গো’আযম ১৯৭১ সালের ১ ডিসেম্বর পাকিস্তানের রাজধানী রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে আবারও ৭০ মিনিটের একটি বৈঠক করে। এই বৈঠকে রাজাকার বাহিনীর সংখ্যা বৃদ্ধি করার দাবি জানানো হয়। সাধারণ জনগণ, যাদেরকে গো’আযম দুষ্কৃতকারী আখ্যায়িত করতো, তাদের মোকাবেলা করার উদ্দেশ্যে দেশের আদর্শ ও সংহতিতে বিশ্বাসী লোকদের হাতে অস্ত্র সরবরাহ করার জন্য পাকিস্তান সরকারের প্রতি আহ্বান জানায়। গো’আযম দখলকৃত বাংলাদেশে সহযোগী বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ কমে আসা এবং নিশ্চিত পরাজয়ের সম্ভাবনা দেখে ‘ফাইনাল সল্যুশন’-এর পরিকল্পনা হিসেবে ব্যাপক আকারে ও নির্বিচারে বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী হত্যার পরিকল্পনা নেয়, যা উক্ত বৈঠকে থেকে ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ বাংলাদেশ দখলদারমুক্ত হওয়া পর্যন্ত জামাত, রাজাকার, আল-বাদর, আল-শামসের সদস্যদের দ্বারা বাস্তবায়িত হয়, যা ১৯৭১ সালের ২ ডিসেম্বর দৈনিক ইত্তেফাকে ছাপা হয়।
অপরাধের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গো’আযম জেনারেল টিক্কা খানের কাছে একটি প্রস্তাব পেশ করে। ১৯৭১ সালের ৪ এপ্রিল গো’আযম এবং অন্যরা ‘নাগরিক কমিটি’ নামের একটি ‘ক্রিমিনাল অর্গানাইজেশন’ গঠনের পরিকল্পনা নেয়। নাগরিক কমিটি পরবর্তীতে শান্তিকমিটি নামে কুখ্যাত ক্রিমিনাল অর্গানাইজেশনে পরিণত হয়। গো’আযম ১৯৭১ সালের ৯ এপ্রিল অনেকের সঙ্গে অপরাধ সংঘটনের লক্ষ্যে খাজা খয়ের উদ্দিনকে আহ্বায়ক করে শান্তিকমিটি নামে একটি ‘ক্রিমিনাল অর্গানাইজেশন’ গঠন করে। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে শহরের বিভিন্ন এলাকা, ইউনিয়ন এবং মহল্লা পর্যায়েও শান্তিকমিটি গঠন করা হয়, যা কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করত। ১৯৭১ সালের ৭ এপ্রিল দৈনিক আজাদ, দৈনিক পাকিস্তান, দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকায় ছাপা হয়।
১৯৭১ সালের ৪ মে অপরাধ সংঘটনের লক্ষ্যে ‘ক্রিমিনাল অর্গানাইজেশন’ শান্তিকমিটির শাখা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে এলিফ্যান্ট রোডে একিউএ শফিকুল ইসলামের বাসায় এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সভায় আরও ছিলো খাজা খয়ের উদ্দিন, একিউএম শফিকুল ইসলাম ও আব্দুল জব্বার খদ্দর। এছাড়া গো’আযম আন্তর্জাতিক অপরাধ সংঘটনের জন্য উস্কানি প্রদান করেছে, যা আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন ১৯৭৩-এর ৩ (২) (এফ) ধারায় অভিযুক্ত।