somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পুরুষ ধর্ষন কেন করে?

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ফক্রে: শোয়েইব শাফি

সমাজে ধারনা প্রচলিত আছে ধর্ষিত শুধু নারীরাই হয়, তাহলেই ধর্ষন হিসেবে গন্য হবে। আজকাল ধর্ষিত হয় ১০ বছরের ছেলে এমনকি ট্রান্সজেন্ডারের মানুষও। মিডিয়াতে উঠে আসে শুধু নারী ধর্ষনের কথা। শিশুধর্ষন, এমনকি গনধর্ষনের হাত থেকে হিজড়ারাও রেহাই পায় না। অনেক সময় আইনের ফাঁক ফোকড় গলে বিভিন্ন দেশে নারী ভিন্ন অন্য কেউ ধর্ষন হলে সেটা কোন ধারায় পড়বে সেটা বের করতেই হিমশিম খায় সেদেশের আইন রক্ষাকারী বাহিনীর।

২০১৩ আমেরিকার এফবিআই ধর্ষনের সংজ্ঞাতে পরিবর্তন এনেছে। ১৯২০ সালের পুরোনো সংজ্ঞাকে ছুড়ে ফেলে নতুনভাবে ধর্ষনকে সংজ্ঞায়িত করেছে। নতুন সংজ্ঞা অনুযায়ী অনুপ্রবেশ, যতটুকুই হোক না কেন, সেটা ভ্যাজাইনা অথবা পায়ুপথের সাথে দেহের যেকোনো অংশ বা কোনো বস্তুর, অথবা অন্যকারো যৌনাঙ্গের মৌখিক অনুপ্রবেশ ঘটলে, ভিকটিমের কোনো সম্মতি ছাড়াই

উপরোক্ত সংজ্ঞানুসারে ধর্ষনের সংজ্ঞার আওতায় শুধু নারীই নন, এখানে শিশু থেকে শুরু করে যেকেউ এবং সেটা যে যৌনাঙ্গের মাধ্যমে ধর্ষন হবে সেটাও নয়, কোনো বস্তুর মাধ্যমে এমনকি ওরাল সেক্স ও এর আওতায় এসেছে।

যদিও আমার পোস্টের মূল বিষয়বস্তু ধর্ষনের সংজ্ঞা নয়; পুরুষ ধর্ষন কেন করে সেটার ওপর একাডেমিক রিসার্চ এবং তার বষংবদ নিয়ে আলোচনা করা

তার আগে একটা গল্প বলি। ১৯৭৬ সালে ক্লেয়ারমন্ট ইউনিভার্সিটির পিএইচডি ক্যান্ডিডেট পত্রিকায় এক অদ্ভুত এ্যাড দিলেন।


এ্যাডটি দেবার পর প্রমাদগুনতে থাকলেন আদৌ কেউ ফোন করবে কিনা। ফোনের পাশে একটু সন্দেহ নিয়েই বসে ছিলেন মিছে সময় নস্ট ভেবে। ভদ্রলোকের নাম স্যামুয়েল স্মিথিম্যান, নর্থ ক্যারোলিনার ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট, এখন তার বয়স হবে কমসে কম ৭৪। পত্রিকায় বিজ্ঞাপনটি প্রকাশ হবার পর তার ফোন কিন্তু ঠিকই বেজেছিলো এবং আশ্চর্য্যজনক হলেও অন্তত ২০০জন ফোন করেছিলেন। এর মধ্যে কেউ ছিলেন কম্পিউটার প্রোগ্রামার, কেউবা কার্পেন্টার আবার কেউবা শিক্ষক। নানা পেশার মানুষ তার এই উদ্ভট বিজ্ঞাপনে সাড়া দিয়েছিলেন। পুরোটা গ্রীস্মকাল বসে প্রায় ৫০ জন ধর্ষকের ইন্টারভিউ নিলেন যাদের কাউকেই ধর্ষনের জন্য আদালতে অভিযুক্ত পর্যন্ত করা যায়নি। সবচে অবাক করার বিষয় হলো ধর্ষকেরা কতটা বিস্তৃত পেশায় এবং সমাজের প্রায় ক্ষেত্রেই তারা বিচরন করছে। তার চেয়ে বড় কথা তাদের আচার আচরন প্রচন্ড রকম স্বাভাবিক। এবং সব দেখে তিনি উপসংহারে আসলেন যে এদের চারিত্রিক জেনারাইলাইজেশন করার পরিসর খুবই অল্প। তার গবেষনায় এর চেয়ে বেশী কিছু ছিলো না কিন্তু এই যে একটা পথ দেখালেন যেটা ছিলো বেশ যুগান্তকারী।

এরপর প্রচুর গবেষনা হয় ধর্ষকের মন বুঝতে। কেউ মনোবিজ্ঞানের দৃষ্টিতে তা বোঝার চেস্টা করেন কেউবা বিবর্তনবাদীয় ধারায় আবার কেউ সোশিওবায়োলজিক্যাল অর্থাৎ জীনের সাথে এর কোনো সম্পর্ক আছে কিনা সেটা দেখার চেস্টা করেছেন।

উল্লেখ করার মতো, জর্জিয়া ইউনিভার্সিটির সহকারী প্রভাষক ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট ট্রেসি এন হিপের এই আর্টিক্যালে সর্বোমোট ৬৮ জন ধর্ষকের ওপর সমীক্ষা করে দেখেছেন যে একজন পুরুষ যেসব কারনে ধর্ষন করেন:

