প্রায় ভোরবেলায় অন্যবিকাশ প্রকাশনীর আজহার সাহেবের ক্রমাগত টেলিফোন আমাকে অতিষ্ঠ করে তুলেছিলো। তার কথামত আমি হচ্ছি আধুনিক হুমায়ুন আহমেদ। তার মতোই সহজ সরল কথার জালে মানুষকে আমি নাকি আটকে ফেলতে পারি। হিমু'র মতোই আরেকটা যুগান্তকারী চরিত্র সৃষ্টি করা নাকি শুধু আমার পক্ষে সম্ভব। এইবারের বইমেলায় আমার বই বের হলেই ত নাকি মার-মার কাট-কাট করে বিক্রী হয়ে যাবে। বললাম, "আজহার সাহেব - শুধুশুধু লং ডিসটেন্স কল করে আপনি সময় ও টাকা দুইটাই নষ্ট করছেন। আমাকে দিয়ে হবেনা।"
আজহার সাহেব বললেন: "দেখুন আপনার লেখা আমি পড়েছি। পাকা জহুরীর মতো আমি আপনাকে খুঁজে নিয়েছি। হুমায়ুন আহমেদ-এর নাম ছোট করলে যেমন হু-আ তেমনি আপনাকে ছোট করলে বা-আ। হলুদ পান্জাবি পরা হিমুর বদলে আপনার থাকবে লাল শার্ট পরা লিমু। যেহেতু হিমু'র কোনো পকেট নেই তাই লিমু'র শার্টে থাকবে অনেকগুলো পকেট। কারণ সে হবে একজন সুনিপুন চোর এবং পকেট মার। সাধারণ মানুষের পকেট কেটে তাদেরকে বিপদে ফেলাই হবে তার কাজ। তারপরেও কোনো এক বিচিত্র কারণে সে হবে মানুষের কাছে হিরো। ভাই আপনি না করিয়েন না। আমি ধ্রুব রে দিয়া প্রচ্ছদের কাজ ও করাই রাখসি।"
আমি বললাম: "ভাই সব যখন রেডিই। তখন আপনি কাউকে দিয়ে করাই নিতে পারেন। আমার সময় নাই। আমাকে দয়া করে মাপ করেন।" বলেই খট করে ফোনটা রেখে দিলাম।
উরে বাপরে-মারে চিৎকার করতে করতে আমার ধ্যান ভাংলো। দেখি হাত কেটে অঝোরে রক্ত পড়ছে। কিছুদিন ধরে বউটা কানের কাছে ঘ্যান ঘ্যান করছিলো আনারস খাবে বলে। গতকালকে বহু খুঁজে টেসকো সুপারমার্কেট থেকে আনারস এনেছি। আজকে কাটতে গিয়ে হাত কেটে রক্ত ঝরছে। হঠাৎ যেনো দেখতে পেলাম লাল রক্ত আর লাল রংয়ের শার্ট পড়া লিমু মিশে গিয়ে সাদা কাটিং বোর্ডের উপরে একাকার হয়ে গেছে। কল্পনার রং কি লাল হয়?
অফটপিক: লিমু নিয়ে সিরিজ লেখা শুরু করবো নাকি?
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১২ রাত ১০:১৯