মাইনাস দুই ডিগ্রীতে লেপের নীচে মজা মারিয়া ঘুমাইতেছিলাম। ঘুমাইবার পূর্বে হিটিং ছাড়িয়া রাখায় ঘরে ওঁম শান্তি আবহাওয়া বিরাজ করিতেছিলো। আচমকা মধ্যনিশীতে শিশু কন্যার চিৎকারে ঘুম ভাংগিয়া গেলো। স্বপনে নাকি দেখিয়াছে একখানা কর্কট তাহাকে কামড়াইতেছে। তাই উচ্চশব্দে বিউগল বাজাইতে বাজাইতে তাহার ঘর হইতে আমাদের ঘরে আগমন।পরদিন অতি প্রত্যুষে আমার কর্ম থাকা শর্তেও উঠিয়া তাহাকে শান্ত করিতে হইলো। কিন্তু, মস্তকে বায়ু চড়া হওয়ায় সহজে আর ভাংগা ঘুম জোড়া লাগিলো না। ফলাফল স্বরূপ পরদিন কর্মক্ষেত্রে ঝিমানি আর ম্যানেজারের ঝাড়ি বর্ষণ। মনে মনে অভিসম্পাত দিলাম, আল্লায় যেনো সারাজীবন তোর সংগীকে বাঁজা করিয়া রাখে। শাপ-শাপান্তির পর মনে হইলো ঈসরে কি ভূল করিয়া তাহাকে শাপে বর করিয়া দিলাম। ওই ব্যাটা তো একজন গে, সংগী গর্ভধারণ করিলেই বরং ব্যাটার অনাথ হইয়া যাইবে। ঠিক ওই মুহুর্তে দোস্ত তোর কথা মনে পড়িলো। বিবাহ না করিয়া বরং তুই সুখে আছিস। সন্তানের ঝামেলা নাই, রাত্তিরে ঘুমের ব্যবচ্ছেদও নাই ফলে খচ্চর ম্যানেজারের অহেতুক জ্বালাতন নাই।
আরেকদিনের দূঃখের কথা বলিয়া আজিকে সমাপ্ত করিবো, সেই শীতল রাত্তিরে মজা মারিয়া ঘুমাইতেছিলাম। স্বপনে শাকিরার সহিত "পুলা তো নয় যেনো আগুনের গোলা" নাচিতেছিলাম। পিঠে যেনো কার যেনো খোঁচা লাগিতেই ঘুম ভাংগিয়া গেলো। পাশ ফিরিতেই দেখিলাম গিন্নী মুখ বিকৃত করিয়া কহিতেছে, মিনসের মড়ার ঘুম তাহলে ভাংগিয়াছে। ওগো আমার অম্বলের বেদনা উঠিয়াছে একটু জল দাও না। গিন্নীর জীবন বাচাঁইতে শাকিরার সহিত স্বপনের কবর রচনা করিয়া কম্বলের ওঁমের মায়া ত্যাগ করিয়া নিচতলা হইতে জল আনিয়া দিলাম। আবারও মস্তকে বায়ুচড়া হওয়ায় ঘুমের তেরটা এবং যথারীতি পরদিন ম্যানেজারের ঝাড়ি বর্ষণ ও শাপ-শাপান্ত। ক্লান্ত দেহখানা যখন টানিতে টানিতে আপিস হইতে বাড়ি ফিরিতেছিলাম তখনই মুঠোফোনে গিন্নীর বাজারের লিস্টু নাজিল হইলো। সুপারমার্কেট হইতে হাতে-পায়ে একগাঁদা প্যাকেট লইয়া বাড়িতে ফিরিলাম গিন্নী গোস্বা করিয়া বলিলো, আহারে! কাল রাত্তিরে যখন অম্বলের বেদনায় ভুগিতেছিলাম তুমি একটু সেবা করিলে না। করিবেই বা কেনো? আমি মরিয়া গেলে তো নতুন আরেকখানা জুটিবে।
আহারে জীবন, বিবাহ যেনো করি নাই, মাইনকা চিপায় পড়িয়াছি। বিবাহিত জীবন একখানা ফাঁটা বাঁশ।ধারে ও ভারে উভয়ভাবেই কাটিবে। ভাইরে, তুই বড়ই ভালো আছিস। জানি একদিন এই জীবনের অবসান হইবে তবে যতদিন সম্ভব লেন্জা না কাঁটিয়া থাকা মংগল।
আমাদিগের ভালোবাসা হইয়া গেলো ঘাস, খাইয়া লইলো গরু দিইয়া গেলো বাঁশ।{একটি পুরুষ নির্যাতন বিরোধী লেখা}
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১২ সকাল ৭:৩৪