১) যৌনশিক্ষা:

পুরুষের মাঝে একটা ভ্রান্ত ধারনা আছে যে যখন মেয়ে না বলে তার আসল মানে হ্যা। উক্ত আর্টিক্যালের ৩৭ শতাংশ ধর্ষকের বক্তব্য ছিলো কখন সেক্স করা উপযুক্ত সেটা মূখ্য নয়, নারী সেক্স করতে অসম্মতি জানালে তার মানে এই নয় যে সে অপারগ। এর আসল অর্থ হচ্ছে যে তার ইচ্ছে আছে। ধর্ষকদের মধ্যে এই শিক্ষাটা অনুপস্থিত একজন নারী কিভাবে তার সম্মতি প্রকাশ করতে পারে সেক্সের ব্যাপারে।

২) ধর্ষিতার সব দোষ:

এই পোস্টে দেখানো হয়েছিলো ধর্ষনের ক্ষেত্রে কিভাবে ধর্ষিতার ওপর স্কেপগোটিং ফ্যালাসী বা বলির পাঠা অপযুক্তির প্রয়োগ ঘটানো হয় সুচারুভাবে এবং এই অপযুক্তির প্রয়োগ ঘটে চলেছে সুপ্রাচীন কাল থেকেই। ২৯ শতাংশের কাছাকাছি ধর্ষক তাদের ভিক্টিমদেরকে দোষারোপ করেছেন অতিরিক্ত মদ্যপানের জন্য, যৌনমিলনে অসম্মতির প্রকাশের ভাষা জোরালো ছিলো না অথবা যখন ধর্ষনের জন্য চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছিলো তখন ধর্ষিতা খুব বেশী বাধা প্রদান করেননি। এছাড়াও ধর্ষকদের অভিযোগ ছিলো ধর্ষিতারা ধর্ষনের পূর্বে তাদের সাথে ফ্লার্ট করেছিলো অথবা তাদের যৌনক্রিয়ার ইতিহাস ছিলো নানা জনের সাথে (এমনকি ধর্ষকের সাথেও পূর্বে)।

৩) লিঙ্গ বিদ্বেষ:

অভিযুক্তদের অনেকের মধ্যেই নারী বিদ্বেষ চরম ছিলো এবং তাদের বক্তব্যে অতীতে ঘটে যাওয়া নারী কর্তৃক বিভিন্ন অসদাচরনের জন্য তীব্র ক্ষোভের প্রকাশ ঘটেছে। সমীক্ষায় অংশ নেয়া ২৪ শতাংশ ধর্ষক তাদের এই পুষে রাখা ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটান ধর্ষিতাদের ওপর। একজন তো বলেই বসলেন যখন এক নারী তার বিছানায় বমি করে অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলেন তখন তাকে সে অবস্থাতেই উপর্যুপরী ধর্ষন করেন। এ কারনেই দেখা যায় অনেক সময় ৬০ বছরের বৃদ্ধাও ধর্ষিতা হন।

৪) জৈবিক চাহিদা:

অভিযুক্তদের কেউ কেউ এই ধর্ষনের ব্যাপারে নিজেদের ঘাড়ে দোষ নিতে নারাজ কারন তারা মনে করেন পুরুষদের জৈবিক গঠনই এজন্য দায়ী এবং তাদের জন্মই হয়েছে তীব্র জৈবিক আকাঙ্খা নিয়ে। ১৮ শতাংশ ধর্ষকদের বক্তব্য অনেকটা এরূপ যে "দেহের হরমোনের নিঃসরন আমাকে পাগল করে ফেলেছিলো" যার কারনে সে যাকে সামনে পেয়েছেন তার ওপর ঝাপিয়ে পড়তে বাধ্য হয়েছেন। সেক্ষেত্রে নিজের হিতাহিত জ্ঞান ধরে রাখতে না পারার প্রধান কারন হিসেবে নারীকেই দায়ী করেছেন।

৫) পন্য তুল্য:


অনেকেই তার নারী সঙ্গীকে শুধুমাত্র যৌনাকর্ষক বস্তু হিসেবে দেখেছেন। ১৮ শতাংশ অভিযুক্ত নারীর নির্দিস্ট কোনো গড়ন বা বৈশিষ্ট্যের প্রতি আকর্ষিত হয়ে তাকে যৌনখেলনা বা সেক্সটয় হিসেবে দেখেছেন।একজনের বক্তব্য ছিলো,"আমার নারী সঙ্গীটিকে আর মানুষ মনে হচ্ছিলো না, মনে হচ্ছিলো শুধুই একটা পথ, একটি অনুষঙ্গ বা যন্ত্র, নিজের চাহিদা মেটাবার একমাত্র রাস্তা।” ইসলাম ধর্মের অন্যান্য আব্রাহামিক ধর্ম সেখানে প্রভাবক হিসেবে কাজ করে। যদি ছোট বেলা থেকেইধর্ম নারীকে ভোগ্যপন্যের সাথে তুলনা করে তাহলে বড় হয়ে ধর্ষন মনোঃবৃত্তির বিকাশ হতে সাহায্য করবে বৈকি।

৬) যৌনসামাজিকতা:

