবং চম্পা। ২০১০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ১৫০ মিনিট দৈর্ঘের ছবিটি ভারতে ডিস্ট্রিবিউশন করে ভেস্কটেশ ফিল্মস প্রাঃ লিঃ এবং বাংলাদেশে ইমপ্রেস টেলিফিল্মস। বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দেশেই ছবিটি প্রশংসিত হয়েছে।
২০। গেরিলাঃ সৈয়দ শামসুল হকের উপন্যাস ‘নিষিদ্ধ লেবান’ অবলম্বনে গেরিলা ছবিটি পরিচালনা করেন নাসির উদ্দীন ইউসুফ। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক এই ছবিতে অভিনয় করেন ফেরদৌস, জয়া আহসান, এ টি এম শামসুজ্জামান, শম্পা রেজা, রাইসুল ইসলাম আসাদ, পীষূজ বন্দোপাধ্যায়, আহমেদ রুবেল এবং শতাব্দী ওয়াদুদ। ২০১১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ১৪০ মিনিটের এই ছবিটি ‘১৭তম আন্তর্জাতিক কলকাতা চলচিত্র উৎসবে’ এশিয়ার সেরা চলচিত্রের মর্যাদা পায়। জাতীয় চলচিত্র পুরস্কার প্রাপ্তির ক্ষেত্রেও রেকর্ড গড়ে গেরিলা, সর্বোচ্চ ১০টি শাখায় পুরস্কৃত হয়।