১৮ শতাংশের ওপরে সমীক্ষা করে বোঝা গেছে তারা শুধু নিজের যৌনসঙ্গীর সংখ্যাই শুধু বাড়াতে চায় কোনো বন্ধন ছাড়া যেখানে নেই কোনো অন্তরঙ্গতা অথবা সত্যিকারের কোনো সম্পর্ক। শারীরিক পরিতৃপ্তিই হলো একমাত্র লক্ষ্য এবং তারা প্রায়শই "ভ্যানিলা সেক্স" (উভয়ের সম্মতিতে ক্যাজুয়াল ভদ্রোচিত যৌনতা) এর ওপর বিরক্ত হয়ে যাওয়াকে উল্লেখ করে এবং তার জন্যই জোর পূর্বক ধর্ষনে লিপ্ত হয়।

বাকি ইন্টারভিউতে শুধু একটি কারনেই আটকে ছিলো না। কেউ কেউ নিজের হরমোনের নিয়ন্ত্রনহীনতার সাথে তার ভিক্টিমকে শুধু যৌনতার খেলনা হিসেবে দেখেছিলো। আবার কিছু ধর্ষকের মতে মেয়েরা বুঝতেই পারে না কামুক পুরুষ কেমন হয় এবং এসব অজ্ঞ মেয়েদের শায়েস্তা করার হাতিয়ার স্বরূপ ধর্ষনকেই বেছে নেয়। মোদ্দা কথা এই জার্নালে ধর্ষকেরা কেন ধর্ষন করেছিলো সেটার কারন হিসেবে নারীকে একজন মানুষ হিসেবে না দেখে শুধু মাত্র মাংসপিন্ড হিসেবে চিন্তা করার মনোভাবকে দায়ী করা হয়েছে কয়েকজনের ক্ষেত্রে। এছাড়া তাদের মধ্যে থাকা সামাজিক মূল্যবোধ ও নীতি নৈতিকতাবোধের প্রদর্শন ও তা শিক্ষা দেয়ার জন্যই নারীর প্রতি সহিংস হয়ে ওঠে। ভিক্টিমদের দোষারোপ, নারীর প্রতি বর্বরতম সহিংসতা, সঙ্গিনীকে সেক্স টয় হিসেবে দেখা এবং যৌন শিক্ষার অভাবও অনেক সময় বড় কারন হিসেবে দেখা দেয় ধর্ষনের মোটিভ হিসেবে। তবে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো এই সমীক্ষাতে অংশ নেয়া বেশীরভাগ ধর্ষক রেডিট ফোরামে সক্রিয় এবং এরা কেউ কখনোই প্রশাসন বা ভিক্টিমদের দ্বারা অভিযুক্ত হননি। ধর্ষনের মতো ব্যাপারটার বিস্তৃতি অনেক বড় হওয়ায় এই গোটাকয়েক নির্দিস্ট পরিধির সমীক্ষা দিয়ে খুব বেশী কভার করাটা সম্ভব নয় বলেই ট্রেসি এন হিপ আরো গবেষনা চালিয়ে যাচ্ছেন।

ধর্ষকের রকমফের:

ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট নিকোলাস গ্রোথ তার এই বইটিতে উল্লেখ করেছেন, যৌন নির্যাতন হলো এক ধরনের সহিংসতা যাকিনা যেকোনো বয়সের, যেকোনো লিঙ্গের মানুষের ওপর ঘটতে পারে। এই নির্যাতনের পেছনে যৌনাকাঙ্খা বা যৌনতাড়না প্রধান কারন নয়। এমনকি এর পেছনে যৌনপরিতৃপ্তিও আলোচ্য বিষয় নয় বরংচ যৌননির্যাতনকারী কারো ওপর নিজের ক্ষমতা প্রদর্শন এবং তাকে নিয়ন্ত্রনে নেয়াই প্রধান উদ্দেশ্য হয়ে থাকে। এর ওপর ভিত্তি করে ধর্ষকের শ্রেনীবিন্যাসের জন্য গ্রোথ টাইপোলজির কথা উল্লেখ না করলেই নয়।গ্রোথ টাইপোলজী অনুসারে বেশ কয়েক ধরনের ধর্ষক বিদ্যমান।

১) আক্রোশমূলক ধর্ষন

ধর্ষকের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে ধর্ষিতাকে অপমান, খাটো এবং আঘাত করা। এখানে সে পরিতৃপ্তি অর্জন করে ধর্ষিতাকে নির্যাতন এবং গালিগালাজ করে। এদের কাছে যৌনতা হলো হাতিয়ার যার মাধ্যমে ধর্ষিতাকে মানসিক ও শারীরিক ভাবে ধ্বংস করাই মূল উদ্দেশ্য হয়ে থাকে। প্রচন্ড রাগের বহিঃপ্রকাশই হলো এই ধরনের ধর্ষকদের প্রধান অভিব্যাক্তি। এর ফলে ধর্ষিতার শরীরে আঘাতের নৃশংস চিহ্ন পাওয়া যায় যার ফলে এটাই প্রতীয়মান হয় যে ভিক্টিমের ওপর বলপ্রয়োগে প্রচন্ড শক্তির ব্যাবহার হয়েছে। কিলঘুষি লাথী, বেত্রাঘাত, জামাকাপড় ছিড়ে ফেলে ধর্ষন করাটা এর চিহ্ন।

২) ক্ষমতাপ্রদর্শনকারী জেদী ধর্ষক

এই ধরনের ধর্ষকদের কাছে ধর্ষন হলো নিজের ক্ষমতা, যোগ্যতা, নিয়ন্ত্রন, বল প্রয়োগের অধিকার, প্রভুত্বের প্রতীক। তাই ধর্ষনের পূর্বে মৌখিক থ্রেট এবং অস্ত্রের মুখে ভিক্টিমকে পরাস্ত করা হয়। বলপ্রয়োগ যতটুকু করলে ভিক্টিম হাল ছেড়ে দেবে ঠিক ততটুকুই সে করে। এদের কাছে যৌনাভিযান ও ধর্ষন হলো এক প্রকারের ফ্যান্টাসী এবং বিশ্বাস করে যে ধর্ষিতা প্রথম প্রথম রাজী না হলেও পরে সে ঠিকই পরে উপভোগ করবে। ধর্ষন হয়ে গেলে ভিক্টিম মনে মনে ঠিকই মজা পাবে এবং এজন্য পরবর্তিতে আবারও ধর্ষনের জন্য ধর্ষিতাকে ডেটিং এর অফারও করবে। যেহেতু এটা তাদের ফ্যান্টাসী সেহেতু ধর্ষক কখনোই বুঝতে পারে না তাদের যৌনক্রিড়ার কর্মক্ষমতা বা ভিক্টিমের রেসপন্স সম্পর্কে। এজন্যই তারা মনে করে তাদের আরেকজন ভিক্টিম দরকার এবং সেই ভিক্টিম অবশ্যই এই কাজের জন্য উপযুক্ত হতে হবে। এভাবেই এই হীন ক্রিয়াকলাপ বার বার ঘটতে থাকে এবং ধীরে ধীরে নেশাগ্রস্থ হয়ে যায়। ফলে খুব অল্প সময়ে বেশ কয়েকটি ধর্ষন এরা করে ফেলে।

৩) মর্ষকামী ধর্ষক

এ ধরনের ধর্ষকদের যৌন অভিজ্ঞতার সাথে ক্রোধ এবং ক্ষমতা এমন ভাবে জড়িত যে আক্রমন ও আঘাত সংশ্লিস্ট যন্ত্রনা তাদেরকে কামুক করে তোলে। তাই তারা তাদের ভিক্টিমদের ওপর শারিরীক নির্যাতনে করে। ধর্ষক শিকারের সাথে রুক্ষ ব্যাবহার করে এবং তার অসহায়ত্ব, শারিরীক যন্ত্রনা, কস্ট, ভয় দেখে আনন্দ পায়। ভিক্টিমের নিজেকে রক্ষার জন্য যে যুদ্ধ করে সেটা তাদের কাছে বেশ কামময়। এই ধরনের ধর্ষনে ধারাবাহিক এবং দীর্ঘতম সময় ধরে অত্যাচার চলে। মাঝে মাঝে এটা বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠান বা অদ্ভুত কাজ কারবার যুক্ত হয়। ধর্ষক মিলনের জন্য বিভিন্ন যন্ত্র বা ধাতব পদার্থ ব্যাবহারের কারনে ধর্ষিতার যৌনাঙ্গ ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এসব ধর্ষকরা বেপরোয়া হলেও প্লানমাফিক এগোয় এবং হিসাব কষে পা বাড়ায়। এরা মাঝে মাঝে মুখোশ পড়ে অথবা ধর্ষিতার চোখ বন্ধ রাখে। পতিতা বা যাদের মনে হবে এ শ্রেনীর তারাই প্রধান শিকার। অনেক সময় ধর্ষিতা মৃত্যুবরন করে কস্ট সইতে না পেরে, অনেকসময় খুন করে ধর্ষক পূর্ন সন্তুষ্টি লাভ করে।

৪) গন ধর্ষন

এ ধরনের ধর্ষকেরা সাধারনত যুবকশ্রেনীর হয়। যৌনআক্রমন এদের কাছে পৌরুষত্বের পরিচায়ক মনে হয় এবং তারা প্রবল আত্মবিশ্বাসের সহিত এই কাজটি করে। এরা নির্দিস্ট গ্রুপের সদস্য হয়ে থাকে যাদের মধ্যে হৃদ্যতা লক্ষনীয়। গবেষকদের মতে গ্যাং এর ভেতর যারা জোরপূর্বক ধর্ষনে লিপ্ত হয়, গ্রুপের বাইরে গেলে তাদের মধ্যে এই সহিংস যৌন আক্রমনাত্মক মনোভাব দেখা যায় না। অনেক জায়গায় এই গ্যাংর্যাপ নারীকে শাস্তি দেবার হাতিয়ার হিসেবে ব্যাবহৃত হয়।
পাকিস্থানের মুখতারান মাই এর ঘটনা প্রকৃষ্ট উদাহরন। যদিও সামান্য স্কার্ট বা পানশালাতে যাবার অজুহাতেও এই ঘটনাটি ঘটে। মিশর সহ মধ্যপ্রাচ্যে তাহাররুশ নামের বর্বরোচিত মেলাও এর একটি ভালো উদাহরন। এজন্যই এসব গ্যাংর্যাপ করার সময় ধর্ষকরা কোনো অনুশোচনায় ভোগে না, বরংচ নিজের দায়িত্ব মনে করে এটি করে।

৫) যৌন পরিতৃপ্তি

যৌন পরিতৃপ্তি ধর্ষকদের মধ্যে তেমন দেখা না গেলেও কিছু কিছু সমাজবিজ্ঞানীরা এর সাথে দ্বিমত পোষন করেন। যদিও বিতর্কিত, কিছু কিছু সমাজবিজ্ঞানীদের মতে যৌনমিলনের সময় শক্তিরপ্রয়োগ ধর্ষকদের এক ধরনের আনন্দ দেয়। যদিও বিবর্তনবাদী প্রফেসর ম্যাককিবিন তার এই গবেষনা পত্রে দেখিয়েছেন যে ধর্ষকরা ধর্ষনের সময় অধিকতর যৌন উত্তেজনা অনুভব করে একজন সাধারন মানুষ (যিনি ধর্ষক নন) তুলনায়। অনেকে নিজের যৌনাঙ্গে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ধর্ষিতাকে মিলনের সময় কষ্ট দেবার জন্য আনন্দ পেয়ে থাকে।


ধর্ষিতারা কারা? কোন ধরনের মেয়েরা ধর্ষিতা হন?


পরিচিত মুখ: WHO এবং এই পেপার অনুসারে ধর্ষিতারা ধর্ষকদের পূর্বপরিচিত হয়ে থাকে।

ড্রাগ দিয়ে যৌন নির্যাতন: এই ধরনের ধর্ষনে ভিক্টিমকে আগে ড্রাগ বা এ্যালকোহল বা পানীয়তে ড্রাগ মিশিয়ে পান করিয়ে দিয়ে নিস্তেজ করে ফেলে। অনেকসময় মদ এখানে অল্প অল্প পান করিয়ে নেশাগ্রস্থ করা হয়, তবে কোকেনের ব্যাবহার এসবক্ষেত্রে বেশী কার্যকরী। মদের সাইকোফার্মাসিউটিক্যাল গুনের কারনে অনেক সময় নিজের বিবেকবোধ ভোঁতা হয়ে যায় এমনকি কোনো কিছু বুঝে ওঠার ক্ষমতা সাময়িক লোপ পায়। যদিও মদের সাথে সহিংসতার সরাসরি সম্পর্ক বেশ জটিল। তবে সামাজিক নৃতত্ব অনুসারে মদপান, মাতাল এবং স হিংসতার লিমিট মানুষ সামাজিক ভাবে শেখে। কিছু কিছু গবেষকের মতে মদ্যপান মানুষের মাঝে সাংস্কৃতিক বাধা ভেঙ্গে ফেলতে সহায়তা করে বলে অনেকের ধারনা এ অবস্থায় অসামাজিক কার্যকলাপও বৈধতা পায়। অনেকটা শোনা কথায় ম্যাস হিস্টিরিয়া তাই মদ্যপানের ব্যাপারটা অনেকসময় গ্রুপের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্কের ক্ষেত্র হয়ে দাড়ায় যেখানে বাধা দেবার মতো বিষয় সঙ্গিন হয়ে পড়ে।

মানসিক ফ্যাক্টর: একজন ধর্ষকের মানসিক প্রবৃত্তি নিয়ে নানা ধরনের কোয়ালিটেটিভ এবং কোয়ান্টিটেটিভ গবেষনা ও সমীক্ষা হয়েছে। গবেষনার উপাত্ত বিশ্লেষন করে ফলাফল হিসেবে বলা যায় যে কাউকে মানুষ বা সত্বা হিসেবে না ভেবে পন্য হিসেবে অগ্রাধিকার দেবার মানসিক প্রবৃত্তিই ধর্ষনের দিকে গড়ায়। যৌনআগ্রাসী ব্যাক্তি কখনোই ধর্ষনের জন্য নিজেকে দোষী মনে করে না বরংচ সে সব সময় ভিক্টিমকেই দোষী মনে করে এবং ধর্ষনের ফলে ভিক্টিমের কি ক্ষতি হয়ে গেলো সেটা সম্পর্কে তার ন্যুনতম ধারনা থাকে না।একজন নারীর সামাজিক অবস্থান সম্পর্কে তার একটা ভুল ধারনা জন্মায় বলেই ধার্ষনের মতো অসামাজিক কার্যকলাপ সম্পর্কে আগ্রহ জন্মায় এবং নিজেকে যৌনতা এবগ তদসংশ্লিস্ট স হিংসতার মধ্যে সপে দেয়। তাদের যৌন ফ্যান্টাসী এবং মেয়েদের প্রতি বিমাতাসুলভ চিন্তাভাবনা বলপূর্বক যৌনতা বা ধর্ষনের প্রতি আগ্রহী করে ফেলে যেটা কিনা অন্যান্য পুরুষের ক্ষেত্রে ঘটে না। ঠিক এ কারনেই যৌন আগ্রাসী পুরুষ অন্যান্যদের থেকে আলাদা হয়ে যায় নিজেদের তাড়না ও অসামাজিক কাজের প্রতি মাত্রাতিরিক্ত ঝোকের মাধ্যমে। তাদের মধ্যে পৌরুষত্বের চরম ঔদ্বত্ব বিরাজ করে এবং যৌন সহিংসতায় আসক্ত ব্যাক্তিরা সামাজিক বন্ধনে নিজেদের মধ্যে ধরে রাখতে অপরাগ। তাই বারবার নতুন নতুন ভিক্টিমকে ধর্ষন করতে গিয়ে যৌনসঙ্গিদের ব্যাক্তিগত জীবনেও প্রভাব ফেলে।



এবার আসা যাক একজন পুরুষ কিভাবে ধর্ষক হয়:

গবেষনায় দেখা গেছে যেঅতীতের যৌনলাঞ্চনার কারনের অভিযুক্ত ধর্ষকদের মধ্যে মেয়েদের প্রতি সহমর্মিতার অভাব দেখা গেছে এবং তারা মহিলাদের প্রতি তীব্র ঘৃনা পোষন করে। নীচে এরকমই কিছু ফ্যাক্টর সংক্ষিপ্ত আকারে উল্লেখ করা হলো:

কুটিকালের স্মৃতি: গবেষনায় দেখা যায় যে কিছু প্রাপ্তবয়স্ক যৌননির্যাতন নিজেদের শৈশবের যৌন নির্যাতন থেকেই শিক্ষা নেয়। যৌন নির্যাতিত বালকদের ওপর সমীক্ষায় ৫ জনের ভেতর ১ জন বড় হয়ে শিশুদের ওপর একইরকম যৌন নির্যাতনের চিত্র উঠে আসে। এরকম আচার আচরনই বলে দেয় কেন তারা বড় হয়ে এমন সহিংস হয়, ভালো মন্দ বিচারের ক্ষমতা লোপ পায় এবং যৌনতায় অসুস্থকর অনুশীলন শুরু করে যৌনসঙ্গীর সাথে। যাদের শিশুবেলাতে পরিবেশ স হিংস পূর্ন, মানসিকভাবে অসমর্থিত এবং অভাব অনটনের অসুস্থ প্রতিযোগীতায় অতিবাহিত করে তাদের মধ্যে যৌন সহিংসতার প্রবনতা বেশী লক্ষ্য করা যায়। যুবকদের মধ্যে যৌনআক্রমনাত্মক আচার আচরনের ধারনা আসে পরিবারের মধ্যে সহিংসতা, মানসিক দূরত্ব এবং পিতার অযত্ন। পুরুষের মধ্যে সাধারনত পিতৃতান্ত্রিক সামাজিক গঠনের মধ্য দিয়ে সহিংসতা, ধর্ষন এবং নারীর প্রতি বলপূর্বক যৌনতার বীজ বুনে দেয় এবং এরকম পরিবার থেকেই সমমাত্রিক ধর্ষক বড় হয়ে ওঠে।

পারিবারিক সম্মান ও কুমারিত্ব: অনেক সময় পিতৃতান্ত্রিক সমাজে মেয়েদেরকে দোষারোপ করা হয় ধর্ষনের ক্ষেত্রে যেখানে ধর্ষক পুরুষের কোনো সাজা হয় না পরিবারের সম্মান রক্ষার জন্য। এরকম পরিস্থিতি ধর্ষনের মাত্রাকে বাড়িয়ে তুলতে সহায়তা করে যেখানে ধর্ষক ধরাছোয়ার বাইরে চলে যায়। অনেক সময় ধর্ষিতার ধর্ষনের চিহ্ন ঢেকে রাখা হয়। নারীর প্রতি বলপূর্বক ধর্ষনকে অনেক সময় সমাজ দেখেও না দেখার ভান করে। পাকিস্থান , আফগানিস্থান তুরস্কে অনেকক্ষেত্রে উল্টো নারীকে হত্যা করা হয়।জ্রদানে ১৯৯৫ সালের দিকে গবেষকেরা সমীক্ষা চালিয়ে জানতে পারেন যে ৬০ শতাংশ ধর্ষনের কেসে ধর্ষিতাকে কয়েক রাউন্ড গুলি করে হত্যা করা হয় তাদের নিজের ভাই এর দ্বারা

যুদ্ধ এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ:
প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং যুদ্ধের সময় আইনের শাসন দুর্বল বা অকার্যকর হয়ে গেলে মানবাধিকার লুন্ঠিত হবার নজির সবসময় সবখানেই দেখা গেছে। ২০০৮ সালে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার আর্টিক্যালে বলা হয় যে " যৌন সহিংসতাকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যাবহারের শিকার হয় নারী এবং কিশোরীরা, যেটা কিনা যুদ্ধের একটা কৌশল অবমাননা, প্রভাববিস্তার, ভয়, দ্বন্ধ ছড়িয়ে দেবার অথবা বলপূর্বক কোনো জাতিগত সত্বা বা গোত্রের নীরিহ সিভিলিয়ানদের অন্যত্র সরিয়ে দেবার। " সম্প্রতি মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের ওপর ঠিক এমনি ভাবে নির্যাতন চালিয়ে তাদেরকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। আইএসআইএস সিরিয়া ও ইরাকে নিজেদের স হী খেলাফত কায়েমের নামে ইয়াজীদি ও কুর্দী মেয়ে ও কিশোরীদের ওপর ঠিক এরকমই যৌন স হিংসতা চালিয়েছে। এছাড়া ২০১০ সালে হাইতিতে ভূমিকম্প হলে বহু নারী এবং কিশোরী ক্যাম্পে যৌন স হিংসতার শিকার হয়। যদিও আমেরিকা, জাতিসংঘ, স্থানীয় প্রশাসনের তড়িৎ ব্যাবস্থায় সেটা ঠেকানো গেছে এবং পরবর্তী সুনামী ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রশাসনের সতর্ক দৃষ্টিতে ক্যাম্পে সহিংসতার অভিযোগ তেমন শোনা যায়নি।

দারিদ্র‌্য: দারিদ্রতার সাথে ধর্ষন ও যৌন স হিংসটার সম্পর্ক রয়েছে। বেশ কিছু গবেষক যুক্তি দেখান যে দারিদ্র‌্যের সাথে যৌন স হিংসতারসম্পর্কের প্রধান কারন হলো পুরুষের পৌরুষত্বের আইডেন্টিটি ক্রাইসিস। এক্ষেত্রে গ্যাংরেপ ও যৌন অভিযান খুবই সাধারন ব্যাপার হয়ে যায় কারন িতৃতান্ত্রিক সমাজ ব্যাবস্থা ভেঙ্গে পড়তে থাকে অর্থনৈতিক দুর্দশার কারনে।

আরো কিছু ফ্যাক্টর একটু একটু করে বলে যাচ্ছি: বাইরে গেলেই যে ধর্ষন হবার সম্ভাবনা বেরে যায় এজন্য যখন অন্তরীন অবস্থায় থাকতে হয় সেক্ষেত্রে যৌনলাঞ্চনার একটা বড় অংশ নিকটাত্মীয় দ্বারাই সংঘটিত হয়। এমনকি অনেক সময় ঘর থেকে কিডন্যাপ করে ধর্ষনের ঘটনাও দেখা যায়। যখন প্রপোজ করে ফিরিয়ে দিলে ধর্ষক উদ্যোত হয়ে কিডন্যাপ করে ধর্ষন করে তখন পরিবারের সম্মান রক্ষার্থে হলেও ধর্ষকের সাথে বিয়ে দিতে বাধ্য। আবার জনসমক্ষে ধর্ষন করলেও আশেপাশের লোকজনের প্রশাসনিক স হায়তা চাইবার নিস্পৃহতা এই প্রবনতাকে বাড়িয়ে দেয়। ম্যারিটাল রেপ সম্পর্কে বিভিন্ন সমাজে ভিন্ন রকম ধারনা থাকায় পুলিশী স হায়তাও একজন ধর্ষিতা নারীকে স হায়তা দিতে পারেনা। আবার মধ্যপ্রাচ্যের ব হু দেশে ত্রুটিপূর্ন এবং বর্বর হুদুদ আইনের কারনে ধর্ষিতাকে উল্টো অনার কিলিং বা পাথর নিক্ষেপ বা দোররা শাস্তির শিকার হতে হয়। এজন্যই সৌদী আরবের মতো দেশে ধর্ষনের উচ্চহার সত্বেও সরকারীভাবে তার কোনো বিচার হয় না। আবার এরকম দেশে যেখানে পুরুষদেরকে নারীদের অপেক্ষা সুপারিওটি দেয়া হয় এবং একটা নির্দিস্ট সময়ের পর বিয়ের বদৌলতে আনলিমিটেড সেক্সের নিশ্চয়তা দেয়া হয় সেখানে যৌন স হিংসতা এবং নির্যাতনকে কেউ গুরুত্বের সাথে নেয় না।

ইদানিং মুক্ত বানিজ্য অর্থনীতি এবং বৈদেশিক রেমিটেন্সের নির্ভরতার কারনে বাংলাদেশী নারী শ্রমিকেরা সৌদী আরবে গিয়ে ব্যাপক যৌন স হিংসতার শিকার হচ্ছে। আবার অনেকে দেশের মেয়েদেরকে যৌন দাসী বা পতিতা হিসেবে বাধ্য করা হচ্ছে কাজ করার জন্য।তবে একটা কথা না বললেি নয় যে প্রন যে যৌনসহিংসতা বৃদ্ধি বা ধর্ষনের পরিসংখ্যানে প্রভাবক হিসেবে কাজ করে তার কোনো সঠিক ব্যাখ্যা বা প্রমান পাওয়া যায় নি। বরংচ বিভিন্ন গবেষনায় তার উল্টোটাদেখা গেছে। অনেক সমাজবিজ্ঞানী এমনকি কিছু বিহেভিয়োরাল সায়েন্সের অধ্যাপক (ড. ফুবার্ট তাদের একজন) অনেকে পর্নের সাথে যোগসূত্র খোজার প্রয়াস চালিয়েছেন কিন্তু সেসবের বেশিরভাগ গবেষনাই জটিলতর মেথোডোলজির যুক্তিতে সঠিক এবং যৌক্তিক উপসংহার দিতে পারে না।

সোশিওবায়োলজিক্যাল ব্যাখ্যা:


এই দৃস্টিভঙ্গিতে প্রানিজগতে ধর্ষন বেশ সাধারন ব্যাপার এবং উল্লেখযোগ্য ঘটনা হিসেবে শিম্পান্জি, বোটলনোস ডলফিন, হাসেদের মধ্যে এটা অহরহ দেখা যায়। সে হিসেবে মানবপ্রজাতীর মধ্যেও এটা দেখা যাওয়াটা স্বাভাবিক (এই স্টেটম্যান্টকে বলা হয় ন্যাচারালিস্টিক ফ্যালাসী)।

সোশিও বায়োলজি অনুসারে নারীদের প্রজনন সময় নির্দিস্ট সময় পর্যন্ত থাকে বলে তারা তাদের গর্ভধারন বা যৌন সঙ্গীর ব্যাপারে একটু শুচিগ্রস্থ হয়। সেখানে পুরুষেরা ইচ্ছে করলেই ব হু সন্তানের পিতা হতে পারে এবং তাকে গর্ভধারন করতে হয়। বায়োলজিক্যাল দিক থেকে পুরুষের টেস্টোস্টেরন হরমোন নিঃসরনের হার বেশী বলে তাকে তার জীনের ধারাবাহিকতা রক্ষা এবং পৌরুষত্বের অহমিকার কারনে তাদের মধ্যে ধর্ষন প্রবনতা বিদ্যমান।

কিন্তু প্রাকৃতিক গত ভাবে যদি এটাকে বৈধতা দিতে যাই তাহলে এটা ন্যাচারিলিস্টিক ফ্যালাসীর মধ্যে পড়ে। কারন প্রাকৃতিকভাবে ঘটলেই যদি সেটা ভালো হয়, তাহলে প্রাকৃতিক ভাবে ক্যান্সার হলে সেটাও ভালো হওয়া উচিত। প্রাকৃতিক দুর্যোগ যা ঘটে সেগুলোকেও শুভ বলে ধরা উচিত। কিন্তু সেটা হবে হাস্যকর।

তাই সোশিও বায়োলজিক্যাল দৃষ্টিভঙ্গি অনেকটাই বিতর্কিত এবং এখনো এর ওপর বিষদগবেষনা চলছে।

উপসংহারে বলা যেতে পারে উপরোল্লেখিত ধর্ষকের অনেক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েই চলি বলেই বাংলাদেশের ধর্ষনের ছড়াছড়ি এবং তার ওপর যুক্ত হয়েছে বিচারহীনতার সংস্কৃতি। আমরা ভারতের ধর্ষনের হার দেখে মনে মনে আত্মপ্রাসাদ লাভ করি কিন্তু পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাংলাদেশে ভারতের চেয়ে ৫ গুন বেশী ধর্ষন হয় এবং যেখানে ভারত ৪৬ বাংলাদেশ ধর্ষনে ৩০ তম। তার মানে বাংলাদেশে ধর্ষন কতটা ভয়াবহ।

এখন এর কারন যদি খুজতে চান এই পোস্টে উল্লেখিত আর্টিক্যালগুলো পড়ে নিজেই মিলিয়ে নিন।

ঠ্যাং লিখা: আমি এখানে নিজের বক্তব্য প্রদানে সম্পূর্ন বিরত থেকেছি এবং এ কারনেই প্রতিটা পয়েন্টের সাথে রেফারেন্স সংযুক্ত করেছি। তারপরও কোনো ভুল ত্রুটি হলে ধরিয়ে দিন।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ২:০০
১১টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

নারীবাদীতার নামে ইসলামোফোবিয়া

লিখেছেন মারুফ তারেক, ২০ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৩:৩১



ইসলামে নারী ও পুরুষের পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় ভূমিকায় বিশেষ পার্থক্য রয়েছে। যারা নিজেদের মুসলিম হিসেবে দাবি করবে, তাদের উপর ইসলামের মৌলিক নিয়মগুলো আবশ্যিকভাবে বর্তাবে। ইসলামের কোন মৌলিক আইন বাতিল... ...বাকিটুকু পড়ুন

নারী কম পায় না, বরং সবটাই পায়—নিজের জন্য

লিখেছেন বক, ২০ শে এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ১১:৩৫



ভাই নাঈম আর বোন নাবিলা
নাঈম ও নাবিলা দুই ভাই-বোন।
তাদের বাবা মারা গেলেন এবং রেখে গেলেন উত্তরাধিকার হিসাবে ১৮ লাখ টাকা।

ইসলামি বণ্টন অনুযায়ী:

ভাই নাঈম পাবেন: ১২ লাখ টাকা

বোন নাবিলা পাবেন:... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। একাত্তুর থেকে চব্বিশ

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২০ শে এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১২:২০




সমাজকল্যাণ ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেছেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে এ দেশ স্বাধীন হলো। কিন্তু এরপর বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আমরা কাজে লাগাতে পারিনি। তাদের সুস্থ করতে পারিনি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

=একটু সৃজনশীল হও=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২০ শে এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৫:৩৬


খেয়ে দেয়ে আরামসে ঘুম, এ জীবন বুঝি
খাও দাও ঘুমাও এ কর্ম রোজই,
টিকটকে ভিডিও, ফেসবুকের রিল,
তাতেই করছো সুখ ফিল?

সাজুগুজু, প্রাশ্চাত্যের ড্রেসাপ, হাই হিলে হাঁটা
ব্যস! এমন অহমে পূর্ণ জীবনে ঝাঁটা
নেই সংসার গুছানোতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের ব্যাপারে সরকার কি পদক্ষেপ নিবে ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৯:২৭


আওয়ামী লীগের মিছিলের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। ঢাকার ডেমরা-উত্তরা- বাড্ডা - মিরপুর সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় আওয়ামী লীগ ঝটিকা মিছিল করছে। প্রায় তিনমাস ধরে রাস্তায় মিছিল নামানোর প্রস্তুতি ছিলো। মিছিলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×